১৯৫৭ সাল থেকে স্থায়ীভাবে মস্কোয় বসবাস করে আসছেন গোপেন চক্রবর্তী। তখন মস্কো রেডিয়োর বাংলা বিভাগের প্রধান ঘোষক ছিলেন। বিচিত্র তাঁর জীবনকথা। ১৯২৪ সালের ২২ জানুয়ারি লেনিনের জীবনাবসান ঘটে। তার সামান্য কিছু আগে খিদিরপুর ডক থেকে মুসলমান খালাসির বেশে জাহাজে চড়ে গোপেনদা দেশ ছাড়েন। তখন তিনি অনুশীলন সমিতি করেন। উদ্দেশ্য ছিল সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য জার্মানি থেকে অস্ত্রশস্ত্র আমদানি করা। এমএন রায় তাঁকে রাশিয়ায় গিয়ে সেখানে শ্রমিকশ্রেণি কীভাবে অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছে, তা স্বচক্ষে দেখে আসতে বলেন। কিন্তু তিনি যখন মস্কোয় পৌঁছন, ততদিনে লেনিন আর জীবিত ছিলেন না।
২৭.
মস্কোয় আমার জনৈক বাঙালি প্রতিবেশী
১৯৭৪ সালের ২৪ জুলাই আমি যখন প্রগতি প্রকাশনালয়ে অনুবাদকের কাজ নিয়ে মস্কোয় পাড়ি দিই, তার মাস কয়েক পরে প্রথমবার বাসাবদল করে প্রগতি-র অতিথি ভবন থেকে দু’-কামরার যে ফ্ল্যাটে গিয়ে উঠলাম, সেটাও মস্কোর দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে–আগের এলাকার মতো ততটা পুরোনো এলাকা না হলেও, খুব একটা নতুন এলাকাও নয়। এখানেও বেশিরভাগ বাড়িঘর খ্রুশশ্যোভ আমলে তৈরি পাঁচতলা দালান। সেরকম একটা বাড়ির তিন তলার ফ্ল্যাট আমার নতুন বাসস্থান। কাছাকাছি মেট্রো স্টেশন ‘একাডেমি মেট্রো’। এখান থেকে হাঁটা পথে থাকেন মস্কোর পুরনো ভারতীয় বাসিন্দাদের একজন: গোপেন চক্রবর্তী– এককালের অনুশীলন পার্টির সদস্য, পরবর্তীকালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য– মস্কোর ভারতীয় সমাজে সকলের কাছে তিনিও একজন দাদা– শ্রদ্ধেয় গোপেনদার বয়স তখন আশি ছুঁই ছুঁই। তাঁর ফ্ল্যাটটা একটা পাঁচতলা দালানের তিন তলায়– বড় রাস্তা প্রফ্সাইউজ্নাইয়া স্ট্রিটের (ট্রেড ইউনিয়ন স্ট্রিট) প্রায় ওপরে– একটু ভেতরে গিয়ে ২৫ অক্টোবর স্ট্রিটে বাড়িটা। মস্কোয় ১৯১৭ সালের ২৫ অক্টোবর শ্রমিক ও বিপ্লবী সৈনিকদের যে সশস্ত্র অভ্যুত্থান ঘটেছিল, তার সম্মানে রাস্তাটার এই নাম।
১৯৫৭ সাল থেকে স্থায়ীভাবে মস্কোয় বসবাস করে আসছেন গোপেনদা, গোপেন চক্রবর্তী (১৮৯৯-১৯৯৪)। তখন মস্কো রেডিয়োর বাংলা বিভাগের প্রধান ঘোষক ছিলেন। ছাত্রাবস্থায় মস্কো ইউনিভার্সিটির হস্টেলের বন্ধুবান্ধব নিয়ে গোপেনদার এই বাড়িতে কয়েকবার এসেছি, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গোপেনদার অনুপস্থিতিতে– বিশেষ করে গোপেনদা যখন কয়েক দিনের ছুটি নিয়ে মস্কোর বাইরে কোথাও বেড়াতে চলে যেতেন। বাড়িতে তখন থাকার মধ্যে থাকত তার ছেলে সাগর চক্রবর্তী। সাগরকে তিনি ইতিমধ্যে দেশ থেকে এনে টেলিভিশন কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্রে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। সে খুব ভালো রান্না করতে পারত। তাঁকে দিয়ে রান্না করিয়ে মহা উৎসাহে গোপেনদার ফ্ল্যাটে আমাদের পানভোজন ও আড্ডা চলত। তবে আমি যখন কার্যোপলক্ষে মস্কোতে আসি, ততদিনে সাগর দেশে চলে গেছে।
এবারে মস্কোয় আসার পর এক পাড়ায় থাকার সুবাদে গোপেনদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক নিবিড় হয়। গোপেনদার বাড়িতে, বলাই বাহুল্য, সেরকম আড্ডা আর বসত না। তবে দেশ থেকে নেতৃস্থানীয়, সাংসদ বা আরও কিছুকাল পরে পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থী সরকারের মন্ত্রী পর্যায়ের কেউ এলে অবশ্যই আমার ডাক পড়ত, আমিই তখন গোপেনদার রাঁধুনির কাজ করতাম। সেই সূত্রে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট নেতা মণি সিং এবং আমাদের দেশের সাংসদ ইন্দ্রজিৎ গুপ্তর সঙ্গেও একাধিকবার ওঁর বাড়িতে দেখা হয়েছে। ১৯৮০ সালের অলিম্পিক্সের সময় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী সস্ত্রীক এসেছিলেন অলিম্পিকস দেখার জন্য। গোপেনদার বাড়িতে সস্ত্রীক আহারের নিমন্ত্রণ। ওঁরা নিরামিষাশী। বেশ অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়েছিল। মন্ত্রী মহোদয়ের স্ত্রীর গহনার জৌলুস ছিল দেখার মতো।
……………………………………….
খানে এসে গোপেন চক্রবর্তী কমিউনিস্ট মতে দীক্ষিত হলেন। বছর খানেক কমিন্টার্নের ভারতীয় বিভাগে কাজ করার পর দেশে গিয়ে পার্টি গড়ার কাজে আত্মনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিলেন। স্তালিন বললেন, সঠিক সিদ্ধান্ত। দেশে ফিরে এসে নলিনী গুপ্তর পরামর্শে উলটোডাঙা রেল কলোনিতে তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির গোড়াপত্তন করেন।
………………………………………..
গোপেনদার বাড়িতে আহারের ব্যবস্থা হলেও পানের কোনও আয়োজন থাকত না। গোপেনদা নিজে ও জিনিসটা ছুঁতেন না। একবার শুধু আমার বাড়িতে আমার একান্ত অনুরোধে, কী একটা উপলক্ষে মনে নেই, তিনি শ্যাম্পেনে চুমুক দিয়ে বলেছিলেন, জাহাজে খালাসির বেশে যখন তিনি দেশ ছেড়েছিলেন, সেই সময় রুশি-নাবিকরা তাঁকে ভোদকা খাইয়ে এমন অবস্থা করে দিয়েছিলেন যে তিনি প্রায় ২৪ ঘণ্টা বেহুঁশ হয়ে জাহাজের ডেকে পড়েছিলেন। তারপর থেকে ও জিনিস তিনি আর ছোঁন না। ফলে অনেকসময় কোনও কোনও নেতাকে গোপেনদার বাড়িতে ভোজন করানোর পর আমার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যেতে হত।
গোপেনদার বাড়িতে নেতৃস্থানীয় অতিথিদের মধ্যে ভালো লাগত বাংলাদেশের মণি সিংকে। প্রায় গোপেনদার সমবয়সি। বেশ শক্তসমর্থ। গোপেনদার মতো অত কট্টর সোভিয়েতভক্ত বলে আমার মনে হয়নি। গোপেনদাকে একবার বলেছিলেন, ‘আরে এরা তো দেখছি বিস্কুট পর্যন্ত তৈরি করতে জানে না।’
শুনে গোপেনদা বলেছিলেন, ‘কিন্তু যা-ই বলো না কেন, বিস্কুটগুলি খুবই সলিড।’
মণিদা আমাকে একবার বললেন, ‘চলুন আপনার বাড়িটা দেখে আসি’। বাসে হয়তো গোটা দুয়েক স্টপ। আমি ভাবলাম, প্রবীণ মানুষ, বাসেই নিয়ে যাওয়া যাক। উনি শুনে বললেন, ‘না না, হেঁটেই চলুন।’ আমার বাড়ি এসে চা-বিস্কুট খেলেন, আবার ওঁকে পৌঁছে দিয়ে এলাম গোপেনদার বাড়িতে।
গোপেনদা যেহেতু একা মানুষ, তাই দেশ থেকে ওরকম কোনও নেতা কখনও কয়েক দিনের জন্য এলে হোটেলে না উঠে গোপেনদার বাড়িতেই উঠতেন। অতএব রান্না। তবে এঁদের মধ্যে কারও কারও ওঁর বাড়িতে থাকা তেমন একটা মনঃপূত ছিল না, যেহেতু সেখানে পানীয় অচল।
আমি যখন মস্কোতে আসি, তারই কাছাকাছি সময় Main Stream-এর নিখিল চক্রবর্তীর ছেলে সাংবাদিক সুমিত চক্রবর্তী ‘পেট্রিয়ট’-এর সংবাদদাতা হয়ে মস্কোয় এসেছিলেন– খুব সম্ভবত ১৯৭৫ সালেই এবং ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত মস্কোতেই ছিলেন। উনি মস্কোয় আমার বাড়িতে প্রায়ই আসতেন– আমার কাছে রুশ ভাষার পাঠ নিতে। সেইসময় আমরা একসঙ্গে গোপেনদার বাড়িতে যেতাম। সুমিত এবং রুশ ভারততত্ত্ববিদ এরিক কমারোভ্ মিলে বোধহয় দিন দুয়েক ধরে কমিউনিস্ট কর্মী হিসেবে গোপেনদার কার্যকলাপ ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে একটা দীর্ঘ সাক্ষাৎকার টেপ করেছিলেন প্রশ্নোত্তর আকারে। তার টাইপ করা একটা কপিও পরে আমি একবার গোপেনদার কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে পড়েছিলাম। ওটা একটা দুষ্পাপ্য দলিল। সুমিতের কাছে আছে বলেই আমার মনে হয়। আমার ইচ্ছে ছিল একটা কপি করে নেওয়ার। পরে গোপেনদার কাছে যখন খোঁজ করি তখন আর পাওয়া যায়নি– কে বা কারা পড়তে নিয়ে আর ফেরত দেয়নি– গোপেনদা মনে করতে পারলেন না। সুমিতও ততদিনে মস্কো ছেড়ে চলে গেছেন।
বিচিত্র তাঁর জীবনকথা। ১৯২৪ সালের ২২ জানুয়ারি লেনিনের জীবনাবসান ঘটে। তার সামান্য কিছু আগে খিদিরপুর ডক থেকে মুসলমান খালাসির বেশে জাহাজে চড়ে গোপেনদা দেশ ছাড়েন। তখন তিনি অনুশীলন সমিতি করেন। উদ্দেশ্য ছিল সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য জার্মানি থেকে অস্ত্রশস্ত্র আমদানি করা। ফ্রান্সের মার্সেই হয়ে জাহাজে আসেন বার্লিনে। বার্লিনে এমএন রায়ের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল। রায় তাঁকে রাশিয়ায় গিয়ে সেখানে শ্রমিকশ্রেণি কীভাবে অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছে, তা স্বচক্ষে দেখে আসতে বলেন। রায়ের কথায় খুব একটা আশ্বস্ত হতে না পারলেও লেনিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য মস্কোর সাহায্য পেতে তিনি আগ্রহবোধ করেন। কিন্তু তিনি যখন মস্কোয় পৌঁছন, ততদিনে লেনিন আর জীবিত ছিলেন না। মস্কো অবশ্য ভারতের সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহে খুব একটা আগ্রহী ছিল না। কিন্তু এখানে এসে গোপেন চক্রবর্তী কমিউনিস্ট মতে দীক্ষিত হলেন। বছর খানেক কমিন্টার্নের ভারতীয় বিভাগে কাজ করার পর দেশে গিয়ে পার্টি গড়ার কাজে আত্মনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিলেন। স্তালিন বললেন, সঠিক সিদ্ধান্ত। দেশে ফিরে এসে নলিনী গুপ্তর পরামর্শে উলটোডাঙা রেল কলোনিতে তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির গোড়াপত্তন করেন।
এর বছর দুয়েক পরে মস্কোয় এসেছিলেন সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি লেনিন বিদ্যালয় থেকে মার্কসবাদ-লেনিনবাদের পাঠ গ্রহণ করেন। দেশে থাকতে তিনিও টেররিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গ্রেপ্তারি এড়ানোর জন্য বিদেশযাত্রা করেন, বার্লিন হয়ে মস্কোয় চলে আসেন। এখানে এসে তিনিও কমিউনিজমের মন্ত্রে দীক্ষিত হন। কমিন্টার্নের সঙ্গে যুক্ত থাকায় মানবেন্দ্রনাথ রায়, বীরেন চট্টোপাধ্যায়, অবনী মুখোপাধ্যায় ও বুখারিনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। মানবেন্দ্রনাথ সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘মানবেন্দ্রনাথ রায়ের মতো এমন উঠতে স্টালিন, বসতে স্টালিন– স্টালিনগত প্রাণ ১৯২৭-২৮ সালে আমি খুব কমই দেখেছিলুম’। (যাত্রী, সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, বৈতানিক প্রকাশনী, ২০০৩, পৃ. ১৪৯)।
সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর সেই সময়কার স্মৃতিকথা ‘যাত্রী’-তে লিখেছিলেন, ‘মস্কোতে পৌঁছবার মাসখানেক পরে একজন ভারতীয় বন্ধু একটি রুশীয় মহিলাকে নিয়ে আসেন একদিন সন্ধেবেলা আমার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেবেন বলে। মেয়েটির পরিচয় দিয়ে বললেন– তাঁর নাম সুরা। একজন বাঙালি কমিউনিস্ট উনিশশো পঁচিশ সালে মস্কোয় ছিলেন, তাঁর স্ত্রী ইনি। স্বামীর খবর জানার জন্যে আপনার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। এই বাঙালি কমিউনিস্টকে আমি খুব ভালো করেই জানাতুম। বাঙলা দেশের একটি টেররিস্ট দল তাঁকে পাঠিয়েছিল। মস্কোয় মাস দশেক থেকে তিনি দেশে ফিরে যান। দেশে ফিরে আসবার কিছু কাল পরে আমার আলাপ হয় তার সঙ্গে, আমিই তাঁকে টেনে নিই বঙ্গীয় শ্রমিক-কৃষক দলে। দেশ ছাড়বার দু-একদিন আগেও তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। সুরার কথা কিন্তু আমাকে একবারও বলেননি। যতটা খবর জানতুম সব জানালুম সুরাকে। তাঁর বাড়িতে যাবার জন্যে আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি চলে গেলেন।’ (যাত্রী, পৃ. ১১৮)
পড়তে পড়তে আমার কেমন যেন মনে হচ্ছিল এই ‘বাঙালি কমিউনিস্ট’-টি আমারও খুব চেনা। এরপর যখন তিনি লিখলেন: ‘শহরের একপ্রান্তে একটি নিরালা রাস্তায় কাঠের তৈরি একতলা বাড়ির একটি ঘরে সুরা থাকতেন তাঁর বৃদ্ধা মা আর দু-বছরের মেয়ে নিয়ে। সুরার মা ছিলেন খুব অবস্থাপন্ন ঘরের মেয়ে। জারের আমলের বহু বিপ্লবী তাঁর পিতার কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছিলেন, তাঁদের বাড়িতে আশ্রয়ও পেয়েছেন। এখন অতি কষ্টে তাঁদের দিন কাটে। শিশুদের একটি কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষা দিয়ে সুরা যেটুকু পেতেন তারই স্বল্প উপার্জনে তাঁদের সংসার চলত। থাকবার ঘরটি যেমন স্যাঁতসেঁতে তেমনি অন্ধকার। এত দারিদ্রের মধ্যে থাকতেন, তবু এক দিনর জন্যেও বৃদ্ধার মুখে বিরক্তির লেশমাত্র চিহ্ন দেখিনি, তাঁর অন্তরের আভিজাত্য হার মানেনি বাইরের আঘাতের কাছে, দু-বছরের জয়েচকাকে নিয়ে সুরা এগিয়ে এলেন। জয়েচকার কালো চোখ, কালো চুল, শ্যামলা রঙ দেখে বুঝলুম এখানে বাংলা হার মানিয়েছে রাশিয়াকে।’ (পৃ. ১১৮)।
তখন আমি অনায়াসে শনাক্ত করতে পারলাম ওই ‘বাঙালি কমিউনিস্ট’ আর কেউ নন– আমাদের গোপেনদা– গোপেন চক্রবর্তী।
…পড়ুন রুশকথা-র অন্যান্য পর্ব…
পর্ব ২৬। ননী ভৌমিকের মস্কোর জীবনযাত্রা যেন দস্তইয়েভস্কির কোনও উপন্যাস
পর্ব ২৫। ননীদা বলেছিলেন, ডাল চচ্চড়ি না খেলে ‘ধুলোমাটি’র মতো উপন্যাস লেখা যায় না
পর্ব ২৪। মস্কোয় শেষের বছর দশেক ননীদা ছিলেন একেবারে নিঃসঙ্গ
পর্ব ২৩। শেষমেশ মস্কো রওনা দিলাম একটি মাত্র সুটকেস সম্বল করে
পর্ব ২২। ‘প্রগতি’-তে বইপুথি নির্বাচনের ব্যাপারে আমার সঙ্গে প্রায়ই খিটিমিটি বেধে যেত
পর্ব ২১। সোভিয়েতে অনুবাদকরা যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করত, সে দেশের কম মানুষই তা পারত
পর্ব ২০। প্রগতি-র বাংলা বিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে ননীদাই শেষ কথা ছিলেন
পর্ব ১৯। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় নাকি খুব ভালো রুশভাষা জানতেন, প্রমথনাথ বিশী সাক্ষী
পর্ব ১৮। লেডি রাণু মুখার্জিকে বাড়ি গিয়ে রুশ ভাষা শেখানোর দায়িত্ব পড়েছিল আমার ওপর
পর্ব ১৭। একদিন হঠাৎ সুভাষদা আমাদের বাড়ি এসে উপস্থিত ফয়েজ আহমেদ ফয়েজকে নিয়ে
পর্ব ১৬। মুখের সেই পরিচিত হাসিটা না থাকলে কীসের সুভাষ মুখোপাধ্যায়!
পর্ব ১৫। রুশ ভাষা থেকেই সকলে অনুবাদ করতেন, এটা মিথ
পর্ব ১৪। মস্কোয় ননীদাকে দেখে মনে হয়েছিল কোনও বিদেশি, ভারতীয় নয়
পর্ব ১৩। যিনি কিংবদন্তি লেখক হতে পারতেন, তিনি হয়ে গেলেন কিংবদন্তি অনুবাদক
পর্ব ১২। ‘প্রগতি’ ও ‘রাদুগা’র অধঃপতনের বীজ কি গঠনপ্রকৃতির মধ্যেই নিহিত ছিল?
পর্ব ১১। সমর সেনকে দিয়ে কি রুশ কাব্যসংকলন অনুবাদ করানো যেত না?
পর্ব ১০। সমর সেনের মহুয়ার দেশ থেকে সোভিয়েত দেশে যাত্রা
পর্ব ৯। মস্কোয় অনুবাদচর্চার যখন রমরমা, ঠিক তখনই ঘটে গেল আকস্মিক অঘটন
পর্ব ৮: একজন কথা রেখেছিলেন, কিন্তু অনেকেই রাখেননি
পর্ব ৭: লেনিনকে তাঁর নিজের দেশের অনেকে ‘জার্মান চর’ বলেও অভিহিত করত
পর্ব ৬: যে-পতাকা বিজয়গর্বে রাইখস্টাগের মাথায় উড়েছিল, তা আজ ক্রেমলিনের মাথা থেকে নামানো হবে
পর্ব ৫: কোনটা বিপ্লব, কোনটা অভ্যুত্থান– দেশের মানুষ আজও তা স্থির করতে পারছে না
পর্ব ৪: আমার সাদা-কালোর স্বপ্নের মধ্যে ছিল সোভিয়েত দেশ
পর্ব ৩: ক্রেমলিনে যে বছর লেনিনের মূর্তি স্থাপিত হয়, সে বছরই ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার সূচনাকাল
পর্ব ২: যে দেশে সূর্য অস্ত যায় না– আজও যায় না
পর্ব ১: এক প্রত্যক্ষদর্শীর চোখে রাশিয়ার খণ্ডচিত্র ও অতীতে উঁকিঝুঁকি
তত্ত্ববিদ, মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার কাজ নিয়েছে মস্কো রেডিয়োতে, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে ‘মির’ বা ’প্রগতি’তে অনুবাদক হয়েছে, কেউ বা সাংবাদিকতায় পি.এইচ. ডি. ডিগ্রি অর্জন করে সংবাদপত্রের দফতর খুলে তার অন্তরালে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করে দিয়েছে।