শুধু শহরের দিকেই প্রশাসনের নজর থাকবে, শহরতলিতে নয়– এই মনোভাব যে কোনও শহরের বিকাশের অন্তরায়।
খালের পশ্চিমে কলকাতার লোকজন যেন বাকি প্রদেশের জনগণের থেকে বেশ আলাদা ও উন্নত– এই ধারণা ব্রিটিশ আর আংলো-ইন্ডিয়ান জগতে উনিশ শতক জুড়ে ছড়িয়ে ছিল।
‘ব্ল্যাক-আউট’ বা ভিক্টোরিয়া কালো রং করে শহরবাসীকে আশ্বস্ত করা সম্ভব হয়নি। জাপানি আক্রমণের আশঙ্কা থাকলেও কলকাতা শহর তখন ধুঁকছে দুর্ভিক্ষ-পীড়িত হতদরিদ্র মানুষগুলোকে নিয়ে।
ঘোড়া ছাড়া মানুষের আধুনিকতার ইতিহাস অসম্ভব। এবং পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে এই সম্পর্ক বিশেষ রূপ নিয়েছিল গোটা উনিশ আর বিশ শতকের প্রথমার্ধ জুড়ে।
শহর থেকে দেশের কল্পনায় যাত্রা শুরুর প্রথম ধাপ যেন হয়ে উঠেছিল গোলদীঘি আর টাউন হল। একই সঙ্গে তৈরি হচ্ছিল ব্যক্তি আর সমষ্টির নতুন সমীকরণ, নতুন আঙ্গিক নিচ্ছিল ঘর আর বাইরের সম্পর্ক।
শহরের অতীত ও ঐতিহ্য নির্মাণের এক বিশেষ মুহূর্ত ছিল বিশ শতকের গোড়ার বছরগুলি। এই সময়ে জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটছে, কলকাতা পুরসভায় ভারতীয় প্রতিনিধিদের গলার জোর বাড়ছে, বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে প্রথমবার শহরের রাস্তায় মানুষ মিছিল বের করছেন– ফলে বোঝাই যাচ্ছিল কলকাতার দাবিদার অনেক, শুধু ব্রিটিশ রাজপুরুষদের নয় এ শহর।
কোম্পানির আমলে কেল্লা বা ময়দানের যে সামরিক অর্থ ছিল, তা সাম্রাজ্যের রাজধানীতে আর বিশেষ মানে বহন করে না।
দেশভাগের দায় স্বাধীন ভারতের সরকারকে খানিক হলেও বাধ্য করেছিল এই ছিন্নমূল মানুষগুলোর ‘অপেক্ষা করার অধিকার’কে মান্যতা দিতে।
একদিকে কলকাতার বাইরের এই অঞ্চলগুলিতে নানা পরিবর্তন আসে, আর অন্যদিকে শহরের চারিত্রিক বিন্যাসও বেশ বদলে যায়।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved