কে বলে দলিতের নির্মাণ সাহিত্য পদবাচ্য নয়? তথাকথিত ক্ষমতার জাঁতাকলে নিষ্পেষিত আত্মের বেদনার ভাষ্যও কিছু সুন্দর কথার জন্ম দিতে পারে।
গোবলয়ে যেমন কন্যা-সন্তানদের আজকাল খবর অনুযায়ী স্রেফ গলা টিপে খুন করা হয় না ডিসেন্সির খাতিরে, তেমনটা এখানকার রীতি নয়। বাপ, দাদা, ভাই ডিম তো বটেই, এমনকী মাংসও খাবে আর বোনের কপালে শুকনো রুটি-সবজি, অতটা পৌরুষ প্রদর্শন প্রায় কোনও জেলাতেই দেখিনি অদ্যাবধি।
মুশতাকের গল্পের মহিলারা খুব কম জায়গায় ধর্মের নামে শোষিত হয়েছে। তালাক, সম্পত্তির অধিকার বা বহুবিবাহের কথা আলগা করে ছুলেও ‘হার্ট ল্যাম্প’-এর মহিলাদের সমস্যা ও প্রতিবাদ ধর্মের গণ্ডির মধ্যেই সীমিত।
প্রায় ৩২-৩৩ বছর পরস্পরের দোসর ও জীবনসঙ্গী মালবিকা-আকাঙ্ক্ষা। সহযোদ্ধা হিসেবে বহু সমকামী মেয়ে ও যৌন সংখ্যালঘু অন্যান্য মানুষজনের হাত ধরে আছে ওরা দু’জন, ওদের ভালোবাসার বারান্দায় চেয়ার/মোড়া/মাদুর পেতে বসে একটি বড় পরিবারের অনেক সদস্য।
জীবনের ১০টা বছর কারাগারে থাকার পর কেউ যখন বাইরে আসে তখন এই ১০ বছরে পালটে যাওয়া পৃথিবীর সঙ্গে সমঝোতা কীভাবে করে? এর দায় রাষ্ট্র নেয় না। যেমন কোনও দায় নেয় না জেলে থাকা রাজবন্দিদের জীবন-জীবিকার। চলতে থাকে ফেলে আসা সময়, হারিয়ে যাওয়া সময় ও বর্তমান সময়ের সঙ্গে জোর লড়াই।
রাষ্ট্রের চোখরাঙানি উপেক্ষা করেই জেল এবং বাইরের প্রিয়জনদের সেতু গড়তে থাকে। জামিনপ্রাপ্ত বন্দিরা জান কবুল করেন ভিতরে থাকা বন্ধুদের বার্তা তাঁর প্রিয়জনদের পৌঁছে দিতে। নজরদারিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই চলতে থাকে চিঠি চালাচালি। প্রিয়জনদের কাছে যাওয়ার জন্য, ক্ষণিকের মুলাকাতের জন্য।
পহেলগাঁও গণহত্যা সম্বন্ধে গুগল বলছে– ‘উগ্রপন্থীদের হাতে হিন্দু পর্যটকদের হত্যা। মৃতের সংখ্যা ছাব্বিশ।’ কিন্তু রক্তপাত, যা দৃশ্যমান বা দেখা যায় না– তার স্রোত কাশ্মীরের পাহাড়-উপত্যকা ছাপিয়ে ভিজিয়ে দিয়েছে গোটা দেশ। সীমান্তে চমকে উঠেছে কাঁটাতার। চিনারের হিমস্নাত পাতাগুলি রাতের আঁধারে এক আতঙ্ক-ঘেরা স্তব্ধতায় অপেক্ষা করছে ভোরের, অথচ ভোর হচ্ছে না।
জীবন তো যাপনের জন্যে। তার থেকে পালিয়ে যাওয়া, সে তো হেরে যাওয়া। মৃত্যু নিয়ে রোম্যান্টিসিজম চলতেই থাকবে; সাহিত্যে, বাস্তবে। তবু এমন সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে যেতে কি মন চায়! যা অনিশ্চিত তাকে নিশ্চিত করার দায় না-ই বা নিলাম কাঁধে!
মধ্যরাতে পাশের দেশ আক্রমণের পর যুদ্ধ-পরিস্থিতি তুঙ্গে। আজ যারা তিরিশ-বত্রিশের যুবা, শেষ কার্গিল যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে তারা বঞ্চিত। তাই যুদ্ধ ছাড়া গতি নেই এমন এক রব উঠেছে চারদিকে। ঠিক যেমন প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে বলা হয়েছিল ‘A war to end all wars’, কুড়ি বছরেই তার পরিণাম কী হয়েছিল আমরা জানি।
কখনও ইশারায়, চিরকুটে অন্য বন্দিদের সঙ্গে কথা বলে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে, কখনও পুলিশি নির্যাতনের আহত কমরেডকে নজরদারি এড়িয়ে গার্ডদের ফাঁকি দিয়ে কোনও কমরেডের মন ভালো করতে রুটিতে কিছুটা চিনি মাখিয়ে চমকে দেওয়ার মাধ্যমে, তো কখনও একসঙ্গে বসে সুখ দুঃখ বৃষ্টি বজ্রপাত ভাগ করে এই নিরন্তর অপেক্ষা কাটানোর মাধ্যমে, প্রতিদিন নানাভাবে সংগঠিত হতে থাকে প্রতিরোধ, প্রতিবাদ।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved