নকশাল আন্দোলনের রক্তখচিত পরিপ্রেক্ষিতে রচিত হয়েছে সমরেশের ত্রয়ী উপন্যাস। সমাজ বদলের উন্মাতাল উন্মাদনায় অস্থির যুবসম্প্রদায় এই তিন উপন্যাসে প্রাণসঞ্চার করেছে। একেবারে সমসাময়িককালের ঘটনাকে আশ্রয় করে উপন্যাস রচনায় কতটা ঝুঁকি আছে সে সম্পর্কে লেখক যথেষ্ট সচেতন থেকেছেন। জীবনকে ব্যালেন্স করে নিয়েছেন। তিনি বারবার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে এমন রোমান্টিসিজমের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়িছেন যা বাঙালিকে নেশায় বুঁদ করে রেখেছে।
তখন এখানে কিছু প্রজাপতি উড়ছিল। মেঘ ভাঙা ভাঙা রোদ ঝরে ঝরে পড়ছিল। আকাশের নীল শাড়িতে জড়িয়ে তুমি এলে। উড়ুক্কু চুল কপাল থেকে সরালে। বললে, ‘ভালোবাসা নয়, অন্য কথা বল।’ থমক লাগল মনে। তোমার কথা ভাবতেই যার পৃথিবীর সবকিছু একপাশে সরে যায়, বিন্দু বিন্দু হয়ে মিলিয়ে যায়, তখন আশ্বিনের সকাল হয়ে যাওয়া মনে শুধু তুমি আর তুমি, সেই তোমাকে দেখে ভালোবাসা ছাড়া আর অন্য কথা কী করে জন্ম নেবে? হয়তো আমার মুখে ছায়া ঘন হয়েছিল, হয়তো কপালের শিরায় নীল ফুটে উঠেছিল, তাই তুমি হাসলে আর অমনি গজদাঁতে ঝিলিক উঠল। বললে, ‘বেশ, ভালোবাসার তুমি কী জানো?’ থমকে দাঁড়ালাম। রবীন্দ্রনাথের গান মনে পড়ল। তিনিও তো ধন্দে ছিলেন ভালোবাসা কারে কয়? এই যে আমি তোমাকে দেখছি, দেখে মন ভরে যাচ্ছে, না দেখতে পেলে বুক টনটন করে, বেঁচে থাকাটা বিবর্ণ হয়ে যায়, এই অনুভূতি কি ভালোবাসা নয়?…’
‘ভাল থেকো, ভালবাসা’ বইটির শুরুটা হয়েছিল এইভাবেই। লেখক সমরেশ মজুমদার। একজন মানুষ কতটা সরল হলে এইভাবে লিখতে পারেন। একজন মানুষ কতটা সহজ হলে, ভালোবাসাকে এইভাবে ব্যক্ত করতে পারেন। জাদুকরের যেমন কোনও গণ্ডি হয় না, ঠিক তেমন সমরেশ মজুমদারকে কোনও গণ্ডিতে বাঁধা সম্ভব নয়। স্বর্গছেঁড়া চা বাগান থেকে তিনি অনায়াসে নেমে আসতে পারেন রাজপথে। কলেজ স্ট্রিটের রাস্তা পেরিয়ে পৌঁছে যেতে পারেন ভিড়ে ঠাসা কফিহাউসে। বুকপকেট থেকে একটা চারমিনার বের করে পূর্ব দিকের সেই জানলার বাইরে তাকিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে তিনি মুচকি হেসে বলতে পারেন, কেমন আছো অনিমেষ? কেমন আছে তোমার ভালোবাসা?
এই শহর অনেক প্রেম দেখেছে। ছাত্র রাজনীতির চড়াই-উতরাই দেখেছে। কিন্তু রাজনৈতিক পটভূমিকায় প্রেম ক’টা দেখেছে? অনিমেষ-মাধবীলতার মতো যুগল এই শহর আর কখনও পাবে না। পেতে পারে না। কারণ তারা তো কালজয়ী। সমরেশ মজুমদার এমন দু’জন চরিত্রকে সৃষ্টি করলেন যারা আজও হেঁটে যাচ্ছে। সময় পেলে কফিহাউসে পাশাপাশি বসছে। এই শহরে আজও আন্দোলন হলে নেমে আসে তারা। ‘উত্তরাধিকার’-‘কালবেলা’-‘কালপুরুষ’ আদতে একটা সময়ের গল্প। আর ‘মৌষলকাল’ সেই সময়ের শেষ কথা।
সমরেশ মজুমদার আদতে একটি পরিবারের গল্প তুলে ধরেছেন । যে পরিবারের একটি ছেলে ছোট থেকে স্বাধীনতা দেখেছে। কংগ্রেসের সময়কাল দেখেছে , নকশাল আন্দোলন দেখেছে, সিপিএমের রাজত্ব দেখেছে, গুলি খেয়েছে, জেলে খেটেছে, পঙ্গু হয়েছে। তবুও তার প্রেম, তার পাশে থেকেছে। সঙ্গে থেকেছে। তাদের ছেলে বড় হয়েছে। তার জীবনেও ঝড় এসেছে। আবার সময়কাল বদলেছে। বাস্তবের সমস্ত ঝড় তাঁর কাহিনিতে হয়ে উঠেছে প্রাসঙ্গিক। সমরেশ মজুমদার কল্পনাকেও ছাপিয়ে গিয়েছেন। বাস্তবের মাটি থেকে একটা প্রসঙ্গ তুলে তিনি উপন্যাস লিখলেন। সেই উপন্যাস এতটা প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারেন, সেটা হয়ত তিনিও কল্পনা করতে পারেননি। অনিমেষ-মাধবীলতা যে আজকেও প্রাসঙ্গিক থাকতে পারে, তারা আজও কোনও যুগলের আদর্শ হতে পারে– সেটা সমরেশ কখনওই বুঝে উঠতে পারেননি। তিনি শুধু লিখে গিয়েছেন। ভালোবাসার বীজ বপন করেছেন।
তিনি এমনভাবে প্রতিটা চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন যা আজকে ছবির পর্দায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে। তিনি তো বাঙালির রাজনৈতিক রোমান্টিসিজিমের পথপদর্শক। ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’ এবং ‘কালপুরুষ’ যে সময়ে তিনি লিখছেন তখন পর্ব কী জিনিস, অনেকেই জানত না। আজকাল ওয়েব সিরিজের দৌলতে প্রথম সিজন, দ্বিতীয় সিজন এগুলো এসেছে। কিন্তু সেই সময়ে সমরেশ মজুমদার এমন একটি প্লট নিয়ে লিখতে শুরু করলেন, যা পরবর্তী সময়ে হয়ে দাঁড়াল বাংলা সাহিত্যের মাইলস্টোন। ‘উত্তরাধিকার’-এর অনেক বছর পরে এল ‘কালবেলা’। তখন ইংরেজির ১৯৮৩। মাঝে প্রায় অনেক বছরের ব্যবধান। তিনি সত্যিই জীবনের গল্প বলছেন। গল্পের চরিত্র শৈশব পেরিয়ে এসে দাঁড়াল কলকাতার রাজপথে। কলকাতা তখন অশান্ত। নকশাল আন্দোলন শুরু হয়েছে। ঝরে পড়া কৃষ্ণচূড়া, হলদে পাতার দল, উড়ো বাতাসের প্রলোভনকে সরিয়ে রেখে অনিমেষ ঢুকে পড়েছিল সক্রিয় রাজনীতিতে। পাশে দাঁড়িয়েছিল মাধবীলতা। শাড়ি পরা স্নিগ্ধ মেয়েটা হয়ে উঠেছিল অনিমেষের সাতকাহন। কী অপূর্ব মেলবন্ধন করেছিলেন সমরেশ! একদিকে রাজনৈতিক উত্তাল হাওয়া অন্যদিকে প্রেমের পঞ্চরাগ। অভিমান, খুনসুটি আর আদুরে নস্টালজিয়ায় তিনি বেঁধে দিয়েছিলেন আপামর বাঙালিকে। ওঁর লেখা পড়লেই বারবার ফিরে যেতে হয় সেই তিস্তার পাশে। স্বর্গ যেখানে স্বর্গছেঁড়া।
কলকাতার সাম্প্রতিক ঘটনাবলির প্রেক্ষাপটে আমরা দেখতে পেয়েছি এমন বহু যুগল কিংবা দম্পতিকে। এত ভিড়ের মাঝেও তারা মনে করিয়ে দিয়েছিল অনিমেষ-মাধবীলতার প্রসঙ্গ। সারা কলকাতা যখন উৎসবে মুখর তখন তারা অন্য উৎসবে ব্যস্ত ছিল। সমরেশ বেঁচে থাকলে হয়ত বুক ঠুকে বলতেন– এরাই তো আমার অনিমেষ-মাধবীলতা। সমরেশের কলমে যার জন্য জন্ম নেয় প্রচণ্ড রোমান্টিক সেই বাক্য– ‘বিপ্লবের অপর নাম মাধবীলতা’। ঠিক যেন একই প্রসঙ্গ। রাজনৈতিক ভাবে উত্তাল সময়। রাজপথ ভরেছে আন্দোলনে। চারিদিকে স্লোগান, মিছিল! এই ভিড়ের মাঝে আজও বারবার মনে যায় কালবেলার সেই প্রেক্ষাপট।
এখানেই শেষ নয়, তিনি বৃদ্ধ অনিমেষকে দেখালেন ‘কালপুরুষ’-এ। যে অনিমেষ ছিল মধ্যবিত্ত, সে এখন হয়ে উঠেছে গরিব। অর্ক বড় হয়েছে। ঊর্মিমালার প্রেমে পড়েছে। এখানেও রাজনৈতিক অস্থিরতা। তবুও জীবন বয়ে গিয়েছে তিস্তার মতো। তবে অধিকাংশ বাঙালি ‘কালবেলা’ পড়ে ‘উত্তরাধিকার’ এবং ‘কালপুরুষ’ পড়েছেন। বাঙালি অনেক পরে জেনেছে– এই উপন্যাসটি আদতে একটা জীবনের পর্ব। বাংলাভাষায় ত্রয়ী উপন্যাস আমরা আগেও পেয়েছি। বিশেষ করে গজেন্দ্রকুমার মিত্রের ত্রয়ী উপন্যাস ‘কলকাতার কাছেই’, ‘উপকণ্ঠে’ এবং ‘পৌষফাগুনের পালা’-র কথা বলতেই হয়। শতাব্দীর পেছন থেকে কাহিনি টেনে এনে উপস্থাপন করা হয়েছে সেখানে। কিন্তু সমরেশ মজুমদারের ত্রয়ী একেবারে নিকট-অতীতের রাজনৈতিক ইতিহাসের বাস্তবতায় রচিত হয়েছে।
সমরেশ মজুমদার ‘কালবেলা’ উপন্যাসের শুরুতে বলছেন ‘ভরদুপুরে নিজের ছায়া দেখা যায় না। ছায়া যখন দীর্ঘতর হয়, তখন তার আদল দেখে কায়াকে অনুমান করাও সহজ কাজ নয়। এই সেদিন যেসব ঘটনা ঘটে গেল এ দেশে তাই নিয়ে কিছু লিখতে বসার সময় হয়েছে কি না এ সংশয় থাকতেই পারে। সমসাময়িক কিছু নিয়ে লেখার মুশকিল হলো আমাদের দেখাটা অন্ধের হস্তিদর্শন হয়ে যায়।’ কতটা দূরদর্শী হলে একজন এই কথাগুলো লিখতে পারেন। নকশাল আন্দোলনের রক্তখচিত পরিপ্রেক্ষিতে রচিত হয়েছে সমরেশের ত্রয়ী উপন্যাস। সমাজ বদলের উন্মাতাল উন্মাদনায় অস্থির যুবসম্প্রদায় এই তিন উপন্যাসে প্রাণসঞ্চার করেছে। একেবারে সমসাময়িককালের ঘটনাকে আশ্রয় করে উপন্যাস রচনায় কতটা ঝুঁকি আছে সে সম্পর্কে লেখক যথেষ্ট সচেতন থেকেছেন। জীবনকে ব্যালেন্স করে নিয়েছেন। তিনি বারবার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে এমন রোমান্টিসিজমের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়িছেন যা বাঙালিকে নেশায় বুঁদ করে রেখেছে।
সমরেশ মজুমদার কোনওদিনই লেখক হতে চাননি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে থাকতে নাটক করার প্রবণতা ছিল তাঁর। কিন্তু তিনি হয়ে উঠলেন বাঙালির রাজনৈতিক রোমান্টিসিজিমের আইকন। তাঁর জীবনের শেষের দিকে একটা ছোট স্ট্রোক হয়। স্ট্রোকের পর হাসপাতালে থাকা অবস্থায় তিনি অনেক কিছু ভুলে যান। অনেক আত্মীয়স্বজনের নাম ভুলে গিয়েছিলেন। বাংলা অক্ষর, ইংরেজি অক্ষর মিলিয়ে গুলিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। ডাক্তারবাবুরা অনেক থেরাপির কথা বলেছিলেন তখন। সবাই ধরে নিয়েছিল, তাঁর জীবন শেষে হয়ে এল। তখন ওঁর মেয়ে একটা ‘বর্ণপরিচয়’ বই আর চক-স্লেট কিনে দেন। তিনি সে সময় ‘বর্ণপরিচয়’ দেখে স্লেটে আঁকিবুঁকি করতেন। এরপর শব্দ, বাক্য মিলিয়ে আবার লিখতে শুরু করলেন একটু একটু করে। ভোরের প্রথম আলোর মতো তিনি আবার খুঁজে পেলেন নতুন একটা ভোর। দেশ পত্রিকায় আবার উপন্যাস প্রকাশিত হল। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন–
‘১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ দ্বিখণ্ডিত হওয়া থেকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্ম– এই বিশাল সময়ে যে মানুষগুলো উপমহাদেশের ভাঙা-গড়ার সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন, তাঁদের নিয়ে কোনো পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস লেখা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তখনকার মুসলিম লীগের সঙ্গে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষদের মানসিকতা সেভাবে মিলত না। এ দেশের লোকেরা ছিল শ্যামলা বর্ণের। সেখানে মুসলিম লীগের অধিকাংশ নেতা ছিলেন উজ্জ্বল বর্ণের মানুষ। তাঁরা অধিকাংশ এসেছিলেন উপকূল অঞ্চল থেকে। মুসলিম লীগের পতনের সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু জনগণ তাঁদের পাশ থেকে সরে দাঁড়ায়। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর কথাতেই যেন বুকে সাহস ফিরে পেল গোটা বাঙালি জাতি। এসব ইতিহাস আমি উপন্যাস আকারে তিন খণ্ডে লিখব ভেবেছিলাম। প্রথম খণ্ড হবে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ থেকে ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, দ্বিতীয় খণ্ডে ’৫২ থেকে ’৫৮ সালের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ আর শেষ খণ্ড হবে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। এটা লেখার খুব স্বপ্ন আছে আমার। তবে লিখতে বেশ ভয় লাগে। আমি যে বয়সে এসে পৌঁছেছি, সেখানে এসে এত বড় উপন্যাস লিখে শেষ করতে পারব কি না, সেই ভয় থেকেই যায়।’
তাঁর ইতিহাসের পাতায় কত অনিমেষ আর মাধবীলতা লুকিয়ে আছে কে জানে। অনিমেষ অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘তুমি রোদ্দুর চাও না?’ মাধবীলতা বলেছিল ‘না!’ সে আরও বলেছিল, ‘রোদ উঠতেই এই বস্তির মানুষগুলো পাল্টে যায়। সারাক্ষণ চিৎকার, ঝগড়া, অশ্লীল কথার বন্যা বয়ে যায়। যত দিন যাচ্ছে তত লক্ষ্য করছি, ওসব বলার সময় কেউ মা বোন দিদির উপস্থিতি কেয়ার করে না। কিন্তু রোদ না উঠলে, আকাশে মেঘ থাকলে এদের চরিত্র বদলে যায়। তখন কেউ চেঁচামেচি, ঝগড়া করে না।’ এই অংশটি ‘মৌষলকাল’ উপন্যাসের শুরুর অংশ। এইটুকু অংশ বারবার পড়লে কত রকমের মানে বেরিয়ে আসবে।
একটা সম্পর্ক, একটা প্রেম কীভাবে গড়ে উঠতে পারে– সেটা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন সমরেশ মজুমদার। তাঁর লেখা শুধু বইয়ের পাতায় নয়, সিনেমার পর্দায় হয়ে উঠেছে বাণিজ্যিক পণ্য। তাঁর লেখাগুলোর মধ্যে প্রাসঙ্গিকতা ছিল, তা বারবার ছুঁয়েছে সিনেমার পরিচালকদের। একের পর এক গল্প থেকে সিনেমা, সিরিয়াল– কী হয়নি! তিনি আদতে কোনও গণ্ডি মানেন না। কোনও গণ্ডিও তাঁকে বাঁধতে পারবে না কোনওদিন। জামার আস্তিন কনুই পর্যন্ত গুটিয়ে তিনি বলতে পারেন, ‘রাজনীতি আর প্রেম মিলিয়ে দিলাম। দ্যাখ কেমন লাগে!’
‘যৌনতার পাঠশালা’র ভাবনা শুরুই হয়েছিল যৌনতা নিয়ে ‘যা খুশি তাই বলা’ বা ভাবার লাইসেন্স নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করার জন্য যে, যৌনতা মানে কে কাকে কার সঙ্গে শুয়ে পড়তে চায় সেই সংক্রান্ত তাল পাকানোই শুধু নয়, যৌনকর্ম এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে আলোচিত হতে পারে।
অডিটোরিয়াম থেকে ব্যাক স্টেজে আসার যে দরজা সেটা দিয়ে উঠে আসছিল খুব রোগা মতো একটি ছেলে, গায়ের রংটা শ্যামলা, তাকে দেখে বলি, ‘একটু দেখবেন ভাই, অডিটোরিয়াম এ সামনের রো-তে রশিদ খান বলে কেউ আছেন কিনা’, সে শুধু বলল, ‘জি’, আবারও বলি, ‘প্লিজ একটু দেখবেন’, আমি তখনও তাঁকে ভাবছি ‘usher’ জাতীয় কেউ। এবার সে একটু ইতস্তত করে নম্রভঙ্গীতে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলে, ‘জি, ম্যায় হুঁ’।