নব্যবঙ্গীয় চিত্রকলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসাবে ‘প্রবাসী’ আর ‘মর্ডান রিভিউ’-এর পাতা ভরে উঠেছিল তাঁর লেখা চিত্র-পরিচিতিতে। অবনীন্দ্রনাথ ভারতমাতার ছবি আঁকলে, সেটি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন ভগিনী নিবেদিতা। তাঁর মনে হয়েছিল, এটি নতুন ভারত নির্মাণের লক্ষ্যে ভারতীয় শিল্পভাষায়, দেশের মানুষের জন্যে আঁকা ছবি।
 
আধুনিক শিল্প আলোচকদের ভাষায়, হাইব্রিড আর্ট আমাদের শেখায়, শিল্প থামতে জানে না। এটা একটা অবিরাম বিবর্তনের ধারা। প্রযুক্তিকে মানবিক আবেগের সঙ্গে যুক্ত করে এমন এক ভাষা সৃষ্টি করছে এখন, যা একাধারে বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক এবং নান্দনিক।
 
অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে আর্ট কলেজের ফিগার মডেল হিসেবে কাজ করছেন শোভা বিশ্বাস। তাঁর শরীর থেকেই গড়ে উঠেছে বহু ছাত্রের শিল্পের পাঠ। শরীর সেখানে ভেঙে যায় শুধু ফর্ম আর লাইনে। কিন্তু ক্যানভাসের বাইরে, ব্যক্তি শোভা বিশ্বাস-কে কীভাবে দেখেছে সমাজ? নিজের পেশাকে, অর্থনৈতিক অবস্থানকে তিনিই বা কীভাবে দেখেছেন? তাঁর নিজের কথা, রোববার.ইন-এর পাতায়।
 
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজাকে কেন্দ্র করেই পূর্ববঙ্গে লক্ষ্মীসরার উদ্ভব হয়েছিল। বঙ্গদেশে মাটি সহজলভ্য হওয়ায়, লক্ষ্মীসরা, উপাসনার উল্লেখযোগ্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। তবে সরাচিত্রে মৃন্ময়ী রূপ নয়, চিত্রকারী রূপের প্রতিফলন ঘটেছে; আর এই চিত্রকারী রূপটি বঙ্গদেশে বহু প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত ছিল। সেখানে পাওয়া যাবে একপুতলি, দুইপুতলি, তিনপুতলি, চারপুতলি বা যুগল, পাঁচপুতলি, গজলক্ষ্মী, সাতপুতলি, আটপূজারিনি-সহ লক্ষ্মীসরা ইত্যাদি।
 
দুর্গাপুজোকে ‘আর্ট’ হিসেবে ভাবতে চাইলে তার একটা দীর্ঘস্থায়ী, যুক্তিযুক্ত, অবিচলিত দর্শন প্রয়োজন। দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে ওঠা সাইট-স্পেসিফিক আর্টের সঙ্গে তার বাণিজ্যিক দর্শনে বৈরিতা রয়েছে। আর ‘পাবলিক আর্ট’-এর দর্শক নিষ্ক্রিয় নন, মূক নন। শুধু দেখে চলে যাওয়া তাঁদের কাজ নয়। ‘পাবলিক আর্ট’-এর দর্শক সক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট শিল্পকর্মটির অঙ্গ হয়ে ওঠেন।
 
সুনয়নী দেবী, সুখলতা রাও, সীতা দেবী, শান্তা দেবীর মতো অনেকে কলমের সঙ্গে তুলিও তুলে নিচ্ছেন হাতে– যেন এভাবেই তাঁরা খুঁজতে চাইছিলেন আত্মপ্রকাশের ভাষা। শুধু নিজেদের নয়, সমকালীন সব মেয়েদের– যাতে তারা চিনে নিতে পারে নিজেদের বিকল্প পৃথিবীটাকে। হাসিরাশিও ছিলেন এঁদের মতোই প্রতিভাশালী, কিন্তু এ ব্যতীত তাঁর ছিল ভাগ্যের সঙ্গে অসম লড়াইয়ে হার না মানার মতো এক আত্মপ্রত্যয়ী নির্দ্বিধ মন।
 
সুব্রহ্মণ্যনের দুর্গায় ত্রিশূল ব্যতীত দেবী ও মানবীর মধ্যে ফারাক খুঁজে পাওয়া ভার। তিনি মনে করেন, মানুষের অন্তরে দেবত্ব আর পশুত্বের যে সহাবস্থান, সেখানেই অসুরদলনীর সারসত্যটি উদ্ঘাটিত। বাইরে থেকে আরোপিত নয়, শ্রেয় আর প্রেয়র দ্বন্দ্বে সত্য এবং সুন্দরের প্রতিষ্ঠার মধ্যেই দেবীর সত্যিকার আবির্ভাব।
 
মুখোমুখি বসে রবীন্দ্রনাথের পূর্ণাবয়ব প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন অতুল বসু। কিন্তু কোথায় যেন অতৃপ্তি ছিল। সেই ছবি সম্পর্কে একটা খুঁতখুতানি যেন লেগে ছিল মনে। তাই জীবন-সায়াহ্নে এসে চেতনার রঙে রবীন্দ্রনাথকে আঁকলেন। আঁকলেন তাঁর জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিকৃতিচিত্রটি।
 
একটা টান, বুঝলি তো, এইভাবে, রংটা কেন দিলাম ধরতে পারলি? কবজি ছেড়ে দে, শক্ত করলে তুলি চলবে না, বুড়ো আর তার পাশের আঙুল দুটো তুলি ধরার সময় শক্ত, বাকি তোর কথা শুনে নড়বে চড়বে। ছড়ানোর সময় মনে রাখবি কতটা জায়গা পাবি। মুখ চলতে থাকবে, কান শুনতে থাকবে, আঙুল নড়তে থাকবে।
 
কালের করাল গ্রাসে শহর ও শহরতলিতে বাঙালির ছোট রথগুলিতে আর সেই শিল্পের মাধুরী নেই। এখন তার শরীর গোটাটাই রঙিন সেলোফেনে মোড়া। কাঠের বদলে সেখানে স্থান পেয়েছে প্লাস্টিকের ঘোড়া।
 
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved
