শ্রী বুঝতেন, কোথাও কিছু গোলমাল। অথচ, ধরতে পারতেন না সেটা। মনে হত, ওই লোকগুলোর কথা বলা দরকার, জানানো দরকার দুনিয়াকে। কিন্তু, কী করে? কলেজে পড়ার সময়ে, খুন হলেন ইন্দিরা গান্ধী। রাতারাতি পাল্টে গেল রাঁচির শান্ত আবহাওয়া। শিখদের মেরে, পুড়িয়ে, ধর্ষণ করে… একটা সম্প্রদায়ের প্রতি রক্তলোলুপ হয়ে, মানুষ শোধ নিল একজনের মৃত্যুর! খোঁজ নিয়ে জানলেন, টিভিতে একজনের বক্তৃতায় দেশ জুড়ে এই লেলিহান। ভিজুয়াল মিডিয়ার বীভৎস প্রভাব দেখে, তরুণ হতবাক!
এখন ঝাড়খণ্ড, তখন অবিভক্ত বিহার। প্রাকৃতিক প্রাচুর্যে পূর্ণ, অথচ দারিদ্র চরম। বড় বড় ইন্ডাস্ট্রি আসে, কিন্তু স্থানীয় মানুষের হেরফের হয় না। ছোট্ট শ্রী প্রকাশ দেখতেন, ঋণের বোঝা ঘাড়ে, গ্রামের গরিবগুরবোরা দিল্লি-বম্বে-কলকাতা যায় কাজ খুঁজতে। গ্রাম-কে-গ্রাম, ফাঁকা। কাজ বলতে? কন্ট্রাকচুয়াল লেবার। ‘তিনমাসিয়া’ (৩ মাসের কাজ) বা ‘চৌমাসিয়া’ (৪ মাসের কাজ)। আর, ধুঁকতে ধুঁকতে ফিরে আসে আরও দেনার দায় নিয়ে।
শ্রী বুঝতেন, কোথাও কিছু গোলমাল। অথচ, ধরতে পারতেন না সেটা। মনে হত, ওই লোকগুলোর কথা বলা দরকার, জানানো দরকার দুনিয়াকে। কিন্তু, কী করে? কলেজে পড়ার সময়ে, খুন হলেন ইন্দিরা গান্ধী। রাতারাতি পাল্টে গেল রাঁচির শান্ত আবহাওয়া। শিখদের মেরে, পুড়িয়ে, ধর্ষণ করে… একটা সম্প্রদায়ের প্রতি রক্তলোলুপ হয়ে, মানুষ শোধ নিল একজনের মৃত্যুর! খোঁজ নিয়ে জানলেন, টিভিতে একজনের বক্তৃতায় দেশ জুড়ে এই লেলিহান। ভিজুয়াল মিডিয়ার বীভৎস প্রভাব দেখে, তরুণ হতবাক!
ভারতে তখন ভিসিআর-এর রমরমা। কলেজ পেরিয়ে, ভিসিআর সারাতে শুরু করলেন শ্রী। দিল্লির সেন্ডিটে (সেন্টার ফর ডেভলপমেন্ট অফ ইনস্ট্রাকশনাল টেকনোলজি) ঢুকলেন। ভিডিও ক্যামেরা জোগাড় করাও খুব মুশকিল তখন। এক বন্ধু খবর দিলেন, বম্বে এয়ারপোর্টে কাজ করেন একজন; তিনি হয়তো কিছু করতে পারেন। মায়ানগরীর অলিগলিতে ঘুরে ঘুরে, একজনের থেকে আরেকজনের কাছে গিয়ে, অবশেষে হাতে এল ভিএইচএস ক্যামেরা। তখনও তাঁর মনে হত, সিনেমা জিনিসটা ‘সর্বজনীন’ নয়।
সেন্ডিটের ওয়ার্কশপ, ঝাড়খণ্ডে। ক্যামেরার পিছনে চুপচাপ দাঁড়িয়েছিলেন শ্রী। ভূমিচ্যুত এক কৃষকের ইন্টারভিউ। কথা বলতে বলতে, বৃদ্ধ কৃষক ভেঙে পড়লেন কান্নায়। এক মুহূর্ত নষ্ট না করে, ডিরেক্টর তাঁকে ক্যামেরায় তাকিয়ে কাঁদতে বললেন। হতভম্ব, শ্রী; প্রচণ্ড রাগ হল তাঁর। এতটুকু সমবেদনা না থাকলে, কেন এরা সিনেমা বানাতে আসে! কেন আসে মানুষের কথা শুনতে! সিদ্ধান্ত নিলেন, নিজের এলাকার কথা সকলকে জানাতে, তিনি সিনেমা বানাবেন তাঁদের মতো হয়ে।
ভিএইচএস-এর টেপ খুব সস্তা। শ্রী-র কাছে ছিল একটা স্কুটার। তাই, কমে গেল যাতায়াত আর টেকনিক্যাল ক্রুয়ের খরচ। নয়ের দশক শুরু। ঝাড়খণ্ডের মুখ তখন ডকুমেন্টারিতে ধরছেন তপন বোস, কে. পি. শশী, আনন্দ পটবর্ধনের মতো মানুষেরা। এঁদের পাশাপাশি, একেবারে নিজের মতো, মাঠে নামলেন শ্রী। কোনও ট্রেনিং নেই; জানেন না ন্যারেটিভ, স্ক্রিপ্ট– এসব কী হয়। চুলোয় যাক! স্ক্রিপ্ট ছাড়াই নেমে পড়লেন, নেতারহাট ফায়ারিং রেঞ্জ মুভমেন্ট নিয়ে। আদিবাসীদের ইন্টারভিউ আর গান নিয়েই, বাঁধলেন ফিল্ম। এক নবিশের বানানো সেই সিনেমা আজও সেখানে প্রিয়। আন্দোলনের বার্ষিকী পালনের রাতে, গত বছরেই, ঘুটঘুটে জঙ্গলের ভেতর ১৫-২০ হাজার আদিবাসী হাঁ করে দেখেছে, হ্যাঁ, ডকুমেন্টারি।
ইউরেনিয়াম খনি নিয়ে ঝামেলা চলছে জাদুগোড়ায়। সেখানে পৌঁছে, শ্রী দেখলেন, জল সাপ্লাইয়ের দীঘিতে মাছ মরে ভাসছে। গ্রামের লোকেরা মহানন্দে টায়ারের ভেলা বানিয়ে, মাছ ধরছে, খাচ্ছে। কেউ কিছু বলছে না; বললেই খেতাব, ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’। বুঝলেন, খুবই চুপিসারে বানাতে হবে ফিল্ম, এবং কোনও সমঝোতা না করে। গ্রামবাসীদের বন্ধু বানালেন তিনি। বাড়ি, ১২৫ কিলোমিটার দূরে। কোনও কিছু ঘটলেই, খবর আসত। বেরিয়ে পড়তেন তিনি, স্কুটার আর ক্যামেরা নিয়ে। অ্যাটমিক এনার্জি অ্যাক্ট অনুসারে, ওই জায়গার ২ কিলোমিটারের মধ্যে থাকতে পারবে না কেউ। কিন্তু, কোথায় যাবে আদিবাসীরা! তারা তো আছে! আর, তাদের সঙ্গেই তাদের বন্ধু, শ্রী।
খনির পাইপ লিক হয়েছে; বর্জ্য পদার্থের ড্রামে ফুটো; জলে মিশছে বিষ; বেঁকে গেছে গাছ; বিকৃত হয়ে গেছে ফুল-ফল; হাতিদের যাতায়াতের পথে আবর্জনার ডাঁই; পশু-পাখি গায়েব সারা অঞ্চলে– গোপনে সব রেকর্ড করতে থাকলেন তিনি; ৩ বছর ধরে। একদিন, জানতে পারল পুলিশ। বন্দুক নিয়ে ঘিরে ফেলল তাঁকে, থানায় নিয়ে গেল। তল্লাশি হল। টেপ পাওয়া গেল না। আগেই সেটা সরিয়ে ফেলেছিলেন শ্রী। পরদিন কাগজে খবর বেরল, পুলিশ কেন এঁকে ছেড়ে দিয়েছে!
আবার গেলেন দিল্লি, সঙ্গে ৩ বছরের টেপ। এক টিভি চ্যানেলের স্টুডিওতে, তাদের কাজ শেষ হলে, সারারাত জেগে, বসলেন এডিটিংয়ে। তৈরি হল ‘বুদ্ধ উইপস ইন জাদুগোড়া’। ভাগ্যক্রমে, রাফ কাট-টা নজরে পড়ল অরুন্ধতী রায়ের। কিছু ফান্ড দিলেন তিনি; বললেন, ‘ইংরেজি সাবটাইটেল করো।’ আনন্দ পটবর্ধন ডেকে পাঠালেন নিজের বাড়ি, বম্বেতে। আনন্দের বাড়িতেই, বসল সাবটাইটেল।
আনন্দ বললেন, ‘জাদুগোড়ায় যাব।’ জামশেদপুরে ঘোষণা হল আনন্দ পটবর্ধনের সিনেমা দেখানো হবে। প্রেস এল। আনন্দ এগিয়ে দিলেন শ্রী-কে। স্ক্রিনিং হল শ্রী-র সিনেমা। এর মাঝেই, কাঠমান্ডুর সাউথ এশিয়ান ফেস্টিভ্যালে অ্যাওয়ার্ড পেল তাঁর ফিল্ম। টোকিও ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ডাক পেলেন তিনি। তখন তাঁর পাসপোর্টও নেই। কলকাতায় এসে, জাপান দূতাবাসে দৌড়োদৌড়ি করে, টোকিও গেলেন। সেখানেও পুরস্কৃত, তাঁর এতদিনের শ্রম।
উত্তরাখণ্ডের দুই যুবক-যুবতী, শালিনী আর রাজেশ। শালিনী সবে-সবে শেষ করেছেন সইদ মির্জার ‘নাসিম’-এ অ্যাসিস্ট্যান্টের কাজ। ‘মায়া মেমসাব’ আর ‘নাইন্টিন ফর্টি টু: এ লাভ স্টোরি’-র ক্যামেরা ইউনিটে রাজেশের কাজও শেষ। ওইসময়ে, শালিনী কোথাও পড়লেন উছলিয়া উপজাতি সম্বন্ধে। কী মনে হল, একটা প্রোজেক্ট প্রোপোজাল পাঠিয়ে দিলেন ফিল্মস ডিভিশনে। আর, কর্তাব্যক্তিদেরও কী মনে হল, প্রোজেক্ট অ্যাপ্রুভ হয়ে গেল।
ব্রিটিশ সরকারের তৈরি ‘ক্রিমিনাল ট্রাইবস অ্যাক্ট ১৮৭১’ অনুসারে, উছলিয়া মানেই মার্কামারা অপরাধী। বিশ শতকের প্রথমদিকেও, উছলিয়াদের অনুমতি ছিল না লোকালয়ে ঢোকার। রাস্তাঘাট, নদী, পুকুর, বাজার– কোথাও যেন ছোঁয়া না লাগে; উচ্চবর্ণের লাথি খাওয়াই তাদের জীবন। শীতকালে, শিশুরা শুয়ে থাকে একফালি ছেঁড়া ন্যাকড়ায়। কাছাকাছি খাটালে, গরু-মোষ পেচ্ছাপ করলে, ধারা এসে ভিজিয়ে দেয় ন্যাকড়াটি। ঘেন্না পেল? আসলে, ওই উষ্ণ ধারাটুকুই, ওই শিশুটির ওম। এ জীবন কাটালে, চোর-ডাকাত হওয়া খুব পাপ?
ফিল্মস ডিভিশন বলল, আগে লোকেশন রেকি চাই। শালিনী আর রাজেশের ব্যাঙ্কে, ৮-১০ হাজার টাকা। বয়স, ২৬-২৭। রওনা দিলেন দু’জন, মহারাষ্ট্র আর কর্ণাটকের সীমান্তে, জঙ্গলের দিকে। রাস্তাঘাটে সকলকে জিজ্ঞাসা করতে থাকলেন, কোথায় থাকে উছলিয়া ডাকুরা। লোকজন ‘বেওকুফ’ ভাবল তাঁদের। মোটামুটি ভদ্রগোছের একটা হোটেলে উঠে, সারাদিন ডাকাত খুঁজে খুঁজে, কেটে গেল ১০-১২ দিন।
রাজেশের মাথাগরম হয়ে গেল একদিন। মাঝরাস্তায় চেঁচামেচি, দু’জনের। রাজেশ বললেন, ‘তোকে ব্ল্যাকলিস্টেড করে দেবে ওরা! প্রোপোজাল লেখার সময় খেয়াল করিসনি, ডাকাত হাতের নাড়ু নয়!’ কেঁদে ফেললেন শালিনী। ঝগড়ার মাঝপথে, অটোয় উঠে পড়লেন তিনি। ওমনি, দ্রুত, রাজেশও। দু’জনের কথা বন্ধ। অটো দাঁড়াল ডিসট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের অফিসে। নিজের পরিচয় দিয়ে, শালিনী ডিএম-কে বললেন, ডাকাত চাই। সমস্যা শুনে, হেসে কুটিপাটি ডিএম, ‘ডাকাত কোথায় পাব, ম্যাডাম? পিডবলুডি-র একটা সস্তা ঘর করিয়ে দিতে পারি…’
হাতের পয়সা প্রায় শেষ। বড়া-পাউ চিবিয়ে, কোনওরকমে দিন গুজরান। সরকারি সস্তা ভাঙাচোরা আস্তানা পেয়ে, আবার দু’জনে লেগে পড়লেন ডাকাত খুঁজতে। এলাকায়, ততদিনে, দু’জনেই বিখ্যাত ‘পাগল’। একদিন, সন্ধের পর, ফেরার পথে, সিগারেট খেতে দাঁড়িয়েছেন রাজেশ। কাঁধে কারও হাত। ঘুরে দেখলেন, দশাসই একজন, মুখ ঢাকা। ভাঙাচোরা হিন্দিতে সে বলল, ‘ডাকু ঢুন্ড রহা হ্যায়?’ ‘জি, হাঁ।’ ‘কিঁউ ঢুন্ড রহা হ্যায়?’
রাজেশ খুলে বললেন ব্যাপারটা। দশাসই বলল, ‘রাত ১টায় এখানে দাঁড়াবি।’ ঘরে ফিরে, শালিনীকে ঘটনাটা জানালেন তিনি। শালিনীর অবস্থা তখন, ‘অব চাহে শর ফুটে ইয়া মাথা…’ শুনশান রাতে দু’জনে পৌঁছলেন নির্দিষ্ট জায়গায়। ঠিক ১টার পর, দু’জনকে দুটো বাইকে নিয়ে গেল তারা, গভীর জঙ্গলে। বাইক থামিয়ে, শুরু জিজ্ঞাসাবাদ, ‘তুলোগ নিউজওয়ালে?’ শালিনীর কাঁচুমাচুপনা দেখে, কী মনে হল, হঠাৎ বলে বসল, ‘আজ থেকে তুই আমার বোন… বানা ফিল্ম, আমি দেব প্রোটেকশন!’
বন্ধুত্ব এমন হল, ‘উছলিয়া ট্রাইব’-এর শুটিংয়ে, ডাকাতরাই রেঁধে খাওয়াত ছাগলের মাংস।
………………………………………………………………..ফ্ল্যাশব্যাক-এর পুরনো পর্ব…………………………………………………………………………
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৮: রাজ কাপুরের স্টুডিওতে ঢুকতে চান? রাধু কর্মকারের নাম বলুন
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৭: যে ছায়ার আলোতে বড় হয়েছেন শ্রীদেবী, রজনীকান্ত, কমল হাসান
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৬: যাদের ১৮ হয়নি, তারা এসব বুঝবে না; আর, যাদের ১৮ হয়েছে, তারা মজা পাবে
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৫: পারিশ্রমিকের কথা না ভেবেই নপুংসকের চরিত্রে কাজ করতে চেয়েছিলেন শাহরুখ খান
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৪: ‘আমি গানের দোকান খুলতে আসিনি’, যশ চোপড়াকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ‘দিল চিজ ক্যা হ্যায়’-এর গীতিকার
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৩: পায়ে বেত মেরে নাচাতে হল অমিতাভ বচ্চনকে
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১২: মেনস্ট্রিম হিরোদের ঘায়েল করেছিল শাকিলার ঢেউ
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১১: লকআপে বসে স্টোরিটেলিংয়ের জোরে পুলিশকে বন্ধু বানিয়েছিলেন রাম গোপাল বর্মা
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১০: ‘টেররিস্ট’ সন্দেহে গ্রেফতার, পরে ‘ভক্ত কবির’-এ অভিনয়ের জন্য ভিড় জমেছিল প্রণামের
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৯: টিপ টিপ বরসা পানি ও বুক ঢিপ ঢিপ নাইন্টিজ
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৮: অমিতাভ বচ্চনকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি যে হোটেলে
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৭: শচীন দেব বর্মনের ‘ভাটিয়ালি’ শুনলেই, হো হো হাসতেন রাহুল আর কিশোর
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৬: বর্ষা এনেছিল দেব আনন্দের ‘গাইড’
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৫: ভারতের প্রথম অভিনেতা যিনি সেক্রেটারি রেখেছিলেন
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৪: ‘আমির খান কে? প্রশ্নটা করুন আপনার পাশের বাড়ির কিশোরীকে।’
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৩: যে কারণে নাসিরউদ্দিনের বেজায় গুসসা হয়েছিল!
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ২: বাতের ব্যথাই ছিল হৃষীকেশের অস্ত্র
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১: অন্তর্বাস ছাড়াই প্রথম শুটিংয়ে ধর্মেন্দ্র, রেগে কাঁই ড্রেসার