যখন যখন আমি দ্বিধায় পড়েছি, সৌম্যেন্দু রায় ছিলেন পথ দেখাতে। প্রতিটি ফ্রেম খুঁটিয়ে দেখার যে তাঁর নিষ্ঠা, তা ছিল দেখার মতো। কী নিখুঁত! কী নিয়মানুবর্তিতা! ওঁর থেকেই শিখেছি শিল্পের প্রতি সততা।
ভারতবর্ষের অন্যতম সেরা চিত্রপরিচালক সৌম্যেন্দু রায়। আমার সৌভাগ্য যে আমি ওঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। সুচিত্রা মিত্রের ওপর তৈরি তথ্যচিত্রটি উনি করেছিলেন আমার সঙ্গে। যার জন্য তিনি জাতীয় পুরস্কার পান। ‘আত্মীয়স্বজন’-এর জন্যও। তপন সিন্হা, শম্ভু মিত্রের ওপর তৈরি তথ্যচিত্রেও উনি আমার সঙ্গে ছিলেন। সৌম্যেন্দু রায় ছাড়া এই সিনেমাগুলো কি আমি বানাতে পারতাম? ওঁকে ছাড়া সম্ভব হত না আমার সিনেমা যাত্রা। জীবনে যদি কিছু ভাল করে থাকি, যদি সত্যিই সিনেমা বানিয়ে থাকি, তাহলে তার অবদান ওঁর। আমার বন্ধু মানুষ, আমার আত্মীয় মানুষ, আমার শিক্ষক মানুষ সৌম্যেন্দু রায়।
প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। যখন যখন আমি দ্বিধায় পড়েছি, উনি ছিলেন পথ দেখাতে। প্রতিটি ফ্রেম খুঁটিয়ে দেখার যে তাঁর নিষ্ঠা, তা ছিল দেখার মতো। কী নিখুঁত! কী নিয়মানুবর্তিতা! ওঁর থেকেই শিখেছি শিল্পের প্রতি সততা। একসঙ্গে দীর্ঘ একটা সময় আমরা একসঙ্গে কাটিয়েছি। আমার পরম সৌভাগ্য যে, আমার ওঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। ওঁর মৃত্যুসংবাদ আসলেই আমার আত্মীয়বিয়োগ। আমার পরম আত্মীয় উনি। খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন শেষের দিকে, চলে হয়তো যেতেই হত। তবুও এটা মেনে নেওয়া আমার পক্ষে কষ্টকর।
তাঁর কাজের পরিধি নিয়ে তো নতুন করে কিছু বলার নেই। এত বড় এক কর্মজীবন, কত অভিজ্ঞতা ওঁর। কত মানুষের শিক্ষক উনি। কতজনকে তৈরি করেছেন। একটা গোটা প্রজন্ম ওঁর হাতে তৈরি বা ওঁকে দেখে শিখেছে। রূপকলা কেন্দ্রের সঙ্গে ওঁর জড়িয়ে থাকা ভবিষ্যতের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আশা করছি ভবিষ্যতের চিত্রগ্রাহকরা ওঁর দেখানো পথে চলবে, ওঁকে মনে রাখবে, ওঁর প্রতি নিষ্ঠাবান হবে।