শরীর ও মনকে আধ্যাত্মিকতার সূত্রে বাঁধতে পারে, এমন অনেক যোগ-ব্যায়াম মাথায় হাত না-দিয়ে হয় না। এবং সেই বিজ্ঞানের বয়সও হাজার বছরের ভয় ও কুসংস্কারের থেকে কিঞ্চিৎ বেশি। কিন্তু কলোনিয়াল হ্যাংওভারে ভুগতে ভুগতে আমরা সে সব যুক্তি মাথায় রাখিনি। রেখেছি মাথায় হাত না রাখার কুসংস্কার।
পূর্ব ইউরোপে, ছাতা শবযাত্রার সঙ্গে যুক্ত ছিল, বৃষ্টি থেকে শোকার্তদের রক্ষা করত। ঘরে তা খোলা মানে ছিল মৃত্যুকে আমন্ত্রণ জানানো; হাড় হিম করা শীতলতার আবাহন করা। ঔপনিবেশিক শক্তি তাদের প্রভাব ছড়িয়ে দিলে, এই কুসংস্কার এশিয়া, আফ্রিকা, আর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।
৬৮৪ খ্রিস্টাব্দের জাপানে নিহোন শোকি লেখেন একটি ধূমকেতু যখন আসে তখন ধরেই নিতে হবে রাজনৈতিক ঝগড়া শুরু হল বলে। চিন-প্রভাবিত জ্যোতিষশাস্ত্র আবার এটিকে উচ্ছেদের নোটিশ হিসেবে দাগিয়ে দিল।
ভারতে, আধুনিক যুগে, দাঁড়কাক পিতৃপক্ষ সময়ে তার আচার-অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বজায় রাখে, কিন্তু স্থানীয় গল্পে এর অশুভ ধারণা এখনও টিকে আছে। ১৯ ও ২০ শতকের গবেষণায় এমন বিশ্বাসও নথিবদ্ধ হয়েছে যে, দাঁড়কাকের ডাক বা অস্বাভাবিক আচরণ অসুস্থতা বা আর্থিক ক্ষতির পূর্বাভাসও দেয়।
আসলে হাঁচির অপয়া গল্প হাজার বছর ধরে চলছে। মেসোপটেমিয়ার দেবতার ভয়, ইউরোপের প্লেগের আতঙ্ক, ভারতের আচার ভঙ্গ, পোল্যান্ডের শাশুড়ির গুজব। প্রতিটি দেশের গল্প তার ইতিহাস আর সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে দেখায় শুভ ধারণা থাকলেও, অশুভ বিশ্বাস কীভাবে টিকে আছে।
ভাগ্যের নামে জীবন চালায় যারা তাদের জন্য চোখের নাচন একটি সিরিয়াস ব্যাপার, নির্ভেজাল পয়া আর অপয়ার গল্প।
‘আগন্তুক’ ছবিতে সত্যজিৎ রায় মনমোহন মিত্রের জবানিতে যে-কথাটা বলেছেন, তারপর গ্রহণ পয়া-অপয়ার গণ্ডি ছাড়িয়ে অনেক দূর চলে গিয়েছে। যে রহস্যে চাকতিতে চাকতি মিলে যায় এমন এক ম্যাজিক।
তাদের ঘরে আয়না ভেঙে গেলে ওমনিই ঝুলে থাকে। তারা তাতে মুখ দেখে, চুল বাঁধে, দাঁড়ি কামায়, ক্রিম মাখে আর কাঁচের ভাঙা ফাটলগুলো মিলে-জুলে ঘর করে ভাঙা দেওয়াল আর ফুটো চালের সঙ্গে।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved