সোমেন্দ্রনাথ সেদিন আনন্দ করে সারা বাড়ি চিৎকার করলেন ‘রবি নোবেল প্রাইজ পেয়েছে, রবি নোবেল প্রাইজ পেয়েছে!’ শুধু একটি প্রাণ সে আনন্দে যোগ দেয়নি। সে কবির আত্মজা। প্রথম কন্যা মাধুরীলতা, কবির আদরের বেলা। তাঁর কাছ থেকে আসেনি কোনও শুভেচ্ছাবার্তা, কোনও অভিনন্দন। মেয়ে, জামাই– দু’জনেই ছিলেন আশ্চর্য রকমের নীরব, নিস্পৃহ। কেউ এগিয়ে আসেনি একগোছা রজনীগন্ধা অথবা একটি গোলাপ নিয়ে। কারণ তার আগের বছর থেকেই কবির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করেছে।
তনুশ্রী ভট্টাচার্য
নোবেল প্রাপ্তির সংবাদে আনন্দের পাশে এই বেদনা ও বিষাদ, এই অভিমান ও অত্যাগসহন নিয়েই কবি এই খ্যাতিকে গ্রহণ করেছিলেন। সুখ ছিল না এই যশের গৌরবে।
কবিতাগুচ্ছের আগে, অসুস্থ অবস্থায় রচিত হয়েছে এক আলোকিত নিসর্গের ছবি। ভোরের আলোর গানে পূর্ণ করে দেওয়া এক আশ্চর্য সকালের চিত্রিত প্রতিমা। সে ঘটনা অনেকটা এইরকম, গভীর অচেতন থেকে জেগে উঠে আশপাশের সবাইকে অবাক করে তিনি হাতে তুলে নিলেন রং-তুলি। আশপাশের সকলে ইতস্তত দ্বিধান্বিত হয়ে উঠলেও তাঁকে নিরস্ত করা যায়নি।