জিনাত আমনদের জনপ্রিয়তা ছাপিয়ে যেতে শুরু করল স্মিতা পাতিলের জেদি মুখের ধারালো ইঙ্গিত। শাবানা হয়তো ততদিনে ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’, ‘হিরা অউর পাত্থর’ করে ফেলেছেন, কিন্তু স্মিতা তখনও মূলত মূলধারার বাইরে। অথচ, সাধারণ দর্শকমানসে স্মিতা কী তাড়াতাড়ি হয়ে উঠলেন স্বাধিকার ও দ্রোহের পরিচিতি! আটের দশকের গোড়ায় বাগবাজার এলাকার এক তথাকথিত চ্যাংড়া ছোঁড়া রোয়াকে এসে ঘোষণা করে, সে অমুক মেয়েটির প্রেমে পড়েছে, কারণ তাকে একেবারে স্মিতা পাতিলের মতো দেখতে!
২১.
সেই তিনের দশকে, বোম্বাইয়ের স্টুডিওপাড়ায় যখন মদন পিকচার্স, ইম্পেরিয়াল ফিল্ম কোম্পানিদের রমরমা, যখন পরাধীন ভারতে ধিকিধিকি আগুন-অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ছে, তখন জুবেইদা, সুলোচনারা হয়ে উঠেছিলেন ভারতীয় নায়িকাকল্পের আদর্শ। সেই যে-বছর হিজলি জেলে শহিদ হচ্ছেন সন্তোষ মিত্র, তারকেশ্বর সেনগুপ্ত-রা, সেই ১৯৩১ সালে মুক্তি পাচ্ছে এক চিরন্তন ক্লাসিক, ‘আলম আরা’, ভারতবর্ষের প্রথম সবাক ছবি। আর্দেশির ইরানি, যিনি ম্যাজেস্টিক ও পরে ইম্পেরিয়াল ফিল্মস-এর জন্মদাতা, জে. জে স্কুল অফ আর্ট-এর প্রথম জমানার সেই প্রাক্তন পারসি ছাত্রটির হাত ধরেই প্রথম কথা বলতে শিখল ভারতীয় সিনেমা। অধুনায় হারিয়ে যাওয়া ‘আলম আরা’ ছিল এক নির্ভেজাল রূপকথা। সেই ছবির সূত্রে জুবেইদা হয়ে উঠলেন সেই ক্ষতবিক্ষত উপনিবেশের নায়িকা। সেই সময় ‘মৃগনয়নী’ বলে বিজ্ঞাপিত হচ্ছেন সুলোচনা-র মতো নায়িকা। জেবুন্নেসা, জিল্লোবাই-রা বাণিজ্যনগরীর প্রাণভোমরা হয়ে উঠছেন। আর. এস চৌধুরীর পাশাপাশি ছবি করছেন সিন্ধি মোতি গিদওয়ানি, জন্মসূত্রে ইহুদি এজরা মির, যিনি নাম পরিবর্তন করে এসেছিলেন হিন্দি থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হতে। অন্যদিকে, ১৯৩২ সালে ভি. শান্তারামের ‘অযোধ্যেচ্ছা রাজা’-তে ব্রাহ্মণ নায়িকা দুর্গা খোটে-র অভিনয়ে আসা, সংস্কারাচ্ছন্ন ভারতীয় হিন্দু মনে সিনেমাকে কিঞ্চিৎ স্থান দিয়েছিল।
সেই বহুবর্ণীয় চলচ্চিত্র-ভুবন তার উত্তরাধিকার ধরে রেখেছে কি? এই জটিল প্রশ্নের উত্তরে পৌঁছতে হবে ধীরে ধীরে, পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর পরতে পরতে। কিন্তু এই হেঁশেলেই বম্বে ইন্ডাস্ট্রি হয়ে উঠল একচেটিয়া, তার সাম্রাজ্যের প্রথম পদক্ষেপ হয়ে উঠল, ভারতীয় চলচ্চিত্রের দ্যোতক হয়ে ওঠা। অন্য সমস্ত আঞ্চলিক ভাষার ছবিকে হিন্দি ছবি আধিপত্যের নিরিখে ছাপিয়ে গেল তো বটেই, একইসঙ্গে মুম্বই ওরফে বম্বে হয়ে উঠল, ভারতের সিনেমা নামক ব্যবসা ও তার জনসাংস্কৃতিক পরিসর নির্মাণের প্রাণকেন্দ্র। সেই থেকে বম্বে স্টুডিও ব্যবস্থার নানাবিধ ধারাপাত অনুসরণ করেছে। ১৯৩৪ সালে, যে-বছর মহাত্মা গান্ধীকে হত্যার প্রথম চেষ্টা হচ্ছে, ঠিক সেই বছর জন্ম নিল ‘বম্বে