পানাহির সিনেমার প্রতিটি ফ্রেম বুঝিয়ে দিয়েছে ইরানের সরকার, নীতি-নির্ধারক মন্ত্রালয় এমনকী পুলিশও শিল্পের ভাষা ও শক্তিকে কী পরিমাণ ভয় করতেন। অনিশ্চয়তায় ভুগতেন সরকারি আধিকারিক ও প্রতিষ্ঠান, তাই ‘ফ্রিডম অফ স্পিচ’ ব্যাপারটা এদের অভিধানে ছিল না। তাই কুড়ি বছরের জন্য সিনেমা-নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা।
‘ইট ওয়াস জাস্ট অ্যান অ্যাক্সিডেন্ট ’ পাঁচজন লোকের কথা বলবে, যে পাঁচজন রাজনৈতিক বন্দি একসময় একটি লোককে খুঁজে পায়, যাকে দেখে তাদের মনে হয় এই সেই লোক, যে জেলখানায় তাদের ওপর অত্যাচার করেছিল। তারা লোকটিকে অপহরণ করে এবং ঠিক করে তাকে একটি নির্জন মরুপ্রান্তরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করবে। তাহলে পানাহির এই ছবি কি একটি রিভেঞ্জ ড্রামা?
জেসি আইসেনবার্গের ‘আ রিয়াল পেইন’ আমাদের শিখিয়ে দিয়ে যায় যে আমাদের প্রত্যেকের বাড়ির দরজার বাইরে একটা নুড়ি পড়ে আছে। যখনই কষ্ট পাব আমাদের ভাবতে হবে আমাদের পূর্বসূরিরা এর থেকেও বেশি ব্যথা নিয়ে পৃথিবীতে টিকেছিলেন। জীবনের রণে ভঙ্গ দিয়ে আমাদের সরে গেলে চলবে না।
সাধারণত কোনও পরিচালকের সিনেমা অস্কার পেলে সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে তাঁর পরের সিনেমা দেখার জন্য। এবং প্রোডাকশন কোম্পানি সেই মতো প্রচার চালায়, যাতে আরও বেশি মানুষ সিনেমা দেখেন এবং কোম্পানির মুনাফা হয়। বং জুন হো-র এই সিনেমা কোথাও সেভাবে প্রচার করা হল না বিশ্বজুড়ে।
বছর খানেক আগে হাওড়ায় রাম নবমীর মিছিলে কিশোর সুমিত শা-এর ছবি ভেসে ওঠে, যে বন্দুক উঁচিয়ে হুংকার দিচ্ছিল ‘জয় শ্রী রাম’। মনে পড়ে যায় পহেলু খানকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত দুই কিশোরের কথা যারা অ্যাডোলেসেন্সের জেমির চরিত্রের মতোই সাজা কাটাচ্ছে বিশেষ সংশোধনাগারে।
শন বেকার প্রান্তিক পেশার মানুষগুলোর কথা দ্বিধাহীন বলতে চান। এবং তা বাজার অর্থনীতির বোদ্ধাদের খবরদারি না শুনেই।
‘দ্য ব্রুটালিস্ট’ সিনেমার নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে অনেক কিছু। যে যুদ্ধ পরবর্তী আমেরিকান সমাজ আমরা সিনেমায় দেখতে পাই, তার মধ্যে অবশ্যই এক নীরব পাশবিক মুড রয়েছে। যা প্রতি মুহূর্তে আমাদের চোখের সামনে ‘রিফিউজি’ শব্দটির এক ভয়ংকর উপাখ্যান তুলে ধরে।
মানিতাসের 'এমিলিয়া পেরেজ়'-এ পরিণত হওয়াটা দেখে মনে হয় পরিচালক যেন জানেনই না আজও পৃথিবীতে একজন রূপান্তরকামী মানুষের জীবন কতটা দুর্বিসহ।
রান্নাঘরের মতো অস্তিত্ব গিলে-খাওয়া একাকিত্বের হাতকড়া যে এমনিতেই জীবন জুড়ে দগদগে ঘায়ের মতো বয়ে বেড়াতে হয়, তা বোঝানোর দায়টা কে নেবে?
আমরা যারা প্রায়ই সিনেমাকে ঘিরে বাঁচতে বাঁচতে দূরে সরে যাই সিনেমার থেকে, সিনেমা আমাদের কাছে অনেক সময়ই ‘হিট’, ‘ফ্লপ’, ‘লাইন’ আর ‘ইন্ডাস্ট্রি’র দাঁড়িপাল্লায় ওঠানামা করে, সিনেমা যখন আমাদের কাছে অনেকটা অভিমান আর লড়াইও, তখন বসন্তের উদাসী সন্ধ্যায়, দীর্ঘদেহী, আশির দোরগোড়ায় দাঁড়ানো মায়েস্ত্র বলে ওঠেন ‘সিনেমা পবিত্র’।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved