Robbar

যতক্ষণ শাঁস, ততক্ষণ আশ

Published by: Robbar Digital
  • Posted:September 1, 2025 9:29 pm
  • Updated:September 1, 2025 9:29 pm  

হালের ড্র্যাগনফ্রুটের ঝিনচ্যাক বিউটিদের পাশে লুক ওয়াইজ নারিকেল ফল একেবারেই বিস্ট। এখান থেকেই খেলা শুরু! সবাই থেমে যায় ফলের লুকে। আমাদের হিরো শুরু করেন এর পর থেকে। এর স্বাদ চরিত্র অতি সুক্ষ। আগ্রাসী নয়। ডাবচিংড়ি ছাড়া আমাদের চেনা রান্নায় ডাবিংয়ের হিস্ট্রি জানা নেই। খ্যালা আরও জমে ওঠে ঘটনাটা নারকোল হয়ে উঠলে। শাঁসো কি জরুরত, আসমুদ্র হিমাচল এই বিষয়ে অবহিত। মালাইকারি, সম্বরের পার্টনার চাটনি, চন্দ্রপুলি, প্রত্যেকটি নাম মনে এলে জিভ থেকে হৃদয় অবধি সিক্ত হয়ে ওঠে। কুচিয়ে একটু ড্ৰাই ঘুগনির ওপর ছড়ালে পেঁয়াজ লজ্জা পায়।

শুভময় মিত্র

অনেক অবান্তর প্রসঙ্গের মতো ‘পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙা’– কথাটি আমাকে খুব ভাবায়। যেটা বুঝি না– খেলে খাও, অন্য লোকের মাথায় ভেঙে ক্যানো? দামড়া একটা ফল, পাকলে ভালোই ওজন। একে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার দরকার কী? নিজের মাথায় ভাঙা অসম্ভব, ভীষণ গায়ের জোর লাগবে। যার আছে সে ওই কাজ ক্যানো করবে? জাস্ট আস্কিং। গাছ থেকে মাথায় কাঁঠাল পড়ে মৃত্যু, এমনও শুনিনি কোনও দিন। কাঁঠাল ও ভায়োলেন্স প্রসঙ্গ কিন্তু আজও লাইভ আছে। তার মানে কিছু লোক ওই অপকর্মের তালে থাকে।

ছবি: লেখক

এই রে, এবারে ‘তাল’ এসে গেল। ছদ্মবেশী ফ্রুট। ভেতরে আল্ট্রা সফ্ট, জুসি শাঁস। বাইরে থেকে দেখলে গ্রেনেড আর মাইনের মাঝামাঝি চেহারা। ভারী, শক্ত। পড়লে পদার্থবিদ্যায় বর্ণিত সঞ্চিত অমোঘ পতনশক্তি-সহ হিট করলে নিরেট মাথাতেও অব্যর্থ কাজ হওয়ার কথা। অথচ তাল পেড়ে না খেয়ে হিংস্র কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বা ঝড়ের দিনে সব ছেড়ে ওই গাছের তলায় মাতাল আশ্রয় নিয়েছে, প্রকৃতির হাতে বোল্ড আউট হয়ে গিয়েছে, তেমন রেকর্ড নেই।

অস্ত্রের কি অভাব আছে? ফলপাকুড় ধরে টানাটানি কেন? ‘ভেজ’ বলে? বন্দুক রাখলে নির্ঘাত সঞ্জয় করে দেবে। একটা ফল হাতে নির্বিকারভাবে কেউ এগিয়ে এলে কিছুই বলবে না। ঘাতক ফলের অপব্যবহারের সম্ভাবনার কথা যখন উঠলই, তাহলে তো ‘কোকোনাট’ বলে বলে কাঁঠাল, তালকে আউটস্মার্ট করে দেবে! কম্প্যাক্ট। হার্ড। পোর্টেবল। তাহলে এর উপযোগিতা নিয়ে খুনিরা এখনও নীরব কেন? পড়াশোনা করে বুঝলাম তার ‘আইডেন্টিটি’ এখনও স্পষ্ট নয়। বিজ্ঞানের নামবাজি, ভোটার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার ভ্যাজর ভ্যাজরে ওটিকে ‘নাট’ বলে প্রতিষ্ঠিত করা নাকি ঝামেলার ব্যাপার! আসলেতে নাট নয়, ড্রুপ সে। হাবভাব খাঁটি বাদামের মতো নয়। বাদ দিন। ক্যাজিউনাট, হ্যাজেলনাট, আমন্ড (আলতো করে আম অবধি বলতে হয়), গ্রাউন্ড নাট (চিনা মাল)– এরা বায়োলজিকাল নাট চর্চার নিদানে বাদাম হিসেবে পরিচিত। কোকোনাট কিছুতেই বাদাম নয়। মনে আছে নিশ্চয়ই, নাটেদের মধ্যে সবচেয়ে সস্তাটি কিছুদিন আগে ইউটিউব জ্বালিয়ে দিয়েছিল। সবাই অসভ্যের মতো আমোদ করেছিল। হেসেছিল। একমাত্র পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘শেষে চিনাবাদাম?’ অনেকগুলো নাট লুজ করা হল। কোথাও পৌঁছলাম না কিন্তু। সবার উপস্থিতিতে নাটমঞ্চে একটা ডাব, বা নারকোল রাখুন তো দেখি। জাস্ট মিলবে না। তাহলে ওই বিল-ই পাস হয়ে গ্যালো, কোকশাস্ত্র মতে ডাব নারকোল-ও নাট।

ছবি: লেখক

কিছুদিন আগে ১ জুলাই গিয়েছে– আন্তর্জাতিক ফল দিবস। দু’মাসের মধ্যে আবার একটা, আলাদা করে ডাব নারকেল দিবস। ২ সেপ্টেম্বর। কিছুদিনের মধ্যে এসে যাবে ১ নভেম্বর। আন্তর্জাতিক ভেগান ডে। উইকি বাংলায় ‘নিরামিষ’ শব্দটা তেমন উচ্চারণ করছে না। তথ্যের কচকচি ছেড়ে ফলে ফিরি। আবার একটা কাঁঠাল গড়িয়ে আসছে। ছিল এঁচোড়, হল কাঁঠাল। সময় দিলে ভ্যাটকা সবজিও প্রজাপতির মতো ফ্রুটে বদলে যায়। আমাদের বিতর্কিত নাট-টিও তাই। এবারে নাম। সাহেবদের লেখাপড়া কম। যতক্ষণ সবুজ ততক্ষণ গ্রিন কোকোনাট। ঝুনোর দিকে এগলে গ্রিন খসে যাবে। ব্রাউন কোকনাটকে ‘নারকোল’ নামেই ডাকা হবে। আর একটু বললে দোষ হবে না। থাইল্যান্ড, ব্রাজিল, প্যাসিফিক দ্বীপপুঞ্জে, ভারতীয় উপমহাদেশে– বিশেষ করে দক্ষিণ পূর্বে এদের অন্তত ১৫ রকম ভ্যারাইটি আছে। কেউ সব গাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে। কারও ফল হাতের নাগালে। ফলের গতর, চরিত্র, স্বাদ, শাঁসের নেট পাওনা এসবের হিসেব আছে। মালয়েশিয়াতে হয়, একরকম ছোট মাপের গাছ, ফলের খোল হলুদ, নাম ধরে নিয়েছে গোল্ডেন মালায়ান ডোয়ার্ফ কোকোনাট। গর্ব করে বলছে সে বেঁটে। এবং গোল্ডেন। সোনার কেল্লার মতো। শ্রীলঙ্কা, সাউথ ইন্ডিয়াতে কিং কোকোনাট। সব থেকে বেশি জল, পার ফল। তামিলনাড়ুর ভি এইচ সি আই ভ্যারাইটি। পূর্ব উপকূলের ঢ্যাঙ্গার সঙ্গে কোনও বেঁটে গ্রিনকে লড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এক গাছে সর্বাধিক ফলনের রেকর্ড করেছে। কেউ ফাটিয়ে দিয়েছে বার্ষিক ফলনে। জ্যামাইকান টল ১০০ ফিট অবধি বাড়ে। বছরে অন্তত দুশো পিস্ ফল সাপ্লাই করে। এমন সব শাঁসালো মক্কেলদের খবর শুনতে পেলে মন ভালো হয়ে যায়।

Coconut palm | Tree, Scientific Name, Uses, Cultivation, & Facts | Britannica

ডাবের সামাজিক অবস্থানটি ঝালিয়ে নিই। ঝুলে থাকাই তার অদৃষ্ট। সারা বছর পাওয়া যায়। প্রথমে গাছে, পরে সাইকেল ভ্যানে ঝোলে। ভেতরে ভ্যাজালহীন কনটেন্ট। লাইট ক্লিয়ার ড্রিংক। কপাল ভালো থাকলে ফ্রি শাঁস। ডাবুদ্ভুত চামচ দিয়ে খেতে হয়। আমার মতো বিগড়ে যাওয়া সবেতে খুঁত ধরা লোক বলবে, ডিজাইন ডিফেক্ট আছে। অ্যালকোহলহীন ওই কয়েক পেগের জন্য এরকম দামড়া কন্টেনার? নেশার খরচ ও খরচের নেশাকে আয়ত্তে রাখতে রসিক জনেরা ডাবের জলের সঙ্গে ভদকা মিশিয়ে দেদার খেয়ে চলেছেন। সমুদ্রের ধারে কেউ চা খেলেও লোকের চোখ টাটায়। নির্ঘাত মাল খাচ্ছে। ভদকা ও ডাবের স্বচ্ছতা কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করবে না (বলেই ধারণা) এই মিলন এতটাই মধুর যে, দিঘা মন্দারমনির সমুদ্রের জলের লবণাক্ত ভাব কমে গিয়েছে। বলা উচিত, লাবণ্য বেড়েছে। ডাবের জলের এনহ্যান্সড বিনোদনের পাশাপাশি টেনশনের কথাটি অস্বীকার করি কী করে? বড়রা শুধু নয়, কচিকাঁচাদের কথাও উল্লেখ করা চাই। স্কুলের পরীক্ষা চলাকালীন হাফ টাইমে মায়েরা বলপূর্বক সন্তানদের মুখে ডাব তুলে দেন। ডাবের নির্ঘাত অ্যানটি ডিপ্রেস্যান্ট প্রপার্টি আছে। এই সময় এমনিতেই ছাত্রছাত্রীরা টেনশনে কেউ ফ্যাকাসে, কেউ নীল, কেউ পান্ডুর মুখে বসে থাকে। কোনও রঙিন ফলের রস নয়, ক্লিয়ার ডাবের জল তাদের পরবর্তী কয়েক ঘণ্টায় দুশ্চিন্তামুক্ত রাখবে। সব প্রশ্নের উত্তর মনে পড়ে যাবে। আগেই খাইয়ে দিলে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষায় ডাব খেতে হবে না, এই হল ব্যাপার।

Daab Chingri: Fragrant Prawn Curry in a Coconut

এবারে ডাব ছোড়কে নারকেলে যাওয়া হোক দেরি না করে। বাইরের খোল, ছোবড়া নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। আমার মামলা অন্দর কি। ফুটোফুটো বিকিনি পরা আপেল, লাজুক গোলাপি টাচ দেওয়া গোলাপ খাস আম, থ্রি-ডি নকশা করা আনারস, টেক্সচার সমৃদ্ধ লিচু, প্রিন্টেড ডিজাইনের রাজনৈতিক বৈপরীত্য ও সহাবস্থানের চাক্ষিক প্রমাণ তরমুজ, হালের ড্র্যাগনফ্রুটের ঝিনচ্যাক বিউটিদের পাশে লুক ওয়াইজ নারিকেল ফল একেবারেই বিস্ট। এখান থেকেই খেলা শুরু! সবাই থেমে যায় ফলের লুকে। আমাদের হিরো শুরু করেন এর পর থেকে। এর স্বাদ চরিত্র অতি সুক্ষ। আগ্রাসী নয়। ডাবচিংড়ি ছাড়া আমাদের চেনা রান্নায় ডাবিংয়ের হিস্ট্রি জানা নেই। খ্যালা আরও জমে ওঠে ঘটনাটা নারকোল হয়ে উঠলে। শাঁসো কি জরুরত, আসমুদ্র হিমাচল এই বিষয়ে অবহিত। মালাইকারি, সম্বরের পার্টনার চাটনি, চন্দ্রপুলি, প্রত্যেকটি নাম মনে এলে জিভ থেকে হৃদয় অবধি সিক্ত হয়ে ওঠে। কুচিয়ে একটু ড্ৰাই ঘুগনির ওপর ছড়ালে পেঁয়াজ লজ্জা পায়। বাঙালি রান্নায় নারকোল তেলের ব্যবহার নেই। প্যারাফিন বেসড রঙিন হেয়ার অয়েল, ভাইটালাইজার, নবকেশ সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি পাওয়া কেশচর্চার যুগে নারকোল তেল নিয়ে এখনও মাথা দেওয়া হয়। আমাদের ছোটবেলায় বড় সুন্দর একটা ব্যাপার ঘটতে দেখেছি। বোতল নয়, সিল করা গাছের ছবি দেওয়া, সবুজ টিনের কৌটোয় পাওয়া এটি যেত। ছিপি নেই, ওপরের টিনের চাদর সাবধানে কেটে একটা ফুটো করতে হতো। শীতকালে কৌটো উল্টোলে প্রথমে কিছুই হত না। কিছুক্ষণ রোদে রাখলে তার মন গলত। তারপর বুঁদ বুঁদ মেঁ…

লোকাল ট্রেনের ঝালমুড়ি বানান বাড়িতেই, রইল ঝালমুড়িওয়ালার টিপস - How to make jhalmuri at home jhalmuri recipe train style jhalmuri abk

মামলা অন্দর কী যেখানে ফুরিয়ে যায় সেখানেই ব্যাটন ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় শুরু করে কে গো অন্তরতর সে। এর পরের লাইনেই সুগভীর পরশের কথা বলা হয়েছে। তেল মাখার গল্প বলছি না, ওটা হয়ে গিয়েছে। বলছি নারকোলসম হারিয়ে যাওয়া মানুষের কথা। আবার অতীত। আবার স্কুল। মধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলেপুলেরা পড়ত এখানে। সম্ভবত একটা ভদ্র শান্ত লুক দেওয়ার জন্য, মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য প্রত্যেকের মাথায় দেদার তেল ঢেলে চুল আঁচড়ে পাঠানো হত। সারাদিন গড়াত রগ বেয়ে। কড়া প্রিন্সিপাল। বড় চুল দেখলে নিজে ছাঁটিয়ে ক্লাশে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। তাই চুলের হালকা আস্তরণের তলায় দুশ্চিন্তায়, কুচিন্তায় তেলে ঘামে চকচক করা আমাদের মাথাগুলো স্পষ্ট দেখা যেত। জবাকুসুম, কেয়োকার্পিন, ছাপিয়ে সারা ক্লাস ঝিম মেরে থাকতো শালিমারে। পাওয়া যেত আর একটি বিটকেল গন্ধ, একজন বিশেষ স্যর ক্লাসে ঢুকলেই। এমনিতে তাঁর ধারে কাছে আমরা যেতাম না। সবসময় একটা রাগত ভাব। নারকোল উদযাপনের দিনে ওঁকে স্মরণ করার কারণ হল সেটির সঙ্গে ওঁর হেডপিসের অদ্ভুত সাদৃশ্য। তামা পোড়া চেহারা। অল্প ক’টি অবিন্যস্ত চুল মাধ্যাকর্ষণের বিরুদ্ধে গিয়ে সিলিঙের দিকে ধাবিত। অযত্নের দাড়ির চেহারা কহতব্য নয়। পরে বুঝেছিলাম ওঁর মাখা চড়া গন্ধযুক্ত তেল বাজারের সবথেকে কম দামের মাল। দ্রুত কায়েম হল ‘নাড়ু’ নামটি।

দুর্গাপুজোর বিশেষ রেসিপি – গুড়ের নারকেল নাড়ু - Durgapuja 2023 gurer narkel naru recipe in bengali nadu coconut ladoo recipes sus

এটিও বলা দরকার যে, সেসময় আমাদের ক্যাটেগরির ক্যাথলিক স্কুলের শিক্ষকরা বেজায় গরিব ছিলেন। অতিরিক্ত রোজগারের পরিস্থিতি ছিল শোচনীয়। কোচিং সেন্টার কালচার শুরু হয়নি। কেউ কেউ শুনেছি পরবর্তীকালে ছাত্র পোচিং করে সফল বিজনেসম্যান হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। আমাদের দেখলেই নাড়ুর, সরি, কোকো স্যরের চোখ হিংস্র হয়ে উঠত। নিজের অসাফল্যজনিত রাগ চরিতার্থ করার জন্য আমরাই ছিলাম মিনিপিগ। ক্লাসে অবধারিতভাবে অশ্লীল গুজগুজ, গোপন হ্যা হ্যা-র ঘটনা ঘটেই চলত। প্রথমে অস্বাভাবিক কোমল স্বরে উনি অনুরোধ করতেন, ‘ওরে তোরা অমন করিস না, করিস না।’ গুরুত্বহীন বুড়ো স্যর, আমাদের কার্যকলাপ অব্যাহত থাকত। তখন হঠাৎ দু’টি কাঠের স্কেল নিতেন। ডাকতেন ক্রিমিনালদের। চটাস চটাস করে তা পড়ত স্বেচ্ছায় এগিয়ে দেওয়া আমাদের শাস্তিপ্রার্থী হাতের তালুতে। সঙ্গে ভয়ংকর শাসানি। পরীক্ষায় না-বসলেও ফেল করিয়ে দেবেন, এইসব। কিন্তু কোনও দিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশের মেগাজুজু দেখাতেন না। আমাদের মধ্যে একজন স্কুলের আন্দারের খবর রাখত। শুনলাম ডেট এক্সপায়ার করে যাওয়া সেই শিক্ষককে অবসর নিতে অনুরোধের পর এখন জবরদস্তি চলছে। ওঁর অসহায়তার স্কেলটি বুঝতে অসুবিধে হয়নি। আমাদেরও মনে একটা পরিবর্তন হচ্ছিল। বয়সের ধর্ম। বছরের শেষ দিকে, ক্রিসমাসের ছুটির আগে আমরা যখন বেজায় উল্লসিত, উনি যে আরও ম্রিয়মাণ হয়ে গিয়েছেন, তা আমাদের নজর এড়ায়নি। আমরা নিশ্চিতভাবে জানতাম, এরপর কী হবে। আমরা পরের ক্লাসে যাব। উনি, স্কুলের বাইরে। আমরা মন থেকে সত্যি চাইতাম– তা যেন না হয়। স্কেল পিটিয়ে নিজের একমাত্র অ্যাড্রিনালিন রাশ চরিতার্থ করেন। করুন না। একটা অদ্ভুত ব্যাপারও খেয়াল করেছিলাম আমরা। একদিনের স্কেল এপিসোড শেষ হলে উনি আবার কোমল মোডে ফিরে যেতেন। বলতেন, ‘যাও, সে যার জায়গায় বসে পড়ো।’ একজোড়া কাঠের টুকরো দিয়ে মারলে আওয়াজ যত হত, ব্যথা তার তুলনায় নগণ্য। সেটি উনি জানতেন। নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, একটু গভীরভাবে ভাবলে, ওঁর নামকরণে এতটুকু ভুল হয়নি।

…………………………

ফলো করুন আমাদের ওয়েবসাইট: রোববার.ইন

…………………………