টকিজ’। এই স্টুডিও আগামী কয়েক দশক বলিউডকে শাসন করবেন, এমন নায়ক-নায়িকার জন্ম দিল অচিরেই। দেবিকা রানির নিজস্ব দাপুটে ও বাঁধনভাঙা প্রতিমূর্তির সঙ্গে অশোক কুমারের ঔপনিবেশিক আভিজাত্য, গাম্ভীর্যের ভদ্রজনোচিত নায়ক সত্তার মিশেলে ‘জীবন নাইয়া’ ও ‘অচ্ছুৎ কন্যা’ তুমুল হিট করছে, অশোক কুমার-মুমতাজ শান্তি অভিনীত টানটান ছবি ‘কিসমত’ কোটি টাকার ব্যবসা ছুঁচ্ছে। শিশুশিল্পী হিসেবে মধুবালার প্রথম আবির্ভাব (তখন মুমতাজ), দিলীপকুমারের প্রথম ছবি, দেব আনন্দের প্রথম বাণিজ্যসফল ছবির মধ্য দিয়ে নায়ক হয়ে ওঠা- ইত্যাদি অবদান পেরিয়ে, স্বাধীনতার ঠিক আগে আগেই দেবিকা রানি বম্বে টকিজ বিক্রি করলেন, ১৯৫৩ সালে খাতায়-কলমে ঝাঁপ পড়ল, দু’দশকেই ঝড় তুলে দেওয়া এই স্টুডিওয়। আর এই প্রস্থান থেকেই হলিউড-অনুসারী আবরণ থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করল ভারতীয় ছবি, ধীরে ধীরে।
এই ঐতিহাসিকতায় সবচেয়ে বড় মোচড়টা এল সাতের দশকেই। স্বাধীনতার আগে-পরে, ভারতীয় ছবি ছিল আকাঙ্ক্ষার, স্বপ্নের। তাই তা কখনও বাস্তবোত্তীর্ণ, কখনও বা চূড়ান্ত পৌরাণিক বা ঐতিহাসিক, কখনও দুর্দম প্রেমের, কখনও আবার আদ্যন্ত রাজনৈতিক। বিমল রায়, রাজ কাপুর, মেহবুব খান, ভি. শান্তারাম, বি. আর চোপড়া- একের পর এক ছবিতে হয় সদ্য স্বাধীন দেশের ফ্যান্টাসির দুর্গ নির্মাণ করলেন, নয় সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতার এক অন্যতর ভাববিশ্বের ভিত স্থাপন করলেন। যার ফলস্বরূপ সোভিয়েতে ‘আওয়ারা’ থেকে ‘ববি’ হয়ে ‘ডিস্কো ডান্সার’ পর্যন্ত তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করল। দেখতে গেলে, সোভিয়েত ইউনিয়ন হয়ে উঠেছিল ভারতীয় ছবির সমান্তরাল বাজার।
অন্যদিকে নব্য ভারতের কৃষি, শিল্প, অর্থনীতির স্বপ্নিল চেহারায় ভাঙন ধরতে শুরু করল অচিরেই। জওহরলাল নেহরু-র মৃত্যু, লালবাহাদুর শাস্ত্রী-র রহস্যজনক মৃত্যু ইত্যাদি পেরিয়ে ইন্দিরা গান্ধী যখন ক্ষমতায় এলেন, তখন দুটো যুদ্ধর রক্তপুঁজ (বনাম চিন ও পাকিস্তান), দেশের অভ্যন্তরে বাড়তে থাকা শ্রেণিবৈষম্য, নানা প্রান্তে দানা বাঁধতে থাকা কৃষক অভ্যুত্থান, ধানবাদের কুখ্যাত কয়লাখনি বিপর্যয়, অতি বামপন্থী রাজনীতির দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া, সাম্প্রদায়িকতার বাক্সবন্দি বারুদে খুচরো অগ্নিসংযোগ– সব মিলিয়ে চিড় ধরে যাওয়া, ফাটল দেখা দেওয়া এক দেশ তখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সেখানে আর কেবলই ভাগ্যবিড়ম্বিত নায়ক দেব আনন্দ বা রাজেশ খান্না-দের জমানা থাকবে না, বলাই বাহুল্য। তাই ‘দিওয়ার’-এর বস্তি, ডক এলাকা বা ‘মুকাদ্দর কা সিকান্দর’-এর অপরাধজগৎ, ‘জুলি’ বা ‘ববি’-র মতো সমাজের নিগড় ভাঙা সাহসী প্রেম প্রভৃতি বিচ্যুুতি তৈরি হয়ে চলেছিল।
