প্রথমবার বাউল গান শুনে মনে হয়েছিল আমার ভেতরে একটা দরজা খুলে গেল। মনে হচ্ছিল, যেন ওরা আকাশের গান গাইছে। এত খোলা ওদের কণ্ঠ। যেন অন্তরের নাদ। এত সুন্দর গান, এত সুন্দর শব্দ এই মানুষটার ভেতর থেকে আসছে ভেবে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আর কী ভালো মানুষগুলো! কলেজে পড়তে ওদের কাছে যেতাম, অত ছোট আমি, তবুও কী সম্মানের সঙ্গে আমাকে ভালোবেসে কাছে টেনে নিত। এই আত্মীয়তাবোধ তো নিজের পরিবারের থেকেই আসতে পারে একমাত্র। এইসব ভাবতাম আমি। আমি যতটা নিকট বোধ করতাম বাউলের সঙ্গে বা বাউল গানের সঙ্গে, অন্য কোথাও করতাম না। যেখানে ভালো লাগে, সেখানেই তো মানুষ থেকে যায়। ওদের কাছে যেতে যেতে কখন বাউল হয়ে গেছি, সে খেয়াল আর নেই।
প্রকাশিত হল পার্বতী বাউলের সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব। কথালাপে তিতাস রায় বর্মন। ছবি তুলেছেন ব্রতীন কুণ্ডু।
কেন একজন মানুষ বাউল হতে চায়?
এক একজনের এক একরকম কারণ। কেউ কেউ আঘাত পেয়ে আসে। আর ‘আঘাত’ এমন একটা জিনিস, যা আমাদের শিক্ষা দেয়। জীবন আসলে কী? আমরা যেটা চাই, আমাদের যা আশা-আকাঙ্ক্ষা, সেটাকেই জীবন হিসেবে দেখি। কিন্তু অনেক সময়ই বাস্তবের সঙ্গে এই চাওয়া-পাওয়ার কোনও সম্পর্ক থাকে না। তাই জীবনের মধ্যে কী ঘটে যায়, তা আর জানা হয় না। তাই জীবন থেকে এক ধরনের চাওয়া-পাওয়া তৈরি হয়। আমাদের আঘাত পাওয়ার কারণ, আমরা যা আশা করেছিলাম, তা না-পাওয়া। কিন্তু আমি যদি আশাই না করি, তাহলে তো আঘাত পাওয়ার কোনও কারণই নেই। যখন মানুষের সেই ঘোরটা ভেঙে যায়– আমি যা ভাবছি, তা আমার চিন্তা মাত্র, তার সঙ্গে জগতের হয়তো সেরকম কোনও মিলই নেই– এখান থেকেই একটা উপলব্ধি হয় মানুষের, সত্য জানার উপলব্ধি। আগ্রহ তৈরি হয় নিজেকে জানার। সেখান থেকেই শান্তি খোঁজার দিকে এগতে থাকে একজন, এগতে থাকে মুক্তির দিকে। এই খোঁজ থেকেই অনেক সময় মানুষ হয়ে ওঠে বাউল।
আবার অনেকেরই আঘাতের প্রয়োজন পড়ে না। তাদের মনের মধ্যে একটা অনুরাগ থাকে, সেই অনুরাগ থেকেই তাঁরা আসেন এই পথে। আরেক ধরনের মানুষের ক্ষেত্রে আমরা বলি– পূর্বজন্মের সংস্কার। তাঁরা জন্মেছেন মুক্তি ও বৈরাগ্যের ভাব নিয়ে। এরকম অনেক ভাবের মানুষ রয়েছেন, কারও আগেই উপলব্ধি হয়, কারও পরে।
……………………………………..
