‘ওয়ান ব্যাটল আফটার অ্যানাদার’-এর শেষে সেই মিশ্রবর্ণের কন্যাটি হয়ে যায় আমেরিকার আত্মা। তার পিতা কে হবে? একজন ফ্যাসিস্ট বর্ণবিদ্বেষী? নাকি একজন পরাজিত বিপ্লবী, যে এখনও মনে করে যে দেশ ইমিগ্রেন্টদের দিয়েই তো তৈরি হয়েছিল নবপর্যায়ে।
ড্যানি বয়েলের ‘টোয়েন্টি এইট ইয়ার্স লেটার’ আর পল টমাস অ্যান্ডার্সনের ‘ওয়ান ব্যাটল আফটার অ্যানাদার’। প্রথমটিকে হরর-অ্যাকশন জঁরে ফেলা যায়, দ্বিতীয়টি ছবিটি পলিটিকাল থ্রিলার হয়ে শুরু হয়ে অ্যাকশন-কমেডির দিকে যায়, কিন্তু শেষের দিকে হয়ে যায় পলিটিকাল ফেবল।
হিটলার যখন তার রক্ত-গরম করা বিদ্বেষী ভাষণ দিতেন, তখন বিশ্বাসী শ্রোতাদের অনেকেরই নিশ্চয়ই মনে হত যে তিনি ঠিক কথা বলছেন। আবার অনেকে হয়তো ছিলেন, যাঁরা মনে করতেন যে তিনি যা বলছেন তা অশুভ, কিন্তু তাঁরা সম্মোহিত হয়ে থাকতেন। ইদানীংকালের massy অ্যাকশন ছবির ধরনটা ঠিক ওইরকমই। আপনি দেখছেন যা যা হচ্ছে, তা যেন ঠিক নয়, কিন্তু আপনাকে মেসমেরাইজ করে রাখা হচ্ছে।
‘কিল বিল’ আর ‘জন উইক’-এর মধ্যে আত্মাগত মিল একাধিক, আবার বেমিলও আছে। ছবি দু’টি সমকালীন ক্লাসিক হিসেবে একরকম স্বীকৃতই বলা চলে। দু’টি ছবি খুবই ইনফ্লুয়েনশিয়াল, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে স্বধর্মে এই দু’টি ফ্র্যাঞ্চাইজি সমকালীন অ্যাকশন ছবির থেকে একেবারেই আলাদা।
ব্রুসের ফাইট সিন দেখলে বোঝা যায় যে আসলে তিনি হলিউডের এই ‘সিনেম্যাটিক’-কেই পর্যুদস্ত করছেন। ফাইট সিনের সবচেয়ে জরুরি উপকরণ– নাটকীয়তা ছাড়া– হল ছন্দ, যা ক্যামেরার কোন পরিবর্তন ও সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি হয়, অভিনেতারা সেই সুতোয় পুতুল হয়ে ওঠেন প্রায়।
তান্ত্রিক থ্রিলারের ‘ফর্মুলা’ খুব সোজাসাপ্টা– অকাল্ট এমন এক প্র্যাক্টিসের ইতিহাসের অতল হতে উত্থান হবে যা পেগান, আধিভৌতিক, তামসিক, ভীতিপ্রদ আসলে ‘অনাধুনিক’। তার সাথে সংঘাত হবে এমন কিছু বাঙালির যারা উচ্চবর্ণ হিন্দু, যাদের কাছে আধুনিকতা ‘আছে’। অর্থাৎ একধরনের সাবর্ণ ‘ভদ্রলোক’ আধুনিকতা ও অবদমিত মধ্যযুগীয় প্রাগাধুনিকের বিভীষিকার কনফ্রন্টেশনের গল্প।
আমার পাঠ শুধু এই নয় যে ‘এক্সরসিস্ট’ আসলে নারীত্বের লাগামছাড়া মুক্তির ব্যাপারে যে ধার্মিক-পিতৃতান্ত্রিক-বুর্জোয়া প্যারানোইয়া থাকে, তার ওপর একটি ছবি। ফিরে যাই সেই নেহাতই ডিটেলটির কথায়, প্রান্তিক একটি দৃশ্য যা আবার বহু যত্নে তৈরি করা– রেগানের মা অভিনয় করছেন এমন একটি ছবিতে যা ক্যাম্পাসে ছাত্র-যুববিদ্রোহ সংক্রান্ত। ১৯৭৩-এ এটি হয়তো নেহাতই একটি সমসাময়িক ডিটেল মনে হবে, ছয়ের দশকের যুবছাত্র-বিদ্রোহ, ক্যাম্পাস-বিপ্লবের নিরিখে।
হয়তো হরর সেই জঁর, যা আমাদের কিছুক্ষণের জন্য হলেও এই দার্শনিক প্রত্যয়টাকে সামান্য নাড়িয়ে দেয় যে, যে বাস্তবতায় আমরা বাঁচি তাকে আমরা সম্পূর্ণ চিনি, অথবা তা সুস্থিত কিছু। হয়তো আমাদের এটাতেই সবচেয়ে বড় ভয় যে, আমাদের চেনা বাস্তবতা পালটে যেতে পারে।
কেন ফ্যান্টাসি আমাদের প্রায়শই কল্পিত মধ্যযুগের বা কল্পিত প্রাচীনযুগের গল্প বলে? কেন আমরা কল্পিত আধুনিকতা বেশি পাই না?
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যতই শতাব্দী ধরে লালিত বিশ্বাসের ভিতকে নড়িয়ে দিক না কেন, দেখাই তো যাচ্ছে তা মানবজীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়ন, মুহুর্মুহু বিপ্লব। তো এরকম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদযাপন যে কল্পবিজ্ঞান করত, তাকে হয়তো একটু বাড়াবাড়ি করলে ইউটোপিয়ান বলাই যায়।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved