১৯৭৪ সালে আমার কর্মসূত্রে মস্কো যাওয়ার সঙ্গী হয়েছিলেন সপরিবার কবি মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায়, অর্থাৎ মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায়, তাঁর স্ত্রী ঊর্মিলা চট্টোপাধ্যায় ও তাঁদের ছোট ছেলে। তাঁকে মস্কোর কোনও ইনস্টিটিউটে ভর্তি করার ইচ্ছে তাঁদের। ওঁকে কলকাতায় একা রেখে তাঁরা যাবেন না, অথচ ছেলের ভর্তির অনুমতিপত্রটা মস্কো থেকে আসছিল না। এদিকে মঙ্গলাদার ইচ্ছে আমার সঙ্গে যান, যেহেতু আমি রুশভাষাটা জানি, আমি সঙ্গে থাকলে নাকি বল-ভরসা পাওয়া যায়। আমি মঙ্গলাদাকে কাজ চালানো গোছের রুশ ভাষা কিছুটা শিখে নিতে বললাম। মঙ্গলাদা তাতে কোনও গা করলেন না, তার বদলে উনি ছেলেকে আমার কাছে রুশ ভাষার পাঠ নেওয়ার জন্য ভিড়িয়ে দিলেন।
২৩.
প্রগতির পথে যাত্রা
সেদিন ননীদা আমাকে আরও একজনের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। দেখলাম তাঁর সঙ্গে ননীদার ভালো খাতির। তিনি ভারতীয় বিভাগের প্রধান ফিয়োদর ফিয়োদরভিচ আনিউফ্রিয়েভ, এই ভদ্রলোকের সঙ্গে কথাবার্তা বলে মনে হল কিছু আশা-ভরসা আছে। ননীদার তখন ‘প্রগতি’-তে যথেষ্ট প্রভাব ছিল। ননীদা বললেন– ‘তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারো। আমি তো আছি।’
১৯৭২ সালে মস্কোতে যখন দ্বিতীয়বার সেমিনারে যোগ দিতে যাই, সেই সময় আমি অনেকবার ননীদার কাছে গেছি। তখনও গোটা ব্যাপারটার কিছু হয়নি। তাছাড়া আমি জানি যে আরও অনেক প্রার্থী আছেন। তারপর সেমিনার শেষে আমি দেশে ফিরে আসি।
এর মধ্যে বছর গড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোনও খবর নেই। তবে কানাঘুষোয় শোনা গেল বাংলা বিভাগে বেশ কিছু সংখ্যক অনুবাদক নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হওয়ার পর বিভাগটি নাকি সম্প্রসারিত হচ্ছে। বাংলা এখন একটি দেশের রাষ্ট্রভাষা।
১৯৭৩ সালে আমার নির্বাচনের খবরটা ওঁরা কলকাতার সোভিয়েত দূতস্থানের মাধ্যমে জানালেন। ওই একই সময় কলকাতা থেকে কবি মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায়ও নির্বাচিত হলেন। নতুন অনুবাদক গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথমেই যোগ দিয়েছিলেন ঢাকা থেকে হায়াৎ মামুদ, ১৯৭৩ সালে। এছাড়া আমরা আসার কিছু আগেই মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক স্নাতক বিজয় পাল-কে মস্কো থেকে সরাসরি অনুবাদকের কাজে নেওয়া হয়েছিল। কিছুদিন পরে বাংলাদেশ থেকে দ্বিজেন শর্মা এবং খালেদ চৌধুরীও এসে যোগ দিলেন। আমার তো বটেই, এঁদের প্রায় সকলেরই প্রগতিতে আগমন ননীদার হাত ধরে। এরই মাঝখানে আশির দশকে কাজে যোগ দিয়েছিলেন এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক স্নাতক সুবীর মজুমদার। ১৯৮১ সালের কোনও এক সময় কলকাতার সোভিয়েত দূতস্থানের বার্তা বিভাগের কর্মী প্রফুল্ল রায়ও এখানে অনুবাদকের কাজ নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু তাঁকে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন অথবা প্রগতি বা রাদুগার উঠে যাওয়া চোখে দেখতে হয়নি, তার আগেই ১৯৮৮ সালের জুলাই মাসে মস্কোতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।
১৯৭৪ সালে আমার কর্মসূত্রে মস্কো যাওয়ার সঙ্গী হয়েছিলেন সপরিবার কবি মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায়, অর্থাৎ মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায়, তাঁর স্ত্রী ঊর্মিলা চট্টোপাধ্যায় ও তাঁদের ছোট ছেলে। তাঁকে মস্কোর কোনও ইনস্টিটিউটে ভর্তি করার ইচ্ছে তাঁদের। ওঁকে কলকাতায় একা রেখে তাঁরা যাবেন না, অথচ ছেলের ভর্তির অনুমতিপত্রটা মস্কো থেকে আসছিল না। এদিকে মঙ্গলাদার ইচ্ছে আমার সঙ্গে যান, যেহেতু আমি রুশভাষাটা জানি, আমি সঙ্গে থাকলে নাকি বল-ভরসা পাওয়া যায়। আমি মঙ্গলাদাকে কাজ চালানো গোছের রুশ ভাষা কিছুটা শিখে নিতে বললাম। মঙ্গলাদা তাতে কোনও গা করলেন না, তার বদলে উনি ছেলেকে আমার কাছে রুশ ভাষার পাঠ নেওয়ার জন্য ভিড়িয়ে দিলেন। সপ্তাহে দিন দুয়েক সে আমার বাড়ি এসে রুশ ভাষার পাঠ নিতে লাগল। নানা কারণে আমার যাওয়াটাও একটু পিছিয়ে গেল।
……………………………………………………………………………..
সে বছর মস্কোতে গরমও পড়েছিল অস্বাভাবিক রকমের। আমার অব্যবহিত পরেই বাংলাদেশ থেকে যাঁরা কাজে যোগ দিতে এসেছিলেন, অর্থাৎ দ্বিজন শর্মা আর খালেদ চৌধুরী তো অবাক হয়ে বলাবলি করতে লাগলেন, ‘তবে যে লোকে বলে মস্কোর শীতে লোকে নাকি জমে বরফ হয়ে যায়।’ বেশ কয়েক মাস পরে, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় আসতেই, বলাই বাহুল্য মস্কোর শীত কাকে বলে তাঁরা টের পেলেন।
……………………………………………………………………………..
আমি মস্কো রওনা দিলাম একটি মাত্র সুটকেস সম্বল করে, সঙ্গে দু’-একটি হ্যান্ডব্যাগ মাত্র ছিল। কিন্তু মঙ্গলাদাদের লটবহর অনেক। অবশ্য মানুষও তিনজন– তার ওপর গোটা সংসারটাই উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে ওঁরা আলাদা একপ্রস্ত মালও মস্কোতে পাঠিয়ে দিয়েছেন, আমিও আমার কিছু প্রয়োজনীয় অভিধান ওর মধ্যে চালান করে দিয়েছিলাম। ‘আয়রোফ্লোত’-এ তখন একটা ভারি সুবিধা ছিল এই যে হ্যান্ডব্যাগের নাম করে যতটা জিনিস হাতে নেওয়া সম্ভব তাই নিয়ে বিমানে ওঠা যায়। বিমান কর্তৃপক্ষ তাতে বিশেষ কোনও আপত্তি করত না। কিন্তু দিল্লি পর্যন্ত তো ‘এয়ার ইন্ডিয়া’-তে যেতে হবে– সেখানে অতটা ছাড় পাওয়া সম্ভব ছিল না, তাহলেও ওঁরা কী করে যেন সেটা ম্যানেজ করে নিলেন। দিল্লি থেকে ‘আয়রোফ্লোত’-এ বলাই বাহুল্য কোনও ঝামেলা হল না, মস্কোর শেরেমিয়েতেভো বিমানবন্দরে নেমে ইমিগ্রেশন কন্ট্রোল নির্বিঘ্নে পার হওয়া গেল, কোনও কাস্টমস চেকিং-ই হল না। দেখতে পাচ্ছি বাইরে বেশ কয়েকজন রুশি মহিলা, সেই সঙ্গে ননীদা আর সভেত্লানাও আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন। এমন সময় মাল গুনতে গিয়ে মঙ্গলাদাদের খেয়াল হল একটা হ্যান্ডব্যাগ তাঁরা প্লেনে ফেলে এসেছেন। খালাস করার জন্য ছুটলাম বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে। তারা বলল, আজ উদ্ধার করা সম্ভব নয়, প্লেন সাইডিং-এ চলে গেছে, তাছাড়া তালা চাবি বন্ধ। অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর ‘দ্রুজবা’ বা ‘মৈত্রী’র খাতিরে হোক বা যে কোনও কারণেই হোক, ঘণ্টা দেড়েক বাদে ব্যাগটা উদ্ধার করা গেল।
বেরিয়ে আসতে দেখলাম বাইরে মেঘের ঘনঘটা, টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে, কিন্তু আবহাওয়া বেশ উষ্ণ। আমার হাতে একখানা মাত্র সুটকেস দেখে ‘প্রগতি’র কর্মীরা হাসতে হাসতে জানতে চাইলেন আমিও আবার কোনও জিনিস ভুলে ফেলে রেখে এসেছি কি না।
সে বছর মস্কোতে গরমও পড়েছিল অস্বাভাবিক রকমের। আমার অব্যবহিত পরেই বাংলাদেশ থেকে যাঁরা কাজে যোগ দিতে এসেছিলেন, অর্থাৎ দ্বিজন শর্মা আর খালেদ চৌধুরী তো অবাক হয়ে বলাবলি করতে লাগলেন, ‘তবে যে লোকে বলে মস্কোর শীতে লোকে নাকি জমে বরফ হয়ে যায়।’ বেশ কয়েক মাস পরে, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় আসতেই, বলাই বাহুল্য মস্কোর শীত কাকে বলে তাঁরা টের পেলেন।
একটা গাড়ি আমাকে নিয়ে চলল মস্কোর পশ্চিমপ্রান্তে আমার নতুন ডেরায়। সঙ্গে ছিলেন সভেত্লানা আর প্রগতির বাংলা বিভাগের সম্পাদিকা ভেরা নিকোলইয়েভনা। তাঁরা আমাকে বললেন আমার এই বাসস্থানটি অস্থায়ী– এটা আসলে প্রগতির একটা গেস্ট হাউস, পরে সুবিধামতো জায়গায় আমাকে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। আমি একা মানুষ। তাই আমার জন্য এই ব্যবস্থা। তবে এখানে টেলিভিশন এবং ফ্রিজ আছে– সেগুলি এই ঋতুতে না কিনলেও চলবে।
গেস্ট হাউস বলতে খ্রুশশ্যোভ আমলে তৈরি পাঁচতলা দালানের দোতলায় দু’-কামরার একটা ফ্ল্যাট। বেশ প্রশস্ত। আসবাবপত্র দিয়ে মোটামুটি সাজানো, টেলিফোনও আছে। দক্ষিণ খোলা রান্নাঘর সংলগ্ন দিব্যি একটা ব্যালকনিও আছে। প্রয়োজনীয় বাসনপত্রও আছে। শ্রমিক মহল্লা এবং শ্রমিক শ্রেণির শক্ত ঘাঁটি বলে এলাকাটার এককালে নামডাক ছিল। এলাকার নাম অনুসারে আমার বাসার কাছাকাছি মেট্রো স্টেশনটির নামও ‘ক্রান্সপ্রিয়েসনিনস্কায়া’। ১৯০৫ সালে এই অঞ্চলে শ্রমিক শ্রেণির একটা বড় রকমের অভ্যুত্থান ঘটেছিল, সে জন্য কাছের একটি মেট্রো স্টেশনের নাম ‘১৯০৫ সাল’, আবার তারই কাছাকাছি আরেকটির নাম ‘ব্যারিকেড’। মস্কোর চিড়িয়াখানা আর প্ল্যানেটেরিয়ামও এই পাড়াতেই, একটু হাঁটাপথেই একটা বেশ বড়সড় বাজার আছে– ‘তিশিনস্কি রিনক’– ছুরি কাঁচি থেকে শুরু করে হেন জিনিস নেই পাওয়া যায় না।
আমাকে ওরা ঘরের চাবি হাতে ধরিয়ে দিলেন, বাড়ির ঠিকানা দিয়ে দিলেন এবং প্রয়োজনীয় আরও সব ব্যবস্থাও বুঝিয়ে দিলেন। সভেত্লানা ওখান থেকে সরাসরি ওঁদের বাড়িতে টেনে নিয়ে গেলেন।
পুরনো মহল্লা, মেট্রো থেকে বেরিয়ে নতুন বাসায় যেতে হয় বেশ কয়েকবার ডাইনে-বাঁয়ে ঘুরে কয়েকটা গলিঘুঁজি পার হয়ে। গুলিয়ে ফেলার সম্ভাবনা প্রবল, কিন্তু কীভাবে কোন পথ দিয়ে যাওয়া সুবিধেজনক, ওঁরা দুই মহিলা আমাকে বুঝিয়ে দিলেন। তখনকার মতো দিব্যি বুঝেও গেলাম। মঙ্গলাদাদের ফ্ল্যাটটা শহরের একটা নতুন এলাকায়, শহরের একেবারে শেষ দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে– কাছাকাছি মেট্রো স্টেশনের নাম ‘ইউগো-জাপাদনায়া’– দক্ষিণ-পশ্চিম। ছয়ের দশকে আমি যখন মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসি, তখন মেট্রো স্টেশন তো দূরের কথা, এসব জায়গায় কোনও আবাসনই ছিল না। বিশাল বন ছিল, গ্রীষ্মকালে আমরা মাশরুম কুড়োতে আসতাম। অনেক সময় মাশরুম কুড়োতে কুড়োতে পথ হারিয়ে আমরা একেবারে গ্রামে গিয়ে পড়েছি, গ্রামের মুদি দোকান থেকে রুটি কিনে তাই খেতে খেতে ঘরে ফিরেছি। এখন সেখানে বিশাল ২২তলা দালান মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বেশিরভাগই বাসভবন, যেগুলির মধ্যে বিদেশি কূটনীতিকদের আবাসনও আছে। সামনে দিয়ে চলে গেছে শহরের দীর্ঘতম প্রধান সড়ক ‘লেনিনস্কি প্রসপেকত’, কাছেই ‘প্যাট্রিস লুম্বা গণমৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়’, বিশ্ববিদ্যালয়ের সারি সারি হোটেল।
ননীদার বাড়িতে পানভোজন ও গল্পগুজব করতে করতে কখন যে বেলা গড়িয়ে রাত হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। গ্রীষ্মকালের রাত– এই কিছুক্ষণ আগেও তো দিব্যি খটখটে দিনের আলো ছিল। এখন তাকিয়ে দেখি ঘড়ির কাঁটা রাত এগারোটা ছাড়িয়ে গেছে। এবারে উঠতে হয়। মেট্রো স্টেশনে তো নামলাম। কিন্তু এবারেই শুরু হয়ে গেল যত গোলমাল। দেখলাম তখন যা বুঝেছি বলে মনে হয়েছিল আসলে তার কিছুই বুঝতে পারিনি। রাস্তাটা খুঁজে বের করলাম অনেক কষ্টে, কিন্তু নম্বর কিছুতেই মেলাতে পারছি না। এদিকে রাত সাড়ে বারোটা বাজতে চলল। রাস্তাঘাটে তেমন কাউকে দেখতেও পাচ্ছি না যে জিজ্ঞেস করব, যাও বা দু’-একজনকে দেখতে পাচ্ছি তাদের বেশিরভাগই মাতাল। ভয় হচ্ছিল, একে বিদেশি, তার ওপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টও সেদিন হাতে পাইনি। সামনে একটা পুলিশ ফাঁড়ি পড়ল– চোখ-কান বুজে সেখানে ঢুকে পড়ে আমার বাসস্থানের সঠিক অবস্থানটা জানতে চাইলাম।
