Robbar

‘বিনোদনমূলক’ অথবা ‘আর্ট’ ফিল্ম– এর মধ্যপন্থা এখনও অধরা বাংলা ছবিতে

Published by: Robbar Digital
  • Posted:June 12, 2025 4:55 pm
  • Updated:June 13, 2025 12:41 pm  
An article by Abhradip Ghatak on the purpose of films as entertainment, art, or something in between.

চলচ্চিত্র প্রথমত এবং শেষপর্যন্ত যে ‘আর্ট’, সে কথাটা একশ্রেণি মেনে নেয়নি কোনও দিন। মানবেই বা কী করে, র‍্যাডারে ধরাই পড়ে না সেই হাই ফ্রিকোয়েন্সি সিগন্যাল। বিনোদনের বাইরের জগতে যা কিছু রয়েছে তার মধ্যে ডকুমেন্টারি এবং কিছু ফিচার ফিল্মও পড়ে যায়। সিরিয়াস বইপত্র বা গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সেমিনারের মতো, সে ধরনের ফিল্ম তৈরি বা দেখানোর কথা মফস্সল শহরগুলিতে আজও স্থূল রসিকতার মতো। ফিল্ম তাদের কাছে রিল্যাক্সের জন্য। মাথা না ঘামানোর জন্য।

অভ্রদীপ ঘটক

আটের দশকের শেষ থেকে নয়ের মাঝামাঝি– বাংলা চলচ্চিত্র জগতে জনপ্রিয় বিনোদনমূলক বাংলা ছবির চলন উচ্চমার্গে ওঠে। এই ‘উচ্চমার্গ’ শব্দটি আন্ডারলাইন করলে দেখা যাবে, ব্যঙ্গ-বিনোদন কিংবা চড়া, মোটা দাগের কাহিনি-বিন্যাসের রমরমা বাজার। অর্থাৎ ‘হিট হ্যায় বস’ মার্কা ছবির সমগ্র।

‘সিঁথির সিঁদুর’ থেকে ‘সোনার সংসার’ পর্যন্ত এই বিনোদনমূলক চলচ্চিত্রের বিস্তার এক হাই গ্রাফে উঠে সারা বাংলায় তার সোনালি আবেশ ছড়িয়ে দেয়। ‘বাবা কেন চাকর’, ‘বেদের মেয়ে জোসনা’, ‘ভাই আমার ভাই’ ইত্যাদি ইত্যাদি। এরই সঙ্গে অপরদিকে যতই কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ফেলিনি, গোদার, কিয়েসলোস্কি কপচাই না কেন– আমাদের মফস্সলের মা-মাসিরা কিন্তু ১০ বছরের বাচ্চাটিকে নিয়ে ‘আমার শপথ’, ‘মেজ বৌ’ দেখতেই যেতেন। ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘পলাতক’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘অগ্নীশ্বর’-এর যুগ তখন ওভার! অগত্যা একরকম বাধ্য হয়েই আগমার্কা বিনোদনে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে গোটা বাঙালি সমাজ।

গয়েরকাটা বা গোসাবার সন্ধে ৭টার শো-তে স্বভাবতই মণি কাউল বা ক্যুরোসাওয়ার ‘ড্রিমস’ চালানো হত না। কিয়ারোস্তামি বা ঋত্বিক, এস.এন.এস শাস্ত্রী বা আনন্দ পট্টবর্ধন নৈব নৈব চ। চলত ‘বদলে কি আগ’ গোছের চরম মেলোড্রামাটিক অ্যাকশন, নাচে-গানে ভরপুর ‘সিনে পে মা’ সিনেমা। এই প্যাটার্ন নিয়েই আট-নয়ের দশক পেরিয়ে মিলিয়েনিয়ামে প্রবেশ করে বঙ্গভূমি, উইদাউট এনি চয়েস অফ অল্টারনেটিভ ফিল্মস।

