কেমন সে ছবি, যা সংগ্রহ করার জন্যে ব্যাকুল হয়েছেন রবীন্দ্রনাথ? যার জন্য আজ থেকে প্রায় ১১০ বছর আগে খরচ করেছেন ১৫০০ টাকা?
যে-রবীন্দ্রনাথকে আগলে রেখেছে তাঁর লেখার টেবিল অতি সন্তর্পণে, সেই রবীন্দ্রনাথকে চেনে না, চিনতে হয়তো চায়ও না তাঁর আঁকার টেবিল, এই নির্মম সত্যটি বুঝতে পেরেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
সাহিত্যের মধ্যে অকারণ ছবি এনে চোখ ভোলানো ছেলেমানুষি পছন্দ করতেন না রবিঠাকুর।
‘মহুয়া’র প্রচ্ছদের নেপথ্যে নন্দলালের আঁকা সহজ পাঠের ছবি রবীন্দ্রনাথকে নিশ্চয়ই প্রাণিত করেছিল। সহজ পাঠের আগে আমরা দেখেছি, ১৯২২ সালের শেষে আন্দ্রে কারপেলেস প্যারিস থেকে এনেছিলেন একগুচ্ছ কাঠখোদাই। এমনকী, বিশের দশকে রবীন্দ্রনাথ যে কয়েকবার বিদেশ সফরে গিয়েছেন, সেখানে জার্মানিতে ও ফ্রান্সে তাঁর রীতিমত চেনাজানা ঘটেছিল কাঠখোদাই মাধ্যমটির সঙ্গে।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর লেখার টেবিলে বসে লিখলেন তাঁর ‘আত্মহত্যার চিঠি’, যে চিঠি তাঁর কৌতুকী বিয়ের চিঠি বলেই পরিচিত।
শিল্পের প্রতি অন্ধ ভালোবাসার মুগ্ধতা নয়, ছবি বুঝে নেওয়ার, যাচাই করে নেওয়ার মতো শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে দর্শকের চোখ, সংগ্রাহকের দৃষ্টি।
মৃত সন্তানকে কোলে নিয়ে অসহায় জননীর বোবা কান্না, এঁকেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
প্রশ্ন উঠছে, কী সেই দৃষ্টি? কেমন সে দেখা, যা তাঁকে নেশা ধরিয়ে দেয়?
রবীন্দ্রনাথ চিঠিতে নন্দলালকে লিখেছেন, ‘আমার ছবিগুলি শান্তিনিকেতন চিত্রকলার আদর্শকে বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেচে’। এ কি ভারি আশ্চর্যের কথা নয়? এখানে ‘শান্তিনিকেতন চিত্রকলার আদর্শ’ বলতে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছেন?
রবীন্দ্রনাথ আর রবীন্দ্র-সাহিত্যের প্রতি পাঠকের মন লাবণ্যের মতো। এই বিদায় নেয় বলেই থাকার মুহূর্তটুকু বন্ধনহীন গ্রন্থি হয়ে ওঠে।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved