ক্ষিতিমোহন সেনের কন্যা অমিতা শান্তিনিকেতনে শুধু নৃত্যশিক্ষাই করেননি। তিনি যুযুৎসুও শিখেছিলেন। ১৯৩০ সালে তাকাগাকির সঙ্গে যুযুৎসুর কৌশল দেখাতে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এশিয়ার নানা দেশের সদস্যরা সেদিন শরীরচর্চা দেখাতে বেনারসে হাজির হয়েছিলেন। ঘেরা প্রাঙ্গণের মধ্যে দাঁড়িয়ে অমিতা-সহ শান্তিনিকেতনের আরও তিনটি মেয়ে শারীরিক মারপ্যাঁচের কৌশল দেখিয়েছিলেন। অমিতা লিখেছিলেন, ‘সেদিন নিজেদের মনে হচ্ছিল আমরা যেন মহাভারতের যুগে গুরু দ্রোণাচার্যের শিক্ষকতায় অস্ত্র পরীক্ষারত কৌরব-পাণ্ডব।’
চিত্রঋণ: শান্তভানু সেন
৪.
শান্তিনিকেতনের মেয়েদের কবে থেকে ‘ন্যাকা’ উপাধি-প্রাপ্তি হয়েছিল, কিংবা ‘এই গরু সরে যা, ফুল ছুড়ে মারব’ গোছের বাক্যের অবতারণা কী কারণে করা হয়েছিল, তার ইতিহাস আমি খুব একটা অনুসন্ধান করে উঠতে পারিনি। হয়তো শান্তিনিকেতনের আশ্রমবাসীদের স্বাভাবিক সুরুচি (যা একইসঙ্গে স্বদেশি, মোটেও ঔপনিবেশিক প্রভাবজাত ইউরোপিয়ানা নয়), ভদ্রতাবোধ, নৃত্যগীতে অনুরাগ, মুখে শিষ্ট এক বাংলা বয়ান– এমন এক বিশিষ্টতা দিয়েছিল, যা আর পাঁচটা ঘরোয়া ছেলেমেয়ের থেকে তাঁদের দূরত্ব রচনা করেছিল। মনে হয় তার ফলেই এইসব হাস্যকর মৃদু কটূক্তির জন্ম হয়েছিল।
আমরা দেখেছি আশ্রমে কন্যাদের সবই শিখতে হত। নাচ, গান, অভিনয় করতেন বলে, তাঁরা যে একেবারে ললিতলবঙ্গলতা ছিলেন, তা নয়। শান্তিনিকেতনের মেয়েদের জন্য রবীন্দ্রনাথ লাঠি খেলা, ছোরা খেলা শেখারও বন্দোবস্ত রেখেছিলেন। মনোমোহন ঘোষ তখন আশ্রমের মেয়েদের ছোরা খেলা ও লাঠি খেলা শেখাতেন। কোমরে আঁচল জড়িয়ে ছোরা হাতে যখন ‘তামেচা বাহেরা শির মুন্ডা’ করা হত, তখন যারা দেখত আর যারা করত– দু’-পক্ষেরই ভালো লাগত। দু’-পক্ষই শিখত। দুর্বৃত্তদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য জাপানি যুযুৎসু শিখেছিলেন তাঁরা অনেকে। রবীন্দ্রনাথ অনেক অর্থ ব্যয় করে যুযুৎসু শিক্ষক তাকাগাকিকে শান্তিনিকেতনে এনেছিলেন। মোটা সুতির ঢিলেঢালা কোট-পাজামা পরে যুযুৎসু শিখত মেয়েরা। ঘুষোঘুষি নয়, কুস্তির লড়াই নয়– স্থির ধীর আক্রমণ, স্থির ধীর প্রতিরোধ। আত্মরক্ষার, সংযমের এবং চরিত্রবল সংযোজনের এই খেলার সময় যে-ড্রিল হত, আশ্রমকন্যারা তাতে গাইতেন ‘সংকোচের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান’ গানটি।
ক্ষিতিমোহন সেনের কন্যা অমিতা শান্তিনিকেতনে শুধু নৃত্যশিক্ষাই করেননি। তিনি যুযুৎসুও শিখেছিলেন। ১৯৩০ সালে তাকাগাকির সঙ্গে যুযুৎসুর কৌশল দেখাতে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এশিয়ার নানা দেশের সদস্যরা সেদিন শরীরচর্চা দেখাতে বেনারসে হাজির হয়েছিলেন। ঘেরা প্রাঙ্গণের মধ্যে দাঁড়িয়ে অমিতা-সহ শান্তিনিকেতনের আরও তিনটি মেয়ে শারীরিক মারপ্যাঁচের কৌশল দেখিয়েছিলেন। অমিতা লিখেছিলেন, ‘সেদিন নিজেদের মনে হচ্ছিল আমরা যেন মহাভারতের যুগে গুরু দ্রোণাচার্যের শিক্ষকতায় অস্ত্র পরীক্ষারত কৌরব-পাণ্ডব।’
আশ্রমে মেলার মাঠে যুযুৎসু দেখে রানী চন্দ তাঁর অনুভূতির কথা জানিয়েছেন। ‘মনে হল যেন আমাদের একটা রুদ্ধ দিক খুলে গেল– যেখানে অজস্র আলো অবাধ হাওয়া। যেখানে দিন নাই রাত্রি নাই– খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে এই যে আমি আছি, ভয় নেই কারুর।’
এছাড়াও ছিল মেয়েদের জন্য সাঁতার শিক্ষা। সুইমিং পুলের অস্তিত্ব যখন ছিল না, তখন রবীন্দ্রনাথের উৎসাহে সন্তোষচন্দ্র মজুমদার বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছিলেন ফ্লোটিং উইং। ফুঁ দিয়ে ফোলানো ওই চৌকো বালিশ সম্বল করে সাঁতার কাটতে হত। সন্তোষ মজুমদারের পরিচালনায় বাঁধের জলে ছোট ছোট মেয়েদের সাঁতার-শিক্ষা চলত। অমিতা জানিয়েছেন, ‘বীরভূমের ডাঙ্গার দেশের মানুষ আমরা, এর পিছনে রবীন্দ্রনাথের উৎসাহ না থাকলে বাঁধের গভীর জলে অতি শিশু বয়সেই মাছের মতো সাঁতার দিতে পারতাম কি আমরা!’
এছাড়া আন্তর্জাতিক ‘গার্ল গাইড’-এর সঙ্গেও যুক্ত হয়েছিল সেদিনকার আশ্রমের মেয়েরা। শ্রীনিকেতনের মহিলাকর্মী মিস গ্রিনের উৎসাহে মেয়েরা সঙ্গবদ্ধভাবে সেবাব্রতী হবে এটাই ছিল সেদিনের শান্তিনিকেতনের মেয়েদের আগ্রহ। আশ্রমের শান্ত জীবনে একদা গার্ল গাইড-এর মাধ্যমে মেয়েদের মনে উৎসাহ জেগে ছিল। বাইরের ঢেউ এসে তাতে তরঙ্গ সৃষ্টি করেছিল। সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা মঞ্জুশ্রী এবং সে-সময়ের নারী বিভাগের অধ্যক্ষা স্নেহলতা সেনের কন্যা মালতি– এই সংঘের দু’জন নেত্রী ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ এই সংঘের নাম প্রথমে ‘গৃহদীপ’ দিলেও পরে তার নাম হল ‘সহায়িকা’। ‘সহায়িকা’র উপযুক্ত গানও রচনা করলেন রবীন্দ্রনাথ।
‘অগ্নিশিখা এসো এসো আলো আনো আলো,
দুঃখে সুখে ঘরে ঘরে গৃহদ্বীপ জ্বালো।’
১৯১৫ সালে গান্ধীজি শান্তিনিকেতনে আসেন তাঁর দক্ষিণ আফ্রিকার ফিনিক্স স্কুলের ছাত্রদের নিয়ে। সেখানে ছাত্রদের নিজেদের কাজ সবই নিজেদের করতে হত। রবীন্দ্রনাথ শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের গৃহকর্মের এতটা ভার দিতে না চাইলেও, তাঁর সর্বাঙ্গীন শিক্ষাদর্শনে সর্ববিধ মঙ্গলের ওপর বিশেষ গুরুত্ব ছিল। আশ্রমকন্যাদের গৃহকর্মের অভিষেক ঘটত রান্নাঘরে ঠাকুরদের সঙ্গে চাল-ডাল বাছা, পালা করে তরকারি কাটা কিংবা জলখাবার তৈরির শিক্ষায়। পৌষপার্বণের সময় রান্নাঘরে গুরুপত্নীদের সঙ্গে কাজেও হাত লাগাতে হত এই আশ্রমকন্যাদের। তাছাড়া পরিবেশনের দায়িত্ব পালা করে নিতেন আশ্রমকন্যারা। শান্তিনিকেতনে অতিথিসেবারও গুরুত্ব ছিল। মহিলা অতিথিদের ভার আশ্রমকন্যাদেরই নিতে হত। এছাড়াও ছিল অসুস্থদের সেবার ভার।
সেবাকর্মের প্রসঙ্গে দুই আশ্রমবাসী কিরণবালা সেন ও ননীবালা রায়ের কথা মনে পড়ে। শান্তিনিকেতনের অনূঢ়া কন্যাদের সঙ্গে শিক্ষক-পত্নীদেরও গুরুদেব যেমন শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন, তেমন তাঁরাও আশ্রমের কর্মযজ্ঞে নিজেদের শ্রদ্ধাপূর্ণ অবদান রেখে চলেছিলেন।
ক্ষিতিমোহন সেনের স্ত্রী কিরণবালা যেমন কলাভবনে নন্দলাল বসুর কাছে শিল্পশিক্ষা করেছিলেন, তেমনই তিনি নিজের মায়ের কাছে প্রসূতিবিদ্যা এবং শিশুপালনবিদ্যাও শিখেছিলেন। সেই আমলে শান্তিনিকেতনে ডাক্তার ছিল না, কোনও মিডওয়াইফ বা ধাত্রী ছিল না। সে সময় কিরণবালার হাতে শান্তিনিকেতনের বহু শিশুর জন্ম হয়। দিনে-রাতে যখনই ডাক পড়েছে, কিরণবালা তাঁর সংসারের সব কাজ ফেলে প্রসূতিসেবা করতে বের হয়ে গেছেন। এই ব্রত তিনি পেয়েছিলেন তাঁর মায়ের কাছে। উনিশ শতকের শেষ দিকে বিখ্যাত প্রসূতিবিদ সুন্দরীমোহন দাসের কাছে যে-ব্রত কিরণমালার মাতৃদেবী গ্রহণ করেন, তাঁর কন্যা কিরণবালা সেই ব্রত শান্তিনিকেতনের আশ্রমে সার্থক করে তোলেন। কিরণবালার মেয়ে অমিতা জানিয়েছেন, ঝড়-জল যাই হোক– তাঁর মা এই ব্রত পালনে বের হয়ে যেতেন। এমনকী, রাতেও একা একটি লণ্ঠন হাতে মস্ত মাঠ পার হয়ে তিনি প্রসূতির কাছে গিয়ে পৌঁছতেন।
আর ননীবালাকে শান্তিনিকেতনের আশ্রমে নিয়ে এসেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। খড়দহের অমলা দাসের অনাথা মেয়েদের আশ্রম থেকে সকন্যা ননীবালাকে একদা প্রতিমা দেবীর সঙ্গী হিসেবে জোড়াসাঁকোতে নিয়ে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। পরে নিজের কন্যা-সহ তিনি আসেন শান্তিনিকেতনে। কখনও অতিথিশালার দায়িত্ব, কখনও বা রান্নাঘরের দায়িত্ব তাঁর ওপর বর্তালে ননীবালা তাঁর কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতেন, তবে একটু বিষণ্ণ থাকতেন। রবীন্দ্রনাথ তা লক্ষ করে পল্লিসংগঠনের কাজে ননীবালাকে নিযুক্ত করেন।
১৯২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি এল. কে. এলমহার্স্টের তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত হয় গ্রামোন্নয়ন কেন্দ্র শ্রীনিকেতন। সঙ্গী ছিলেন একজন তরুণী সমাজসেবিকা গ্রেসাস গ্রিন। ইনি প্রথম মহাযুদ্ধে সেবার কাজে যোগদান করেছিলেন। তাঁর প্রচেষ্টায় শ্রীনিকেতনে একটি ক্লিনিক, ডাক্তারখানা গড়ে ওঠে। সেখানে মাতৃমঙ্গল ও শিশুকল্যাণ বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। মিস গ্রিনের সহায়িকা হিসেবে সেদিন গুরুদেব ননীবালাকে মনোনীত করেন।
বাংলা ১৩২৯ সনের চৈত্র সংখ্যা ‘শান্তিনিকেতন’ পত্রিকায় লেখা হয় ‘শ্রীমতী ননীবালা রায় এবং প্রভাবতী মজুমদার মিস গ্রিনের সঙ্গে পল্লীর কার্যে যোগদান করিয়াছেন। তাঁহারা লোহাগড় ও মোদপুরের গ্রামের বালিকাদের নিয়মিত রূপে সেলাই শিক্ষা দিতেছেন। তাঁহাদের চেষ্টায় সুরুলে বালিকা বিদ্যালয় স্থাপিত হইয়াছে।’
সুরুলের এই অবৈতনিক বালিকা বিদ্যালয়ের দায়িত্ব মূলত ননীবালার ওপরই ছিল। সেখানে শতরঞ্চি বোনা শেখানো হত।
গ্রামে গ্রামে ঘুরে মহিলাদের স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সচেতন করতেন ননীবালা ও মিস গ্রিন। সে-যুগে ওই কাজ বড় সহজ ছিল না। সে-সময় গ্রামে গ্রামে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ, আর তার সঙ্গী ছিল প্রসূতিমৃত্যু। শিশুমৃত্যুর হারও ছিল অত্যন্ত বেশি। পর্দানশীন মহিলারা কিন্তু একজন মেমসাহেব আর তার সঙ্গিনীকে খুব একটা আপন করে নিতে পারত না। তাঁদের বসার জন্য মাদুর দিত আর তাঁরা ফিরে গেলে মাদুর জলে ডুবিয়ে শুদ্ধ করে নিত।
ননীবালা যখন গ্রামের এই সংকটের কথা বলতেন, তখন গুরুদেব তাঁকে ধৈর্যহারা হতে বারণ করতেন। বলতেন, গ্রামের মেয়েদের সঙ্গে তাদের মতো হয়েই মিশতে হবে। তাদের সঙ্গে পান-সুপারি খেয়ে সংসারের সুখদুঃখের গল্প করে ওদের অন্তরে আত্মীয়র স্থান করে নিতে হবে।
১৯২৩ সালে মিস গ্রিন আমেরিকায় ফিরে গেলে, রবীন্দ্রনাথ ননীবালাকে এক বছরের স্কলারশিপ দিয়ে ক্যাম্পবেল (বর্তমান নীলরতন সরকার) হাসপাতালে ধাত্রীবিদ্যার শিক্ষানবিশির জন্য পাঠান। ননীবালার দৌহিত্রী অপর্ণা রায় জানিয়েছেন, তখনকার দিনে যাঁরা নার্সিংয়ের ট্রেনিংয়ে যেতেন, সমাজ তাঁদের খুব একটা ভালো চোখে দেখত না। কিন্তু ননীবালা শান্তিনিকেতন থেকে স্কলারশিপ নিয়ে ট্রেনিংয়ে গিয়েছিলেন বলে এবং তাঁর গাম্ভীর্য ও আত্মমর্যাদাবোধের জন্য সবাই তাঁকে খুব সমীহ করত।
ননীবালা খুব ভালো সার্টিফিকেট নিয়ে নার্সিংয়ের ট্রেনিং পরীক্ষা পাশ করলেন। সেই ট্রেনিং করতে গিয়ে তিনি বুঝলেন চিকিৎসাবিদ্যার প্রতি তাঁর গভীর আকর্ষণ ও প্রবণতা আছে। ১৯২৪ সালে তিনি কোর্স শেষ করে আশ্রমে ফিরলেন আর শান্তিনিকেতন পত্রিকায় শ্রীনিকেতন সাংবাদে তখন লেখা হল– ‘শ্রীযুক্তা ননীবালা রায় কিছুদিন হইল কলিকাতা হইতে ধাত্রীবিদ্যা শিক্ষা সমাপ্ত করিয়া শ্রীনিকেতনে ফিরিয়াছেন। তাঁহাকে পাইয়া শ্রীনিকেতনের চিকিৎসা বিভাগে বিশেষ সুবিধা হইয়াছে। তিনি প্রাতে হাসপাতালের কার্য করিয়া দ্বিপ্রহরে শ্রীনিকেতন বালিকা বিদ্যালয়ে পড়াইবার ভার গ্রহণ করিয়াছেন।’ ননীবালা এই দুই কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সারাদিন প্রবল পরিশ্রম করতেন।
ননীবালা গ্রামে গ্রামে মেয়েদের নিয়ে মহিলা সমিতি তৈরি করেছিলেন, সেখানে নানাবিধ কাটিং, সেলাই ইত্যাদি শেখানো হত। এর জন্য তিনি নিজে দর্জির কাছে কাটিং শিখে নিয়েছিলেন। লেস বোনা ও এমব্রয়ডারি করা জানতেন তিনি।
ননীবালা গরুর গাড়ি করে একেকদিন একেক গ্রামে চলে যেতেন। সেখানে মেয়েদের সেলাই, মণিপুরী তাঁত বোনা ইত্যাদি শেখাতেন। অনেক সময় লেখাপড়াও শেখাতেন। শেখাতেন কীভাবে শিশুদের মানুষ করতে হবে, ঘরের ভিতর ও বাইরে কীভাবে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নতুন মায়েদের খাদ্যতালিকাও তিনি তৈরি করে দিতেন, স্বাস্থ্যরক্ষার জ্ঞান দিতেন। কোনও মায়ের ডেলিভারি সহজে হবে না বুঝলে বাবাকেও সঙ্গে নিতেন। শুধু তাই নয়, নিজের কোয়ার্টারের প্রাঙ্গণে তিনি গ্রামের মহিলাদের ধাত্রীবিদ্যা শেখাতেন।
এইভাবে, রবীন্দ্রনাথের আদর্শে, শ্রীনিকেতনের সর্বাঙ্গীন গ্রাম উন্নয়নের প্রকল্পে এই আশ্রমকন্যা গভীর নিষ্ঠা ও প্রবল পরিশ্রমে একজন দায়িত্বশীল সৈনিক হয়ে উঠেছিলেন।
… আশ্রমকন্যা-র অন্যান্য পর্ব …
পর্ব ৩: নটীর পূজায় গৌরী ভঞ্জের নৃত্যে মুগ্ধ অবনীন্দ্রনাথ বকশিস দিয়েছিলেন পরনের জোব্বা
পর্ব ১: সৌন্দর্য, সুরুচি এবং আনন্দ একমাত্র অর্থের ওপর নির্ভরশীল নয়, প্রমাণ করেছিলেন আশ্রমকন্যা সুধীরা দেবী