বাঙালির মতো মিশেলবাজ আর কে আছে? যেখান থেকে যা পাচ্ছে নিজের মিশেলে দিশি করে নিচ্ছে। বাঙালি দিশির চাদরে বিদেশিকে ঢুকিয়ে সংকর করে তোলে, বিদ্যাসাগরও তাই করেছিলেন।
কেরল, পশ্চিমবঙ্গ ও অন্যান্য কয়েকটি রাজ্যে ক্লাসঘরে পড়ুয়াদের বসার বিন্যাস বদলানোর আয়োজন শুরু হয়েছে। সারি সারি বেঞ্চ আর টেবিল শুরু থেকে শেষের দিকে যাবে না। অর্ধগোলাকৃতি বিন্যাসে বসানো হবে তাদের। তবে বিন্যাসের বদলই যথেষ্ট নয়। পড়ুয়া আর শিক্ষকদের মনের ভেতরে ক্ষমতাতন্ত্রের যে জগদ্দল ভার, তা না মুছলে ব্যবস্থা আর অবস্থা বদলে যাবে না।
বাঙালি, একালের বাঙালি, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আশ্চর্যরকম ভাবে কচ্ছপ হয়ে ওঠে। তাকে বলি কচ্ছপের রাজনীতি। খোলার ভেতরে ঢুকে পড়ে, নিজেকে বাঁচানো। খাবো-দাবো রোজগার করব। মাঝে মাঝে টিভিতে কিংবা সমাজমাধ্যমে উত্তেজনার প্রশমন করব। কিছুতেই কিন্তু পথে নেমে নিঃস্বার্থভাবে নৈতিকতার রাজনীতিতে যোগ দেব না।
সত্যজিৎ জানতেন অতীতে যুদ্ধের চেহারা-চরিত্র যা ছিল বর্তমানে আর তা নেই। তাই গুপী-বাঘার রূপকথার পুনরাবৃত্তি করা অসম্ভব। আকাশের থেকে নেমে আসা খাবারের স্বপ্নে রাষ্ট্রীয় যুদ্ধ থামবে না।
উর্দু ভাষা ভারতবর্ষীয় সম্মিলনের চিহ্ন বহন করছে। শৌরসেনী প্রাকৃতের বিশেষ একটি রূপ দ্বাদশ শতাব্দীতে দিল্লি ও মিরাটের প্রতিবেশী ভূখণ্ডে ব্যবহৃত হত। এই সচল ভাষা-ভেদটিই উর্দুর ভিত্তি।
বাংলা ভাষার জন্য বিদ্যালয় স্তরটি বস্ত্র-বয়নের কাজ করে। ভাষার মোটা ভাত-কাপড় তো সেই জোগায়। সেই জোগান বন্ধ হয়ে গেলে বা সেই ভাত-কাপড় দেওয়ার উপযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা না থাকলে ভাষা-শরীর জীর্ণ ও বস্ত্রহীন হবেই।
সকলের চোখের সামনে নেমে আসুক অশরীরী বই, সকলের শ্রুতিতে বাজুক কানবই। সেটা হলে বেশ হয়।
ইচ্ছে করে সমরেশ কালকূটকে ডেকে এনে শতবর্ষ পরের এই মেলার ব্যবসায় একবার পদচারণা করাই। নেহেরুর ভারত আর মোদি-যোগীর ভারতের ভেদটুকু আমাদের বলে দিয়ে যান।
নিত্যানন্দবাবুকে পাত্তা না দিয়ে পাঁচরকি হঠাৎ নাচতে শুরু করল। প্যান্ডেলের নাচ নয়, বিশুদ্ধ রবীন্দ্রনৃত্যের মতো কিছু একটা। তারপর একযোগে বলে উঠল আমরা সবাই রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনের মতো ভদ্র হব।
বাঙালি একদিকে রবীন্দ্রনাথকে ভক্তি করে মাথায় তোলে, অন্যদিকে রঙ্গ করে পথে বসায়। একটি অন্যটির প্রতিক্রিয়া।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved