Robbar

আজকের কিশোররা বেঁচে আছে ম্যানোস্ফিয়ারে, এ এমন এক ভার্চুয়াল জগৎ যেখানে তৈরি হচ্ছে পৌরুষের চেহারা

Published by: Robbar Digital
  • Posted:March 24, 2025 8:07 pm
  • Updated:March 25, 2025 8:56 pm  

ম্যানোস্ফিয়ারে পুরুষ মানে অক্লান্ত পরিশ্রমী, জনপ্রিয়, পেশিবহুল। যে পুরুষ জীবনকে দেখে প্রতিযোগিতাময় এক খেলার মতো। যে খেলায় তার সাফল্যের মাপকাঠি হল জনপ্রিয়তা, ধন সম্পদ আর সর্বোপরি মেয়েদের চোখে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারা। ম্যানোস্ফিয়ারের আদর্শ পুরুষ মেয়েদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। এহেন ম্যানোস্ফিয়ারের নেতা এন্ড্রু টেট তাঁর মতের পন্থী ইউটিউবারদের জনপ্রিয়তা ভারতেও আকাশচুম্বী। যেগুলির ফলোয়ার ১ মিলিয়ন, অর্থাৎ ১০ লক্ষেরও বেশি। ফলোয়ারদের মধ্যে বেশিরভাগ ভারতের কিশোর ও যুব সম্প্রদায়ের পুরুষেরা। যেভাবে ম্যানোস্ফিয়ারের পিতৃতন্ত্র বর্ণবিদ্বেষী সেভাবেই ভারতের ম্যানোস্ফিয়ারের বিদ্বেষের ভাষা হিন্দুত্ববাদী/মৌলবাদী/ব্রাহ্মণ্যবাদী।

সম্প্রীতি মুখার্জি

কৈশোর মানে নতুন সম্ভাবনা, উথাল-পাথাল মন, শরীরের মাঝে অচেনা অনুভূতি, পুরনোকে প্রশ্ন করার তেজ, মাথা না নোয়ানোর শপথ। এ সেই বয়স, যখন সারল্য আর দুঃসাহস হাত ধরাধরি করে প্রস্তুতি নেয় প্রাপ্তবয়স্ক জীবনের জন্য। সমসাময়িক ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার বিস্তার যেভাবে বদলে দিয়েছে আপামর দুনিয়ায় মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার সমীকরণ, সেভাবেই বদলেছে আজকের কৈশোরের যাপন। শুধু পরিবার, স্কুল, পাড়া, টিউশন, খবরের কাগজ কিংবা টিভির পর্দার পরিসর নয়– এখন মুঠোফোন ও ইন্টারনেটের প্রযুক্তির দৌলতে অগণিত ভার্চুয়াল পরিসর তৈরি হয়েছে, যা সরাসরি প্রভাবিত করছে কিশোর মন ও চেতনাকে। আমরা এমন এক সময় বাঁচছি যখন দেশ থেকে দুনিয়ায় জনশিক্ষা, জনস্বাস্থ্য-সহ সামাজিক সুরক্ষার সমস্ত কাঠামো ভেঙে যাচ্ছে। সম্পদ আর ক্ষমতার এমন বৈষম্য দেখেনি দুনিয়া। একদিকে আমরা দেখছি প্রযুক্তির অভাবনীয় উদ্ভাবন– শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য প্রতিটি খাতে প্রযুক্তির অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা অন্যদিকে গণহত্যা, বিদ্বেষের ভয়াবহ দৃশ্যও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে পরিণত হচ্ছে বিনোদনের বস্তুতে। পুঁজি আর ক্ষমতার চূড়ায় বসে থাকা মানুষদের ইন্ধনে নেট দুনিয়া পরিণত হয়েছে এক গোলকধাঁধায়, যেখানে ন্যায়-অন্যায়, সত্যি-মিথ্যের মধ্যে ফারাক করতে পারা অসম্ভব হয়ে উঠছে। এহেন বর্তমানের কিশোর মন কীভাবে চিনবে কোন তথ্য সঠিক কোনটি নয়? এই চূড়ান্ত অসম প্রতিযোগিতামূলক সমাজে টিকে থাকার প্রস্তুতি নিতে বাধ্য যে কিশোর– তার নিজের সঙ্গে, আশপাশের সঙ্গে, সমাজের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে?

Adolescence (TV Mini Series 2025) - IMDb

এই প্রশ্নগুলোই মাথায় ঘুরছিল নেটফ্লিক্সের চার পর্বের মিনি সিরিজ ‘অ্যাডোলেসেন্সদেখার পর থেকে। ৫০-৬০ মিনিট দীর্ঘ প্রতিটি পর্ব মনের গভীরে গিয়ে আঘাত করে, ভাবায়, চেতনাকে ধাক্কা দেয়। কাঁচা আবেগ, অপরিশোধিত অনুভূতিতে ভর করে ‘অ্যাডোলেসেন্স’ দ্রুত বদলে যাওয়া সময় কৈশোরের আত্মবিশ্বাস, অনুভূতি, যৌনতা, লিঙ্গ-ভিত্তিক অভিজ্ঞতা, সাফল্য, বিচ্ছিন্নতার লড়াই নিয়ে একটা মন ছুঁয়ে যাওয়া গল্প বলেছে। 

……………………………………..

পড়ুন অন্য লেখাও: এ সিনেমা এক ক্ষমাহীন অপমানের, এক উদ্বাস্তুর, এক অপমানিতের

…………………………………….

ইংল্যান্ডের এক নাম না জানা শহরের প্রেক্ষাপটে তৈরি এই সিরিজটি দেখায় যে সারল্য আর জিজ্ঞাসায় ভরা আজকের কিশোরদের তাজা মনকে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত বিদ্বেষ কীভাবে ঠেলে দেয় অপরাধের দিকে, অপরাধ কী তা বুঝে ওঠার আগেই। সিরিজটির শুরুতেই ১৩ বছর বয়সি স্কুল ছাত্র জেমি মিলারকে (ওয়েন কুপার) তার সহপাঠী কেটি লিওনার্ডকে হত্যার সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনার পরবর্তী প্রেক্ষাপট নিয়ে গল্প এগিয়ে চলে। গল্পটি ১৩ মাসের সময়কালে রচিত। যে সময় জেমির পুলিশ স্টেশনে জেরা থেকে শুরু করে সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হাজতবাসের সময় মনোবিদের সঙ্গে তার কথোপকথন, জেমির বন্ধু, সহপাঠী ও পরিবারের ওপর ঘটনার অভিঘাত এবং সবশেষে জেমির বিরুদ্ধে নথিভুক্ত মামলাটির পরিণতিকে ঘিরে আবর্তিত হয় সিরিজটি।

‘অ্যাডোলেসেন্স শুধু একটি অপরাধ ও তার তদন্তের গল্প নয়। এটি প্রশ্ন তোলে– ‘কেন?’ কেন এমন একটি ঘটনা ঘটল? কেন একজন ১৩ বছরের শিশু এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হল? এর সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক কারণ কী?

Netflix's 'Adolescence' Review: An All-Time Technical Masterpiece

তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা যতবার জেমিকে জিজ্ঞেস করে, 

‘জেমি তুমি কি বুঝতে পারছ তুমি কী করেছ? জেমি তুমি কি বলতে চাও না যে তুমি কেন এমন করলে?’ 

ভাঙাচোরা জেমি ততবারই বলে ‘আমি কোনও ভুল করিনি।’ 

ডিজিটাল প্রজন্মে বেড়ে ওঠা কৈশোরকে বোঝায় অভিভাবকদের প্রজন্মের অসহায়তা অ্যাডোলেসেন্সের এক অন্যতম কেন্দ্রীয় সুর। যেমন জেমির মা-বাবা, যারা বুঝে উঠতে পারছে না, কীভাবে তাদের আদরের সন্তান এমন হিংস্র অপরাধ করতে পারে! তারা বারবার ভাবে কোথাও ভুল হচ্ছে। সিরিজটার অন্তিম পর্বে তাই জেমির মা-বাবা যখন তাদের সন্তানকে বোঝায় কোথায় ঘাটতি হল, সেই নির্ভেজাল বেদনাময় আত্ম-নিরীক্ষণের মাঝে ফুটে ওঠে আজকের সময়ের প্রতিচ্ছবি।

অন্য একটি দৃশ্যে তদন্তকারী পুলিশ ইন্সপেক্টর লুইস বাসকোম্বের চরিত্রটি জেমির কাছের বন্ধু রায়ানের সঙ্গে ভাব পাতানোর উদ্দেশ্যে তার কৈশোরের স্মৃতিচারণা করছিল। হয়তো উদ্দেশ্য ছিল এইভাবে জেমি, রায়ানদের মনের অলিগলির হদিশ পাওয়া। রায়ানের আগ্রহ যদিও একটিই প্রশ্ন জানার, সে জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি কি ছোটবেলায় জনপ্রিয় ছিলেন? আপনাকে কি স্কুলের সবাই চিনত?’ বাসকোম্বে তার পরবর্তী প্রজন্মের জনপ্রিয়তার প্রতি টানের কারণ বুঝতে পারে না। জেমি, রায়ান, কেটিদের ভাষা বুঝতে হিমশিম খায় পুলিশ ইন্সপেক্টর থেকে অভিভাবক থেকে স্কুলের শিক্ষক।

How positive male role models are detoxifying the social media 'manosphere' | Social media | The Guardian
অ্যান্ড্রু টেট

ধীরে ধীরে দর্শকের কাছে পরিষ্কার হয় এই কিশোররা বলছে ‘ম্যানোস্ফিয়ার’-এর ভাষা। ম্যানোস্ফিয়ার ভার্চুয়াল জগতে সংগঠিত একটি বাস্তব পরিসর, যেখানে প্রচার হয় আধিপত্যবাদী পুরুষত্বের চেহারা, আদব-কায়দা। যেখানে পুরুষ মানে অক্লান্ত পরিশ্রমী, জনপ্রিয়, পেশিবহুল। যে পুরুষ জীবনকে দেখে প্রতিযোগিতাময় এক খেলার মতো। যে খেলায় তার সাফল্যের মাপকাঠি হল জনপ্রিয়তা, ধনসম্পদ (গাড়ি, বাড়ি, দামি গ্যাজেট ইত্যাদি) আর সর্বোপরি মেয়েদের চোখে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারা। ম্যানোস্ফিয়ারের আদর্শ পুরুষ মেয়েদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। এহেন ম্যানোস্ফিয়ারের নেতা এন্ড্রু টেট, তার মতের পন্থী ইউটিউবারদের জনপ্রিয়তা ভারতেও আকাশচুম্বী। ইউটিউবে শ্যাম শর্মা শো থেকে শুরু করে ইন্ডিয়া স্পিকসের মতো অনলাইন চ্যানেল, যেগুলির ফলোয়ার ১ মিলিয়ন, অর্থাৎ ১০ লক্ষেরও বেশি। ফলোয়ারদের মধ্যে বেশিরভাগ ভারতের কিশোর ও যুব সম্প্রদায়ের পুরুষেরা। যেভাবে ম্যানোস্ফিয়ারের পিতৃতন্ত্র বর্ণবিদ্বেষী সেভাবেই ভারতের ম্যানোস্ফিয়ারের বিদ্বেষের ভাষা হিন্দুত্ববাদী/মৌলবাদী/ব্রাহ্মণ্যবাদী।

As hyper-masculine content floods social media, a 'healthier' men's movement is stepping up - ABC News

অনলাইনে প্রচারিত হিংসা, লিঙ্গ-বিদ্বেষ আর অমানবিকতার ভাষা কীভাবে কিশোর মনের ভাবনা, অনুভূতি ও আচরণকে প্রভাবিত করে আর তার নির্মম পরিণতি কী হতে পারে– তা আমাদের মানে ভারতবাসীর কাছে অজানা নয়। বছর খানেক আগে হাওড়ায় রামনবমীর মিছিলে কিশোর সুমিত শা-এর ছবি ভেসে ওঠে, যে বন্দুক উঁচিয়ে হুংকার দিচ্ছিল ‘জয় শ্রী রাম’। ছেলে গ্রেপ্তার হওয়র পর সুমিতের মা বলেন, ‘ছেলে বিভিন্ন শোভাযাত্রায় যেতে ভালোবাসে। কিন্ত ওর হাতে বন্দুক কী করে এল আমি জানি না!’ মনে পড়ে যায় পহেলু খানকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত দুই কিশোরের কথা যারা অ্যাডোলেসেন্সের জেমির চরিত্রের মতোই সাজা কাটাচ্ছে বিশেষ সংশোধনাগারে। বা কয়েক মাস আগে মাদ্রাসা ফেরত শিশুদের জোর করে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে বাধ্য করা হিংস্র কিশোরদের কথা।

The draw of the 'manosphere': understanding Andrew Tate's appeal to lost men
এন্ড্রু টেট-এর ম্যানোস্ফিয়ার

কিশোরদের এহেন হিংসার রূপ দেখে প্রশ্ন জাগে শিশু-কিশোর মনে কীভাবে দানা বাঁধে হিংসার বীজ? কেন এত হিংস্র, নির্দয় এই কিশোরেরা? ভালোবাসা, দয়া, সহমর্মিতার মতো অনুভূতিগুলির কি কোনও ঠাঁই নেই তাদের মনে? 

উত্তর কিছুটা পাওয়া যায় অ্যাডোলেসেন্স-এর তৃতীয় পর্বে, যেখানে জেমি ও তার মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন করতে আসা মনোবিদের কথোপথন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মনোবিদ, যিনি একজন নারী, জেমিকে জিজ্ঞাসা করেন– পুরুষ বলতে সে কী বোঝে? জানতে চান, জেমির জীবনে গুরুত্বপূর্ণ পুরুষদের সম্পর্কে। ৫১ মিনিটের এই টানটান পর্বটি একদিকে যেমন অভিনয়ের এক মাস্টারক্লাস, তেমনই এটি অনবদ্যভাবে তুলে ধরে কিশোর মনন গঠনে যৌনতা, লিঙ্গভিত্তিক অভিজ্ঞতা এবং আত্মপরিচয়কে বুঝতে না পারার, দিশাহীনতার সংকট। বিশেষ করে, বর্তমান সময়ের লিঙ্গবিদ্বেষী ইনফ্লুয়েন্সার সংস্কৃতি কীভাবে কিশোর মনের নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তোলে এবং সারল্যকে মুহূর্তের মধ্যে আক্রমণাত্মক রাগে রূপান্তরিত করতে পারে– এই পর্ব সেটিই দেখায়।

অনলাইন লিঙ্গ-বিদ্বেষী সংস্কৃতি কিশোরদের এমনভাবে গড়ে তুলছে, যেখানে মেয়েদের ভাবা হচ্ছে শুধুই সম্মান ও স্বীকৃতি পাওয়ার মাধ্যম হিসেবে, একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে নয়। ছেলেদের শেখানো হচ্ছে, মেয়েরা শুধুমাত্র সাফল্য ও টাকার পিছনে ছোটে, তাদের একমাত্র হাতিয়ার সৌন্দর্য, আর তাদের মূল্য নির্ধারিত হয় সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতার ভিত্তিতে। একইসঙ্গে মেয়েদের প্রতি অবিশ্বাস তৈরি করা হচ্ছে এই ধারণার মাধ্যমে যে তারা তাদের সৌন্দর্য ব্যবহার করে পুরুষদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।

এই বিশ্বাসগুলিই দুর্বল মুহূর্তে জেমির ভেতর দানা বাঁধে। সে মনোবিদকে বিশ্বাস করতে পারে না, কারণ তিনি একজন নারী। অথচ এই জেমিই আবার তার কাছে অসহায় হয়ে নিজের একাকিত্ব প্রকাশ করে। সংশোধনাগারে সে মনোবিদের সঙ্গ চায়– একজন মেয়ে হিসেবে নয়, বরং একজন বন্ধু হিসেবে।

মেয়েদের বেড়ে ওঠা নিয়ে সিমন বোভেয়ার লিখেছিলেন, ‘মেয়েরা জন্মায় না, তারা মেয়ে হয়ে ওঠে।’ বেশ কিছ বছর পর জুডিথ বাটলার বলেছিলেন, ‘যে কোনও লিঙ্গ যাপনই একধরনের পারফরম্যান্স– এক অভিনয়।’ মেয়েদের জীবনে লিঙ্গ নির্ধারিত নিয়মকানুন, আচার-আচরণের প্রভাব নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে, কিন্তু সেই তুলনায় পুরুষ হয়ে ওঠার যাত্রা, তার যাপন বা অসহায়তা নিয়ে ততটা চর্চা হয়নি। পুরুষদের মধ্যেও পুরুষত্বের অভিজ্ঞতার চর্চা নিয়ে আগ্রহ দেখানো আজও ব্যতিক্রমী। পুরুষত্ব মানেই নিশ্চয়ই আগ্রাসন আর হিংসা নয়। পুরুষের জীবনে একমাত্র অনুভূতি অন্ধ রাগ নয়। নিশ্চয়ই এমন পুরুষ আছে যারা সমাজের পিতৃতান্ত্রিক লিঙ্গ-বিদ্বেষী মানসিকতার যন্ত্রণাকে প্রত্যক্ষ করেছেন। কিন্ত তাদের অভিজ্ঞতা শোনা বিরল। পুরুষদের অভিজ্ঞতা মানেই এন্ড্রু টেটের ম্যানোস্ফিয়ার আর পীড়িত পুরুষদের আওয়াজ– যারা শত্রু মনে করে নারীবাদকে, পিতৃতন্ত্রকে নয়। ইন্টারনেটের দুনিয়ায় আজও এরাই পুরুষত্বের রোল মডেল। তাই কি আজকের কৈশোর আবারও ফিরে যাচ্ছে বৈষম্যমূলক লিঙ্গভিত্তিক ভূমিকাগুলোর দিকে? পিতৃতান্ত্রিক সমাজের লিঙ্গভিত্তিক নিয়ম ও ভূমিকাগুলো ব্যক্তি ও সমাজ– উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর, এই বাস্তবতা দেখার পরেও, তাই কি নতুন প্রজন্মের কৈশোর আবারও সেই পুরনো বিভেদমূলক কাঠামোকেই আশ্রয় হিসেবে বেছে নিচ্ছে? 

অ্যাডোলেসেন্স-এর অন্তিম পর্ব কিন্তু শেষ হয় আশার জাগিয়ে– সহজাত মানবিকতার, হিংসাকে পেরিয়ে ভালোবাসা ও বিশ্বাসে ফেরত আসার। সমাজের প্রতিটি স্তরে যখন বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, তখন এই আশা যেন ছোঁয়াচে হয়ে ওঠে।

আমাদের প্রয়োজন, এক নতুন আলোচনার, নতুন বোঝাপড়ার, যেখানে পুরুষত্ব মানেই শক্তির আর হিংসার প্রতীক নয়। সমাজের এই পরিবর্তনশীল বাস্তবতাকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে, যাতে কৈশোরের বেড়ে ওঠার জায়গাটি হয়ে ওঠে নিরাপদ, সংবেদনশীল এবং সহমর্মিতার।

……………………………………..

ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল

……………………………………..