এখানে সর্বত্র পরাজিত অথচ আপাত উচ্চাসনে স্থিত মানুষটা নিজের মাথার ফ্রন্ট ও রিয়ার প্যানেল দেখতে পায় একসঙ্গে। শিল্পগেঁড়ে লোকজনের কাছে পিকাসোর কিউবিজমের বাংলা সত্যটি একবার ঝালিয়ে নিতে অনুরোধ করি। নিজের দ্বৈত দৃশ্যকে অদ্বৈত সত্তা ফিলোজফিতে ডুবিয়ে ভাবলে উন্মোচিত হবে পরের স্তর। যা আরও গভীর। প্রথম আয়নায় রিয়ার ভিউ মিররের মধ্যে রয়েছে প্রথমটিও। অর্থাৎ আপনিও। পার্সপেকটিভের নিয়ম অনুযায়ী, কিছুটা খর্ব। সেখানে আর একটি রিয়ার। তার মধ্যে যুক্তফ্রন্ট। মুক্ত রিয়ার।
আলোকচিত্র: ব্রতীন কুণ্ডু
ভবানীপুরের একটি বিশেষ বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় এখনও বয়স্ক কেউ কেউ তাঁর সঙ্গীকে আঙুল তুলে দেখান। উত্তমকুমারের আদি বাড়ি। নায়ক হয়ে ওঠার পর ওঁর আস্তানা বদলে গিয়েছিল। জীবনটাও। গল্পটা তাঁর পুরনো পাড়া থেকে শুরু। এই রাস্তায় অনেককেই স্মৃতিচারণ করতে শোনা যায় তাঁদের পাড়াতুতো ঘনিষ্ঠতার নিরিখে। ‘উত্তম একদম সিম্পল ছিল, রেগুলার হেঁটে রাস্তা পেরত।’ ‘আসত না, তা নয়। উত্তমদাকে পরের দিকে দেখলে খারাপই লাগত।’
এসবের সত্যাসত্য কেউ বিচার করে না। স্বপ্নজগতের দেবতা, পাবলিক স্বপ্নজাল বুনলে দোষ কীসের? ওই বাড়ির আধা কিলোমিটার ব্যাসার্ধে অনেকগুলো সেলুন ছিল। এখনও আছে। সেখানেও একই ব্যাপার। প্রত্যেকটির মৃদু ক্লেইম– ওখানেই গুরু চুল কাটতেন। এই দাবি নিয়েও কোনও চুলোচুলি নেই। মহানায়ক এখন সবার। ওঁর একটি ট্রেডমার্ক ‘ইউ-কাট-হেয়ার স্টাইল’-এর কথা শোনা যায়। সেটি এক ঝলক দেখতে পাওয়া যাবে সত্যজিতের নায়কের টাইটেল সিনে। তবে পাড়ার আটপৌরে সেলুনে চুল কেটে উত্তমকুমার বাড়ি ফিরছেন– এই দৃশ্যকল্পটা মান্যতা পেত যদি ওঁর এক্সক্লুসিভ নাপিতের একটা বাইট বা ক্লিপ পাওয়া যেত। মুশকিল হল, সেখানেও অনেক নাম। সকলেই প্রয়াত।
আধা সি-থ্রু কাচ, নিয়ন্ত্রিত ফিনফিনে তাপ, স্টুডিও-সম আলো, বাবুইবাসা-ফুলঝাড়ু-জাম্বু কাট খোকাদের ছবি। আধুনিক কেশ স্যালোঁদের কথা বলছি না। খুঁজছি এমন কিছু সেলুন, যা রয়ে গিয়েছে শহরের পুরনো পাড়ায় পাড়ায়। উত্তম চরিত্রের মতোই তারা রিট্রো, এগজটিক। সাইনবোর্ডে হাতে রং করা বা কাঠের অক্ষর উঠে থাকা নাম। পোস্ট কলোনিয়াল বাবু রোম্যান্স। জেন্টলম্যানস সেলুন। নিউ মডার্ন সেলুন। রাখহরি হেয়ার ড্রেসার-ও আছে। হিন্দি নামের বালাই নেই। বিউটি পার্লার নয়, তাই মেয়েদের ব্যাপার নেই।
এবারে ভেতরের ইনডোর। মলিন রঙিন কাচের ফ্রেম বসানো সুইংগিং হাফ দরজা পেরলে সাতের দশকের আইভরি মার্চেন্টিয় আলো। নকশালের সাক্ষী সবুজ বা নীল দেওয়ালে আলটপকা নেমে আসা প্রাচীন তারের শিকড়বাকড়। খচাৎ কালো প্লাগ, সুইচ। উত্তম, সৌমিত্র, অমিতাভ বা মিঠুন নয়। বাঁধানো নেতাজি। নিয়মিত জবার মালায় কালী। শ্মশ্রুসমৃদ্ধ রামকৃষ্ণ, রবীন্দ্রনাথ সংখ্যায় কম। কোথাও হয়তো কড়িকাঠ আড়ালে চলে গিয়েছে ফলস সিলিং-এর ওপরে। সুদিন এলে এসি হবে এই আশায়। এখানে তাড়াহুড়োর ব্যাপার নেই। কয়েকটি লয়্যাল কাস্টমার। চাকা ঘুরিয়ে লক রিলিজ করার পর উঁচু চেয়ারে বসে, সামনে ঘুরে, মাথা ছেড়ে দিয়ে বসলে নিকটতম ছোট পাখা চালু হয়ে যাবে। চুল কাটা, দাড়ি, না কি দুটোই, সেটা জানার আগে পরিষ্কার সাদা কাপড় দিয়ে প্যাক করে, মাথাটুকু উন্মুক্ত রেখে অপেক্ষা করা হবে প্রয়োজনটি জানতে। প্রায় সবাই চেনা। প্রশ্নের দরকার পড়ে না। একটি নাতি দীর্ঘ সার্ভিস কার্ড। হেয়ার কাট। হেয়ার কাট উইথ শ্যাম্পু। হেয়ার কাট উইথ শ্যাম্পু উইথ ম্যাসাজ। হেয়ার ডাইং। ব্ল্যাক/ব্রাউন। নতুন সংযোজন– ফেসিয়াল। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে চেয়ে সেঁটে বসা কিছু নয়া শব্দ। মেসি। অর্গ্যানাইজড ক্যাওস। এসব আজকের বাইক চড়ে ঘোরা ময়ূরবাহনরা বোঝে।
সামনের হাফ টেবিলে চিরুনি, ব্রাশ, কাঁচি, খুর, ক্লিপ, ফিটকিরি, ঘন নীল মিল্ক অফ ম্যাগনেসিয়ার বোতলে ডেটল জল, কেস ভর্তি ফেস পাউডার। পাফ। যার মূল কৌটো এখন অবধি কেউ দ্যাখেনি। এতে দূরদেশি কোন মাতাল ল্যাভেন্ডারের গন্ধ– কে জানে। থাকবেই থাকবে ওল্ড স্পাইসের মার্কামারা লাল মাথা কন্টেনার (খালি হতে পারে)। ড্রয়ার থেকে এর কয়েকটি বের করা হবে, কাজ হয়ে গেলে ফের ঢুকে যাবে। সামনে অবশ্যই মেলা থাকবে বাংলা খবরের কাগজ। বেশ কয়েক দিনের পুরনো হতে পারে। নিজের বাড়িতে কোন কাগজ আসবে, তা সাধারণত নির্ধারিত হয় কাগজেরই টুপি পরানো রাজনৈতিক অচেতনতা থেকে। সেলুনের কাস্টমার কিন্তু যেচে খোঁজেন অন্য শিবিরের কাগজ। সেলুনের সিংহাসনে বসে অপর পক্ষের হুংকার বার্তায় মথিত রং করা সংবাদে স্যাডিস্টিক আনন্দ পান বহু মানুষ। শ্রেণিশত্রুদের কথা পড়া হয়ে গেলে স্বভাবত নিম্নগামী চোখ নামতে শুরু করে শ্রেণিবদ্ধ বিজ্ঞাপনে। কলমে কলমে পঠনসুখ, জুরাসিক তথ্যের অমোঘ মলমে। খুন, রেপ, দাঙ্গা, যুদ্ধ– কেউ পড়েন না। ঘটনার আগেই তা দেখা হয়ে যায় ডিজিটাল স্ক্রিনে। এসব ঘটে, নাউ ইউ নো, ওইসব সেলুনে। সেখানে কেউ কেউ চাদরবন্দি শরীরের মধ্যে থেকে হাত বের করে ফোন স্ক্রোল করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বুঝতে হবে, ওই কাস্টমারের সর্বশরীর তখন কেশিয়ারের অধীন। নড়াচড়া করলে তাঁর প্রিসিশন কর্মে বাধা পড়তে পারে। দেখা গিয়েছে, কেউ হয়তো মাথা ঝুঁকিয়ে প্রায় প্রি-পর্ন রিল দেখছেন, অথচ অন্যের কাজ চলছে ব্রহ্মতালু সংলগ্ন মালভূমিতে। মাথা ধাক্কা দিয়ে ঘাড়ের ওপর তা সঠিক পজিশনে রিসেট করে দেওয়া হবে নির্মম হাতে, নির্বিকার মুখে। এটাই ক্লাসিক বাঙালি সেলুনের সনাতন সংস্কৃতি।
সবার নিজের পছন্দের লোক থাকে। ওই কারিগর চেনেন প্রত্যেক খোপড়ির চরিত্র। ইন্টারনাল। এক্সটারনাল। জানেন তার মালিকের কমফোর্ট জোনের ডিটেলস, স্নায়ু বাই স্নায়ু।। চুল কীভাবে কাটলে মুখোশটা চৌখস দেখাবে, এর জন্য গার্ডেনিং স্কিল চাই। পরের স্টেপ বিশ্বাস অর্জন। এটি পেরতে পারলে মাথা বিকিয়ে যায় কাস্টমারের। শুধু হাত নয়, জরুরি হয়ে ওঠে ঘোড়েল মন কি বাত ডিকোড করার সেন্স। চুল কাটা, দাড়ি বানানো হয়ে যায় গৌণ। খুচ খুচ খর খর শব্দের সাউন্ডট্র্যাক বদলে যায় মুখ নিঃসৃত বিভিন্ন বাণী প্রক্ষেপণে। প্রশ্নের প্রয়োজন হয় না, এটিএমের মতো মতামতের টুকরো টুকরো অদৃশ্য প্রিন্টেড কাগজ বেরতে থাকে ক্রমাগত। এত বছর ধরে ইন্ডিয়া কেন পাকিস্তানকে বারবার যুদ্ধ করিয়ে মারছে, কান পাতলে শোনা যাবে সেলুনঘরের নিউজরুমে। সচিনের পাশে বিরাটের কোলাহল কেন শিশুকান্না মাত্র থেকে শুরু করে পাড়ার ট্যাঁপ বিশু কীভাবে বডি বিল্ডিং ছেড়ে বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন, প্রোমোটারিতে নোবেল পেল– সব শোনা যাবে একটু কান পাতলে। ধর্ম ও স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে একটি কথাও বলে না কেউ। মালিকরাও সতর্ক থাকেন। মূলত কেশত্যাগের আশ্রম সেলুন চালাতে গেলে এই পেশাদারি পোশাকি ফেক নিরপেক্ষতা প্রদর্শন অত্যন্ত জরুরি। রাম-রহিমের প্রসঙ্গ নো-নো, এটাই ডেকোরাম। নানারকম লোক আসে যে। ঋষভ, কাসভ। তবুও, কে যে আসলে কী বুঝতে চাইলে কিছু সূক্ষ্ম ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। সেলুনের মাইক্রো টিভি এই ব্যাপারে জরুরি সাপোর্ট। সাধারণত সেখানে তামাশা ডিবেটগুলো চালু থাকে। রাজনৈতিক দলের মুখপত্রদের লড়িয়ে দেন গ্রীষ্ম-বর্ষাতেও কোটপ্যান্ট পরা এক ঝানু সঞ্চালক। সবটাই সাঁট করা, সবাই জানে, তাও কথার বোমাবাজি চলতে থাকে পরস্পরের আয়রন ডোম ভেদ করে। উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে তোলেন