কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে এই ধরনের ‘বিশেষ’ সংখ্যাগুলিতে মোট প্রকাশিত লেখার আট আনা থেকে বারো আনাই হয় ভূতের গল্প অথবা রহস্য-রোমাঞ্চমূলক গল্প-উপন্যাস। বাকি যেটুকু পড়ে থাকে, তা ‘ছবিতে গল্প’ বা ‘হাসির গল্প’ দিয়ে ভরে নেওয়া হয়। পাঠকের সবুজ হৃদয়ে যাকে বলে ‘অবুঝ ব্যথা’ যাতে কোনওভাবেই না লাগে তার জন্য কর্তৃপক্ষ যারপরনাই সচেষ্ট!
এমন গ্রন্থ কখনওই শিশুপাঠ্য হওয়া উচিত নয়, যেখানে ঈশ্বরকে এক এবং অদ্বিতীয় বলে বর্ণনা করা হয়নি। এ কারণে শুধু প্রাচ্যদেশীয় কিছু গোঁড়া ব্যক্তিবর্গ নয়, ইউরোপের রেনেসাঁসের সন্তানদের মধ্যে কেউ কেউ এদেশে এসে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘বর্ণপরিচয়’ বইটির প্রয়োগযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
প্রায় কিশোরী বয়সে ‘বেঙ্গল ফেমিন’-এর মানুষদের মুখ কি সারাজীবন রয়ে গিয়েছিল তাঁর মনে? নিজের জীবনে মেয়েদের স্থান আর মেয়েদের শক্তির বোধ থেকে? তাই যখন যেখানে মানুষকে অপমানিত লাঞ্ছিত হতে দেখেছেন, অমন তীব্রভাবে গর্জে উঠেছে তাঁর কলম? ভালোবাসায়? হ্যাঁ, তার মূলে ছিল আপ্রাণ ভালোবাসা।
রুখমাবাইয়ের সংগ্রাম কেবল উনিশ শতকের এক মামলার স্মৃতি নয়। তিনি আদালতে দাঁড়িয়ে জানিয়েছিলেন– নারীর শরীর তাঁর নিজের। অথচ আজকের ভারতে বৈবাহিক ধর্ষণ এখনও অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত হয়নি। আইনি কাঠামো নারীর সম্মতির প্রশ্ন আংশিকভাবে স্বীকার করলেও, দাম্পত্যের ভেতর সেই সম্মতির গুরুত্ব এখনও অস্বীকৃত।
সাহানা দেবী বিয়ে ঠিক হওয়ার সময়ে তাঁর দেশবরেণ্য মামাবাবুর আক্ষেপ– ‘কী রে ঝুনু, তুইও পায়ে শিকল পরলি? আমি ভেবেছিলাম মুক্ত বিহঙ্গের মতো তুই শুধু গান গেয়েই বেড়াবি, তা দেখছি তোর পায়েও বেড়ি পড়ল।’ অথবা রবীন্দ্রনাথের স্থায়ী আশঙ্কা যে, বিয়ের পরও সাহানা দেবীর গানে অনুরাগ অমলিন থাকবে কি না– ‘তোমাদের মেয়েদের হয় বিয়ে, নয় গান, দুটোর মাঝামাঝি কিছু নেই।’ এই আশঙ্কা কি মহৎ ব্যক্তি মানুষের গভীর ব্যর্থতাবোধ?
রোচনা মজুমদার তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, বিশ শতকের গোড়াতেই শহুরে সমাজে ছাপার অক্ষরে বিয়ের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে 'বিয়ের বাজার' নির্মিত হয়। বাড়তে থাকে পণের চাহিদা। পুরুষের শিক্ষা এবং পেশার বাজারদর স্থির হয় বিয়ের বাজারে। আগের প্রজন্মের পুরুষেরা বিয়ের মাধ্যমে সামাজিক সম্মান বাড়াতে চাইতেন। বিশ শতকের পুরুষ চাইতেন টাকা।
সমাজ, সম্পর্ক কোনও কিছুই একরৈখিক নয়। আশাপূর্ণা সেই জটিলতার বিষকে সানন্দে ধারণ করেছেন স্বকণ্ঠে, স্ব-কলমে। তাঁর হাতে গড়া প্রতিমারাও তেমনই, দোষে-গুণে, ক্রোধে-প্রেমে সার্থক রক্তমাংসের মূর্তি। যে দেবীদের আবাহন কিংবা বিসর্জন নেই, তাঁরা চিরায়ত।
এখন যা পড়ে রইল তা অজস্র বইয়ের কঙ্কাল। তার হোমও নেই, যজ্ঞও নেই। এমনকী, কেজি দরে বিক্রির ভবিষ্যৎ নেই। সুরাহার পথ আপাতত কী? কে দাঁড়াবেন এই দুঃসময়ে? সরকার? গিল্ড? স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন? হঠাৎ তৈরি করা কোনও ক্রাউড ফান্ড?
পৃথিবীর তাবড় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা বিশ্বকর্মার ধার ধারে না। শুধু আমাদের দেশ ধারে অস্ত্র আর বিমান কেনে।
উডি অ্যালেন ভাবতে চেষ্টা করেন, তিনি তাঁর রসবোধ, সেন্স অফ হিউমার, উইট, শব্দের তৎপরতা, ভাষার দ্যুতি, বুদ্ধির ঝলক, এই সব ঠিক ঠিক নেভিগেট করতে পেরেছেন তো?
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved