হিন্দি ভাষার আগ্রাসন নিয়ে তাই গান বাঁধা হয়, ‘বাংলা ভাষাকে বলছে আঞ্চলিক/হিন্দি রাষ্ট্র মতবাদ গড়ে তুলে,/দরকার হলে আমি খুব প্রাদেশিক/রাষ্ট্র মানি না নিজের ভাষাকে ভুলে,/প্রতিটি ভাষাই জাতীয় ভাষার দাবি/কেউ কারো চেয়ে কম নয় বেশি নয়…’। আবার একই সঙ্গে আশা রাখা হয় এই বলে, ‘আমি চাই নেপালি ছেলেটা গিটার হাতে/ আমি চাই তার ভাষাতেই গাইতে আসবে কলকাতাতে’। আধুনিক ‘কসমোপলিটান’ শহর তাহলে কী? মুম্বই শহরে গিয়ে মারাঠি ভাষায় কথা শুনলে বা বেঙ্গালুরুতে কন্নড়ের সামনে পড়লে বাঙালি ভাবে হিন্দি বা ইংরেজিতে কাজ হবে না কেন?
৩৬.
কলকাতায় ধর্মীয় ও ভাষাভিত্তিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা বিশ শতক জুড়ে ক্রমশ কমেছে। বিভিন্ন পর্বের সেন্সাস রিপোর্ট, কলকাতা মিউনিসিপ্যালিটির ওয়ার্ড ভিত্তিক সমীক্ষা, বা নির্মল কুমার বসু’র ক্যালকাটা ১৯৬৪: এ সোশ্যাল সার্ভে বই থেকে বোঝা যায় শহরের বিভিন্ন অঞ্চলের গত প্রায় শ’ দেড়েক বছরের জনবিন্যাসের চরিত্র। কলকাতায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস গোড়া থেকেই তাঁদের কর্মক্ষেত্রের কাছাকাছি ছিল। ১৯৬১ সালের সেন্সাস রিপোর্ট অনুসারে নির্মল বসুর মত ছিল যে, “more than any ethnic bias, occupational considerations (proximity to workplace and economic status) direct a person to choose a residence. Residential patterns of ethnic minorities in Calcutta are products of the long history of an evolving structure of economic opportunities.” এই বক্তব্য ধরে এগোলে আমরা হয়তো কলকাতা শহরের যে সামাজিক মানচিত্র তৈরি করতে পারি তার সঙ্গে সাধারণ মানুষের মনে যে ধারণা রয়েছে কলকাতার বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এলাকা নিয়ে, তার একটা মিল খুঁজে পাব বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। তবে সেক্ষেত্রেও ঐতিহাসিক প্রক্রিয়াগুলিকে মাথায় রাখা দরকার। বলা বাহুল্য, আঠারো থেকে একুশ শতক অবধি একই ভাবে একই জায়গায় বিভিন্ন জনগোষ্ঠী বসবাস করেনি। তাও এক সাধারণ ধারণা আমাদের সবার মনেই রয়েছে, যা গড়ে উঠেছে দু’ শতাব্দী জুড়ে বিভিন্ন লেখা, ছবি, আখ্যানের মধ্য দিয়ে।
আঠারো শতক থেকেই কলকাতায় ইংরেজ কোম্পানির কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য নানা এলাকার মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেছিলেন। ক্রিশ্চান ইউরোপীয়দের পাশাপাশি আর্মেনীয় বণিক, ইহুদি, পার্সি, বৌদ্ধ বা কনফুসীয় ধর্মাবলম্বী চিনের লোক কলকাতায় কাজের খোঁজে এসেছিলেন। শ্বেতাঙ্গ / দেশীয় এলাকার যে সাধারণ ভাগাভাগি করা হয়ে থাকে ঔপনিবেশিক কলকাতার মানচিত্রে, তার মধ্যে এক ‘ধূসর’ এলাকা বা ‘গ্রে টাউন’-এর কথা বলেন ইতিহাসবিদ প্রদীপ সিংহ। মধ্য কলকাতার এই অঞ্চলগুলিতেই ইংরেজ বাদে অন্যান্য বিদেশি বণিক গোষ্ঠী বা ইউরেশিয়ান মানুষদের বসবাস ছিল। এর পাশাপাশি উপমহাদেশের অন্যান্য প্রদেশ থেকে মানুষের আনাগোনা তো লেগেই ছিলই।
১৮৩৭ সালের পুলিশের এক রিপোর্টে কলকাতায় বসবাসকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের তালিকা বানানো হয়। তাতে উল্লিখিত বর্গগুলি ছিল এ রকম: English, East Indians (Eurasians), Portuguese, French, Chinese, Armenians, Jews, Muhamedddans Upcountry, Muhameddans Bengali, Hindus Upcountry, Hindus Bengali, Mughals, Parsees, Arabs, Maghs (Burmese), Madrassis (South Indians), Indian Christians, Unspecified Lower Orders. এই শেষের বর্গে মোট জনসংখ্যার প্রায় দশ শতাংশ মানুষ ছিলেন; আর বাঙালি হিন্দু ৬৩ শতাংশ। ভাষা, ধর্ম, অঞ্চল মিলিয়ে-মিশিয়ে এই যে বর্গ-বিভাজন এর থেকে একটা ধারণা পাওয়া যায় শহরের ‘কসমোপলিটান’ চরিত্রের। তাই হিন্দু বাঙালির সংখ্যাধিক্য সত্ত্বেও কলকাতা এক মিশ্র সংস্কৃতির শহর হিসেবে গড়ে উঠেছিল গোড়া থেকেই। শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরলে আজও পাওয়া যায় সেই অতীতের রেশ– ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে, বাড়ির নকশায়, জায়গা বা রাস্তার নামে, লোকমুখে ছড়ানো গল্পে। ১৯১১ সালের সেন্সাস রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে, “the cosmopolitan character of Calcutta’s population is emphasized by the fact that no less than 57 different languages have been returned as the mother tongue by its inhabitants.”
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু সম্প্রদায়ের মানুষ আজ আর কলকাতায় নেই বললেই চলে। স্বাধীনতার পর শহরের চরিত্র অনেকটাই বদলে যায়। বেশিরভাগ ইউরোপীয় বা অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের মানুষ কলকাতা ছেড়ে যান। অন্যদিকে, দেশভাগের জন্য পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাঙালি হিন্দু উদ্বাস্তু মানুষ কলকাতায় চলে আসেন। শহরের মুসলমান জনগোষ্ঠীর এক বড় সংখ্যক মানুষও ওপার বাংলায় চলে যান। তবে, এ ছাড়াও বিশ শতকের গোড়া থেকেই কলকাতার স্থানিক বিন্যাসে নানা পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষত কলকাতা ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্টের কাজকর্ম শুরু হওয়ার পর থেকে। সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ বানানোর সময়ে মধ্য কলকাতার বড় এলাকা জুড়ে নানা রদবদল হয়ে যায়। বনেদি হিন্দু পরিবার, গরিব মুসলমান মানুষজন এই অঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হন; নতুন রাস্তার পাশের দামি জমিগুলি কিনে নেন মাড়োয়ারি বিত্তশালী ব্যবসায়ীরা। এর আগে অবধি বড়বাজার অঞ্চলেই মূলত সীমাবদ্ধ ছিলেন তাঁরা। কলকাতা শহরের পুরনো জনগোষ্ঠীগুলির অন্যতম এই সম্প্রদায়। ব্যবসা-বাণিজ্যের সূত্রে প্রভূত ধন-সম্পদের মালিক এই গোষ্ঠী কলকাতা শহরে এক বিশেষ সংস্কৃতি নিয়ে উপস্থিত। সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু বাঙালি ভদ্রলোক শ্রেণি অবশ্য চিরকাল এঁদের থেকে নিজেদের আলাদা হিসেবে দেখতে অভ্যস্ত। ‘বিত্ত’ এবং ‘সংস্কৃতি’র এক অদৃশ্য লড়াই শহরের জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে নানাভাবে ছাপ ফেলেছে। বিশ শতকের শেষ লগ্ন থেকে যখন সল্টলেক অঞ্চলে মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে তখন থেকেই সেই এলাকার বাঙালিদের নানা অভিযোগ, অনুযোগ, হতাশার কথা শোনা যেতে শুরু করে।