ডিউটি-রত পুলিশকর্মীটি কেমন যেন ঝিমমারা, কিন্তু বাঁচোয়া এই যে সচরাচর যেমন হয় সেভাবে স্যালুট ঠুকে ‘দকুমেন্ত?’ বলে হাঁক দিয়ে আমার কাছ থেকে কোনও ডকুমেন্ট দেখতে চাইল না। (অনেক সময় দেখেছি ওরা যেন মাটি ফুঁড়ে উদয় হয়ে ‘ডকুমেন্ট’ বা পরিচয়পত্র দেখতে চায়– বিশেষত বিদেশি হলে) তন্দ্রার কারণেই হোক বা অন্য যে কোনও কারণেই হোক জড়িত কণ্ঠে আমাকে বাড়ির হদিশ বাতলাল। কাছেপিঠেই কোথাও বলে মনে হল। কিন্তু কীসের কী? দুটো গলি পার হতেই দেখলাম যেখানে ছিলাম আবার সেখানেই এসে পড়েছি। ঘুরতে ঘুরতে মনে হল যেন আকাশ ফরসা হয়ে আসছে। রাত প্রায় দেড়টা– গ্রীষ্মকাল, তাই তখনই ভোরের আলো ফুটি ফুটি করছে। এবার মরিয়া হয়ে আবারও সেই পুলিশ ফাঁড়িরই শরণাপন্ন হলাম। লোকটা কী জানি কী মনে হতে কাগজ-কলমে এঁকে বুঝিয়ে দিল। এবারে আর ভুল হল না– দেখলাম মিনিট পাঁচেকের দূরত্বের মধ্যে এতক্ষণ ঘোরাঘুরি করছিলাম। ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল।
…পড়ুন রুশকথা-র অন্যান্য পর্ব…
পর্ব ২২। ‘প্রগতি’-তে বইপুথি নির্বাচনের ব্যাপারে আমার সঙ্গে প্রায়ই খিটিমিটি বেধে যেত
পর্ব ২১। সোভিয়েতে অনুবাদকরা যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করত, সে দেশের কম মানুষই তা পারত
পর্ব ২০। প্রগতি-র বাংলা বিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে ননীদাই শেষ কথা ছিলেন
পর্ব ১৯। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় নাকি খুব ভালো রুশভাষা জানতেন, প্রমথনাথ বিশী সাক্ষী
পর্ব ১৮। লেডি রাণু মুখার্জিকে বাড়ি গিয়ে রুশ ভাষা শেখানোর দায়িত্ব পড়েছিল আমার ওপর
পর্ব ১৭। একদিন হঠাৎ সুভাষদা আমাদের বাড়ি এসে উপস্থিত ফয়েজ আহমেদ ফয়েজকে নিয়ে
পর্ব ১৬। মুখের সেই পরিচিত হাসিটা না থাকলে কীসের সুভাষ মুখোপাধ্যায়!
পর্ব ১৫। রুশ ভাষা থেকেই সকলে অনুবাদ করতেন, এটা মিথ
পর্ব ১৪। মস্কোয় ননীদাকে দেখে মনে হয়েছিল কোনও বিদেশি, ভারতীয় নয়
পর্ব ১৩। যিনি কিংবদন্তি লেখক হতে পারতেন, তিনি হয়ে গেলেন কিংবদন্তি অনুবাদক
পর্ব ১২। ‘প্রগতি’ ও ‘রাদুগা’র অধঃপতনের বীজ কি গঠনপ্রকৃতির মধ্যেই নিহিত ছিল?
পর্ব ১১। সমর সেনকে দিয়ে কি রুশ কাব্যসংকলন অনুবাদ করানো যেত না?
পর্ব ১০। সমর সেনের মহুয়ার দেশ থেকে সোভিয়েত দেশে যাত্রা
পর্ব ৯। মস্কোয় অনুবাদচর্চার যখন রমরমা, ঠিক তখনই ঘটে গেল আকস্মিক অঘটন
পর্ব ৮: একজন কথা রেখেছিলেন, কিন্তু অনেকেই রাখেননি
পর্ব ৭: লেনিনকে তাঁর নিজের দেশের অনেকে ‘জার্মান চর’ বলেও অভিহিত করত
পর্ব ৬: যে-পতাকা বিজয়গর্বে রাইখস্টাগের মাথায় উড়েছিল, তা আজ ক্রেমলিনের মাথা থেকে নামানো হবে
পর্ব ৫: কোনটা বিপ্লব, কোনটা অভ্যুত্থান– দেশের মানুষ আজও তা স্থির করতে পারছে না
পর্ব ৪: আমার সাদা-কালোর স্বপ্নের মধ্যে ছিল সোভিয়েত দেশ
পর্ব ৩: ক্রেমলিনে যে বছর লেনিনের মূর্তি স্থাপিত হয়, সে বছরই ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার সূচনাকাল
পর্ব ২: যে দেশে সূর্য অস্ত যায় না– আজও যায় না
পর্ব ১: এক প্রত্যক্ষদর্শীর চোখে রাশিয়ার খণ্ডচিত্র ও অতীতে উঁকিঝুঁকি