হাস্যময় নারদ। এই সময় কাস্টমারদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজটা নজরে রাখতে হয়। তখন হয়তো তাদের শরীরের চূড়োয় ঘুরছে অভিজ্ঞ হাত। হাতে ধারালো অস্ত্র। মুখ ঘোরানোর উপায় নেই। কোটর থেকে বেরিয়ে চোখ টিভিমুখী হতে চাইছে। সেদিকের জান্তব কান-ও মোড় ঘুরে স্ক্রিনের দিকে। কে হাসলেন, কে ফসিল হয়ে গেলেন দেখলেই স্পষ্ট হয় কে কোন পুষ্পের অনুরাগী। এছাড়া সংখ্যালঘু যাঁরা, যাঁরা পুষ্পবনে নেই, আছেন অন্তরে, তাঁরা আর টিভি দেখেন না। সেলুনের মহিমা হল, কেউ সেখানে শ্বেতবস্ত্রের ফাঁসে কণ্ঠরুদ্ধ অবস্থায় গলা তুলে কথা বলেন না। কাউকে অতি উত্তেজিত হয়ে পড়তে দেখলে মুখে একটু ঠান্ডা জল স্প্রে করে দেওয়া হয়। তাতেই কাজ হয়।
বিরলকেশ মানুষরাও আসেন চুল কাটতে। সময় বেশি লাগে। এর জন্য অতিরিক্ত মূল্য চোকাতে হয়, তা নয়। আসলে কেশের অনুসন্ধান প্রক্রিয়াতেও অনেকটা সময় যায়। পাকাচুলের লোকজনরা অনেকে বার্ধক্যজনিত ভিস্যুয়াল ধূসরতায় বিপন্ন বোধ করেন। তাঁরা কলপ করান। টপ লেভেলে লিভ অ্যান্ড লেট ডাই মন্ত্রে বদলে ফেলেন আগ্রাসী বয়সের ভাঙাচোরা ছবিটাকে। অনেকেই আবার মাথা দেন না। সুপার রসিক কেউ কেউ নতুন খেলা খেলেন। যেমন ইন্দিরা গান্ধী, সুনীল গাঙ্গুলি। ইন্ডিয়া-পাকিস্তান, পূর্ব-পশ্চিম কনসেপ্ট। সেলুনে এই কাজটি করতে দেখলে দেখলে বোঝা যায় চুল রাঙানোর কাজটি সাবধানতা দাবি করে। ব্যাপারটা হল, সার দিলে তা চলে যায় মাটির নিচে, গাছের গোড়ায়। এখানে তা নয়। কেশ কার্পেটের সীমান্ত ছাড়িয়ে মাথার জমিতে রঙের বিস্তার ন্যূনতম রাখাটাই হল আসল চ্যালেঞ্জ। সে না হয় সামলানো গেল। তারপর? দ্রুত বা মন্থর, চুলের বৃদ্ধি তো চলতেই থাকে। কিছুদিন পরে মাথা ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে পাট সাদা নতুন ব্যাচ। নবকলেবরে। বড় করুণ সে দৃশ্য। চুলো এবং টেকো– দুই পক্ষই ওটি দেখে খুব হাসাহাসি করে। এসব, মানে পরেরটি অন্তত, ঠিক নয়। আর একটি সার্ভিস হল ফেসিয়াল। এর জন্য বহু মানুষ উন্মুখ হয়ে থাকেন। এর প্রলেপে মলিনতার (বাহ্যিক) আস্তরণ মুছে গিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে বদন চন্দ্রিলসম উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। প্রাচীন গ্রিক ভাবধারা অনুযায়ী, প্রকৃতির নিজস্ব প্রসাধন অ্যালোভেরা নাকি এর মূল উপাদান। একসঙ্গে কলপ ও ফেসিয়ালে নিমগ্ন অপেক্ষারত মানুষটিকে একযোগে সাদা ভূত ও কালো ভূত মনে হতে পারে স্রেফ চুল কেটে, জাস্ট কেটে পড়া কঞ্জুস লোকগুলোর।
হেয়ার ড্রেসিং হাউস বা সেলুনের সিগনেচার আকর্ষণ হল আয়না। স্রেফ কাজের মান বা অগ্রগতি নজরে রাখা নয়, বদলে যাওয়া আপন সত্তাকে আবিষ্কার করার ক্ষেত্রে এটি অপরিহার্য। এক রাউন্ড প্রাথমিক ও নিরাপদ কাটের পর মাথার পিছনে আর একটি আয়না হাজির করে অ্যাপ্রুভাল চাওয়া হয়। সামনের আয়নায় তার প্রতিবিম্ব দেখে বিষয়টা বুঝতে হয়। দেখে, দরকারে, সামান্য আগ্রাসনের অনুমতিও দেওয়া হয়ে থাকে। যেসব সেলুনে দু’-সার বসার ব্যবস্থা, ব্যাক টু ব্যাক, সেখানে এটির দরকার পড়ে না। সেখানে দুই দেওয়ালেই থাকে আয়না। চুল-দাড়ির আসলে অবান্তর সম্পাদনার চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের অবতারণা হতে থাকে আয়নাতে। নো এস্কেপ। এটি আমার বোধে দুনিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ অপটিক্যাল ইলিউশন বা চোখের ভুলজনিত বিনোদন। এখানে সর্বত্র পরাজিত অথচ আপাত উচ্চাসনে স্থিত মানুষটা নিজের মাথার ফ্রন্ট ও রিয়ার প্যানেল দেখতে পায় একসঙ্গে। শিল্পগেঁড়ে লোকজনের কাছে পিকাসোর কিউবিজমের বাংলা সত্যটি একবার ঝালিয়ে নিতে অনুরোধ করি। নিজের দ্বৈত দৃশ্যকে অদ্বৈত সত্তা ফিলোজফিতে ডুবিয়ে ভাবলে উন্মোচিত হবে পরের স্তর। যা আরও গভীর। প্রথম আয়নায় রিয়ার ভিউ মিররের মধ্যে রয়েছে প্রথমটিও। অর্থাৎ আপনিও। পার্সপেকটিভের নিয়ম অনুযায়ী, কিছুটা খর্ব। সেখানে আর একটি রিয়ার। তার মধ্যে যুক্তফ্রন্ট। মুক্ত রিয়ার। ফ্রেমবন্দি ক্রমহ্রস্বমান জীবন স্কোপের সঙ্গে সঙ্গে অপ্রতিরোধ্য এক পশ্চাৎগতিতে আপনি ছোট থেকে ছোটতর হয়ে যাচ্ছেন। ফ্রন্ট। রিয়ার। ফ্রন্ট। রিয়ার। হারিয়ে যাচ্ছে আপনার আইডেন্টিটি। নিজেকে আর খুঁজে পাচ্ছেন না। ম্যাসাজ চলছে যে।
এদিকে ব্রড ডে লাইটে আপনি অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছেন, গুম হয়ে যাচ্ছেন আয়না ঘরের রহস্যময় কুঠুরিতে।
………………………
ফলো করুন আমাদের ওয়েবসাইট: রোববার.ইন
………………………
কখনও ইশারায়, চিরকুটে অন্য বন্দিদের সঙ্গে কথা বলে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে, কখনও পুলিশি নির্যাতনের আহত কমরেডকে নজরদারি এড়িয়ে গার্ডদের ফাঁকি দিয়ে কোনও কমরেডের মন ভালো করতে রুটিতে কিছুটা চিনি মাখিয়ে চমকে দেওয়ার মাধ্যমে, তো কখনও একসঙ্গে বসে সুখ দুঃখ বৃষ্টি বজ্রপাত ভাগ করে এই নিরন্তর অপেক্ষা কাটানোর মাধ্যমে, প্রতিদিন নানাভাবে সংগঠিত হতে থাকে প্রতিরোধ, প্রতিবাদ।