পৃথিবী জুড়েই বড় বড় আধুনিক নগরগুলি বিভিন্ন ভাষা, দেশ, সমাজ, ধর্মের মানুষের মিলনক্ষেত্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল উনিশ-বিশ শতকে। ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদের ফসল বলা যেতে পারে এই নগরায়নকে। এশিয়ার অন্যতম বন্দর শহর হিসেবে কলকাতা আঠারো শতক থেকেই নানা ধরনের মানুষের ঠাঁই ছিল। ধীরে ধীরে শহরের চরিত্র বদলেছে, জনবিন্যাসের চরিত্র বদলেছে। বিশ শতকের প্রথমার্ধ জুড়ে বারবার কলকাতায় হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা বেঁধেছে। একদিকে কলকাতা যেমন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে আধুনিক নানা প্রতিষ্ঠান আর চিন্তাভাবনার চর্চাকেন্দ্র ছিল, তেমনই অন্যদিকে ছিল এক মুসলমান-প্রধান প্রদেশে হিন্দু-প্রধান শহর। এই বৈপরীত্য কলকাতা শহরের বুকে নানা সময়ে নানা ছাপ ফেলেছে। আধুনিক বাঙালির মানস জগতে কলকাতার স্থান সর্বোচ্চ। অন্য কোনও শহরের এই প্রভাব বা প্রতিপত্তি নেই। সব আলাপ-আলোচনার, সরাসরি না হলেও, এক অদৃশ্য মাপকাঠি যেন কলকাতাই রয়ে যায়।
আজ কলকাতা কি শুধুই উচ্চবর্ণ বাঙালি হিন্দুর শহর? একদিকে যেমন শোনা যায় যে তরুণ প্রজন্ম আর বাংলা লেখা পড়ে না, বাংলা সিনেমা-সাহিত্য-নাটক নিয়ে মাথা ঘামায় না, অন্যদিকে আবার তেমনই চোখে পড়ে ‘বাঙালি সংস্কৃতি’ নিয়ে আত্মাভিমান। রাজনৈতিক চাপান-উতোর লেগেই থাকে ভাষা নিয়ে, সংস্কৃতি নিয়ে। হিন্দি ভাষার আগ্রাসন নিয়ে তাই গান বাঁধা হয়, ‘বাংলা ভাষাকে বলছে আঞ্চলিক/ হিন্দি রাষ্ট্র মতবাদ গড়ে তুলে,/দরকার হলে আমি খুব প্রাদেশিক/ রাষ্ট্র মানি না নিজের ভাষাকে ভুলে,/ প্রতিটি ভাষাই জাতীয় ভাষার দাবি/কেউ কারো চেয়ে কম নয় বেশি নয়…’। আবার একই সঙ্গে আশা রাখা হয় এই বলে, ‘আমি চাই নেপালি ছেলেটা গিটার হাতে/ আমি চাই তার ভাষাতেই গাইতে আসবে কলকাতাতে’। আধুনিক ‘কসমোপলিটান’ শহর তাহলে কী? মুম্বই শহরে গিয়ে মারাঠি ভাষায় কথা শুনলে বা বেঙ্গালুরুতে কন্নড়ের সামনে পড়লে বাঙালি ভাবে হিন্দি বা ইংরেজিতে কাজ হবে না কেন? কলকাতায় ট্যাক্সি চালক হিন্দি বললে কিন্তু রাগ হয়ে যায়। ব্যঙ্গ করে গানের দল বলে,
‘আমরা পাঞ্জাবীদের প্যাঁইয়া বলি, মাড়োয়ারি মাউরা/তবু নন-কমিউনাল দেয়াল লিখি ক্যালকাটা টু হাওড়া!’
কীরকম শহর আমরা চাই তা কি আর বুঝে উঠতে পারি সবসময়ে? নিজের পরিচিতি বজায় রেখে অন্যকে সঙ্গে নিয়ে কী করে থাকা যায়? আত্ম আর অপরের এই দ্বন্দ্ব চিরকালীন, আর এই টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে বিভিন্ন শহর।
তথ্যসূত্র: Keya Dasgupta, ‘Mapping the Spaces of Minorities: Calcutta through the Last Century’, in Himadri Banerjee, Nilanjana Gupta, Sipra Mukherjee (eds), Calcutta Mosaic: Essays and Interviews on the Minority Communities of Calcutta (2009).
……………………………………………………….
শেষ হল কলিকথা
……………………………………………………….
…কলিকথা–র অন্যান্য পর্ব…
পর্ব ৩৫: মেটিয়াবুরুজের দরবারই কলকাতা শহরে হিন্দুস্তানি সংগীত নিয়ে আগ্রহ তৈরি করেছিল
পর্ব ৩৪: যে ছবির সিরিজ চিনিয়েছিল প্রান্তিক কলকাতার আত্মপরিচয়
পর্ব ৩৩: কলকাতার মাঠ যেভাবে দর্শক চেনায়
পর্ব ৩২: যে কোনও শহরের কথা বলার সময় আমরা কি নিজেদের শহরের কথাই বলি?
পর্ব ৩১: বিদেশি ট্যুরিস্টদের কাছে কলকাতা কি এখনও ‘অভাবের শহর’?
পর্ব ৩০: উপনিবেশে দেশীয় সংস্কৃতির রেশ: কলকাতার ‘জেন্টেলম্যান’দের নানা ক্লাব
পর্ব ২৯: মেসের বাঙালি ছাত্ররা ঝাঁপ দিয়েছিল সরকার-বিরোধী কর্মকাণ্ডে
পর্ব ২৮: কলকাতার রাস্তা নিয়ন্ত্রণ সহজ নয়, দেখিয়ে দিয়েছিল পালকি-বেহারাদের ধর্মঘট
পর্ব ২৭: কোনটা কলকাতা, কোনটা নয়!
পর্ব ২৬: দ্বীপের মতো করেই যেন গড়ে তোলা হয়েছিল কলকাতাকে
পর্ব ২৫: কালো ভিক্টোরিয়া ও থমথমে কলকাতা
পর্ব ২৪: ঘোড়ার কলকাতা: ট্রাম থেকে রেসের মাঠ
পর্ব ২৩: গোলদীঘি গণ আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল হিসেবে জেগে উঠেছিল স্বদেশি সময়ে
পর্ব ২২: স্মৃতিদের এক বিশাল সমাধিক্ষেত্র
পর্ব ২১: কলকাতার কেল্লা এবং ময়দানি মতবিরোধ
পর্ব ২০: সঙের গানে শতবর্ষের পুরনো কলকাতা
পর্ব ১৯: দেশভাগ ও উদ্বাস্তু মানুষদের শিয়ালদা স্টেশন
পর্ব ১৮: কলের গাড়ি ও কলকাতার নিত্যযাত্রীরা
পর্ব ১৭: বাবুদের শহর যেভাবে বদলে গেল আবেগের শহরে
পর্ব ১৬: ঘর-বন্দি হয়েও নাগরিক কলকাতার স্বাদ
পর্ব ১৫: গৃহভৃত্যর বেশিরভাগই ছিলেন পুরুষ, দু’দশকে বদলে যায় পরিস্থিতি
পর্ব ১৪: স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলা সিনেমায় চাকরির ইন্টারভিউয়ের দৃশ্য সেই সময়ের আয়না
পর্ব ১৩: দাঙ্গা ও দেশভাগ বদলে দিয়েছে কলকাতার পাড়া-বেপাড়ার ধারণা
পর্ব ১২: প্রাচীন কলকাতার বোর্ডিং হাউস
পর্ব ১১: সারা বিশ্বে শ্রমিক পাঠানোর ডিপো ছিল এই কলকাতায়
পর্ব ১০: কলকাতার যানবাহনের ভোলবদল ও অবুঝ পথচারী
পর্ব ৯: বৃষ্টি নিয়ে জুয়া খেলা আইন করে বন্ধ করতে হয়েছিল উনিশ শতকের কলকাতায়
পর্ব ৮: ধর্মতলা নয়, ময়দানই ছিল নিউ মার্কেট গড়ে তোলার প্রথম পছন্দ
পর্ব ৭: সেকালের কলকাতায় বাঙালি বড়মানুষের ঠাঁটবাটের নিদর্শন ছিল নিজের নামে বাজার প্রতিষ্ঠা করা
পর্ব ৬: কলকাতার বহিরঙ্গ একুশ শতকের, কিন্তু উনিশ-বিশ শতকের অসহিষ্ণুতা আমরা কি এড়াতে পেরেছি?
পর্ব ৫: কলকাতা শহর পরিকল্পনাহীনভাবে বেড়ে উঠেছে, একথার কোনও বিশেষ ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই
পর্ব ৪: ঔপনিবেশিক নগর পরিকল্পনার বিরুদ্ধ মত প্রকাশ পেয়েছিল যখন প্লেগ ছড়াচ্ছিল কলকাতায়
পর্ব ৩: ঔপনিবেশিক কলকাতায় হোয়াইট টাউন-ব্ল্যাক টাউনের মধ্যে কোনও অলঙ্ঘনীয় সীমানা
পর্ব ২: ‘জল’ যেভাবে ‘জমি’ হল এ কলকাতায়
পর্ব ১: চেনা কলকাতাকে না পাল্টেই বদল সম্ভব, পথ দেখাতে পারে একটি বাতিল রিপোর্ট