E-Robbar
বিশ্বায়ন যে-প্রজন্মকে হাতে ধরে মানুষ করেছে, তাদের কাছে মেস এসেছিল শূন্য দশকের যাবতীয় বিষ ও বিস্ময় নিয়েই।
সরোজ দরবার ও
মেস কেড়ে নিয়ে শহর আমাদের জন্য এখন যে আস্তানা বরাদ্দ করেছে সেখানে নিশ্চিন্তি কই! অহোরাত্র গ্রিলে তালা, এদিকে নজর, সেদিকে নজরদারি। সতর্কতার শেষ নেই। তা সত্ত্বেও যদি বিপদ আসে, আজ কি আর কেউ প্লাইউড হাতে এসেও দাঁড়াবে?
সেমিস্টারের সামনে এসে মেস তার ঢিলেঢালা আলখাল্লা খুলে রাখত। যাকে বলে মালকোঁচা বেঁধে দৌড়ের মতো আমরা ম্যাট্রিক্সের পাতায় পাতায় চলতাম। ডালে ডালে এগিয়ে আসত সেমিস্টার।
মেস কখনই স্বকল্পিত ধারণার বুদ্বুদে বাস করায় না। অনেকগুলো মানুষ, পাশাপাশি থাকে, নানা বাস্তবতা, নানা ধারণায় ঠোকাঠুকি লেগেই মেসের জীবন তৈরি।
মাঝেমধ্যে নিজেরা খাতা খুলে চমকেও উঠতাম। জমার যা বহর তাতে কপালে খাবার না জোটারই কথা। মেসে তবু উপোসের রীতি নেই। কেউ-না-কেউ খাইখরচ দিয়েই দেয়।
শেষবারের মতো তালা দিলাম দরজায়। বহুবার এই ঘরে বন্ধুরা মেতেছি তরজায়। সেসব নয় আবার নতুন করে ফিরে পাওয়া যাবে। শুধু পড়ে রইল সেই শোকধ্বনিতে জেগে ওঠা মাঝরাত্তির।
ভ্রু-পল্লবে ডাক দিলে, এ শহরে সব দেখা হয় সিঙ্গল স্ক্রিনে। সিনেমাই সিঙ্গল আর যুগলকে এক হলে বেঁধে রাখে। ক’দিন আগেই বাসে শুনেছি এক ভদ্রলোক বলছেন ‘যুগলসের সামনে বেঁধে দেবেন’। ভাবি, অবাক হয়ে, যুগল তো এমনিই বহুবচন, আবার যুগলস কেন!