এই নাচ আর গান, অ্যাকশন আর শাশুড়ি-বউয়ের মেলোড্রামার বীজ বোনা শুরু সেই মহাকাশের মতো সিনেমাহলের আধো-অন্ধকারে, হ্যালির ধূমকেতু প্রোজেকশান, গুলির শব্দ, বৃষ্টিতে নাচ, বড়লোক নায়িকার গরিবের সঙ্গে প্রেম, গালে তিল দুষ্টু লোকের, কাচের টেবিলে ভ্যাট সিক্সটি নাইন, ৪০ ডিগ্রি গরমে গাউন পরা বাবা, বৃষ্টির রাতে অসুস্থ মা– সবই ইনজেক্ট হয়ে যেত সেই ১০ বছরের ছেলে বা মেয়েটির মাথায়। ৪টে, ৭টার শোয়ের শেষে মায়ের কোলে বসে রিকশায় জাবর কাটতে কাটতে বাড়ি ফেরা– সেই শিশু যখন ধেড়ে হয়ে আজ মধ্য ৩০ বা ৪০-এ মেটার যুগে স্বমহিমায় ফেরে, তাঁর রক্তে রক্তে ‘পথের পাঁচালি’ কিংবা তিতাস নয়, গোবিন্দ নিহালনি কিংবা মণি কাউল নয়, আন্তেনিওনি কিংবা কিয়ারোস্তামি নয়, গোদার কিংবা বার্গম্যান নয়, বইতে থাকে ‘আমার শপথ’, ‘তোমার রক্তে আমার সোহাগ’!

সেই জ্বালাময়ী শপথ জানান দেয় এক লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার বার্তা। ছোটবেলায় দেখা আর বড়বেলায় শেখা এক নতুন নায়ক কিংবা নায়িকা, যার প্রসেসিং কমপ্লিট। এবার তাঁর ওগরানোর পালা। সদর্পে, স্বগর্বে, স্বমহিমায় সেই ’৮০-র প্রোডাক্টটি ডিক্লেয়ার করে, ‘আমাকে দেখুন’! হ্যাঁ, সব্বাই আমাকে দেখুন। আমি কেউ নই, আবার আমিই সে। হাফপ্যান্টে সাগরিকা সেলফি তুলে-টুলে, কাঁদো-কাঁদো হয়ে জন-গণ-মন গেয়ে থাকি। আমিই সে। আমি মধ্যরাতে মেশিনগান হাতে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ‘ধরম কি আগ’ বর্ষাই, লিঞ্চিং থেকে বডি শেমিং, মিটু থেকে অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গান– সবই আমার মাথায়, রক্তে বইতে থাকে। শান্তির চেয়ে যুদ্ধ চাইতে থাকা সেই আমি অগ্নিশপথ নিয়ে বলছি, আমি দেশের জন্য প্রাণ দিয়ে দেব। দেবই। যে দেবে না সে-ই ট্রেইটার, ব্রুটাসের বংশধর, মীরজাফর ইত্যাদি!

কোনও পিসিমার বলার সাহস নেই, ‘অ্যাঁ, কী বললি! ঘরের লোকের কান কেটে নিবি?’ পাড়ায় পাড়ায় টেনিদা, ঘনাদা আর নেই, বদলে গিয়ে প্রাণ জুড়ে রয়েছে অ্যানফিল্ড, আইফোনে মোড়া ইএমআই সর্বস্ব তিনতলা বাগানো টাইলসে মোড়া তিনতলার মফস্সলীয় দোকানদার, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ কিংবা সরকারি কর্মী– যিনি একাধারে বিপ্লবী, প্রফেশনাল সমাজসেবী, মুদির দোকানদার, নাট্যকার, সিনেমাটোগ্রাফার, সুদখোর, ট্রাভেল এজেন্ট, শর্ট-ফিল্ম মেকার কিংবা আদার ব্যাপারী।

আমি মদ খেয়ে বা না-খেয়েও ধর্ম টু জিরাফে বাঁচি। আমি মিঠুন থেকে পোসেনজিৎ– বিপ্লব থেকে লোকেশ ঘোষ। সত্যজিৎ-জয়ন্তীতে বিশপ লেফ্রয়ে মালা টাঙিয়ে পুজোর প্রসাদ সাইডব্যাগে পুরে রাখি।

সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে…

মা’র হাত ধরে ‘আমার শপথ’ দেখা আমি আর তুমিটাই আজ সমবেত রিল বানিয়ে সুপার হিরো। অর্থাৎ এককথায়, দুই দশকে মূলত সিনেমাহলে চলতে থাকা বাংলা সিনেমার প্যাটার্ন এক অত্যন্ত জরুরি ভূমিকা নিয়ে নেয় বাঙালি মধ্যবিত্তর অন্দরমহলে। যাকে ‘হিট আছে বস’ কিংবা ‘এরাই মূল ইন্ডাস্ট্রি আর বাকিরা শখের পায়রা’ বলে কলার তোলে যারা– তারাই আজ নক্ষত্রলোকের দেবাত্মা উইথ মিলিয়ন ভিউস। আর মাস বা পপুলারিটি বলছে, বাকি জনা চার-ছয়েক যা হাতে রইল, আঁতেল কিংবা হোমোসেক্সুয়াল!

শিক্ষিত মানে দেশদ্রোহী, সেক্যুলার মানে দেশদ্রোহী, মুক্তমনা মানে আঁতেল, বিজ্ঞানমনস্ক মানে ধর্মবিরোধী। একদল আগমার্কা, এই মতবাদ বুকে নিয়ে হামেশাই ফেসবুক জ্বালিয়ে দেয়। সে আগুনে শুধু ফেসবুকই জ্বলে না, তার সঙ্গে জ্বলতে থাকে গোটা সমাজ– এক হিংস্র আক্রমণাত্মক বিকৃত ধারণায়। একটি রাজনৈতিক দল বা দলদাসসমূহ, অন্য দলের প্রতি এই অ্যাড্রিনালিন ক্ষোভ পুষে পুষে শিশু থেকে বৃদ্ধ এগিয়ে যায় এক অন্য ডায়মেনশনে। সেই প্যারালাল ওয়ার্ল্ডই আজ রিয়েল ওয়ার্ল্ডে পরিণত।

ভাবনার গোড়ায় গজিয়ে ওঠা মহীরুহের বীজ পোঁতা হয়েছিল আট-নয়ের দশকের সেই ‘আমার শপথ’ আর ‘সিঁদুরের সোহাগে’ মোড়া রুপোলি পর্দায়। রগরগে কমার্শিয়াল ফিল্ম মন্ত্রের মতো ছেপে গেছিল বালিকা-বালকের ১২০০ গ্রামের মগজে। সে চিত্রবাণীতে ছিল না কোনও ক্লাসিক ফিল্মের দর্শন, ছিল না কোনও আর্টের ছিটেফোঁটা। ছিল না কোনও সাহিত্যচর্চা, ছিল না কোনও সংগীতচর্চা।

চলচ্চিত্র প্রথমত এবং শেষপর্যন্ত যে ‘আর্ট’, সে কথাটা একশ্রেণি মেনে নেয়নি কোনও দিন। মানবেই বা কী করে, র‍্যাডারে ধরাই পড়ে না সেই হাই ফ্রিকোয়েন্সি সিগন্যাল। বিনোদনের বাইরের জগতে যা কিছু রয়েছে তার মধ্যে ডকুমেন্টারি এবং কিছু ফিচার ফিল্মও পড়ে যায়। সিরিয়াস বইপত্র বা গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সেমিনারের মতো, সে ধরনের ফিল্ম তৈরি বা দেখানোর কথা মফস্সল শহরগুলিতে আজও স্থূল রসিকতার মতো। ফিল্ম তাদের কাছে রিল্যাক্সের জন্য। মাথা না ঘামানোর জন্য।

…………………………………….

এদিকে আমাদের এই বঙ্গদেশের উত্তর প্রান্তে যাকে আমরা ‘নর্থ বেঙ্গল’ বলে থাকি, সেই নন ওয়েস্ট বেঙ্গল কালচারে এখনও পর্যন্ত চলচ্চিত্রের আধুনিকীকরণ ঘটেনি। ছবি দেখা, বোঝার ক্ষেত্রে আমরা এখনও ক্লিসে বস্তাপচা বাংলা সিরিয়াল মার্কা চলচ্চিত্রায়নকেই সেরা মনে করে, বাকি দুনিয়াকে, বিশ্ব চলচ্চিত্রকে নস্যাৎ করে দিই। ফিল্ম মেকিং-এর ভাষা, ফিল্ম দেখার মাধ্যম যে আগাগোড়া পালটে গেছে– এটা মেনে নিতে অসুবিধে হয়।

…………………………………….

সাধারণ ভারতীয়রা সিনেমাতেই বাঁচে, সিনেমাতেই মরে। নিজেকে হিরোর জায়গায় বসিয়ে রাখা আমজনতা অধুনা থ্রিলার আর ওটিটি আর সিনেমা জুড়লে কয়েক হাজার খুনের যুগে তো আর নিজেরা খুন করে বসতে পারে না, অগত্যা চল মন সেই নব্বইয়ের দিলওয়ালে-র দেয়ালে।

মা-এর শপথ নিয়ে আধুনিক বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে বসিয়ে রাত বারোটায় ৫০তম বিবাহবার্ষিকী নিয়ে লাইভে আসেন ছোটছেলে আর ছেলের বউ। সবই বিনোদনের জাদু। সবই নেটওয়ার্কের মায়া।

এ যেমন রইল এক দিক। তেমনই কয়েনের উল্টো পিঠে চলে আর এক সার্কাস ।

এভাবে চলতে চলতে মিলিয়েনিয়ামের বছর দশেক বাদে ওয়ানস ইন অ্যা ব্লু মুন দেখা গেল, তাবড় বাংলার বিদ্বজন গম্ভীর গম্ভীর বিষয়ে আরও গম্ভীরতর সিনেমা বানাচ্ছেন। এঁরা আবার মেট্রো চ্যানেল দেখে বড় হওয়া ক্যালকুলেটিভ মহানাগরিক বিপ্লবী । এঁদের সম্পর্কে আবার কিসসু বলা যাবে না। ভাবাও যাবে না। মফস্সলের মূর্খদের এঁরা অলওয়েজ করুণার চোখে দেখেন।

এই প্রজন্ম হনুলুলু কিংবা হোক্কাইডো অথবা বারাসাত চলচ্চিত্র উৎসবে মনতাজের খেল দেখিয়ে, কান-বার্লিন-রোটরডামের অলিগলিতে দশ ফুট বাই দশ ফুটের ঘরে সিনেমা দেখিয়ে খুব গম্ভীর হয়ে যান আর ফতে ইয়াকিন, ওং কার ওয়াই, কিম কি দুক নিয়ে ১৭ ঘণ্টা ওয়েবিনারের পর, তোমার রক্তে আমার সিঁদুরেই এসেই থামেন। সে যাগগে।

পরিচালক কিম কি দুক

অর্থাৎ বাংলায় এই চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া বা এক্সট্রিম ক্লাইমেটের জোয়ার চলছে দশকের পড় দশক জুড়ে। হয় সোহাগ সিঁদুর, নয় অরি আ কার্তে দে সিনেমা! মাঝামাঝি কিস্যু পেল না মধ্যবিত্ত বাঙালি।

সোজা কথায়, এদিকে আমাদের এই বঙ্গদেশের উত্তর প্রান্তে যাকে আমরা ‘নর্থ বেঙ্গল’ বলে থাকি, সেই নন ওয়েস্ট বেঙ্গল কালচারে এখনও পর্যন্ত চলচ্চিত্রের আধুনিকীকরণ ঘটেনি। ছবি দেখা, বোঝার ক্ষেত্রে আমরা এখনও ক্লিসে বস্তাপচা বাংলা সিরিয়াল মার্কা চলচ্চিত্রায়নকেই সেরা মনে করে, বাকি দুনিয়াকে, বিশ্ব চলচ্চিত্রকে নস্যাৎ করে দিই। ফিল্ম মেকিং-এর ভাষা, ফিল্ম দেখার মাধ্যম যে আগাগোড়া পালটে গেছে– এটা মেনে নিতে অসুবিধে হয়।

সিনেমা দেখা, বোঝার ক্ষেত্রে আমরা সেই ইঁদুরটার মতো, যে নিজের গর্ত থেকে বের হয়ে, ঘরের মাঝে এসে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে বলে ওঠে, ‘বাবা, পৃথিবীটা কী বড়!’

এর জন্য কে দায়ী আর কে নয়, তার বিচার করবে কে? এটুকুই ভাবার।

আবার আট-নয় দশকের পিতামাতাদের প্রাক-মোবাইলের যুগে বিনোদন বলতে একমাত্র টেলিভিশন, যেখানে রাকেশ শর্মা (স্টার টিভির হেড ও তথ্যচিত্র পরিচালক), বাসু চ্যাটার্জি, তরুণ মজুমদার, সত্যজিৎ রায়, গোবিন্দ নিহালনিদের মতো ব্যক্তিত্বরা অসাধারণ সব শো, প্রোগ্রাম ডিজাইন করতেন। সেই মা-বাবারাই আজ সন্ধেবেলা টিভির সামনে বসে ফুলকির উল্কি দেখে।

অঞ্জন চৌধুরী, স্বপন স্বাহা যুগের ‘ঘরোয়া’ ছবির অভ্যেস আজ সিরিয়াল আর ওটিটি রূপে জ্বলজ্বল করছে টিভি মোবাইলের স্ক্রিনগুলোতে। অর্থাৎ বাঙালির একাংশই সচেতনভাবে শুধুমাত্র ব্যাবসায়িক খাতিরে হিট বা টিআরপির লোভে, গোটা বাঙালি জাতির রুচিবোধকে এক্কেবারে মাটির তলায় কবর দিয়েই শান্ত হয়নি, ওপরে আবার একটা গাছও পুঁতে দিয়েছে।

আপনি চেষ্টা করলে যাতে কোনওভাবেই এই উগ্র বিনোদনকে খারাপ না বলতে পারেন, তার এক প্ল্যানড প্রোগ্রাম।

একই সাথে, ‘আমরাই জাতির মেরুদণ্ড’ টাইপ জেনারেশন যারা ওই নয়ের দশকের চারাগাছের বৃক্ষরূপ, তারা ইদানীং বলা শুরু করছে– এই আগমার্কা সিঁথির সিঁদুরই শ্রেষ্ঠ। বাকি যা কিছু, আপামর বাঙালি গত ৩০০ বছরে সাহিত্য, সিনেমা, ছবি, ইন্সটলেশন, পেন্টিং– যা যা করেছে সবই আঁতলামো। ‘বদলেকি আগ’-ই আসল। ‘মেজ বউ’-ই বাংলার কলচার।

অর্থাৎ কিনা হিট মানেই সেরা, কম জনপ্রিয় মানেই তাকে ফেলে দাও। আর্ট-ফার্ট কিস্যু নয়। ও সব আঁতলামো। ‘তিতাস’কে রিপ্লেস করে ‘চেঙ্গিস’ আসুক। তবেই এই জাতি মাথা তুলে দাঁড়াবে।

তিতাস একটি নদীর নাম ছবির দৃশ্য

এই নিয়েই আজকের মহানগর টু মফস্সল চলছে । এর মধ্যেই লড়াই করে কেউ কেউ সিনেমা বানাচ্ছে, সে সিনেমা ডিস্ট্রিবিউশনের অভাবে কেউ দেখছে না।

আর বাঙালি বিগত তিন দশক ধরে সিনেমা হলে গিয়ে সেই ট্র্যাশ বস্তাপচা ক্যালকুলেটিভ ন্যারেশন দেখেই চোখ মুছতে মুছতে হলের বাইরে আসছে। কারণ ওই একই। কোনও অল্টারনেটিভ নেই।

সেই প্যাটার্ন সারা বঙ্গদেশ জুড়েই ছিল। আর এই প্যাটার্ন আজও সারা বঙ্গদেশ জুড়েই আছে।

আর এদিকে ভারত সহ গোটা দুনিয়ার সিনেমা শিল্প মহাকাশ ছুঁয়ে ফেলেছে।

………………………..

ফলো করুন আমাদের ওয়েবসাইট: রোববার ডিজিটাল

………………………..