যদি মানুষ দেবতা হয়, তাহলে যে কোনও দিনই দেবতা তোমার অঙ্গনে চলে আসতে পারে, তাই প্রতিটি দিন তোমাকে নিজের চাহিদার ঊর্ধ্বে গিয়ে অন্যের জন্য উপস্থিত থাকতে হবে। আজকাল শুনি– মানুষ একা থাকতে চায়, একার প্রয়োজন মেটাতে চায়। কিন্তু সেবাভাবে তুমি অন্যের জন্য প্রস্তুত থাকবে সবসময়। এখানে বৈরাগ্য শুরু হবে নিজের সঙ্গে, নিজের পরিকল্পনা সঙ্গেই। যে তোমার দরজায় এসে দাঁড়াবে, সে তো হঠাৎ আসেনি। তার আসারই কথা ছিল বলেই সে এসেছে।
……………………………………..
আপনার বাউল হওয়ার ক্ষেত্রে উপলব্ধি কী ছিল?
আমি কেন বাউল হলাম, তা নিজেই জানি না। আমি কোনও দিনও এরকম কোনও সিদ্ধান্তই নিইনি। বাউল গান আমার ভালো লাগত। আমাদের বাড়িতে আসলে নানা ধরনের গানের প্রচলন ছিল। ক্লাসিকাল গানও যেমন শুনেছি, বাউল গানও। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা আমাদের গান ভালোবাসতে শিখিয়েছেন। কিন্তু বাউলের কাছে গিয়ে যখন বাউল গান শুনেছি, তখন মনের মধ্যে একটা রূপান্তর ঘটে গিয়েছে। একটা অন্য চৈতন্য হয়েছে।
ঠিক কী ধরনের চৈতন্য?
কী হয়েছিল জানো? মনের মধ্যে কিছু একটা যেন খুলে গিয়েছিল। আমার ভেতরে যেন কেউ একটা দরজা খুলে দিল। মনে হচ্ছিল, যেন ওরা আকাশের গান গাইছে। এত খোলা ওদের কণ্ঠ। যেন অন্তরের নাদ। এত সুন্দর গান, এত সুন্দর শব্দ এই মানুষটার ভেতর থেকে আসছে ভেবে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আর কী ভালো মানুষগুলো! কলেজে পড়তে ওদের কাছে যেতাম, অত ছোট আমি, তবুও কী সম্মানের সঙ্গে আমাকে ভালোবেসে কাছে টেনে নিত। এই আত্মীয়তাবোধ তো নিজের পরিবারের থেকেই আসতে পারে একমাত্র। এইসব ভাবতাম আমি। আমি যতটা নিকট বোধ করতাম বাউলের সঙ্গে বা বাউল গানের সঙ্গে, অন্য কোথাও করতাম না। যেখানে ভালো লাগে, সেখানেই তো মানুষ থেকে যায়। ওদের কাছে যেতে যেতে কখন বাউল হয়ে গেছি, সে খেয়াল আর নেই।
গেরস্ত জীবন থেকে বাউল জীবনে যাওয়া আপনার। একটা অন্য যাত্রাপথ। এই যাত্রাটা কীরকম ছিল?
এটাকে ‘সেবাভাব’ বলে। আমরা মানুষকে বলি ‘নারায়ণ’। আমরা সেবা দেওয়াকে বলি ‘নরনারায়ণকে সেবা’। নারায়ণ সবার মধ্যে রয়েছে। দেখো, বাউলের প্রধান কথা হচ্ছে, মানুষ ভজন, মানুষ পূজন, মানুষেই গৌরাঙ্গ পাওয়া, দেখবি সাধের আজব লীলা। যে কোনও বাউল আশ্রমে যদি যাও, ভালো করে লক্ষ করলে দেখবে, যেভাবে তাঁরা অন্য বাউলদের নিয়ে আসেন, তাঁদের পা ধুইয়ে দেওয়া, তাঁদের বসানো, তাঁদের খেতে দেওয়া, তাঁদের সমস্ত খেয়াল রাখা, তাঁদের প্রতিটি প্রয়োজন শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখা– দেবতাকে পুজো করার সময় যেমন ভক্ত চায় সব যেন ঠিকঠাক থাকে, এখানেও তাই। এখানে শুধু মানুষই দেবতা। মানে, সাধুরাই দেবতা, সাধুসঙ্গই আমাদের আকাঙ্ক্ষিত, সাধুসঙ্গই সার। ‘সাধুসঙ্গে থাকা’ মানে ঈশ্বরের সান্নিধ্যে থাকা। কারণ নরনারায়ণ। ফলে বাউল আখড়ার মূল ভিত্তিই হল সেবাভাব। যদি মানুষ দেবতা হয়, তাহলে যে কোনও দিনই দেবতা তোমার অঙ্গনে চলে আসতে পারে, তাই প্রতিটি দিন তোমাকে নিজের চাহিদার ঊর্ধ্বে গিয়ে অন্যের জন্য উপস্থিত থাকতে হবে। আজকাল শুনি– মানুষ একা থাকতে চায়, একার প্রয়োজন মেটাতে চায়। কিন্তু সেবাভাবে তুমি অন্যের জন্য প্রস্তুত থাকবে সবসময়। এখানে বৈরাগ্য শুরু হবে নিজের সঙ্গে, নিজের পরিকল্পনা সঙ্গেই। যে তোমার দরজায় এসে দাঁড়াবে, সে তো হঠাৎ আসেনি। তার আসারই কথা ছিল বলেই সে এসেছে। সুতরাং, সেই মুহূর্তে সমস্ত কিছু ফেলে দিয়ে, যা তোমার পরিকল্পনা ছিল, তা বাতিল করে তাঁকে পূর্ণভাবে স্বাগত জানাতে হবে। তাঁকে বসানো, তাঁর সেবা করা। আমরা বলি, বাউল হল বৃহৎ সংসার। লোকে সংসার করে স্বামী-স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। আমরা বলি, গোটা দুনিয়াটাই আমার সংসার। এই হল বাউলের সঙ্গে গৃহস্থের মিল ও অমিল।
সাধক জীবনের থেকে আপনার সবচেয়ে জরুরি পাওনা কী? বা সবচেয়ে প্রিয় পাওয়া?
আনন্দ।
আপনার কাছে এই ‘আনন্দ’ কীরকম?
মানুষ যখন নিজেকে সমস্ত বন্ধন থেকে মুক্ত করতে পারে, সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা থেকে মুক্তি হয়, তখন একটা ফুল ফোটার মুহূর্তও অগোচর হয় না। তখন সে সত্যিই মুক্ত। খুব সাধারণ জিনিস থেকে আনন্দ তৈরি হয়। একটা মানুষের সঙ্গে কথা বলা থেকেও আনন্দ আসে। সেই মানুষটার সঙ্গে বর্তমানে থাকা, সর্বক্ষণ উপস্থিত থাকা। যদি আমার মধ্যে অনেক অনেক চিন্তা-ভাবনা থাকে, তাহলে আমি তোমার সঙ্গে উপস্থিত থাকতে পারব না। কোনও কিছুকে মূল্য দিতে পারব না। প্রতিদিন আমাদের চারপাশে কত কিছু যে ঘটে যাচ্ছে, তা যদি নজর না করি, তাহলে আর পৃথিবীর সৌন্দর্য জানা হবে না। সকাল থেকে রাত অবধি কীভাবে কেটে গেল, ঘণ্টার পর ঘণ্টা, তা তো জানতে হবে। আসলে সময় খুব মূল্যবান, এভাবে অমনোযোগী থাকা আমাদের মানায় না। সকলের জন্য সময় কিন্তু নির্দিষ্ট। আমাদের যে সময়টা চুরি হয়ে গেল, এর ফলে আমাদের চিন্তাগুলো হারিয়ে গেল। বর্তমানে থাকা হল না। যে মুহূর্তে আমরা আমাদের থেকে দূরত্ব তৈরি করছি, নিজের আশা-আকাঙ্ক্ষা থেকে, তখনই তুমি সময়কে আস্বাদ করতে পারবে। সেটাই আনন্দ। একমাত্র আনন্দ। তখন তুমি জানতে পারবে জীবনে অনেক বাধা-বিপত্তি থাকলেও আনন্দে থাকার জন্য এসব কোনও কিছুই বাধা নয়। খুব দুঃখেও তুমি আনন্দে থাকতে পারবে। এখন তো আমাদের, বাউলদের, আর্থিক অবস্থা ভালো হয়ে গিয়েছে। কিন্তু একটা সময়ে অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ ছিল, তখনও কারও আনন্দে কমতি ঘটেনি। কাউকে কখনও বলতে শুনিনি– আমার ঘরে চাল কম পড়েছে। কাউকে বলতে শুনিনি, আমার ঘরে সেবা করার মতো কিছু নেই। দরজায় কেউ আসলে সে বসতে পাবে প্রতিটি বাউল ঘরে, খেতে পাবে প্রতিটি ঘরে। আমার মনে আছে, তখন আমি ফুলমালাদির সঙ্গে মাধুকরী করতে যেতাম। দীনবন্ধুদা বলে একজন ছিলেন, ইলামবাজারের একটা গ্রামে থাকতেন– তিনি অনেক দিন আসেননি ফুলমালাদির সঙ্গে দেখা করতে। ফুলমালাদি চিন্তা করতে করতে একদিন আমাকে বলল, চল, ওঁকে দেখে আসি। দীনবন্ধুদা সারিন্দা বাজিয়ে গান করতেন। যখন পৌঁছলাম ওঁর বাড়ি, দেখলাম খুব অসুস্থ। ওই জন্য কোথাও যেতে পারছেন না। রোজগার নেই, ফলে ঘরে প্রায় কিছুই নেই। আমরা যখন পৌঁছেছিলাম তখন ওঁর সাধনসঙ্গিনী সবেমাত্র চারটে আলু মাধুকরী করে বাড়ি ফিরেছেন। আমাদের বসিয়ে রেখে ওই চারটে আলু রান্না করে আমাকে আর ফুলমালাদিকে আগে খেতে দিলেন। ওই আলু আর অন্নের স্বাদ আমি আজও ভুলিনি। এত পরিশ্রম করেও আমাদের খেতে দিয়ে ওঁর যে আনন্দ, তা দেখে আমার বড় শিক্ষা হয়েছিল। এটাই বাউলের সৌন্দর্য, আনন্দ।
আপনার বাউল জীবনে কত কত মানুষের সঙ্গ ও গল্প, এমন মানুষদের কথা আরও জানতে চাই। যে গল্পগুলো আমাদের শিক্ষা দিয়ে যায়।
সে কত গল্প! তখন আমার গুরু সনাতন দাস বাউলের সঙ্গে আমি মাধুকরীতে যেতাম। মাধুকরীর জন্যই এক বাড়িতে ঢুকেছিলাম। সেই ভদ্রমহিলা সেদিন খুব ব্যস্ত ছিলেন, বাবাকে খুব একটা সময় দিতে পারছিলেন না। এদিকে মাধুকরীতে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার নিয়ম নেই। আবার এটাও নিয়ম যে, কারও যদি মাধুকরীর পালা পড়ে, তাহলে তাকে কিছু দিতেই হবে, ফিরিয়ে দেওয়ারও উপায় নেই। তখন বাবাকে দেখলাম ঝুঁকে পড়ে উঠোন থেকে মাটি তুলে মুখে দিলেন। বললেন, আমি যদি কিছু না নিয়ে যাই এ বাড়ি থেকে, তাহলে ওঁদের অমঙ্গল হবে। ওঁরা সেদিন জানতেও পারলেন না যে, ওঁরা আসলে সেদিন মাধুকরী দিয়েছিলেন। এই ভাবটাকেই বলে ‘পরম বৈষ্ণবের ভাব’। তুমি তো জানো বাউলে দীন-হীন কথাটার ব্যঞ্জনা। দীন-হীন আসলে ‘দারিদ্র’ নয়, এটা একটা ভাব। শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভুর একটা শ্লোক রয়েছে– ‘তৃণাদপি সুনীচেন তরোরিব সহিষ্ণুনা, অমানিনা মানদেন কীর্তনীয়ঃ সদা হরিঃ।’ তৃণের থেকেও নিচু, ঘাসের থেকেও ছোট কিন্তু তরুর মতো সহিষ্ণু, সবাইকে সম্মান করা আর মুখে সবসময় হরিনাম– এটাই বাউলের ধর্ম, এটাই বাউলের ভঙ্গিমা।
আপনি কি এখনও ছবি আঁকেন? কলাভবনে তো আপনার শিল্পশিক্ষার শুরু, এই বাউলজীবনে এসে ছবিকে কীভাবে দেখেন?
কলাভবন ছেড়ে দিয়েছি মানে তো ছবি আঁকা ছেড়ে দিইনি। ছবি আঁকা আর বাউল ধর্ম পালন করা– দুটোই আসলে প্র্যাকটিস। আমি কখনও এগজিবিশন করিনি। আমার আঁকা ছবি মানুষ তেমন দেখেনি, বরং গান অনেকের কাছে পৌঁছে গেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও, গান আমার কাছে সাধনাই। বড় পারফর্মার হব বলে বা বিখ্যাত হব বলে কিন্তু আমি গান গাই না। প্রতিদিন যদি একটু গান নিয়ে না বসতে পারি, গান নিয়ে ভাবতে না পারি, তাহলে মনে হয় আমি একদিন শ্বাস-প্রশ্বাস নিলাম না, খেলাম না। তেমনই গভীরভাবে একটা ছবি নিয়ে ভাবা, একটা ইমেজকে নিয়ে মনের ভেতরে নানা চিন্তা করা– এটাই প্র্যাকটিস। কিন্তু এখন কী হয় জানো, আমাদের মনে হাজার হাজার ইমেজ আসে, আমরা একটার পর একটা দৃশ্যে হেঁটে যাই সারাদিন ধরে। তাই ছবি আঁকার সময়, ছবি নিয়ে ভাবার সময় সব দৃশ্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে একটা দৃশ্যতেই মেতে থাকা– এটা কিন্তু খুবই বড় একটা সাধনা। এটাও একটা ধ্যান। তোমাকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে যতক্ষণ না ছবিটা শেষ হচ্ছে তোমার চিন্তায় ও খাতায়। শেষ করাটা একটা শিক্ষণীয় বিষয়। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটা কথা বলতেন, ছবি কোথায় শুরু করতে হয় জানতে হয়, কোথায় শেষ করতে হয়, সেটাও জানতে হয়। এই কথাটা কিন্তু জীবনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। একটা সময় থামতে হয়, বলতে হয়– এইটুকুই। করেই যাওয়া, করেই যাওয়া গতানুগতিকতা ছাড়া আর কিছু না। পারফর্মারদেরও এটা জানা উচিত। একটা গানই তাঁরা গেয়ে যাচ্ছেন, কারণ সেই গান গেয়ে তিনি ‘নাম’ করেছিলেন। কিন্তু আর্টিস্ট হিসেবে এক্সপ্লোরেশন বন্ধ করলে চলবে না। ঋতু এলে গাছে ফল হয়, ফুল হয়। মানুষের সেই ঋতু পরিবর্তনকে বন্ধ করলে চলবে না। সৃষ্টিই একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। বরং সৃষ্টির চিন্তা, সৃষ্টির দিকে যাত্রাপথটা জরুরি বেশি। আমি এই কথাগুলো সহজে বলতে পারছি তার কারণ হয়তো আমি প্রকৃতির মধ্যে বসে আছি বলে। শহরে থাকলে অন্য নানা প্রেশার আসে, সেটা বুঝি। কিন্তু এটা তো আমাদেরই বেছে নিতে হবে।
(প্রথম পর্ব)
…………………………………
ফলো করুন আমাদের ওয়েবসাইট: রোববার ডিজিটাল
…………………………………