এর মধ্যেই বলিউডে দেখা দিল অন্য ধারার বিরোধাভাস। বাংলা ভাষা সেই পাঁচের দশকে যদি বারীন ঘোষের ‘ছিন্নমূল’, সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’, ঋত্বিক ঘটকের ‘অযান্ত্রিক’-এর (যেহেতু ‘নাগরিক’-এর মুক্তি পরে) জন্ম দিয়ে থাকে, তাহলে ১৯৬৯ সালে মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ ভারতীয় নববসন্তের অস্তিত্ব জানান দিল। অস্থির বাংলায় তিনি এরপর বানাবেন ‘ইন্টারভিউ’, ‘কলকাতা ৭১’ ও ‘পদাতিক’ নিয়ে কলকাতা-ত্রয়ী, সত্যজিৎ রায়ও ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ ও ‘সীমাবদ্ধ’-তে তখন ছুঁয়ে ফেলেছেন সমকালের অন্ধকার। ১৯৭৪ সালে শ্যাম বেনেগালের ‘অঙ্কুর’ হয়তো জন্ম দিল সরাসরি প্রতিরোধের ছবি-র। শেষ দৃশ্যে এক অনামা বালকের ছোড়া ইট ছুটে গিয়ে চুরমার করে ক্ষমতা ও বুর্জোয়াতন্ত্রর কাচের দেওয়াল। এই প্রতিরোধ আরও স্পষ্ট হল ‘মন্থন’-এ, যে ছবি ভার্গিস কুরিয়েন-দের আমূল কো-অপারেটিভ আন্দোলনের উদযাপন হয়ে উঠল। পাঁচ লক্ষ কৃষকের দেওয়া অনুদানে তৈরি হওয়া, বিজয় তেণ্ডুলকরের চিত্রনাট্য, কাইফি আজমি-র সংলাপ ও গোবিন্দ নিহালনি-র চিত্রগ্রহণের মণিকাঞ্চনযোগে, সেই ছবি হয়ে উঠেছিল এই নববসন্ত অথবা নিউ ওয়েভ অথবা ভারতীয় সমান্তরাল চলচ্চিত্রের অন্যতম সোপান, যেমনটা ঘটবে এই ছবির দু‛দশকেরও পরে নির্মিত রামগোপাল বর্মার ‘সত্যা’-র ক্ষেত্রে, যে ছবি নিজে কাল্ট তো হয়েছিলই, বলিউডকে উপহার দিয়েছিল এক নতুন প্রজন্মও। এরপর গোবিন্দ নিহালনি পরপর বানাবেন ‘আক্রোশ’, ‘বিজেতা’, ‘পার্টি’, ‘আঘাত’-এর মতো ছবি। নাসিরউদ্দিন শাহ, ওম পুরী-রা ভিজিল্যান্টে অমিতাভ বচ্চনের রাগী যৌবনের বিপরীতে এক অন্য রাগের চিহ্নক হয়ে উঠবেন। শাবানা আজমি, স্মিতা পাতিল বা পরে কেতন মেহতা-র ‘মির্চ মশালা’-য় দীপ্তি নাভালরা যে প্রতিরোধের আঙ্গিক ধরতে শুরু করলেন, তা সমসাময়িক বন্দুকধারী জিনাত আমনকে ছাপিয়ে গিয়ে, সেই প্রথম জন্ম দিল বলিউডের অন্তর্লীনে, এক নারীভাষ্যের। জিনাত আমনদের জনপ্রিয়তা ছাপিয়ে যেতে শুরু করল স্মিতা পাতিলের জেদি মুখের ধারালো ইঙ্গিত। শাবানা হয়তো ততদিনে ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’, ‘হিরা অউর পাত্থর’ করে ফেলেছেন, কিন্তু স্মিতা তখনও মূলত মূলধারার বাইরে। অথচ, সাধারণ দর্শকমানসে স্মিতা কী তাড়াতাড়ি হয়ে উঠলেন স্বাধিকার ও দ্রোহের পরিচিতি! আটের দশকের গোড়ায় বাগবাজার এলাকার এক তথাকথিত চ্যাংড়া ছোঁড়া রোয়াকে এসে ঘোষণা করে, সে অমুক মেয়েটির প্রেমে পড়েছে, কারণ তাকে একেবারে স্মিতা পাতিলের মতো দেখতে! অথচ, সেই ছেলে হলে দেখতে যায় ‘ত্রিশূল’ বা ‘ফুল খিলে হ্যায় গুলশন গুলশন’। গ্রামভারতের প্রতিরোধের ছায়া হয়ে ওঠা স্মিতা পাতিল তার মনেও দোলা লাগিয়েছিল, ভাবলে আশ্চর্যই লাগে।
চিদানন্দ দাশগুপ্ত তাঁর একটি নিবন্ধে বললেন, এই নব্য ধারার সমাজতান্ত্রিক ছবিগুলো, যে মূলধারার বিরোধিতা তারা করছিল, তাদেরই মতো ফরমুলা অনুসারী। আদুর গোপালকৃষ্ণন বা জি. অরবিন্দনদের তিনি নম্বর দিতে চেয়েছিলেন, তাঁরা সচেতনভাবে এই ধারাকে অনুসরণ করলেন না বলে। লক্ষণীয়, দু’জনেই আঞ্চলিক ভাষার পরিচালক। অন্যদিকে, ‘মিডল রোড’-এর ধারা বেয়ে এসেছেন বাসু ভট্টাচার্যরা। ‘ভুবন সোম’-এর বছরেই মুক্তি পাওয়া ‘সারা আকাশ’-এর পরিচালক বাসু চট্টোপাধ্যায়, সাতের দশক জুড়ে ঘুরেছেন মধ্যবিত্তর অন্দরমহলে। আরেক বাঙালি পরিচালক হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায় মূলধারার মধ্যেই নিজের চলচ্চিত্র-আখ্যান বেছে নিয়েছেন, যেভাবে বেছে নিয়েছিলেন এই বাংলায় তপন সিংহ বা প্রারম্ভিক কালের তরুণ মজুমদার (‘যাত্রিক’ পরবর্তী অধ্যায়ে, ‘দাদার কীর্তি’-র আগে পর্যন্ত)। সৈয়দ আখতার মির্জার ‘ঘাসিরাম কোতোয়াল’, ‘অরবিন্দ দেশাই কি আজিব দাস্তান’, ‘অ্যালবার্ট পিন্টো কো গুসসা কিঁউ আতা হ্যায়’ বা ‘সেলিম লংড়ে পে মাত রো’, মহেশ ভাটের ‘অর্থ’, ‘সারাংশ’, প্রকাশ ঝা-র ‘দামুল’ বা আরও পরে, সেই নব্বইয়ে, কেতন মেহতা-র ‘মায়া মেমসাব’ হয়ে উঠল অন্যতর। আবার জন আব্রাহামরা আঞ্চলিক ছবিতে ছক ভেঙে বেরলেন সম্পূর্ণ। এর মধ্যে সদ্য জরুরি অবস্থা পেরিয়ে যাওয়া সময়ে নবাবি ‘রেমিনেন্সেস’-এর বিলাপ ও কিছুটা তামাশায় ভরা সত্যজিৎ রায়ের ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’ বা আশির মাঝামাঝি দূরদর্শন-এর জন্য নির্মিত দলিত নিগ্রহ ও ব্রাহ্মণ্যবাদের করাল আবহ উন্মোচনকারী ‘সদগতি’ এই ধারার অংশ ততটা হল না, কিন্তু দুই স্বতন্ত্র ছবি হিসেবে রয়ে গেল।
এর মধ্যেই বাঁক নিতে শুরু করেছে মূলধারাও। বাম ঝোঁকের নববসন্তের পাশাপাশি আশির গোড়াতেই ‘ইয়ে দেশ’-এর মতো ছবি হল, যেখানে মূল চরিত্র এক ইউনিয়ন নেতা, চন্দ্রমোহন আজাদ। তার ব্যক্তিক লড়াইয়ের গল্পের মধ্যে ‘মজদুরো কা নাড়া হ্যায়’-এর মতো সরাসরি শ্রমিক অধিকারের গানও রইল। মনে রাখার, বাংলায় এই ছবির আশপাশেই তৈরি হয়েছে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ‘গৃহযুদ্ধ’ বা উৎপলেন্দু চক্রবর্তীর ‘চোখ’। মোদ্দায়, বাম যুবমনের কাছে হিন্দি ছবি মাত্রেই তখন প্রতিক্রিয়াশীল নয়। কিন্তু ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ বলে মার্কামারা জনপ্রিয় ছবিও তার মতো করে রাস্তা করে নিয়েছে ঠিকই।
…পড়ুন জনতা সিনেমাহল-এর অন্যান্য পর্ব…
পর্ব ২০। হকার, হোটেল, হল! যে কলকাতার মন ছিল অনেকটা বড়
পর্ব ১৯। দেওয়ালে সাঁটা পোস্টারে আঁকা মধুবালাকে দেখে মুগ্ধ হত স্কুলপড়ুয়া মেয়েরাও
পর্ব ১৮। পানশালায় তখন ‘কহি দূর যব’ বেজে উঠলে কান্নায় ভেঙে পড়ত পেঁচো মাতাল
পর্ব ১৭। গানই ভেঙেছিল দেশজোড়া সিনেমাহলের সীমান্ত
পর্ব ১৬। পুলিশের কাছেও ‘আইকনিক’ ছিল গব্বরের ডায়লগ
পর্ব ১৫। ‘শোলে’-র চোরডাকাতরা এল কোথা থেকে?
পর্ব ১৪। ‘শোলে’-তে কি ভারত আরও আদিম হয়ে উঠল না?
পর্ব ১৩। ‘জঞ্জির’ দেখে ছেলেটা ঠিক করেছিল, প্রতিশোধ নেবে
পর্ব ১২। ‘মেরে পাস মা হ্যায়?’-এর রহস্যটা কী?
পর্ব ১১। ইন্দ্রজাল কমিকস-এর গ্রামীণ নায়ক বাহাদুর পাল্পে এসে রংচঙে হল
পর্ব ১০। দু’টাকা পঁচিশের টিকিটে জমে হিরোইনের অজানা ফ্যানের স্মৃতি
পর্ব ৯। খান্না সিনেমায় নাকি পৌরাণিক সিনেমা চলছে
পর্ব ৮। পাড়াতুতো ট্র্যাজেডিতে মিলে গেলেন উত্তমকুমার আর রাজেশ খান্না
পর্ব ৭। পাড়ার রবিদা কেঁদেছিল ‘কাটি পতঙ্গ’ আর ‘দিওয়ার’ দেখে, সাক্ষী ছিল পাড়ার মেয়েরা
পর্ব ৬। যে কলকাতায় পুলিশ-পকেটমার মিলেমিশে গেছে, সেখানে দেব আনন্দ আর নতুন করে কী শিরশিরানি দেবেন?
পর্ব ৫। হিন্দি ছবির পাপ ও একটি অ্যাডাল্ট বাড়ির গল্প
পর্ব ৪। দেব আনন্দ, একটি বোমা ও অন্ধকারে হাত ধরতে চাওয়ারা
পর্ব ৩। অন্ধকারে ঢাকা পড়ল কান্না থেকে নিষিদ্ধ স্বপ্ন!
পর্ব ২। ‘জিনা ইঁয়াহা মরনা ইঁয়াহা’ উত্তর কলকাতার কবিতা হল না কেন?
পর্ব ১। সিনেমা হলে সন্ত্রাস ও জনগণমন-র দলিল
সোমেন চন্দ খুন হয়েছিলেন সংগঠক হিসেবে। সক্রিয়তার মাপকাঠিতে তাঁর কাছে ক্রমাগত পিছিয়ে যাচ্ছিলেন তথাকথিত জাতীয়তাবাদী শক্তি। এবং এটাই যে তাঁকে হত্যা করার কারণ, এতেও আমাদের সন্দেহ নেই। পাশাপাশি এটাও সত্য যে, তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যেসব মেসেজ জনমানসে; বিশেষ করে শিক্ষিত শ্রেণির মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছিল, তার সঙ্গেও মতাদর্শগত বিরোধ কম ছিল না। রাজনৈতিক সংগঠক সোমেন এবং লেখক সোমেন ছিলেন গা জড়াজড়ি করে।
আশ্রমে মেলার মাঠে যুযুৎসু দেখে রানী চন্দ তাঁর অনুভূতির কথা জানিয়েছেন। 'মনে হল যেন আমাদের একটা রুদ্ধ দিক খুলে গেল– যেখানে অজস্র আলো অবাধ হাওয়া। যেখানে দিন নাই রাত্রি নাই– খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে এই যে আমি আছি, ভয় নেই কারুর।'