প্রায় কিশোরী বয়সে ‘বেঙ্গল ফেমিন’-এর মানুষদের মুখ কি সারাজীবন রয়ে গিয়েছিল তাঁর মনে? নিজের জীবনে মেয়েদের স্থান আর মেয়েদের শক্তির বোধ থেকে? তাই যখন যেখানে মানুষকে অপমানিত লাঞ্ছিত হতে দেখেছেন, অমন তীব্রভাবে গর্জে উঠেছে তাঁর কলম? ভালোবাসায়? হ্যাঁ, তার মূলে ছিল আপ্রাণ ভালোবাসা।
 
সাহানা দেবী বিয়ে ঠিক হওয়ার সময়ে তাঁর দেশবরেণ্য মামাবাবুর আক্ষেপ– ‘কী রে ঝুনু, তুইও পায়ে শিকল পরলি? আমি ভেবেছিলাম মুক্ত বিহঙ্গের মতো তুই শুধু গান গেয়েই বেড়াবি, তা দেখছি তোর পায়েও বেড়ি পড়ল।’ অথবা রবীন্দ্রনাথের স্থায়ী আশঙ্কা যে, বিয়ের পরও সাহানা দেবীর গানে অনুরাগ অমলিন থাকবে কি না– ‘তোমাদের মেয়েদের হয় বিয়ে, নয় গান, দুটোর মাঝামাঝি কিছু নেই।’ এই আশঙ্কা কি মহৎ ব্যক্তি মানুষের গভীর ব্যর্থতাবোধ?
 
সমাজ, সম্পর্ক কোনও কিছুই একরৈখিক নয়। আশাপূর্ণা সেই জটিলতার বিষকে সানন্দে ধারণ করেছেন স্বকণ্ঠে, স্ব-কলমে। তাঁর হাতে গড়া প্রতিমারাও তেমনই, দোষে-গুণে, ক্রোধে-প্রেমে সার্থক রক্তমাংসের মূর্তি। যে দেবীদের আবাহন কিংবা বিসর্জন নেই, তাঁরা চিরায়ত।
 
দেবীর ইমেজ আসলে দুর্গাবতীর রাজনৈতিক জীবনকে শুধুমাত্র একটি ঘটনায় সীমাবদ্ধ করতে চায়নি, সেই ঘটনাকে শুধু একটি মুহূর্তের আবেগ, সেই একটি মুহূর্তের রোমাঞ্চে আবদ্ধ করে খুব সচেতনভাবেই তাকে দুর্গাবতীর রাজনৈতিক মতাদর্শ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছে। ভুলিয়ে দিতে চেয়েছে দুর্গাবতীর রাজনৈতিক জীবন ওই ঘটনা দিয়ে শুরু হয়নি, ওই ঘটনায় শেষও হয়নি।
 
যে-সমাজে মেয়েদের নাচ গর্হিত অপরাধ, সেখানে প্রতিমা তার হাল ধরেছেন। যেখানে 'বাল্মিকী প্রতিভা' প্রভৃতি গীতিনাট্যে শুধুই অল্প হাত নাড়ানো হত, সেখানে প্রতিমা সাহসিনী হয়ে নৃত্য যুক্ত করলেন।
 
গলার ক্যানসারে ভুগে কাশীপুর উদ্যানবাটী থেকে রামকৃষ্ণ বিগত হবেন। তবু তাঁর দিয়ে যাওয়া এই দেবীত্বের পরাকাষ্ঠা সযত্নে লালন করে যাবে সারদা, হয়ে উঠবে ‘শ্রীশ্রীমা’। বৈধব্য যে স্বীকার করেনি কখনও। দেবী তো কখনও বিধবা হয় না! তাই নরুণ লালপেড়ে সাদা শাড়িটি হবে চিরকালীন অঙ্গবাস, হাতে আজীবন থাকবে ‘ডায়ামন্ড কাটা বালা’– যে বালা দু’টি তাঁকে গড়িয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং রামকৃষ্ণ।
 
তপন সিংহর ‘আদালত ও একটি মেয়ে’ ছবির জন্য বেলগাছিয়ার মাঠে দৌড় প্র্যাকটিস শুরু করলেন আমার বাবা মনোজ মিত্র ৷ সময় বাছলেন ঠিক ভোর সাড়ে চারটে।
 
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মা ছেলেমেয়ে নিয়ে আগরতলা কলকাতা হয়ে শান্তিনিকেতনে। ঈদের সময় মায়ের কিপটের মতো শুধু জর্দা পোলাও রান্না। দু’-একজন বন্ধু আসে কি আসে না। ব্যস ওইটুকুই। স্বাধীন বাংলাদেশে ফেরার পরে নানুর আশ্রয়ে কিছুদিন থেকে মা থিতু হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।ক্যাম্পাসের আবাসিক এলাকায়। প্রায় দুই দশক অন্য এক ঈদের স্বাদ।
 
‘‘আপনার নিজস্ব কোনও চারচাকা বাহন নেই কেন প্রফুল্লদা? এতগুলো বই, রমরম করে লোকে কিনছে। ‘এখানে পিঞ্জর’– কতগুলো সংস্করণ হয়ে গেল।’’ প্রফুল্লদা উত্তর দিয়েছিলেন, ‘‘ওরা দেয়। কিন্তু বেশিরভাগই মেরে দেয় টাকা। উল্টোপাল্টা যা হোক হিসেব দেয়। মেরে কেটে গোটা তিনেক পাবলিশার অনেস্ট, বাকিরা সব আলু-পটলের কারবারি।’’
 
অজিতেশ– এই বাংলায় সর্বক্ষণের নাট্যকর্মীদের চেয়েছেন। বাদল সরকার বলেছেন– দারিদ্রের থিয়েটারের কথা অথবা থিয়েটারের দারিদ্র প্রসঙ্গে– কিন্তু কেউ-ই, গুরু রতনের মতো আমাদের কাছে কোনও নির্দিষ্ট পথ দেখাতে পারেননি।
 
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved
