সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের ছেলেবেলা কেটেছে বাংলাদেশের গ্রামে। কমলাপুর থেকে কনকসার। বাবার বাড়ি, দাদুর বাড়ি, দুই বাড়ির পুকুরেই সাঁতার কেটেছেন তিনি। জলে-ঘাসে তাঁর বেড়ে ওঠা। সবুজ রঙের সঙ্গে তাঁর আনাগোনা। এই সবুজ রং কি তিনি আজও বহন করছেন না? চিরহরিৎ সাবিত্রী আজও দর্শকের মনে, দর্শকের চিত্রে বিদ্যমান। এই সাবিত্রীই নৌকা বাইতে পারতেন। সাঁতার জানতেন। সাঁতারে পটু ছিলেন বলেই একবার বুড়িগঙ্গায় ডুবতে গিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন। শৈশবে বাড়ির পাশে কমলাপুর খাল ধরে একা একা নৌকা বেয়ে চলে গিয়েছিলেন বুড়িগঙ্গায়। কালবৈশাখের সন্ধ্যায় ঝড় উঠলে বুড়িগঙ্গার জলে নৌকাডুবি হয়, কিন্তু সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় ঝড়কে তোয়াক্কা করার মতো মানুষ নাকি?
বাংলা ছবির ‘ফার্স্ট লেডি’ সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারতবর্ষের কুমিল্লার হাজীগঞ্জ। ১৮৫৮ সালে সিপাহি বিদ্রোহের পর ইংরেজ সরকার এগারোটি থানা নিয়ে ত্রিপুরা জেলা গঠন করে। সে এগারোটি থানার গুরুত্বপূর্ণ থানা হচ্ছে হাজিগঞ্জ। এখন হাজিগঞ্জ বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার অন্তর্গত।
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের ছেলেবেলা কেটেছে গ্রামে। বাংলাদেশের গ্রামে। কমলাপুর থেকে কনকসার। বাবার বাড়ি, দাদুর বাড়ি, দুই বাড়ির পুকুরেই সাঁতার কেটেছেন তিনি। জলে-ঘাসে তাঁর বেড়ে ওঠা। সবুজ রঙের সঙ্গে তাঁর আনাগোনা। এই সবুজ রং কি তিনি আজও বহন করছেন না? চিরহরিৎ সাবিত্রী আজও দর্শকের মনে, দর্শকের চিত্রে বিদ্যমান। এই সাবিত্রীই নৌকা বাইতে পারতেন। সাঁতার জানতেন। সাঁতারে পটু ছিলেন বলেই একবার বুড়িগঙ্গায় ডুবতে গিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন।
শৈশবে বাড়ির পাশে কমলাপুর খাল ধরে একা একা নৌকা বেয়ে চলে গিয়েছিলেন বুড়িগঙ্গায়। কালবৈশাখের সন্ধ্যায় ঝড় উঠলে বুড়িগঙ্গার জলে নৌকাডুবি হয়, কিন্তু সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় ঝড়কে তোয়াক্কা করার মতো মানুষ নাকি?
বাংলাদেশের কুমিল্লা, কনকসার, কমলাপুর। দাদু শশীভূষণ চট্টোপাধ্যায়, ঠাকুমা শশীমুখী। দাদু ছিলেন পেশায় মোক্তার। বাবা শশধর চট্টোপাধ্যায়, মা ইচ্ছাময়ী। বাবা ছিলেন হাজীগঞ্জ রেলের স্টেশনমাস্টার।
চাঁদপুর শহর থেকে আধঘণ্টা আর কুমিল্লা শহর থেকে সড়ক পথে সোয়া ঘণ্টার পথ এই হাজিগঞ্জ। সেই সময়ের ছোট্ট হাজিগঞ্জ এখন পুরোদস্তুর শহর।
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের দাদু শশীভূষণ চট্টোপাধ্যায় তাঁর পেশাগত কারণে কনকসারের আদিবাড়ি ছেড়ে কুমিল্লার হাজীগঞ্জ আসেন। তখন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের বাবা শশধর চট্টোপাধ্যায়ের সবে শৈশবে পা দিয়েছেন।
শশধর চট্টোপাধ্যায়ের বড় হওয়া, ইচ্ছাময়ী দেবীর সঙ্গে বিয়ে সবই হাজীগঞ্জে। ইচ্ছাময়ীর প্রথম সন্তান স্নেহলতা, দশম সন্তান সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। চট্টোপাধ্যায় পরিবার পুত্র সন্তানের আশায় ইচ্ছাময়ীর গর্ভে জন্ম নেয় ন’টি কন্যাসন্তান। সেই সময়ের সমাজব্যবস্থায় চট্টোপাধ্যায় পরিবার দায়ী করেন ইচ্ছাময়ীকে। যেন ইচ্ছাময়ীর ইচ্ছেতেই কন্যাসন্তান জন্ম নিচ্ছে। তাই সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের জন্মক্ষণে বাজেনি কোনও মঙ্গলশঙ্খ।
হাজিগঞ্জের কোন গ্রামের কোন ঘরে সাবিত্রীরা থাকতেন, তা এখন আর চিহ্নিত করা যায় না। দাঙ্গা, দেশভাগ, মুক্তিযুদ্ধ– অনেক চড়াই-উতরাইয়ে বদল হয়েছে আদি ভূমিপুত্রদের আবাস। বিশ্বায়নের সঙ্গে সঙ্গে গ্রাম থেকে দ্রুত নগর হয়েছে। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় শৈশবের স্মৃতির নন্দা দিঘি ভরাট হয়ে বহুতল বাড়ি হয়েছে। নন্দা দিঘি চিরতরে হারিয়ে গেছে হাজিগঞ্জ থেকে। শুধু বয়ে চলছে ‘ডাকাতিয়া’ নদী।
হাজীগঞ্জের স্মৃতি থেকে হারিয়ে গেছে ছোট্ট সাবুর মাটির বাড়ি। তবে কমলাপুর আর কনকসার মনে রেখেছে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে। এখনও কনকসার গ্রামের মানুষ বলে দিতে পারেন– ওই যে বাড়িটা এটা হচ্ছে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। এই গ্রামের সন্তান সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। এই গ্রামে আরেক বিখ্যাত মানুষের জন্ম, সূর্যকুমার গুডিভ চক্রবর্তী (১৮২৩-১৮৭৪)।
মুন্সিগঞ্জ জেলার, লৌহজং বাজার থেকে অগ্রসর ‘বঙ্গীয় গ্রন্থ জাদুঘর’ পার হয়ে হাতের বামে পদ্মা নদী। ডানে মালোপাড়া। কনকসার মালোপাড়া দুর্গা মন্দির থেকে একটু এগিয়ে গেলেই সাবিত্রীর দাদু বাড়ি– বিক্রমপুরের কনকসার গ্রাম। সাবুদের সাতপুরুষের ভিটে। এখন এই ভিটেয় নতুন বাসিন্দারা বসবাস করেন। পুরনো সব ভেঙে নতুন করে গড়ে তুলেছেন নতুন অধিবাসীরা। কিন্তু ভূমির আদিবাসীদের চিহ্ন পুরোপুরি মুছে যায়নি।
বাড়ির সম্মুখে হিজল গাছের সারি। চট্টোপাধ্যায় পরিবার পুজোর সময় বাড়ির পাশে কমলাপুর খাল থেকে নৌকা করে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী হয়ে ফিরতেন কনকসার গ্রামে। কনকসারকে বলতেন দ্যাশের বাড়ি। আর কমলাপুরকে ঢাকার বাড়ি।
জল নেই, শুকিয়ে যাওয়া জলাসয়ে ছোট্ট একটি নৌকা রাখা। পাশে তিনটি হিজল গাছ দাঁড়িয়ে। এই বসন্তে হিজল পাতা ঝরাবে, ফুল ফোটাবে গ্রীষ্মের রাতে। কিন্তু সাবিত্রীদের দশ বোনের একজনকে পাবে না এই হিজল বন। সাবুরা চলে গেছে, হিজলেরা থেকে গেছে সাবুদের বাড়ি পাহারায়।
বাড়ির বাহিরে বড় পুকুর। ভেতর বাড়ির পুকুরে নতুন বাঁধানো ঘাট। কিন্তু পুরনো ঘাটের ইটগুলো এখনও রয়েছে। আদি বাড়ির ভাঙা ইটের টুকরোগুলো নতুন বাড়ির চারপাশে রাখা যেন বৃষ্টির জলে নতুন মাটি ক্ষয়ে না যায়। বাড়ির তুলসী মঞ্চ এখনও রয়েছে। শুধু মঞ্চে তুলসীগাছ নেই। এ যেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লার দেশভাগের গল্প ‘একটি তুলসী গাছের কাহিনী’।
বদলে গেছে কমলাপুর গ্রাম। কমলাপুর ঠাকুর পাড়ায় সাবিত্রীদের ছিল পাকা বাড়ি। পুকুর। ফলের বাগান। রাজধানী ঢাকার স্পর্শে নবরূপায়ন ঘটছে কমলাপুর গ্রামের। ইউনিয়ন থেকে পৌরসভা, পৌরসভা থেকে ওয়ার্ড। এভাবে ভাগ ভাগ হয়ে যুক্ত হয়েছে রাজধানীর সঙ্গে।
দেশের সর্ববৃহৎ রেল স্টেশন স্থাপিত হওয়ার পর দ্রুতই কমলাপুর গ্রামকে গ্রাস করে নগর ঢাকা। আজকের কমলাপুর রেল স্টেশন পার হয়ে অতীশ দীপঙ্কর রোড ধরে এগিয়ে গেলে বৌদ্ধ মন্দিরের পিছনে ঠাকুর পাড়া। ঠাকুর পাড়া দু’জন মানুষের জন্য খুব পরিচিত। একজন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। আরেকজন বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এর পরিচালক আবদুল জব্বার খানের বাড়ি।
আজকের ২৯, মায়াকানন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। ১৩/ই, মায়াকানন আবদুল জব্বার খানের বাড়ি। দেশভাগের পর পাকিস্তান সরকার ঠাকুর পাড়ার নাম বদল করে রাখেন দরবেশ পাড়া। বাংলাদেশ হওয়ার পর ‘ঠাকুর পাড়া ড্রামাটিক ক্লাব’-এর চেষ্টায় দরবেশ পাড়ার পরিবর্তে নাম রাখা হয় ‘মায়াকানন’। বর্তমানে ঠাকুর পাড়া, মায়াকানন– দুই নামেই সকলে চেনেন। আবদুল জব্বার খানও বিক্রমপুর কনকসার গ্রামের সন্তান। চট্টোপাধ্যায়দের আদি প্রতিবেশী।
’৪৭ সালের কিছু আগে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় কলকাতায় যান। দেশভাগের পর আরও কয়েক বছর বাবা মা ঠাকুমা ছিলেন এই কমলাপুরে। তখন কলকাতার স্কুলের ছুটিতে কয়েকবার এসেছিলেন কমলাপুর। ১৯৪৯ সালে ঠাকুর পাড়ায় মঞ্চস্থ হয় কমলাপুর ড্রামাটিক এসোসিয়েশনের নাটক ‘টিপু সুলতান’। পরিচালনা করেন আবদুল জব্বার খান। এ নাটকে সোফিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। বাংলাদেশে এই প্রথম এবং এই শেষ কোনও মঞ্চে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। তবে ২০২১ সালের দিকে ঢাকার একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের আমন্ত্রণে ঢাকায় আসেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। সেই যাত্রায় সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় সঙ্গে ছিলেন আরেক শক্তিমান অভিনেতা হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়। হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মও এই বাংলার কুষ্টিয়ায়। হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায় আর সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে পূর্ববাংলায় জন্ম বাদে আরেকটি মিল রয়েছে– দু’জনের বাবাই ছিলেন স্টেশন মাস্টার।
এক জীবনে অনেকগুলো দেশের জন্ম সাক্ষী হয়ে আছেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। বিক্রমপুরের লৌহজং উপজেলার ‘কনকসার’ গ্রাম সাতপুরুষের ভিটে। কুমিল্লায় জন্ম। ঢাকার কমলাপুরে শৈশব-কৈশোর। যৌবন থেকে আজকের এই সময় পর্যন্ত কলকাতায়। কনকসার-কুমিল্লা-কমলাপুর-কলকাতা কত কত পথ মাড়িয়ে আজ ৮৮ বছরে পা রাখলেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। বলা যায় বৃহৎ জীবন তাঁর সঞ্চয়ে পরিপূর্ণ।
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘সত্যি সাবিত্রী’র পাতায় বাংলার যে রূপ– ‘‘…সেই সময় সারা পৃথিবী জুড়ে ঘটে চলেছে কত উল্লেখযোগ্য ঘটনা! দূর পৃথিবীর কথা বাদ দিলেও ঢাকা বা কলকাতাতেও তখন কতরকম রাজনৈতিক অস্থিরতা। অথচ সেসব ঢেউয়ের ধাক্কা নিস্তরঙ্গ হাজিগঞ্জে পৌঁছয় না। হাজিগঞ্জের মানুষরা সূর্য ওঠার সঙ্গে-সঙ্গে ঘুম থেকে উঠে তাদের রোজকার কাজ শুরু করে আর সূর্য ডুবে গেলে তারাও খেয়ে-দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এই হাজিগঞ্জই যেন একটা গোটা পৃথিবী! এর বাইরে কোথায় কী ঘটে চলেছে, তাতে কারও কোনও আগ্রহ নেই। নেই কোনও কৌতূহল।
রাত গভীর হয়। নিঝুম হাজিগঞ্জে শুধু জেগে থাকে গাঁয়ের আদরের দিঘিটি। নন্দা দিঘি। তার ঘুম নেই। সে অবিরত ঢেউ তোলে ছলছলাৎ।
হাজিগঞ্জের স্মৃতি বলতে আমার কাছে নন্দা দিঘি। তার জলে ঝাঁপাঝাঁপি।
ভোরবেলা খেত-মাঠের নরম মাটির ওপর দিয়ে হেঁটে-হেঁটে শামুকের ডিম খুঁজতে বেরনো। কিংবা হামিদ চাচার নাওয়ে চড়ে বেড়াতে যাওয়া।
কখনও হাজিগঞ্জ বলতে চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটা মাটির উঠোন, উঠোনের একদিকে গোয়াল ঘর-গাই-গরুদের গেরস্থালি। ঠাকুমা মাঝ-উঠোনে বসে তাঁর সংসার তদারকি করতেন। জ্যৈষ্ঠ মাসে ওই উঠোনেই জমে উঠত আমের পাহাড়। মুনিশরা বাড়ির পিছন দিকের আমবাগান থেকে গাছপাকা আম পেড়ে জমা করত ওই উঠোনে। কতরকম আম! সিঁদুরে আম, গোলাপখাস, মোহনভোগ, ল্যাংড়া, মধু কুলকুলি।
‘বাংলাদেশ’ মানে যেমন আমার জন্মভূমি, তেমনই ‘বাংলাদেশ’ মানে এক অনন্ত গ্রাম। তার সবুজ ভূখণ্ড। গহিন জঙ্গল। এক মস্ত বড় দিঘি। এক ছোট নদী। আর হামিদ চাচা। তার ফেরেশতার মতো একবুক সাদা দাড়ি। সরল হাসি। বিশ্বাসী চোখ। আমার ধানের ছড়ার মতো পবিত্র শৈশব, যে-শৈশব জমা আছে হামিদ চাচা এবং তার মতো কয়েকজন নিবিড় মানুষের কাছে। হামিদ চাচা আল্লার দুনিয়াদারি ছেড়ে বেহেস্তে পৌঁছতে পেরেছে কি না আমি জানি না। কিন্তু সে যে যাওয়ার সময় আমার জমা রাখা শৈশব নিয়ে চলে গিয়েছে, সে-বিষয়ে কোনও সংশয় নেই।’’
প্রথমবার কলকাতায় যাওয়ার পথে গোয়ালন্দ স্টেশনে সঙ্গীহীন হয়ে একাকী কাদঁছিলেন। ভেবেছিলেন তিনি হারিয়ে গেছেন। অবাঙালি স্টেশন মাস্টার বলেছিলেন সত্যবানের সাবিত্রী কি কখনও হারাতে পারে?
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় হারিয়ে যাননি। কমলাপুরের ঠাকুরপাড়া গ্রাম থেকে কলকাতা মহানগরীর পথে প্রথম মঞ্চ নাটকের রিহার্সালের জন্য যখন হাঁটতে শুরু করেছিলেন। তখন সাবিত্রীর পায়ে জুতো ছিল না। স্কুলের জুতো বাদে অতিরিক্ত কোনও জুতো কেনার আর্থিক সঙ্গতি ছিল না।
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন– সাবিত্রী, এই শহরে খালি পায়ে হাঁটা যায় না।
–আমার যে আর কোনও জুতো নেই ভানুদা।
সেদিন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন এক জোড়া জুতো কিনে দিয়েছিলেন কিশোরী সাবিত্রীকে সেই জুতো পরে কলকাতা পথে হাঁটা শুরু করলেন। যে পথ এখনও ফুরয়নি। হেঁটে চলাও থেমে যায়নি। হাঁটতে হাঁটতেই শতবর্ষ পেরিয়ে যাবেন।
‘এপার বাংলা-ওপার বাংলা’ নিয়ে নাটক ‘নতুন ইহুদি’ নাটক দিয়ে যাত্রা শুরু। এলেন চলচ্চিত্রে। একে একে উত্তমকুমারের সঙ্গেই ৩৫টি সিনেমায় অভিনয় করলেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। জনপ্রিয় হয়ে থাকল ‘পাশের বাড়ি’, ‘উপহার’, ‘গৃহদাহ’, ‘রাত ভোর’, ‘অবশেষ’, ‘প্রতিনিধি’, ‘উত্তরায়ণ’ ‘মৌচাক’, ‘ধন্যিমেয়ে’, ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’ এমন সব অসংখ্য চলচ্চিত্র।
শুভ জন্মদিন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়।
সঙ্গের প্রতিটি ছবি লেখকের
…পড়ুন দ্যাশের বাড়ি-র অন্যান্য পর্ব…
পর্ব ১। যোগেন চৌধুরীর প্রথম দিকের ছবিতে যে মাছ-গাছ-মুখ– তা বাংলাদেশের ভিটেমাটির