Robbar

টুইন টাওয়ার ভাঙছে, ভাঙছে পরম্পরা, প্রতিষ্ঠা, অনুশাসনও…

Published by: Robbar Digital
  • Posted:November 1, 2024 8:09 pm
  • Updated:November 1, 2024 8:09 pm  

নতুন শতাব্দীর শুরুতে বদ্রিয়ার আবার বয়ান পাল্টালেন, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলাকে তিনি বললেন, অ্যাবসোলিউট ইভেন্ট। যদিও বলিউড এতকিছু ভাবতে দিচ্ছে না তখন নতুন প্রজন্মকে। ‘মহব্বতে’ থেকে তারকাখচিত ‘কভি খুশি কভি গম’ যখন গুরুকুল ও পরিবারতন্ত্রর সঙ্গে নয়া তারুণ্যের সংঘাত দেখাচ্ছে, তখন বেপরোয়া করে দিচ্ছে ‘দিল চাহতা হ্যায়’, ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’। আমির খান, সইফ আলি খান, অক্ষয় খান্না অভিনীত এই ছবি বাঙালিকে নতুন গোয়া-কল্প দিল। তরুণ প্রজন্মের প্রেম, প্যাশন, বিচ্ছেদকে সেই ছবি দিল অন্য মাত্রা। কলেজ শেষের বন্ধুবিচ্ছেদের মেলানকোলিয়াকে সেই প্রথম অমন একুশ শতকের ভাষায় অনুবাদ করা হল। ছবির প্রধান চরিত্র আকাশ অস্ট্রেলিয়া চলে যাওয়ার মধ্যে যেমন নতুন স্বপ্নের বুনন রয়েছে, তেমন রয়েছে চূড়ান্ত অবসন্ন এক একাকিত্বও।

প্রিয়ক মিত্র

৩৭.

হেমন্ত আসে ঠিকই নিয়মমাফিক। উত্তর কলকাতায় যারা বড় হলাম আমরা, তাদের কাছে এই সময়ের হলুদপোড়া থেকে ছাতিমগন্ধ– সবকিছুই বিষাদবাড়ি লেন ধরে হাঁটতে হাঁটতে খুঁজে পাওয়া। গঙ্গার ধারে ডোমদের পাশে ছাইমাখা সাধুবাবারা আছেন, আছে বাবু-জমিদারদের ভূতের বাড়ি, স্টিমারের ভোঁ আর একার কীর্তন। এসবের মাঝেই হু হু করে বয়ে যায় সময়। কোন সুদূর থেকে ভেসে আসে গান, ‘বাহোঁ কে দরমিয়া/ দো পেয়ার মিল রহে হ্যায়/ জানে কেয়া, বোলে মন…’; আর সেই তারা, যাদের অমরত্বের প্রত্যাশা বা দাবিদাওয়া কিচ্ছু ছিল না, তারা চুপ করে বসে থাকে ঘাটের পাথরে। পিছনে ভেসে আসে পরিবারের তুমুল অশান্তি, চড়াইয়ের ঝগড়ার মতো সেসব আওয়াজ মিলিয়ে যায়। গোলাবারুদ তো আর চলে না, চুপচাপ ঘাট ছেড়ে উঠে যায় দু’জনে, অথবা পালিয়ে যায় দুম করে। মিঞা-বিবি তো রাজি! ওই যে গান ভেসে আসছে, তার লেখক মজরু সুলতানপুরী তো এমন বহু পালানোর সাহস জুগিয়েছেন চার-পাঁচ দশক জুড়ে। যতীন-ললিতের সুর যেমন হাওয়ায় কাঁপছে তিরতির করে, তেমনই, ‘অ্যায় আজনবি, তু ভি কভি, আওয়াজ দে কঁহি সে’ শোনা যাচ্ছে দূর থেকে। আবার ওপারের হুগলির জুটমিলে হয়তো ‘আই রে, আই রে, জোর লাগাকে…’ বেজে উঠছে। পাশের বস্তিতে বাজছে সেই ‘সত্যা’-তে মনোজ বাজপেয়ী-শেফালি শাহ জুটির অপূর্ব দৃশ্যায়নে, ‘সপনে মে মিলতি হ্যায়/ কুড়ি মেরে…’। আলোর মালা পেরিয়ে, বিজয়ার শূন্যতা, মাটিতে মিশে থাকা মূর্তি, বিক্রি না হওয়া মূর্তি, ফিরিঙ্গি থেকে সাধকদের প্রেতেদের আনাগোনা পেরিয়ে কালীপুজো জমজমাট হয়ে উঠছে ক্রমশ। কিন্তু আলোয় কেমন ঝিমধরা ভাব।

JioSaavn - Listen to New & Old Indian & English Songs. Anywhere ...

এ. আর. রহমান একা নন, মাধবন থেকে অরভিন্দ স্বামীরা তখন বাঙালির ঘরে ঘরে চেনা নাম। ‘বম্বে’-র পাশাপাশি ‘রহেনা হ্যায় তেরে দিল মে’-ও তো দেখছে লোকে। আবার ‘ফিল্মফেয়ার’ পত্রিকা যাঁকে ‘ওয়াইল্ড অ্যাট হার্ট’ তকমা দিচ্ছে, সেই সলমন খানও টগবগিয়ে উপস্থিত। তখনও তিনি কৃষ্ণসার হরিণের ওপর গুলি চালাননি, ফুটপাথে গাড়ি তুলে মানুষ মারেননি, ঐশ্বর্য রাই থেকে বিবেক ওবেরয়দের পিছনে লাগেননি, বলিউডে কান পাতলেই তাঁর সম্পর্কে হাজারও অপরাধমূলক কেচ্ছাও শোনা যায়নি, বিষ্ণোই গ্যাংও তাঁর মাথার দাম ধার্য করেনি। আর অন্যদিকে ছিলেন কখনও মণীষা কৈরালা, কখনও মহিমা চৌধুরী, কোথাও বা মমতা কুলকার্নি, কোথাও বা করিশ্মা কাপুর, (যাঁর সঙ্গে তৎকালীন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীর নামের মিল নিয়ে বঙ্গজনের রঙ্গরস উথলে উঠত) ঝলসে ওঠেন পোস্টারে, তাসায়। রবিনা ট্যান্ডনকে নিয়ে দক্ষিণ বম্বের পাঠ্য ইংরেজি দৈনিকে পরপর খবর হয়েছে, ‘ফিল্মফেয়ার’ পত্রিকায় পাতায় রবিনার সাক্ষাৎকার বেরল, ‘টু হেল অ্যান্ড ব্যাক’। ‘তরুণ ব্যায়াম সমিতি’ কি অত বোঝে? স্কাউটের ম্যাডাম প্রায় হতই না, গুঁফো স্যররাই ছিলেন শেষ কথা। তেমন এক স্যর, একদিন কুচকাওয়াজ চলাকালে, এক আনমনা তালপাতার সেপাইয়ের পকেট থেকে পেয়ে গেলেন রবিনা ট্যান্ডনের পোস্টকার্ড সাইজ ছবি। এই মার কি সেই মার! ছেলের মারধরে আপত্তি ছিল না মোটেও। কিন্তু তার সরাসরি দাবি স্যরের কাছে, ছবি ফেরত চাই। মার আবার পড়ল, এবং ছবিও ফেরত এল না। অনেকেই বলে, সেই পিটি স্যর, ডিসিপ্লিন শেখানো গুরুগম্ভীর ভদ্রলোকই নাকি পকেটস্থ করেছিলেন ওই ছবি।

This may contain: two people sitting next to each other in front of trees and one person holding a stuffed animal
অরভিন্দ স্বামী

অনুরাগ কাশ্যপের ‘গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর’-এর দ্বিতীয় ভাগে, প্রচুর রক্তারক্তি, খুনোখুনির পর, বেশিরভাগ চমকদার চরিত্রর ইন্তেকালের পর, প্রায় একা ফয়জল খান যখন জেল থেকে যোগাযোগ করে তার স্ত্রী মহসিনাকে, তখন সে ক্লান্ত কণ্ঠে গেয়ে ওঠে ‘দিল দিওয়ানা হ্যায়, দিল তো পাগল হ্যায়’। ওই ক্লান্তিতে স্পষ্ট ছিল, দিব্যেন্দু পালিতের উপন্যাসের নামের মতো, ‘সিনেমায় যেমন হয়’, বাস্তবে আর তেমনটা হয় না। তাই নব্বইয়ের সমস্ত খোয়াব আসলে একান্তভাবেই স্বপ্নিল। যে ভাবত, কলেজের সব বান্দাই আদতে শাহরুখ খান, সেও বুঝল, করিশ্মা কাপুরের মতো দাগা খাওয়া হিরোইনরাই হয়তো নিয়তি, মাধুরী দীক্ষিত নয়।

In the movie Dil To Pagal Hai, whose character did you like more ...
‘দিল তো পাগল হ্যায়’ সিনেমার পোস্টারে মাধুরী দীক্ষিত, শাহরুখ খান ও কারিশ্মা কাপুর

পাড়ায় পাড়ায় তখন গজিয়ে উঠছে ফ্যান ক্লাব। বুড়ির চুল থেকে চুইংগামে বদলে যাচ্ছে ইচ্ছের খাসতালুক। কাটলেটকে একটু করে ঠেলা মারছে স্যান্ডউইচ, পিৎজা, বার্গার। ‘বারিস্তা’-র কফি তখন একটু একটু করে ঢুকে পড়ছে মধ্যবিত্তর অচেনা ড্রইং রুমের চেনা অন্দরে। মুখ্যমন্ত্রীর নাম বদলে যাচ্ছে। চারপাশে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, আইটি বিপ্লব আসতে চলেছে শিগগিরই। ইমেলে নাকি যুক্ত হচ্ছে হনোলুলু, হলদিয়া। তার বেশ কয়েকবছর আগে থেকে দূরদর্শনে একের পর এক জনপ্রিয় সিরিয়াল আসতে শুরু করেছিল। ‘কুয়াশা যখন’ থেকে ‘জননী’, ‘জন্মভূমি’, বাঙালির সন্ধেবেলা ঘরবন্দি হচ্ছে ক্রমশ। একজন রসিকতা করে বলেছিলেন, ‘স্বর্গাদপি’ বা ‘গরীয়সী’ নামে সিরিয়ালগুলো কোথায়? বাড়ছে ক্রিকেট নিয়ে উৎসাহ, বাড়ছে বিজ্ঞাপনও। ‘প্রিয়তমা ফিরে আসবে আবার’, বা ‘আজ কাল পরশুর গল্প’, মুখে মুখে ফিরতে শুরু করল টাইটেল ট্র্যাকও। আর ঠিক এর পরপরই আসতে শুরু করল স্যাটেলাইট চ্যানেল। সিরিয়াল আর সীমাবদ্ধ রইল না। ‘এক আকাশের নীচে’ আমাদের ছোটবেলা জুড়ে সন্ধেবেলার অংশ ছিল, আর একটু পরে ‘চেনা মুখের সারি’। ‘কিছু মেঘ, কিছু রোদ্দুর’ থেকে ‘চেনা চেনা মুখের সারি’, গান শুনলে বোঝা যেত, কোন সিরিয়াল শুরু হতে চলেছে। তখনও গান বাজত সিরিয়ালের শুরুতে। আর দিনরাতের নয়, কেবল সন্ধের কয়েক ঘণ্টা বরাদ্দ ছিল সিরিয়াল। দূরদর্শনে রাতে ‘ব্যোমকেশ’, মাঝে ‘খাসখবর’ বা ‘ক্যামেরা চলছে’, স্যাটেলাইট চ্যানেলে মাঝে পাঁচ মিনিটের খবর, দুপুরে গৃহবাসীদের জন্য সিনেমা, এসবের মাঝেই শুরু হল একেবারে নতুন এক ধারা, টেলিফিল্ম। প্রসেনজিৎ-চিরঞ্জিত তখনও শাসন করছেন বাংলা ছবি, মিঠুন চক্রবর্তী ফিরে এসেছেন বাংলায়। সেসব ছবির ভিড়ে যে ছবি সমান্তরাল, তার অনুসারী শিল্প হয়ে উঠল টেলিফিল্ম। অঞ্জন দত্ত, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ও পরবর্তীতে প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য, অতনু ঘোষ ও ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরীরা কিন্তু হাত মকশো করেছেন এই টেলিফিল্মেই। অঞ্জন দত্তর ‘দীপা সুলতানার তিনদিন’, ‘শীলার সকাল’, ‘বাবার ক্রিস্টমাস’, ‘প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য’, ‘আমার বাবা’, রুদ্র সেন সিরিজ, কৌশিক গাঙ্গুলির ‘অ-তিথি’, ‘শেষকৃত্য’, ‘উষ্ণতার জন্যে’, ‘প্রিয় বান্ধবী’, ‘বাঘনখ’, ‘হরিহরণ’ শতাব্দীর শুরুর দিকে একেবারে অন্য এক আমেজ উপহার দিচ্ছে বাঙালিকে। শ্রীরাম আর্কেডের পাশাপাশি সিটি সেন্টার টানছে বাঙালিকে, পেশার ক্ষেত্র ডালহৌসি ছেড়ে সরে আসছে সেক্টর ফাইভে, আর কিছু বছর পর বইমেলা সরে যাবে ময়দান থেকে, বাঙালি ‘মেনল্যান্ড চায়না’-য় যায় তখন, একটু কষ্টেসৃষ্টেই। রবিবার রাতের সেসব টেলিফিল্ম সেই বদলে যাওয়া বাঙালির। রোববারের রঁদেভু সেরে বাড়ি ফিরে সেইসব গল্প দিনের পর দিন তাজা বাতাস দিয়েছে নাগরিক দর্শককে। তবে হ্যাঁ, একান্তই নাগরিক দর্শককে।

Ek Akasher Niche
‘এক আকাশের নীচে’ সিরিয়ালের কলা-কুশলীরা

‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’ নাটকটি সেসময় তুমুল আলোড়ন তুলল। বদলে যাওয়া সময়ে এসে পড়া সব্যসাচী সেনকে তার ছেলে ইন্দ্র যখন বোঝাতে যায়, শতাব্দী ফুরিয়েছে, কম্পিউটার, মাইক্রোচিপ থেকে সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, ইন্টারনেট– সবকিছু সে বলে চলে টানা। মাঝে ছিল ওসামা বিন লাদেনের নামটাও। মার্কিন প্রভাবের যাবতীয় ইস্তেহার যখন চারপাশে, টুইন টাওয়ারে ঢুকে গেল প্লেন। ধূলিসাৎ হয়ে গেল প্রথম বিশ্বের বাণিজ্যমিনার, অনেক অনাবাসী ভারতীয়র আকাঙ্ক্ষা যেমন ধাক্কা খেল, বিশ্বজুড়ে ইসলামোফোবিয়া বা বিদ্বেষের চাষ শুরু হল অন্য এক মোকামে। অনেক পরে শাহরুখ খানকে গিয়ে বলতে হয়, ‘মাই নেম ইজ খান, আই অ্যাম নট আ টেররিস্ট’। সেসব ছবির আশপাশে জন আব্রাহাম, ইরফান খান অভিনীত ‘নিউ ইয়র্ক’-এর মতো ছবিও হয়েছে বটে। কিন্তু ওই হামলার পরপরই আমরা শুনতে পেলাম একদিন ওই পাঁচ মিনিটের খবরেই, যুদ্ধ শুরু হচ্ছে। কোকোকোলা বয়কটের ডাক উঠল এখানে। বাগদাদের পক্ষে কেউ কেউ দাঁড়ালেন, শান্তিমিছিল হল, বুশ ও টনি ব্লেয়ারের কুশপুতুল পুড়ল, সেসব তখন ‘দেশদ্রোহী’ কার্যকলাপ ছিল না আদৌ। দেখতে দেখতে সাদ্দাম হুসেনের ফাঁসিও হয়ে গেল একদিন। আর মাঝে, গোধরায় একটা ট্রেন দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে হঠাৎ আগুন জ্বলে উঠল গুজরাতে। পুড়ে খাক হয়ে গেল মহল্লার পর মহল্লা, নির্বিচারে চলল খুন-ধর্ষণ। তার মাঝেই বিশ্বকাপ জিতে গেল স্বপ্নের ব্রাজিল টিম, সেই রোনাল্ডো, রবার্তো কার্লোস, রোনাল্ডিনহোর ব্রাজিল। আর রিকি পন্টিংয়ের দুর্দম অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার মেনে মুখ নিচু করে বিশ্বকাপ ফাইনালের ডায়াস থেকে ফিরল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত। সেই ফাইনালের পরের দিন বাতিল হয়ে গিয়েছিল কিছু কিছু স্কুলের পরীক্ষাও।

Mohabbatein (2000) - IMDb
‘মহব্বতে’ সিনেমার একটি দৃশ্যে অমিতাভ বচ্চন ও শাহরুখ খান

এই নতুন শতাব্দীর শুরুতে বদ্রিয়ার আবার বয়ান পাল্টালেন, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলাকে তিনি বললেন, অ্যাবসোলিউট ইভেন্ট। যদিও বলিউড এতকিছু ভাবতে দিচ্ছে না তখন নতুন প্রজন্মকে। ‘মহব্বতে’ থেকে তারকাখচিত ‘কভি খুশি কভি গম’ যখন গুরুকুল ও পরিবারতন্ত্রর সঙ্গে নয়া তারুণ্যের সংঘাত দেখাচ্ছে, তখন বেপরোয়া করে দিচ্ছে ‘দিল চাহতা হ্যায়’, ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’। আমির খান, সইফ আলি খান, অক্ষয় খান্না অভিনীত এই ছবি বাঙালিকে নতুন গোয়া-কল্প দিল। তরুণ প্রজন্মের প্রেম, প্যাশন, বিচ্ছেদকে সেই ছবি দিল অন্য মাত্রা। কলেজ শেষের বন্ধুবিচ্ছেদের মেলানকোলিয়াকে সেই প্রথম অমন একুশ শতকের ভাষায় অনুবাদ করা হল। ছবির প্রধান চরিত্র আকাশ অস্ট্রেলিয়া চলে যাওয়ার মধ্যে যেমন নতুন স্বপ্নের বুনন রয়েছে, তেমন রয়েছে চূড়ান্ত অবসন্ন এক একাকিত্বও। যা হারিয়ে যায়, তাকে কি আঁকড়ে থাকা যায়? অন্যদিকে হৃতিক রোশনের নাম রোশনাই ছড়াচ্ছে তখন অনেকেরই মনে, এককালের ফ্লপ হিরো রাকেশ রোশনের এই ছেলে! সোনিয়া-রোহিতের প্রেমের মাঝেও ঢুকে পড়ল নিউজিল্যান্ড। বিদেশের খোয়াব তখন বারবার ধাক্কা দিচ্ছে বৃদ্ধ অমিতাভ বচ্চনের ‘পরম্পরা, প্রতিষ্ঠা, অনুশাসন’-এর তর্জনীকে। একুশে পা প্রজন্ম খুঁজে নিচ্ছে নিজস্ব ভাষা।

 

…পড়ুন জনতা সিনেমাহল-এর অন্যান্য পর্ব…

পর্ব ৩৬। একদিকে মনকেমন, অন্যদিকে খুনখারাপি! বলিউডের আলো-অন্ধকারে ফুরল শতাব্দী

পর্ব ৩৫। অ্যাংরি ইয়ংম্যান থেকে বিলেতফেরত মাচো নায়ক, বদলাচ্ছিল নব্বইয়ের হিরোরা

পর্ব ৩৪। বিস্ফোরণ আর বিভেদের নো ম্যানস ল্যান্ডে দাঁড়িয়েছিলেন মহব্বত ম্যান

পর্ব ৩৩। অমর চিত্রকথা, চাচা চৌধুরী ও ইরোটিকার পৃথিবীতে এসে পড়ল তরুণ বেপরোয়া নায়কদের দিন

পর্ব ৩২। নব্বইয়ের শুরু থেকে আন্ডারওয়ার্ল্ড ঢাকা পড়ল বলিউডের তাজমহলে

পর্ব ৩১। ফুলন দেবীর বন্দুক ও ‘মির্চ মসালা’-র প্রতিরোধ

পর্ব ৩০। স্কুল থেকে শ্মশান, সর্বত্র শোনা গেছে ‘মোগাম্বো খুশ হুয়া’

পর্ব ২৯। ‘ক‍্যায়ামত’ না আসুক, বিচ্ছেদের যন্ত্রণা ঠিক বুঝেছে এসটিডি বুথ, একা অ্যান্টেনা

 পর্ব ২৮। দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের দিন জনশূন্য কলকাতায় পকেটমারি

 পর্ব ২৭। মাস্টারমশাইরা কি আজও কিচ্ছু না দেখেই থাকবে?

 পর্ব ২৬। ‘হাওয়া হাওয়াই’য়ের আপত্তি জোটেনি কিন্তু ‘উরি উরি বাবা’ নাকি অপসংস্কৃতি

পর্ব ২৫।  চুল কাটলেই মাথার পিছনে জ‍্যোতির মতো বাজবে ‘শান’-এর গান!

পর্ব ২৪। মরণোত্তর উত্তমকুমার হয়ে উঠলেন সি‌রিয়াল কিলার

পর্ব ২৩। স্কুল পালানো ছেলেটা শহিদ হলে টিকিট কাউন্টার, ব্ল‍্যাকাররা তা টের পেত

 পর্ব ২২। ক‍্যাবলা অমল পালেকরের চোস্ত প্রেমিক হয়ে ওঠাও দর্শকেরই জয়

পর্ব ২১। বন্দুকধারী জিনাতকে ছাপিয়ে প্রতিরোধের মুখ হয়ে উঠলেন স্মিতা পাতিল

পর্ব ২০। হকার, হোটেল, হল! যে কলকাতার মন ছিল অনেকটা বড়

পর্ব ১৯। দেওয়ালে সাঁটা পোস্টারে আঁকা মধুবালাকে দেখে মুগ্ধ হত স্কুলপড়ুয়া মেয়েরাও

পর্ব ১৮। পানশালায় তখন ‘কহি দূর যব’ বেজে উঠলে কান্নায় ভেঙে পড়ত পেঁচো মাতাল

পর্ব ১৭। গানই ভেঙেছিল দেশজোড়া সিনেমাহলের সীমান্ত

পর্ব ১৬। পুলিশের কাছেও ‘আইকনিক’ ছিল গব্বরের ডায়লগ

পর্ব ১৫। ‘শোলে’-র চোরডাকাত‍রা এল কোথা থেকে?

পর্ব ১৪। ‘শোলে’-তে কি ভারত আরও আদিম হয়ে উঠল না?

পর্ব ১৩। ‘জঞ্জির’ দেখে ছেলেটা ঠিক করেছিল, প্রতিশোধ নেবে

পর্ব ১২। ‘মেরে পাস মা হ্যায়?’-এর রহস্যটা কী? 

পর্ব ১১। ইন্দ্রজাল কমিকস-এর গ্রামীণ নায়ক বাহাদুর পাল্পে এসে রংচঙে হল

পর্ব ১০। দু’টাকা পঁচিশের টিকিটে জমে হিরোইনের অজানা ফ‍্যানের স্মৃতি

পর্ব ৯। খান্না সিনেমায় নাকি পৌরাণিক সিনেমা চলছে

পর্ব ৮। পাড়াতুতো ট্র্যাজেডিতে মিলে গেলেন উত্তমকুমার আর রাজেশ খান্না

পর্ব ৭। পাড়ার রবিদা কেঁদেছিল ‘কাটি পতঙ্গ’ আর ‘দিওয়ার’ দেখে, সাক্ষী ছিল পাড়ার মেয়েরা

পর্ব ৬। যে কলকাতায় পুলিশ-পকেটমার মিলেমিশে গেছে, সেখানে দেব আনন্দ আর নতুন করে কী শিরশিরানি দেবেন?

পর্ব ৫। হিন্দি ছবির পাপ ও একটি অ্যাডাল্ট বাড়ির গল্প

পর্ব ৪। দেব আনন্দ, একটি বোমা ও অন্ধকারে হাত ধরতে চাওয়ারা

পর্ব ৩। অন্ধকারে ঢাকা পড়ল কান্না থেকে নিষিদ্ধ স্বপ্ন!

পর্ব ২। ‘জিনা ইঁয়াহা মরনা ইঁয়াহা’ উত্তর কলকাতার কবিতা হল না কেন?

পর্ব ‌১। সিনেমা হলে সন্ত্রাস ও জনগণমন-র দলিল