
মুন্ডারি ভাষায় ‘উলগুলান’ শব্দের মানে অশান্তি। ১৮৫৭-র পরে কোম্পানির শাসন ঘুচে গিয়ে তখন ‘মহারানি’-র রাজত্ব হয়েছে। শহুরে শিক্ষিত দিকুরা তাতে আমোদ করেছে। দেশি সিপাইদের লড়াইকে তারা বরং পিছন থেকে ছুরি মেরেছিল! বিরসারা আমোদ করেনি। ওরা বুঝেছিল মহারানির শাসনেও মাটিঘেঁষা মানুষগুলোর কষ্ট একটুও কমেনি। বিরসা তাই একযোগে ইংরেজ সাহেব আর গির্জার মিশনারি, দেশি জমিদার-ইজারাদার-ঠিকাদারদের পাশাপাশি শিক্ষিত নগরবাসীর বিরুদ্ধেও ‘উলগুলান’-এর আওয়াজ তুলেছিল। বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মদিনে, বিশেষ নিবন্ধ।
আমলাশোলের কেন্দ্গোড়ায় ‘কুর্চি’ বনআবাসে ঠাঁই গেড়েছিলাম জানুয়ারির মাঝামাঝি। ভ্রাতৃপ্রতিম পিনাকী বছর-কয়েক হল মুন্ডারি-ওঁরাও-অধ্যুষিত এই গ্রামটিতে বনআবাসটি গড়েছেন। আমার আগ্রহ ছিল কিছু মুন্ডারি গান সংগ্রহের। কিন্তু গিয়ে দেখি, সে গুড়ে বালি! পৌষ সংক্রান্তির টুসু পরবের আবেশে মুন্ডারিদের গোটা মহল্লাটাই মহুয়া আর হাঁড়িয়ার বাটিতে ঠোঁট চুবিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। কেননা, টুসু পরবে দেবী নয়, আসল মজাটা পরবের উল্লাসে আর মহুয়ার রসে! অতএব, ‘মন চলো নিজ নিকেতনে’ বলে খালি হাতে ফিরলেও হাল ছাড়িনি।
স্থানীয় এক মাস্টারমশাইয়ের কাছে জেনেছিলাম, ওখানকার মুন্ডারা নিজেরাই প্রতি মাসে চাঁদা দিয়ে একটা ইশকুল চালাচ্ছেন। অবশ্যই সরকারি ইশকুল নয়। তিনি নিজেও যেহেতু মুন্ডা, সেহেতু সেখানে তিনিই বিনে-পয়সায় মুন্ডা ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। আসলে পেট চলছে ঘর-লাগোয়া মুদির দোকান চালিয়ে। সেই ইশকুলে মুন্ডারি ভাষা শেখার ব্যবস্থা নেই বলে সন্ধেয় মাস্টারমশাই কয়েকটি ছেলেকে নিয়ে আবার মুন্ডারির পাঠ দিতে বসেন। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো আর কাকে বলে!
আগস্টের ভ্যাপসা-গরমে গেলাম পরেরবার। এবার মাস্টারমশাই অনেকগুলো গান জোগাড় করে খাতায় লিখে এনেছেন। আর রীতিমতো গানের দল সঙ্গে এসেছেন আমাকে সেইসব গান শোনাবেন বলে। গানের মূল কান্ডারি সাবিত্রী মুড়া। মাস্টারমশাই আর সাবিত্রীর মতো কয়েকজন মিলে পাহাড়-জঙ্গল পর্যন্ত চারিয়ে যাওয়া, মহাজনী-সময়ের ধ্বকে হেজেমজে যাওয়া মুন্ডারিদের শেকড়টাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এই মাস্টারমশাইটির কথা অবশ্য আজকে শোনাতে বসিনি। শোনাতে বসেছি, ১৫ নভেম্বর যাঁর জন্ম, সেই ব্রিটিশ-ভারতীয় প্রশাসনের হাড়ে কাঁপন-ধরানো বিরসা মুন্ডার কথা। মুন্ডা বিদ্রোহের অবিসংবাদী সেই সংগ্রামী নায়ক ‘ভগবান’ বিরসার জন্মের ১৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ।
১৮৯৩ থেকে ১৯০০– রাঁচি, পালামৌ, সিংভূম, চক্রধরপুর জুড়ে মুন্ডা জনজাতির মাত্র ১৮-২০ বছরের ছোটখাটো চেহারার এই মানুষটিই কাঁপিয়ে দিয়েছিল তৎকালীন ব্রিটিশ-ভারতীয় প্রশাসনের আপাদমস্তক! অবশ্য তার অনেক আগেই ব্রিটিশের বিরুদ্ধে জনজাতিদের লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। আদিবাসী বিদ্রোহের সূত্রপাত অবশ্য ১৭৮৯-এ। অস্তাচলগামী মোগল আমলে বাদশাহ শাহ আলমের সঙ্গে পর্যন্ত ছোটনাগপুরের রাজার বার্ষিক ‘মালগুজারি’ বন্দোবস্ত চলে আসছিল। ১৭৭০-এ ক্যাপ্টেন ক্যামাক ছোটনাগপুরকে ‘করদ রাজ্য’-তে পরিণত করে; এবং তারপর সেই তকমাও কেড়ে নিয়ে সরাসরি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে নিয়ে এলেন ছোটনাগপুরকে। করের বোঝা চাপানো হল ভয়ংকরভাবে। অথচ পাহাড়-জঙ্গল হাশিল করে খুঁটি পুঁতে ছোটনাগপুরে ‘খুটকাট্টি’ গ্রামের পত্তন হয়েছিল মুন্ডাদের হাতেই। করের চাপ আর ভূমির অধিকার কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে ১৭৮৯-এ ছোটনাগপুরে প্রজাবিদ্রোহ দেখা গিয়েছিল।
এরপর ১৭৯৩-এ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের দৌলতে একদিকে ইংরেজ, অন্যদিকে এদেশি ইজারাদার, ঠিকাদার ও মহাজনদের মতো ‘দিকু’-দের চরম অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ছোটনাগপুর-ভাগলপুর জুড়ে আদিবাসী মানুষগুলো আবার বিদ্রোহী হয়। ১৮৩১-’৩২ সালে হল কোল বিদ্রোহ। ১৮৫৫ সালে সাঁওতাল বিদ্রোহ। দু’-বছরের মাথায় সিপাহি বিদ্রোহের আগুন ছোটনাগপুরের সেনা-ব্যারাকেও ছড়িয়েছিল। ১৯৭৪-এ ছোটনাগপুরের লোহারডাগায় থানা আক্রমণ করেছিল মুন্ডারা। ১৮৭৯-এ বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল ওঁরাও আর মুন্ডারা। এরপর ১৮৯০-এ সর্দাররা (মিশনারি-স্কুলে শিক্ষিত মুন্ডা) জমিদার-ইজারাদারের ‘বেঠবেগারি’র বিরুদ্ধে, আর পূর্বপুরুষদের ‘খুটকাট্টি’ গ্রামগুলোর অধিকার ফেরত চেয়ে লড়েছিল ‘মুলকি লড়াই’। সেটা ছিল কলকাতার আদালতে কানুনি লড়াই। বিরসা বুঝেছিল, ইংরেজের কানুন কেবল সাহেবদের দিকেই ঝোল টানে। ওভাবে হবে না।

সিধো-কানুদের ‘হুল’ ছিল কেবল সাঁওতালদের নিয়ে। সাঁওতাল-কোল-মুন্ডা-ওঁরাওরা এককাট্টা হয়ে না-লড়লে হবে না। ইংরেজের সঙ্গে চালাতে হবে হাতিয়ার নিয়ে চোরাগোপ্তা লড়াই।
সুগানা মুন্ডা আর কর্মির ছেলে হলেও বিরসা মুন্ডা ভিখ্মাঙা নিরক্ষর নয়। সাল্গায় জয়পাল নাগের পাঠশালার পর বুরজুতে জার্মান মিশন আর চাইবাসার ইশকুলে পাঠ নেওয়া তরুণ। তবু মিশনারিরা তার শরীর-মন থেকে লতাপাতা আর মাটি-পাহাড়ের বুনো গন্ধ মুছে দিতে চাইলেও বিরসা তার শিকড়কে ভোলেনি। ঘাসমাটিতে শুয়ে সে কৃষ্ণা অরণ্যমায়ের কান্না শুনতে পায়।
বিরসা বুঝতে শিখেছে, মিশনারিরা তাদের মাথার ওপর দালানকোঠার ছাদ দিয়েছে, পড়ালিখা শিখিয়েছে ঠিকই, কিন্তু মাটির সোঁদা গন্ধটুকু গিলে নিয়ে যিশুর ভজনা করিয়েছে। বলেছে– ‘গাছ-পাথরকে দেব্তা মানিস তোরা! ও তোদের মিছা ধর্ম।’
তাই ‘উলগুলান’-এর ডাক দিয়েছিল বিরসা। মুন্ডারি ভাষায় ‘উলগুলান’ শব্দের মানে অশান্তি। ১৮৫৭-র পরে কোম্পানির শাসন ঘুচে গিয়ে তখন ‘মহারানি’-র রাজত্ব হয়েছে। শহুরে শিক্ষিত দিকুরা তাতে আমোদ করেছে। দেশি সিপাইদের লড়াইকে তারা বরং পিছন থেকে ছুরি মেরেছিল! বিরসারা আমোদ করেনি। ওরা বুঝেছিল মহারানির শাসনেও মাটিঘেঁষা মানুষগুলোর কষ্ট একটুও কমেনি। বিরসা তাই একযোগে ইংরেজ সাহেব আর গির্জার মিশনারি, দেশি জমিদার-ইজারাদার-ঠিকাদারদের পাশাপাশি শিক্ষিত নগরবাসীর বিরুদ্ধেও ‘উলগুলান’-এর আওয়াজ তুলেছিল। অরণ্যভূমি আর তার আদিম সন্তানদের ভাষা-সংস্কৃতিকে সাহেব আর দিকুদের হাত থেকে মুক্তির আওয়াজের নামই ‘উলগুলান’।
অথচ প্রশাসনে কাঁপন-ধরানো বিরসার ‘উলগুলান’-এর আগুন নিভে গেল উনিশ শতকের শেষ বছরটায়। ১৮৯৫-এ বিরসাকে প্রথমবার গ্রেফতার করা হয়। ১৯ নভেম্বরে দু’ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ‘আর অশান্তি ছড়াবে না’– এই কড়ারে দু’ বছরের মাথায় ১৮৯৭-এ ছাড়া পেলেও বিরসার ‘উলগুলান’ থামল না। সমস্ত ছোটনাগপুরে ছড়িয়ে পড়ল ‘উলগুলান’-এর আগুন। বেঠবেগারি খাটবে না, মহাজনের কাছে ধার নেবে না, জমিদারের জমি চাষ করবে না, ভিখ্ মাঙ্বে না। মিশনে মিশনে গিয়ে আদিবাসীদের মনে আগুন জ্বালাতে লাগল বিরসা। শোনাতে লাগল ‘বিরসাইত’ ধর্মের কথা। সে ধর্ম আসলে অরণ্য-পাহাড়ের অধিকারের ধর্ম। ক্রমে ক্রমে বিরসাই হয়ে উঠল মুন্ডাদের ভগবান। বিরসা নিজেকে ঘোষণা করল ‘ধরতি আবা’। বিরসাকে ধরার জন্যে ৫০০ টাকা ইনাম ঘোষণা করল সরকার। সে লোভ সামলানো বড় কঠিন!
১৯০০ খ্রিস্টাব্দে ৩ ফেব্রুয়ারি বিরসাকে আবার গ্রেফতার করা হল। সাদা পাগড়ি আর ধুতি পরা বিরসাকে হাতে শেকল দিয়ে মুন্ডাদের চোখের সামনে দিয়ে নিয়ে গেল ইংরেজ পুলিশ। দুটো জেল ঘুরিয়ে শেষে রাখা হল রাঁচির লকআপে। বিরসার কয়েকজন সঙ্গীকেও রাখা হল অন্য সেলে।
মুন্ডারা বিশ্বাস করত, ভগবান বিরসার মরণ নেই! তাই পুলিশ কমিশনার মুন্ডাদের বিদ্রোহের শিরদাঁড়া ভেঙে দিতে প্রমাণ করতে চাইলেন বিরসা অমর নয়। জেলের ভিতরেই বিরসাকে স্লো-পয়জনিং করতে নির্দেশ দেওয়া হল। বিষক্রিয়ায় ধীরে ধীরে বৃহদন্ত্রে পচন ধরল বিরসার। মে মাসের মাঝামাঝি অসুস্থ হল। ১৯০০ খ্রিস্টাব্দের ৯ জুন সকাল থেকে রক্তবমি শুরু হল তার। তারপর বেলা ৯টায় মারা গেল বিরসা। রিপোর্টে লেখা হল মৃত্যুর কারণ কলেরা। মুন্ডারা কেউ বিরসার মৃতদেহ শনাক্ত করল না। কেননা এখনও তাদের বিশ্বাস বিরসা মরেনি, বিরসা মরতে পারে না!
অরণ্য-পাহাড়-ঝোরার সমস্ত অধিকারের জন্যে মুন্ডাদের স্বপ্ন আজ এই একুশ শতকেও নিদ্রাহীন।
কী আশ্চর্য সমাপতন! সেই যে মাস্টারমশাইয়ের কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম, যিনি আজও স্বপ্ন দেখেন মুন্ডারা তাদের শিকড় ফিরে পাবে একদিন। এই মিথ্যে আর প্রবঞ্চক রাজনীতির বদলে দেশজ শিক্ষায়, প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকারে, ভূমিসন্তানদের উল্লাসে-আনন্দে একদিন মাথা তুলে দাঁড়াবে মুন্ডারা। এই মাস্টারমশাইটির নামও বিরসা মুড়া (মুন্ডা)! উনিশ শতকের বিরসার উত্তরাধিকারই যেন কাঁধে তুলে নিয়েছেন একুশ শতকের বিরসা-মাস্টার!

জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘মাস্টারমশাই, কাগজে দেখেছি, আমলাশোলের মুন্ডারা নাকি পিঁপড়ের ডিম খেয়ে কোনওক্রমে বেঁচে আছে!’
মাস্টারমশাই হাসলেন। বললেন, ‘ওটা ছিল এখনকার বেঙ্গল-পলিটিক্সের ফার্স্ট স্টেপ।’
–মানে?
–বুঝলেন না? বাম-আমল জঙ্গল-পাহাড়কে কত কষ্টে রেখেছে, ওই প্রচারটা শুরু হয়েছিল এই আমলাশোল দিয়ে! রিপোর্টারদের জন্যে স্পেশাল ইনভেস্টমেন্ট ছিল।
–তাহলে খবরটা মিথ্যে ছিল?
–না, মিথ্যা নয়। এখানে মুন্ডাদের আপনি ডেইলি হাজার টাকা দিলেও ওরা পিঁপড়ের ডিম খাবে! ওটা এখানকার ফুড-হ্যাবিটের সঙ্গে মিশে আছে।
–কেন?
–হাই প্রোটিন! এখানে পিঁপডের ডিম দিয়ে চাটনি খুব পপুলার। টুসু পরবে পিঁপড়ের ডিমের পিঠে বানায় ঘরে ঘরে। এই পিঁপড়ের ডিম এখন কেজিতে কুড়ি-পঁচিশ হাজারে ট্রান্সপোর্ট হয়!

‘উলগুলান’-এর সময় যিশুর প্রচারক হয়ে বা ‘মহারানি’-র ছাপ মারা ৫০০ টাকার লোভে বিরসাকে ধরিয়ে দিয়েছিল। মানে তারাই লোভে পড়ে ‘দিকু’ বনে গিয়েছিল। আজ তাদেরই কিছু উত্তরপুরুষ রাজনীতির পাঁকে গলা পর্যন্ত ডুবিয়ে মুক্তি-সন্ধানী বিরসা মুড়াদের পিঠে ছুরি বসাচ্ছে। মাওবাদী বলে ফুসলে দিচ্ছে পুলিশকে, সরকারকে।
কিন্তু তা বলে বিরসা মাস্টার বা সাবিত্রী মুড়ারাও স্বপ্ন হারাচ্ছেন না। তাঁদের লড়াই জারি রয়েছে আজও। বিনে-পয়সার ইস্কুল চালানো ছাড়াও, প্রতি বছর ১৫ নভেম্বর মুন্ডাদের ‘ভগবান’ বিরসার জন্মদিন পালন করেন বিরসারা চাঁদা তুলে। বিরসা মাস্টারমশাই বললেন, ‘ওই দিনটায় আপনিও আসুন না। ইনভাইট করলাম।’ বললাম, ‘নিশ্চয়ই আসব। কিন্তু আমার একটা দাবি আছে যে!’
–কী দাবি?
–এ বছর বিরসার একশো পঞ্চাশের জন্মদিন, জানেন তো? আমি পারফর্ম করব এই মুন্ডা ভাইদের নিয়েই। তোমাদের বিরসা ভগবানের কথাকে ছবি করে তুলবে ওরাই।
মাস্টারমশাই কী বুঝল, কে জানে– জগদীশ, সাবিত্রী, ডোন্কাদের চোখ চকচক করে উঠল। বিরসার কথাকে ওরা ছবি করবে! কীভাবে? কিন্তু এই স্বপ্নই তো দেখেন মাস্টারমশাই! অতএব রাজি হয়ে গেলেন মাস্টারমশাই নিজেও।

১৩ আর ১৪ নভেম্বর কুর্চির উঠোনে ওদের শেখানো হল, মহাশ্বেতা দেবীর ‘অরণ্যের অধিকার’ আবৃত্তির সঙ্গে কখন, কারা, কীভাবে দাঁড়াবে স্থির মূর্তির মতো এক-একটা ছবির মতো। এই হল দু’-দিনের নাট্য-ওয়ার্কশপ। মন দিয়ে শিখছে ওরা। দ্বিতীয় দিনে রীতিমতো পোশাক পরে, বন্দুক, তির-ধনুক নিয়ে, গরাদের কাট-আউট আর সাল-তারিখের বাংলা আর মুন্ডারি ভাষার পোস্টার হাতে করে মহড়া হয়েছে। আজ ১৫ নভেম্বর ২০২৫, বিকেলে বিরসা মোড়ে ভগবান বিরসার মূর্তির পায়ের কাছে বিরসা স্মরণের অনুষ্ঠান হবে। মুন্ডাদের জীবনের মতোই আলো নেই, জুলুস নেই সেই অনুষ্ঠানে। তবু আমলাশোলের মুন্ডারা টগবগ করে যেন নতুন উদ্যমে ফুটছে! মনে মনে যেন শুনতে পেলাম কেন্দ্গোড়ার– আমলাশোলের– ছোটনাগপুরের পাহাড়-অরণ্য-ঝোরার বুক ভেদ করে বিরসার ডাক জেগে উঠছে– ‘আছি হে-এ-এ-এ… উলগুলানের শেষ নাই… ভগবানের মরণ নাই… উলগুলানের শেষ নাই… বিরসার মরণ নাই…’
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved