কেউ দেশভাগ মনে রাখতে চান না; কেউ আবার দেশভাগকেই মনে রাখতে চান, কেননা সেই মনে রাখার ভিতর ভোট আছে। সেই সঙ্গে ধর্মীয় কারণটিও প্রয়োজনমতো খুঁচিয়ে দেওয়া যায়। এই মনে করিয়ে দেওয়া কিংবা মনে করানোর নামে বিশেষ কিছু খুঁচিয়ে তোলা বা ভুলিয়ে দেওয়া এক রকম রাজনীতির খেলা। যেমন, আমরা দেখি কেউ কেউ একটি নির্দিষ্ট দলের ক্ষমতায় থাকা সাড়ে তিন দশককেই অপশাসন নামে একটি শব্দের ভিতর পুরে ফেলতে চান। তাতে সুবিধা এই যে, অতীত আর বর্তমানকে পাশপাশি মিলিয়ে দেখার অভ্যেস থেকে দূরে সরে যায় জনতা।
বাবরি বিপর্যয় সংক্রান্ত অধ্যায় পাঠ্যবই থেকে সরিয়ে রাখার পক্ষে এনসিইআরটি ডিরেক্টরের যুক্তিটি চমৎকার। তাঁর দাবি, এইসব দাঙ্গা-হাঙ্গামা বইতে পড়লে ভবিষ্যতে বিষাদনাগরিকে পরিণত হবে আজকের পড়ুয়ারা। এমনকী, তারা আগামীতে হিংসাকে প্রশ্রয় দিয়েও ফেলতে পারে! অর্থাৎ, অন্তরে হিংসার এক পরিমণ্ডল থেকে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় পড়ুয়াদের শুদ্ধ অন্তঃকরণ নির্মাণের লক্ষ্যেই এই সব খুচরো ইতিহাস খানিকটা সরিয়ে, খানিকটা ছড়িয়ে দেওয়া।
মোটে বারো ক্লাসে এখন যারা, তারা এসব কথা জেনে করবেই-টা বা কী! বাবরি তাই মসজিদের তকমাটিও পায়নি, নেহাত একটি স্থাপত্য। অস্যার্থ এই, এখনই ছোট মাথায় এসব ঢোকানোর দরকার নেই। পরে বড় হয়ে জানলে জানবে, না-জানলে তা হবে ব্যক্তিগত চয়েস। পাঠ্যেই এই ইতিহাস জানিয়ে দেওয়ার কোনও অভিপ্রায় বর্তমানে দেশের নেই। এ-ও হয়তো একরকমের মহত্তর আদর্শবাদ! ইতিহাস মুছে হলেও যা কি না অহিংসা অনুশীলনের তত্ত্বভূমি খাড়া করে। এদিকে, কেরল আবার সে-তত্ত্ব মানতে নারাজ। সেখানে পাঠ্যের সঙ্গে বুকলেট দিয়ে এই ইতিহাস জানিয়ে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণটি সহজেই অনুমেয় যে, রাজনৈতিক; যেমন পাঠ্যের সংস্কারও রাজনৈতিক। তবে, এই দ্বৈরথের ভিতরকার প্রশ্নটি আরও গভীর অর্থে রাজনৈতিক– এড়িয়ে গেলেই কি ইতিহাস থেকে মুক্তি মেলে? শুধু এই একটি ঘটনাই নয়, সামগ্রিকভাবেই এই এড়াতে চাওয়া প্রবণতার দিকে দৃষ্টি দেওয়া জরুরি।
‘মেইন ক্যাম্ফ’-এর সটীক একটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল হিটলারের আত্মহত্যার প্রায় সাত দশক পরে। এক কালে গোটা বিশ্ব এই বইকে বিপজ্জনক হিসাবে গণ্য করেছে। হিটলারের আত্মজীবনী বললে সীমায়িত করা হয়; বলা যায়, তা নাজি দর্শনের একবারে মৌল গ্রন্থ। তাহলে এতদিন পরে, সে বইয়ের সংস্কার কেন জরুরি মনে করলেন জার্মানির ইতিহাসবিদরা? কারণ একটাই যে, যদি বইটিকে এড়িয়ে থাকা হয়, তাহলে মিথ্যেগুলোকেই জিইয়ে রাখা হবে। বরং ইতিহাসগত ভাবে বইটির পর্যবেক্ষণ জরুরি। অতএব যে ইতিহাসবিদ গবেষকরা মনে করছিলেন যে, হিটলারের সঙ্গে সঙ্গেই ইতিহাসের পরিসমাপ্তি হয় না বা হতে পারে না, তাঁরা পরিশ্রম শুরু করলেন। ফুয়েরার টেক্সটকে বিচার করা হল ইতিহাসের নির্মোহ দৃষ্টিতে। তিনি তাঁর দর্শন প্রতিষ্ঠার জন্য যা বলেছিলেন, তার মধ্যে কোনটা নির্জলা মিথ্যে, কোনটা ইতিহাসের ভুল ব্যাখ্যা– তা বহু পরিশ্রমে টীকা সহকারে জানিয়ে দিলেন গবেষকরা। সেই সংস্করণ প্রকাশিত হল মিউনিখের ‘ইনস্টিটিউট অফ কনটেমপোরারি হিস্ট্রি’ থেকে। বলা যেতে পারে, এ তো বারো ক্লাসের পাঠ্য বই নয়। তাহলে এই প্রসঙ্গে উদাহরণ টানার যৌক্তিকতা কী? এই যে, ইতিহাসের বিপর্যয়কে এড়িয়ে যাওয়াই যে ঐতিহাসিক ভুল, তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন এই ইতিহাসবিদরা। অথচ প্রায়শই আমরা এড়িয়ে যাওয়ার সহজ রাস্তাটি ধরি। তাতে অতীতের সঙ্গে মুখোমুখি না হওয়ার একটা ফিকির মেলে। যা অস্বস্তিকর তারই সামনে দাঁড়িয়ে অন্তর্গত ক্ষতের দিকে ফিরে তাকানো সহজ নয়। অতএব কে আর হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!
অথচ সেই কাজটিই জরুরি। যা কিছু বিপর্যয় অতীতে, তাই-ই নির্মাণ করছে বর্তমানকে। আজকের বাস্তবতাকে। সেই বাস্তবতার ভিতর বাস করে অতীতকে ভুলে যাওয়ার অর্থ ক্রমাগত ছিন্নমূল হয়ে পড়া। তাতে লাভ ক্ষমতাসীন শক্তির। নির্দিষ্ট কেউ নয়। যে যখন লঙ্কায় থাকে, আখের গোছায় সেই-ই। এবং এই এড়িয়ে চলার প্রবণতাকে ইন্ধন জোগাতে বানিয়ে দেয় একটা যন্তরমন্তর ঘর। মানুষ হু-হু করে ঢুকে পড়ে অংশত কিছু মনে রাখার অনুশীলনে। ফলে, কেউ দেশভাগ মনে রাখতে চান না; কেউ আবার দেশভাগকেই মনে রাখতে চান, কেননা সেই মনে রাখার ভিতর ভোট আছে। সেই সঙ্গে ধর্মীয় কারণটিও প্রয়োজনমতো খুঁচিয়ে দেওয়া যায়।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
এই কলকাতা শহরেই এক বক্তৃতায় অধ্যাপক অমর্ত্য সেন জানিয়েছিলেন, যদি বিরোধিতা করতেই হয়, তাহলে তার ভিত্তিটাই পোক্ত হওয়া চাই। বিরোধীর যুক্তির মধ্যে সারবত্তা চেয়েছিলেন তিনি। অর্থাৎ ঝোঁকের খাতিরে বিরোধিতা আসলে মুদ্রার এক পিঠ; যার ও-পিঠে আছে ক্ষমতাসীনের খণ্ডিত ইতিহাস দিয়ে নির্মাণ করারই বাস্তবতা। এই দুই-ই আসলে কোথায় পৌঁছতে সাহায্য করে না। সময়কে, আর মানুষকে একটা আবর্তের ভিতর ঢুকিয়ে নেয়। তখন একটু একটু করে জল গরম হতে থাকলেও তার ভিতর ডুবে বসে থাকা ব্যাঙের মতো মানুষেরও কিছু বোধ হয় না; একটা সময় আর তার পালানোর উপায় থাকে না।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
এই মনে করিয়ে দেওয়া কিংবা মনে করানোর নামে বিশেষ কিছু খুঁচিয়ে তোলা বা ভুলিয়ে দেওয়া এক রকম রাজনীতির খেলা। যেমন, আমরা দেখি কেউ কেউ একটি নির্দিষ্ট দলের ক্ষমতায় থাকা সাড়ে তিন দশককেই অপশাসন নামে একটি শব্দের ভিতর পুরে ফেলতে চান। তাতে সুবিধা এই যে, অতীত আর বর্তমানকে পাশপাশি মিলিয়ে দেখার অভ্যেস থেকে দূরে সরে যায় জনতা। একতরফা বিশ্বাস যে একবগ্গা মত তৈরি করে দেয়, তা বহু ফাঁপা অসার চটুল দেখনদারি জিনিসকেও গা-সওয়া বলে স্বীকৃতি দিয়ে দেয়। তলিয়ে দেখার আর দরকার হয় না কেন, কেননা অতীত বলে তো আর কিছু নেই, এই ধারণাই বদ্ধমূল। ঠিক তেমনই, কেউ কেউ আবার ধর্ম বিষয়টিকে একটি শব্দ আফিমে পুরে ফেলে নিশ্চিন্ত হয়ে থাকেন। অথচ একজন মানুষ যে বহু সত্তার সমাহার, তা এই একতরফা সিদ্ধান্তে মাঠে মারা যায়।
ইউরোপীয় সমাজ আর ভারতের সমাজের গঠন এক রকমের নয়। ফলে, যে মানুষ নিজের অধিকারের দাবিতে বহু মানুষের সঙ্গে মিলে মুঠো হাত আকাশে তুলছে, সে ফিরে এসে পূর্ণিমা-অমাবস্যার উপোশ করতেই পারে। বাস্তবতার এই জটিলতা একটা শব্দের ভিতর ঢুকিয়ে দায় এড়িয়ে যাওয়া যায় না। অথচ তা ক্রমাগত করা হয় বলেই মানুষ তার ভাবনার দিকে ক্রমশ অসংগঠিত হয়ে পড়ে। তার অভিমুখ বহুধাবিভক্ত। ফলে কোনও জোট যেন সেভাবে দানা বাঁধে না। এই ভাগাভাগি চলতে থাকে। যেমন, কেউ ভাতা-কে ভোটের হাতিয়ার করে তোলেন; কেউ সেই ভাতা-কে অসম্মান করেন; কেউ-বা আবার ভাতার সম্ভাবনাময় দিকগুলোর তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন কে কোথায় ভুল আর তিনি কেন ঠিক। এই সবটা মিলিয়েই একটা সময়ের বাস্তবতা নির্মিত হয়। কোনও একটিকে আলাদা করে তুলে দেখলে অন্ধের হস্তিদর্শন। মানুষ যত তার ইতিহাসের বহুস্তরকে অস্বীকার করবে, তত একমুখী হয়ে পড়বে।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
আরও পড়ুন সরোজ দরবার-এর লেখা: কিন্তু সেদিন সিংহটা রুখে দাঁড়ায়নি
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
এই একমুখিনতাই ক্রমে বহুত্বকে অস্বীকার করে, অপরকে মাটিতে ফেলে নিজের একবগ্গা ঘোড়া ছুটিয়ে দেয়। কেননা সে না জানে, ইতিহাস নিজেকে কীভাবে পুনরাবৃত্ত করে; না জানে নিজের হাতে গড়া ইতিহাসে তার কোনও ভূমিকা নির্দিষ্ট। এই বিপন্নতাই তাকে ক্রমাগত ঠেলে দেয় মৌলবাদের দিকে, সংখ্যালঘু ক্লিনজিং-এর দিকে। যা নিয়ে বর্তমানের প্রভূত চিন্তার কারণ আছে।
অতএব, সব ব্যাদে আছে বলারও যেমন কোনও মানে হয় না; তেমনই চোরের ওপর গোঁসা করে মাটিতে ভাত খেয়ে বেদকে একেবারে দূরে সরিয়ে দেওয়ার মধ্যে ঔদ্ধত্য থাকতে পারে, যুক্তি নেই। দরকার, কাটাছেঁড়ার। যাকে বলে ক্রিটিক্যালি একটি টেক্সটকে মূল্যায়নের। মনুর সংহিতায় সব ভালো কথা লেখা আছে, এরকম তো কেউ বলছে না। কিন্তু সেই না-ভালোর বিরোধিতা করতে গেলে পোড়ানোর বদলে পড়া দরকার। প্রয়োজনে তা থেকে জরুরি অংশটিকে চিহ্নিত করেও রাখা যায়। যে অনুশীলনের ইঙ্গিত দিয়ে যান রবীন্দ্রনাথ।
এই কলকাতা শহরেই এক বক্তৃতায় অধ্যাপক অমর্ত্য সেন জানিয়েছিলেন, যদি বিরোধিতা করতেই হয়, তাহলে তার ভিত্তিটাই পোক্ত হওয়া চাই। বিরোধীর যুক্তির মধ্যে সারবত্তা চেয়েছিলেন তিনি। অর্থাৎ ঝোঁকের খাতিরে বিরোধিতা আসলে মুদ্রার এক পিঠ; যার ও-পিঠে আছে ক্ষমতাসীনের খণ্ডিত ইতিহাস দিয়ে নির্মাণ করারই বাস্তবতা। এই দুই-ই আসলে কোথায় পৌঁছতে সাহায্য করে না। সময়কে, আর মানুষকে একটা আবর্তের ভিতর ঢুকিয়ে নেয়। তখন একটু একটু করে জল গরম হতে থাকলেও তার ভিতর ডুবে বসে থাকা ব্যাঙের মতো মানুষেরও কিছু বোধ হয় না; একটা সময় আর তার পালানোর উপায় থাকে না।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
আরও পড়ুন সরোজ দরবার-এর লেখা: চড় গণতন্ত্রের নিয়ম নয় ব্যতিক্রম, আর ব্যতিক্রম একরকমের বাস্তবতা
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
এমনকী দলীয় রাজনীতিতেও এই এড়িয়ে যাওয়া এক মারাত্মক প্রবণতা। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে দল বা দলীয় রাজনীতির সাময়িক কার্যক্রমে ভুল হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু সেই ভুলকে আরও যুক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠা করার মতো ভুল আর নেই। ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চাওয়া দল কিন্তু তা করে না। একটা ভোটের পর ওয়ার্ডভিত্তিক রিপোর্ট নিয়ে ভুলের বিশ্লেষণে বসে যায়। তারপর কোথায় কী করা দরকার, সাংগঠনিক স্তরে কোনও বদল আনা দরকার তা নিয়ে চলে চিন্তাভাবনা। বুদ্ধিমান সচরাচর বাস্তবতাকে এড়িয়ে যাওয়ার মতো ভুল করে না। যে করে না, সে সমস্ত সদিচ্ছা সত্ত্বেও সুবচনীর খোঁড়া হাঁস হয়ে থেকে যায়। ভুলের হিসাব এড়িয়ে যাওয়ার দরুনই এমনকী চরম উগ্রপন্থাও ক্ষমতায় এসে বৈষ্ণববিনয়ের ভানে বহু বছর মসনদে থেকে যেতে পারে। মানুষকেই সেই ঐতিহাসিক ভুলের খেসারত দিয়ে যেতে হয়।
অতএব একেবারে গোড়ার প্রশ্নে ফিরে গিয়ে আমরা দেখব, ইতিহাসের বিপর্যয়কে এড়িয়ে যাওয়া আসলে আর এক ধরনের বিপর্যয়। তা ইতিহাস-নিরেট যে-প্রজন্মের জন্ম দেয়, সেখানে যুক্তি আর যুক্তিহীনতার দ্বন্দ্বই ব্যর্থ। একদিকে ইতিহাস অর্থাৎ নিজের ভিত্তি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানের অভাববোধ; অন্যদিকে জীবিকা-উপার্জন বা প্রাত্যহিক জীবন সম্পর্কে নিরাপত্তাহীনতা; এই দুয়ের ফলশ্রুতি যে আগামীর ইতিহাস বয়ে আনে, তা স্বভাবতই সুখের নয়। বরং সেই বিষাদনগরীতে সকলেই হবেন বিষাদনাগরিক।
……………………………………………….
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
……………………………………………….
মার্কেজ তাঁর নোবেল বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘আমাদের সবথেকে বড় সমস্যা আমাদের জীবনকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার মতো বিশ্বাসযোগ্য হাতিয়ার কিছু নেই। বন্ধুগণ, এটাই আমাদের নিঃসঙ্গতার মূল কথা।’ সেরকমই ইতিহাস থেকে পালাতে চাওয়াই হবে নাগরিকের বিষাদের মূল কথা। তা হিংসার দিকেও গড়িয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ ডিরেক্টর সাহেব যা বলছেন তা খাঁটি কথাই। তবে ইতিহাস থেকে মুখ ফিরিয়ে যে তার সমাধান হয় না, এটুকু বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব মানুষেরই।
একজন বিজ্ঞানী জীবন বিপন্ন করে কর্পোরেট চালিত রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। দেশের গোয়েন্দা বাহিনী তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল, তারা দেশাইকে ফেরায়নি। না ফেরানোর জন্য জবাবদিহি করেনি। এবং নানা কারণের সংযোগে আজ ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য কেন্দ্র আজ সাগর জলে।