তথাকথিত অতিশিক্ষিত যুক্তিবাদী অভিভাবকদের থেকে কয়েক ধাপ উঁচুতে উঠে গিয়েছেন রিচার বাবা-মা। এমন বহু পরিবার দেখেছি যেখানে বাইরের লোক নয়, তারাই মেয়েদের পছন্দের কাজটি অঙ্কুরেই বিনাশ করে দেয়।
যত আপনার আসা-যাওয়া বাড়ল, আপনার কথা শুনে বন্ধুদের আসা-যাওয়া বাড়ল, তার কথা শুনে তার বন্ধুদের আসা-যাওয়া বাড়ল, নির্জন জায়গাটি আর ‘নির্জন’ থাকল না।
মৈত্রেয়ী দেবীর বিপদটা হয়ে গেল ওই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই। যেখানে রবীন্দ্রনাথের কোনও যোগাযোগ বা অনুষঙ্গ থাকবে, স্বাভাবিকভাবেই অরণ্যের দীর্ঘতম শালবৃক্ষের মতো তিনি সবাইকে ছাড়িয়ে উঠবেন।
ছুটির দিনে গলি বন্ধ করে যে ছেলেরা ‘হাউজ দ্যাট’ আর স্ট্যাম্প ওড়ানোর সুতীব্র চিৎকারে কান ঝালাপালা করে দিল, তার মধ্যে আমার-আপনার বাড়ির খেলতে ভালোবাসা মেয়েটি কোথায়?
দশভুজার ধারণায় তাক লেগে গেল শিক্ষিত আর হদ্দ বোকা মেয়েদের; ওই যে বিজ্ঞাপনের আলোয় মুখ ঢেকে গেল তাদের; বাণিজ্য পত্রিকায় থরে থরে গ্যাজেট সম্ভার হাতছানি দিল আর ধরে নিল, এক চুটকিতে গৃহকন্না সুচারু ও মনোলোভা হয়ে উঠবে– সেদিন থেকে সর্বনাশের শুরু।
ইটভাটার শ্রমিক মেয়েটি হোক, চা বাগানের পাতি তোলাই হোক, সরকারি আধিকারিক বা পুলিশকর্মী, সমাজের তরফে এখনও মেয়েদের কাছে সুচারুভাবে সংসার পরিচালনার দাবি অগ্রাধিকার পায়। আর সেটা করতে গিয়ে আট ঘণ্টা কেন, আঠারো ঘণ্টা সময়েও মেয়েরা সবকিছু কুলিয়ে উঠতে পারে না।
মানুষের মনের ভিতর যে ঈর্ষা-হিংসা-দ্বেষ, তাকে মানুষ প্রশমিত করে রাখে কখনও ‘ঈশ্বর’ নামে কল্পনার নীতি দেবতাটিকে আশ্রয় করে, কখনও পরিবার-পরিজনের প্রতি স্নেহ-দুর্বলতা-ভালবাসায়, কখনও সমাজরক্ষায়। আর এই নীতিবোধের শিক্ষা বা চর্চা, চলে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে অথবা প্রজন্মবাহিত পারিবারিক শিক্ষায়। দুঃখের বিষয়– এই দুই ব্যবস্থাটিই প্রায় ভেঙে পড়ার মুখে।
মানুষের কাছে প্রথমে একটা সহজ ও আকর্ষণীয় প্যাকেজ তুলে ধরা, অভ্যস্ত হলে দাম বাড়ানো এবং তাতে তার আস্থা তৈরি হলে ধীরে ধীরে সেখানে অস্থিরতা তৈরি করা। মানুষ এবার তার সীমাবদ্ধ ক্ষমতা নিয়ে ছটফট করবে, হয়তো আরও মহার্ঘ্য হবে মেডিক্লেম।
প্রায় বিনি পয়সার সোশ্যাল মিডিয়ায় যেকোনও কনটেন্ট নিয়ে রিল বানিয়ে, ভিডিও পোস্ট করে যেখানে কেউ ‘সিউডো সেলেব’ হয়ে অর্থ উপার্জন শুরু করেছেন, সেখানে শিশুটি যে ছাড় পাবে না– বলাই বাহুল্য। শিশুদিবস উপলক্ষে বিশেষ লেখা।
কিন্তু কেন আমরা এত হিংস্র হয়ে উঠলাম? কেন তাকে পিটিয়ে মারার আগে খেতে দিলাম? কী জানি, একেক সময় মনে হয়, পথের ধারে যে মাংসর দোকানের সামনে দিয়ে আমরা যাতায়াত করি আর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি, সেখানেও কাটার আগে পাঁঠাকে কাঁঠাল পাতা খেতে দেওয়া হয়।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved