সুভাষ বসু ১৯২৭ সালে ঢাকা সফরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হলে আমন্ত্রিত হয়ে বক্তব্য রাখেন। ঢাকা হলে দেওয়া বক্তব্যে সুভাষ বসু হিন্দু-মুসলমানের বিরোধ শান্তিপূর্ণ উপায়ে মিটমাটের কথা বলেন। তখন সুভাষচন্দ্র ছিলেন প্রাদেশিক কংগ্রেসের সভাপতি আর অন্যতম সহ-সভাপতি ছিলেন মুজাফফর আহমদ। বলা বাহুল্য, তখনও সমাজতন্ত্রী আর সাম্যবাদীরা কংগ্রেস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েননি। ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির তখনও শৈশব বলা যায়। সেই সময়ে উদীয়মান নেতা সুভাষ বসুর বক্তব্য হলে উপস্থিত ছাত্রদের উদ্দীপ্ত করেছিল। তিনি বলেছিলেন— ‘বাংলায় উচ্চশিক্ষিত মুসলমানের বর্তমানে অভাব নেই। মুসলিম হলের ছাত্রদের দেখে আশা জাগছে।’
ঢাকায় নেতাজির স্মৃতিতে ‘সুভাষ বোস এভিনিউ’। নারায়ণগঞ্জ শহরে ‘বোস কেবিন’। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পাশাপাশি দুই শহরে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু-র এই ল্যান্ডমার্ক জানান দিচ্ছে, এই দুই শহরের মানুষের সঙ্গে নেতাজির আত্মিক সম্পর্কের কথা।
পুরনো দিন চোখ মোছে স্মৃতির সিঁড়িঘরে। ব্রিটিশ রাজের পূর্ববঙ্গ বর্তমানের স্বাধীন বাংলাদেশের স্মৃতির ঘরে খোঁজ মেলে নেতাজির নানা সময়ের সফরের। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে তিনি এসেছিলেন চারবার, এবং মাদারীপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম এবং বরিশালেও এসেছিলেন। করেছেন জনসভা, পথসভা। নিয়েছেন নাগরিক সংবর্ধনা। দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন আবাসিক হলে বক্তব্য। তাঁর বক্তব্যে পাওয়া যায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য রাজনৈতিক দিক নির্দেশনা। এবং সেই সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বোঝার জন্য তাঁর এই ভ্রমণলিপি পাঠ করা এই সময়ের রাজনীতির জন্য অনেকটাই জরুরি মনে হয়।
সুভাষ বসু ১৯২৭ সালে ঢাকা সফরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হলে (ঢাকা হল বর্তমানে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, মুসলিম হল বর্তমানে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং জগন্নাথ হল) আমন্ত্রিত হয়ে বক্তব্য রাখেন। ঢাকা হলে দেওয়া বক্তব্যে সুভাষ বসু হিন্দু-মুসলমানের বিরোধ শান্তিপূর্ণ উপায়ে মিটমাটের কথা বলেন। এর মধ্যে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের বক্তব্য রাখার একটি দালিলিক প্রমাণ পাই বিশিষ্ট লেখক আবুল ফজল-এর আত্মজীবনী ‘রেখাচিত্র’ গ্রন্থের পাতায়– ‘বোধকরি মান্দালয় জেল থেকে বেরিয়ে আসার পরই সুভাষচন্দ্র বসু একবার পূর্ববঙ্গ সফরে এসেছিলেন। ঢাকায় এলে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও তাঁকে কিছু বলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। এ অনুরোধ তিনি রক্ষা করেছিলেন। কুষ্টিয়ার শামসুদ্দীন আহমদ সাহেবকে (অবিভক্ত বাংলার প্রাক্তন মন্ত্রী) সঙ্গে নিয়ে হলে এসে এক সভায় তিনি বক্তৃতা দিয়েছিলেন। যতদূর মনে পড়ে, সে বক্তৃতার সূচনায় তিনি বলেছিলেন: ‘বাংলাদেশে মুসলমানেরা সংখ্যায় অনেক বেশি, আমি চাই কংগ্রেসের নেতৃত্ব এসে গ্রহণ করুন। আমি আমার বন্ধু মুজাফফর আহমদকে প্রাদেশিক কংগ্রেসের সভাপতি হতে অনেক অনুরোধ উপরোধ করে ব্যর্থ হয়েছি, কোন প্রকারে তাঁকে শুধু সহ-সভাপতি হতেই রাজি করাতে পেরেছি।’ মুজাফফর আহমদের চিরকালই পদ আর পদবি এড়িয়ে চলেছেন। তখন সুভাষচন্দ্র ছিলেন প্রাদেশিক কংগ্রেসের সভাপতি আর অন্যতম সহ-সভাপতি ছিলেন মুজাফফর আহমদ। বলা বাহুল্য, তখনও সমাজতন্ত্রী আর সাম্যবাদীরা কংগ্রেস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েননি। ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির তখনও শৈশব বলা যায়। সেই সময়ে উদীয়মান নেতা সুভাষ বসুর বক্তব্য হলে উপস্থিত ছাত্রদের উদ্দীপ্ত করেছিল। তিনি বক্তব্যে আরও বলেছিলেন– ‘বাংলায় উচ্চশিক্ষিত মুসলমানের বর্তমানে অভাব নেই। মুসলিম হলের ছাত্রদের দেখে আশা জাগছে। আগামী দশ বছরের মধ্যে বহু উচ্চশিক্ষিত মুসলমান বেরিয়ে আসবেন। ইংরেজদের চলে যেতে হবে। এই দেশের শাসনভার বর্তাবে দুই সম্প্রদায়ের নেতাদের ওপর। শিক্ষার প্রসার ঘটায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দূরত্ব থাকার কোনও যুক্তি নেই।’
২৭ বছর বয়সে ১৯২৪ সালে সুভাষচন্দ্র বসুর প্রথম ঢাকায় আগমন। ১৯২৪–১৯৪০– এই সময়কালে নেতাজি মোট ছ’বারের মতো পূর্ববঙ্গ সফর করেন। তাঁর এই সফরসূচি থেকে তৎকালীন রাজনীতির একটি চিত্র পাওয়া যায়। পূর্ববঙ্গ তথা বর্তমানের বাংলাদেশে নেতাজির আগমনের অল্প কিছু আলোকচিত্র পাওয়া যায়। এবং বিশিষ্ট কয়েকজন লেখকের আত্মজীবনীতে নেতাজির বর্ণনা পাওয়া যায়। এ বাদে পূর্ববঙ্গে নেতাজির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত দলিলপত্র-সহ তেমন কোনও নির্ভরযোগ্য বই এ যাবত প্রকাশিত হয়নি! কিন্তু পাওয়া যায় নেতাজিকে নিয়ে আন্তর্জালে কয়েকটি লেখা এবং একটা-দুটো প্রাথমিক গ্রন্থ। ভবিষ্যতে পূর্ববঙ্গে নেতাজির রাজনৈতিক চালচিত্র নিয়ে ভালো কোনও গ্রন্থ প্রকাশিত হবে এই আশা রাখি।
সুভাষ বসু কীভাবে ঢাকার মানুষের কাছে ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু’ হয়ে উঠলেন সেই সময়ের গণযোগাযোগ, গণসংযোগের স্থলগুলো নির্বাচন দেখলে বিস্মিত হতে হয়। সেই সময়ে ঢাকা তথা সারা বাংলার আয়ুর্বেদ জগতের দুই মহান ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে সুভাষ বসুর। শুধু সাক্ষাৎ-পরিচয়েই থেমে থাকেননি। নিজে সেইসব আয়ুর্বেদ প্রতিষ্ঠানগুলো ঘুরে দেখেছেন। ১৯২৩ সালে নেতাজি সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেসের সভাপতি এবং একই সঙ্গে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯২৪ সালে নেতাজির প্রথম ঢাকা সফরে দর্শন করেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের স্নেহভাজন কৃতি ছাত্র ডা. যোগেশ চন্দ্র ঘোষের গড়া প্রতিষ্ঠান ‘সাধনা ঔষধালয়’। এবং নেতাজি শেষবারের মতো ঢাকায় আসেন ১৯৩৯ সালে। তখনও তিনি দর্শন করেন ঢাকার আরেকটি আয়ুর্বেদ প্রতিষ্ঠান মথুরা মোহন চক্রবর্তীর ‘শক্তি ঔষধালয়’। এই দু’টি প্রতিষ্ঠান সেই সময়ে জনমানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয় এবং আস্থার প্রতিষ্ঠান ছিল। বর্তমানে এই দুই প্রতিষ্ঠানই শতবর্ষ পার করেছে। উনিশ শতকের শুরুর এই সময়টায় বাঙালির মনে জাতীয়তাবোধ বিকশিত হতে থাকে, যা থেকে স্বদেশি আন্দোলনের শুরুর একটা দিকচিহ্ন এই সকল আয়ুর্বেদ প্রতিষ্ঠান। আর এমন সব প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের কর্তা-ব্যক্তিদের সঙ্গে নেতাজির ছিল সামাজিক সুসম্পর্ক, যা ছিল ঢাকার স্বদেশিদের কাছে অনুপ্রেরণা। এবং জনগণের কাছে ছিল একরকম দিকনির্দেশনা।
এই শক্তি ঔষধালয়ে আগমনের কথা জানা যায় বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নির্মল সেনের লেখা ‘আমার জবানবন্দি’ বইতে– ‘তখন দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছিল যুদ্ধ নিয়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সাথে মহাত্মা গান্ধী ও জওহরলাল নেহেরুর মতৈক্য হচ্ছে না। এ সময় সুভাষচন্দ্র বসু কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হয়েও সভাপতির পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করে সুভাষচন্দ্র বসু ঢাকায় আসেন। আমাদের বাসা ছিল তৎকালীন দয়াগঞ্জ রোডে। ১৩ নম্বর বাড়িতে আমরা থাকতাম। একদিন দেখলাম সুভাষচন্দ্র বসুর মিছিল যাচ্ছে। তিনি যাচ্ছিলেন শক্তি ঔষধালয় দেখতে। আমাদের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে তিনি মিছিল করে গেলেন। এর পরে ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর জার্মানি চেকোস্লোভাকিয়া আক্রমণ করে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।’
ঢাকায় নেতাজিকে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে আসতে হয়েছে। ঢাকার শুভাকাঙ্ক্ষীদের আহবানে যেমন এসেছিলেন, তেমনই ঢাকার বিপ্লবীদের চরম বিপদের সময়ও নেতাজি ঢাকায় এসেছিলেন। ঢাকার বিপ্লবীদের তৎপরতায় ব্রিটিশ রাজের বিভিন্ন কর্মকর্তা যেমন লোম্যান, হাডসন, সিম্পসন, গার্লিক, পেডি ঘায়েল হন। এরপর ১৯৩১ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট ও কালেক্টর এলজি ডুর্নোকে দিনের বেলায় গুলিবর্ষণের অভিযোগে বিপ্লবী সরোজ গুহ ও রমেন ভৌমিক আত্মগোপন করেন। পুলিশ তাঁদের ধরতে না পেরে ঢাকা শহরের বিপ্লবীদের ৩৩টি বাড়িতে পুলিশের নির্মম অভিযান ও সন্ত্রাস চালানো হয়। এই সন্ত্রাস ও বিভীষিকার তদন্তের জন্য সুভাষচন্দ্র বসু ও জে. এম. সেনগুপ্ত ঢাকায় আসেন। সেই সময়ে ঢাকার বিপ্লবী লীলা নাগ অস্ত্র ও অর্থ সংগ্রহের কাজে কলকাতায় ছিলেন। নেতাজির এই সফরের সঙ্গী হিসেবে সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত থাকেন বিপ্লবী অনিল রায় ও লীলা নাগের প্রতিষ্ঠিত বিপ্লবী সংস্থা ‘শ্রীসংঘ’ ও ‘দীপালি’র সদস্যরা।
এবারের নেতাজির আগমনে ঢাকার প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। বিভিন্নভাবে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা চালায় নেতাজি যেন ঢাকা শহরে পৌঁছতে না পারেন। কিন্তু অবশেষে নেতাজি ঢাকায় আসেন। স্টিমারে কলকাতা থেকে নারায়ণগঞ্জ পৌঁছলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা অনুসারে সুভাষ বসুকে ঢাকায় প্রবেশ করতে নিষেধ করে নোটিস জারি করা হয়। তিনি নারায়ণগঞ্জে নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষা করে সড়ক পথ বাতিল করে, ট্রেনে কুমিল্লা আখাউড়া হয়ে ঢাকায় প্রবেশের চেষ্টা করেন। অতঃপর ১১ নভেম্বর ১৯৩১, তাঁকে তেজগাঁও স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হল। মহকুমা হাকিম তাকে ফেরত যেতে বললে তিনি তাতে অসম্মতি জানান। অতঃপর তাকে ঢাকার সেন্ট্রাল জেলে পাঠানো হয়। ১২ নভেম্বর উকিল শ্রীযুক্ত রজনী দাশ ও যোগেন গুহঠাকুরতা দেখা করতে চাইলে তিনি তাদের সঙ্গে গরাদের বাইরে থেকে দেখা করতে রাজি হল না। ১৪ নভেম্বর সরকার তাকে সভা-সমাবেশ না করার শর্তে মুক্তি দেয়। মুক্তি পেয়ে ওইদিন বিকেলে তিনি ‘ঢাকা বার লাইব্রেরি’তে যান এবং দেশের অবস্থা সম্পর্কে সকলের সঙ্গে কিছুক্ষণ আলোচনা করেন। ১৫ নভেম্বর তিনি পুলিশে আক্রান্ত বাড়িগুলোতে যান এবং যেসব জিনিসের ক্ষতি হয়েছে সেগুলো স্বচক্ষে পরিদর্শন করেন। ঘটনাবহুল এই সফরের স্মৃতি হিসেবে নারায়ণগঞ্জ শহরে এখনও টিকে আছে ‘বোস কেবিন’।
বিভিন্ন সময়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ দুই শহরেই ব্রিটিশ পুলিশের বাঁধার সম্মুখীন হতে হয় নেতাজিকে। কথিত– নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কলকাতা থেকে স্টিমার করে নারায়ণগঞ্জে পৌঁছনোর পর খবর পেয়ে ব্রিটিশ পুলিশ তাঁকে আটক করে স্থানীয় থানায় নিয়ে যায় এবং কয়েক ঘণ্টা আটক রাখেন। তখন সুভাষ বসু পুলিশের কাছে চা খেতে চান। সেই সময়ে নৃপেন্দচন্দ্র ওরফে ‘ভুলু’ কড়া লিকারের দুই কেটলি চা বানিয়ে ছুটে যান থানায়। এবং নেতাজি ভুলু-র চা পান করে প্রশংসা করেন। নেতাজিকে চা পান করানোর স্মৃতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নৃপেন্দচন্দ্র গড়ে তোলেন ‘বোস কেবিন’। এই ঘটনার কয়েক বছর আগে ১৯২৮ সালের ২১ জানুয়ারি এই নারায়ণগঞ্জ শহরের জনসভায় উপস্থিত ছিলেন নেতাজি সুভাসচন্দ্র বসু। ফের ২৫ মে, ১৯৪০ সালে ঢাকায় বড় ধরনের শেষ রাজনৈতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলন ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এখান থেকেই নেতাজি হিন্দু-মুসলিম-সহ দেশের আপামর জনসাধারণের প্রতি ‘ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আঘাত প্রদানের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের’ আহ্বান জানান। ঢাকা শহরের সেই সময়ের জনসভাস্থল ছিল সম্ভাব্য বুড়িগঙ্গা নদীর পার ঘেঁষে গড়ে তোলা সদরঘাটের ‘করোনেশন পার্ক’। আজ আর সেই পার্ক নেই। পার্কের স্থানে গড়ে উঠেছে মার্কেট। ঢাকাও সেই বিপ্লবীদের ঢাকা নেই। বাণিজ্যলক্ষ্মীর আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়ে বুড়িগঙ্গা থেকে তুরাগ নদী পর্যন্ত ঢাকা শহর হয়েছে। এই জনসভাস্থলের আগমনের পথের কিছু অংশ (লক্ষ্মীবাজার ও বাংলাবাজারের একাংশের) নামকরণ করা হয় ‘সুভাষ বোস অ্যাভিনিউ’।
পূর্ববঙ্গও নেতাজির স্মৃতিরক্ষা করে চলেছে, যেভাবে এ বঙ্গও। প্রতি ২৩ জানুয়ারি হয়ে উঠুক সাহসের ও স্বাধীনতার। যে কোনও দেশের, যে কোনও সময়ের।
১৯২৫ সালের মে মাসে ফরিদপুরে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কনফারেন্সে সভাপতির ভাষণে চিত্তরঞ্জন দাশ ঘোষণা করলেন যে, সরকারের সঙ্গে সম্মানজনক সহযোগ করতে তিনি প্রস্তুত। নেতৃত্বের মোহ যখন মানুষকে আচ্ছন্ন করে তখন মহৎ মানুষের অবদান বা তাঁর থেকে দেশের আরও প্রাপ্তি আমরা বিস্মৃত হই না কি?