হাসি যে একটা বেনিয়মের শক্তি হয়ে উঠতে পারে, সেইটে রেনেসাঁস-উত্তর ইউরোপে এক ধরনের পাগলামি বলে দেগে দেওয়া হয়। সতেরো শতাব্দী থেকে হাসিকে অ্যাসাইলামে বন্দি করা হয়। ক্ষমতা গম্ভীরভাবে থাকতে চায়। কে না জানে গাম্ভীর্য নির্বোধের মুখোশ।
শেষ দৃশ্যে গুলাবের হাত ধরে বিজয় যে বাইরে বেরিয়ে যায়, পরিবার, রাষ্ট্র, সমাজ সব কিছুর শৃঙ্খল ছিঁড়ে, সেও কি প্লাতোর চেন ছিঁড়ে বাস্তবতার সত্যে বেরিয়ে আসা মানুষ নয়? আবরার আলভির এই শেষ না-পসন্দ ছিল। কিন্তু গুরুদত্ত তৃপ্ত ছিলেন। বলেছিলেন, না, এটাই শেষ। এই চলে যাওয়াটাই শেষ।
‘পিয়াসা’ ছবির সূত্রপাতের দৃশ্যটি যদি আমরা দেখি তবে শাগালের বিখ্যাত ‘কবির বিশ্রাম’ ছবিটির কথা মনে পড়ে যাবে। টাইটেল কার্ড একটা শালুক-পদ্মে ঢাকা পুকুরে পড়লেও, ছবির চলমানতা শুরু হয় অদ্ভুত এক ফ্রেমে। যেখানে বিজয়, আমাদের কবি, শুয়ে আছেন প্রকৃতির নিচে।
কমবয়সি ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অনেক সময় আমার মনে হচ্ছিল– এরা যখন একা, এক্কেবারে একা নিজের কথা লিখতে বলতে চাইছে, এদের সদ্য পেরিয়ে আসা সময়টাকেই মনে হচ্ছে একমাত্র আশ্রয়। বর্তমান বা ভবিষ্যতের স্বপ্ন নয়, প্রতিদিনের নতুন অভিজ্ঞতা নয়, গতদিনের কিছু মায়া জড়িয়ে যাচ্ছে তাদের কথায়।
রবীন্দ্রনাথ রামকিংকর-কে বলেছিলেন আশ্রমের ভেতরটা তুই এইরকম কাজ দিয়ে ভরে দে। আর কলকাতার পথঘাটের মূর্তি দেখে রামকিংকরের মনে হয়েছিল মেরে-কেটে খান তিনেক। বাকি আবর্জনা।
কেন ভালো করে কথা ভাবা যায় না? আটকায় কীসে? সেই ১৯৪৬-৪৭-এর আপতকাল আর ২০২৫-এর শুভক্ষণ কি এক হল?
লেখা কখনও যদি বাঁচার একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়ায়? সেই লেখা লিখতে পড়তে ইচ্ছে হয়। ভালো-খারাপ নয়, সেখানে বেঁচে থাকার একটা ইমারজেন্সি টের পাওয়া যায়।
পৃথিবীর তাবড় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা বিশ্বকর্মার ধার ধারে না। শুধু আমাদের দেশ ধারে অস্ত্র আর বিমান কেনে।
সুভাষ মুখোপাধ্যায় চেয়েছিলেন কথাগুলো নিজের পায়ে দাঁড়াক, মানে হাঁটতে শিখুক। আর এ-তো সবারই জানা, সারা দিন সারা দুনিয়া জুড়ে প্রতি মুহূর্তে যা জন্মাচ্ছে তার নাম ‘কথা’। এমনকী নৈঃশব্দ্যও একরকম কথা। ‘সেইরকম ভাবেও কি আমরা কথা বলতে পারি না, সুমন্ত?’ পারি না-পারি শিখতে দোষটা কোথায়!
আমাদের কবি, আমাদের নাট্যকর্মী, আমাদের লেখক, আমাদের অভিনেতা– সবাই যে যেখানে আছে, রাস্তায় যার সঙ্গেই দেখা হবে, বলে দেবে, আজও বেঁচে আছে।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved