এই মুহূর্তে কবি নয় বাংলায় প্লাম্বার বেশি দরকার: শক্তি-রশিদ তক্কো ও রাত্রিকালীন কবিতাভবন
Published by: Robbar Digital
Posted on: March 23, 2025 4:18 pm
Updated: March 23, 2025 6:14 pm
চলভাষ তখন কল্পবিজ্ঞান। রটে গেল শক্তি ও রশিদ নিখোঁজ। দু’জনেই বাড়িতে কিছু না জানিয়েই বেরিয়ে পড়েছেন। শুনেছিলাম সাদাকালো ভারত টিভিতেও নাকি ওঁদের নিরুদ্দেশের খবর নিয়ে চর্চা চলছিল। তাহলে কি নকশালরা এঁদের দু’জনকে কিডন্যাপ করল? এঁদের মুক্তির বিনিময়ে কমরেডদের মুক্তি চান নকশালরা। অবশ্য এসব নিয়ে শক্তির বিশেষ মাথাব্যথা নেই। রশিদেরও। শক্তি উত্তেজিত হয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, এই মুহূর্তে কবি নয় বাংলায় প্লাম্বার বেশি দরকার।
রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
চোখ বুজলেই এক নীল টাইমমেশিন কয়েক আলোকবর্ষ দূরে, সাতের দশকের মাঝামাঝি, আমাকে নিয়ে যায় আদি গঙ্গার পাড়ে– নাকতলার কবিতা ভবনে। বুদ্ধদেব ও প্রতিভা বসুর বাড়ি। এঁদের আলাদা করে পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কবিতা দিয়ে মোড়া কবিতা ভবন। বিশ্বায়ন-পূর্ববর্তী দক্ষিণ কলকাতার হাজারটা বিবর্ণ বাড়ির একটি।
ঘোর নকশাল আমল। দুর্যোগের রাত। ছেঁড়া ঘুড়ি, স্যাঁতলা পাঁচিলের পাশে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাদের অ্যান্টেনায় মুক্তি খুঁজছিল। সাদা-কালো সিনেমায় ঠিক যেমনটি দেখা যায়– তেমন ছাই রঙের সাফারি সুটের মতো পোশাক পরে এক ভদ্রলোক ডাকছেন। ‘বাপ্পা-বুবাই আছেন? সেন্ট্রাল কলকাতা থেকে এক ভদ্রলোক এসেছেন আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে।’ যিনি এসেছেন আমাদের বাড়ির ঠিকানা মনে করার মতো অবস্থায় ছিলেন না (কারণ অনুমেয়)।ট্যাক্সিচালক জানালেন, ওঠার আগে উনি শুধু তিনটি কথা বলেছেন: ‘বাপ্পা-বুবাই, নাকতলা ও বান্টি সিনেমা হল’। কবিতা ভবনই আমার ছেলেবেলা। হঠাৎ লোডশেডিং। মোমবাতির নিভু নিভু শিখায় বড় ফ্রেমের চশমার সেই মানুষটিকে প্রথমবার দেখা। নাম– শক্তি চট্টোপাধ্যায়!
শক্তি চট্টোপাধ্যায়, শিল্পী: দীপঙ্কর ভৌমিক
আমার বাবা দেবাশিস ও মা মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আড্ডা জমে উঠেছে শক্তির। ৩০-৩৫ মিনিট পরেই নিকষ অন্ধকারের বুক চিরে হিন্দি সিনেমার মতো দু’টি পুলিশের জিপ এসে থামল। হিন্দি সিনেমার স্টাইলে এন্ট্রি নিলেন আইপিএস-কবি আয়ান রশিদ খান; যেন হিচককের সিনেমার সেট, নাকতলায় গ্রিক রাজপুত্র। শুরু হল ম্যারাথন। কেউ দৌড়ায়নি সেই নকশাল আমলের লোডশেডিংয়ের ঝড়-বৃষ্টির সন্ধ্যায়। শুধু শব্দেরা। আড্ডা। নিটোল আড্ডা। চলল সারা রাত ধরে। মাঝে টয়লেট ব্রেক। সন্ধে পেরিয়ে রাত, সকাল, দুপুর আবার সন্ধে, রাত– তবু আড্ডা থামেনি কবিতা ভবনে। রাত ৮টা বাজলে বাবা ৮০-এ বাস ধরে চলে যেতেন চাকরি করতে। সাংবাদিক, সাহিত্যিক দেবাশিস সেই সময় কাজ করতেন একটি প্রথম শ্রেণির দৈনিকে। বাড়িতে রয়ে গেলাম মা, আমরা দু’ভাই বাপ্পা ও বুবাই এবং দুই আইকনোক্লাস্ট শক্তি ও আয়ান। এঁরা দুজনেই বিশেষ কিছু খেতেন না। শুধুই পান করতেন। পান করে বোধহয় হয়ে যেতেন বেশ অশান্ত। লেগে যেত তর্ক। তর্কের বিষয় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, কৃত্তিবাস, কবিতা ও অ-কবিতা। এরই মাঝে খবর এল কৃত্তিবাসের আরেক প্রাণপুরুষ দীপক মজুমদার আসতে চান। কিন্তু কোনও কারণে দীপক আটকে পড়েছেন।
শক্তি যাঁদের ‘নর্মাল’ বলতেন, পাড়ার অনেক সাধারণ মানুষ তখন জড়ো হয়েছেন কবিতা ভবনে। দিদানি প্রতিভা বসুর কাছে জানতে চাইছেন নকশাল বা ক্রিমিনাল ধরা পড়ল নাকি? পুলিশের জিপ এই শান্ত পাড়াতে কেন?
দু’দিন হল পুলিশের জিপ ন্যাড়া গলিতে শান্ত ছেলের মতো ঘুমোচ্ছে। মা বলতেন কবি, সাহিত্যিক, ফিল্মমেকার পাগলদের বাড়িতে একজন সুস্থ মানুষ থাকা খুব প্রয়োজন। এই সুস্থ মানুষ জোর করে ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার খাওয়াচ্ছেন শক্তি ও রশিদকে। খাবারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন বাইরে জিপে ঘুমোনো রশিদের পুলিশদের জন্যে। আমাদের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছেন। বাবাকে সাহায্য করছেন অফিস যেতে। আবার সময়ে সময়ে আড্ডায় ফিরছেন। পাশের ঘরে গিয়ে কখনও লিখে ফেলছেন দু’-এক লাইন। চলভাষ তখন কল্পবিজ্ঞান। রটে গেল শক্তি ও রশিদ নিখোঁজ। দু’জনেই বাড়িতে কিছু না জানিয়েই বেরিয়ে পড়েছেন। শুনেছিলাম সাদা-কালো ভারত টিভিতেও নাকি ওঁদের নিরুদ্দেশের খবর নিয়ে চর্চা চলছিল। তাহলে কি নকশালরা এঁদের দু’জনকে কিডন্যাপ করল? এঁদের মুক্তির বিনিময়ে কমরেডদের মুক্তি চান নকশালরা। অবশ্য এসব নিয়ে শক্তির বিশেষ মাথাব্যথা নেই। রশিদেরও। শক্তি উত্তেজিত হয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, এই মুহূর্তে কবি নয় বাংলায় প্লাম্বার বেশি দরকার। এত মানুষ কেন কবিতা লিখবে? এই যে এত কবিতা লেখা হচ্ছে, সেগুলোকে কি আদৌ ‘কবিতা’ বলা যায়? রশিদও পাল্টা যুক্তি দিচ্ছেন। শক্তি বুঝিয়েই চলছেন অ্যাসেম্বলি লাইনে মাস প্রোডিউসড বাংলা কবিতার বিরোধিতা করবেন। এই তর্কের মাঝেই চলছে সোনালি জল পান। মাকে জিজ্ঞেসও করেছিলাম, আমার জলের রং সাদা কেন? আমাকেও দেওয়া হোক সোনালি জল! এই সোনালি জল, থুড়ি এঁরা কতটা পান করলেন এবং ক’টা গেলাস সেদিন বাড়িতে ভেঙেছিল– সে হিসেবে রাখিনি। এটুকুই মনে আছে– যখন কাচের গেলাস শেষ, তখন অ্যালুমিনিয়ামের গেলাসে মা হুইস্কি ঢালছেন। আবার কিছুক্ষণ পরেই আমাদের ব্যাগ গুছিয়ে দিয়ে স্কুলে ছাড়তে বেরিয়ে গেলেন। তখন এই দুই লিজেন্ড নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন, যদিও আমি বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলাম ‘ঘুম’ শব্দটা এদের অভিধানে নেই।
শক্তি– পূর্ণেন্দু পত্রীর রেখায়
চারজন কনস্টেবল বোধহয় বুদ্ধদেব বা প্রতিভা বসু– কারওর লেখাই পড়েননি। দিদানির অপরাধ উনি শক্তি ও রশিদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। দু’জনেই গভীর ঘুমে ডুবে সমান্তরাল ব্রহ্মাণ্ডে পাড়ি দিয়েছেন। তাছাড়া বাংলা কবিতার হাল-হকিকৎ নিয়ে তর্ক ও মারামারি করে দু’জনেই কিঞ্চিৎ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। শক্তি একটিও নিজের কবিতা পাঠ করেননি। কিছু লিখছেন কি না জানতে চাইলে স্মিত হেসে বলেছেন, ‘দেখি, লিখতে পারি কি না।’
স্কুল থেকে ফিরে দেখি, ধবধবে সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরা ভারী মিষ্টি দেখতে, গোলগাল, নাকে-নস্যি-দেওয়া এক ভদ্রলোক আড্ডায় যোগ দিয়েছেন। প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত। এসেছেন নর্থ রোড থেকে তুমুল বৃষ্টি মাথায় নিয়ে। সেই আমলে বর্ষা বলে একটা ব্যাপার ছিল। কলকাতার সঙ্গে প্রতি বছর সময়মতো দেখা করতে আসত মা দুগ্গার মতো। আজ বর্ষা এক ডাইনোসর। মেঘ থেকে নেমে আসে হারিয়ে যাবে বলে। ভাবছিলাম, এঁরা কি আর যাবেন না আমাদের বাড়ি থেকে? উত্তর পাওয়ার আগেই দেখি আস্ত একটা লাল রঙের ডাবল ডেকার বাস আমাদের বাড়ির সামনে লাজুক বেড়ালের মতো দাঁড়িয়ে। পুলিশের জিপে তৃতীয় দিনে সাহেবকাকু উঠে পড়লেন। কখন ঝুপ করে রাত নেমে গেছে টের পাওয়ার আগেই শক্তি লাল বাসের দোতলায় উঠে বসলেন। মধ্য কলকাতা থেকে ভক্ত এসেছেন শক্তিকে বাড়ি পৌঁছে দেবেন। ভক্ত কলকাতা ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির কর্মী ছিলেন।
নাকতলায় হিচককের সেট কলকাতায় আত্মহত্যা করা শীতের মতো হঠাৎ নিভে গেল। বাড়িতে টিভি ছিল না। রেডিও শুনতে ইচ্ছে করেনি। এরা কী নিয়ে আড্ডা বা মারামারি করছিলেন, তা বিন্দুবিসর্গ বোঝার বয়স তখন হয়নি (আজও কি বুঝি?)। তবু এঁদের মনে হয়েছিল গার্সিয়া মার্কেসের চরিত্র। হারানো দেশের জাদুকর। যখনই এই অদ্ভুত কাকুদের জন্য মনকেমন তীব্র হচ্ছিল, তার কয়েক ঘণ্টা পরেই আবার সেই সাদা অ্যাম্বাসাডর গাড়িটি এসে থামল আমাদের বাড়িতে। সদাহাস্যমুখে শক্তি বললেন ‘দেবাশিস চলো, শান্তিনিকেতন যাব। কিঙ্করদার কাছে। ১০ মিনিট দিলাম। অফিস গুলি মারো।’ পলাশ-শিমুলের পথ ধরে শান্তিনিকেতন পৌঁছনো তখনকার দিনে মোটেও সহজ ছিল না। খানাখন্দ, ভাঙা ব্রিজ, কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে টেগোর ল্যান্ডে পৌঁছতে অন্তত ৮-৯ ঘণ্টা লাগত। ফ্রেমটা কল্পনা করুন– গাড়ির পিছনে শক্তি চট্টোপাধ্যায়, দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভাস্কর চক্রবর্তী। সামনে জিপসি সম্রাট আয়ান রশিদ খান। কোথায় থাকবেন, কবে ফিরবেন শান্তিনিকেতন থেকে এবং হঠাৎ কেনই বা যাচ্ছেন– সেসব কিছু না জানিয়েই এবড়ো খেবড়ো রাস্তার পাশে থাকা নির্বান্ধব সোভিয়েত আমলের বাতিস্তম্ভগুলোকে পেছনে ফেলে গাড়ি ছুটল। রাত জেগে চোখের তলায় অভিমানের অন্ধকার জমিয়ে বুক-চিতিয়ে টিকে থাকা স্যাঁতসেতে বাড়িগুলো যেন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করছে: এভাবেও বাঁচা যায়? তা আর যাই হোক টিকে থাকা হতে পারে না। সন্ধে নামার আগে দিদানি মাকে বলেন, ‘মনীষা তুমি ওদের মতো হোয়ো না। সবসময় মাটিতে পা দিয়ে চলবে। ওরা জন্মেছে উড়তে।’ মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট্ট আমি কিন্তু জাদুকর ম্যানড্রেকের দলকে দেখে উড়তে শুরু করেছি।
মীনাক্ষী চট্টোপাধ্যায় ও শক্তি চট্টোপাধ্যায়
তখন বীরভূমের সদর সিউড়ির এসপি ছিলেন রশিদ। বিদেশি পাড়া মোড়েই তার বাংলো ছিল। পাশেই আমার ঠাকুরদা, বীরভূমের বিধানচন্দ্র রায়, ডক্টর চিত্তরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাসাদোপম বাড়ি। ঠাকুরদা রক্ষণশীল ছিলেন। মদ, সিগারেট ছোঁননি জীবনে। তাই সেই ট্রিপে সিউড়ি বাদ পড়ল। থাকল ইলামবাজার জঙ্গলের মাঝে গাড়ি থামিয়ে চুটিয়ে আড্ডা। গাড়ি ঘুরিয়ে দুবরাজপুর আর চিনপাইয়ের মাঝে শক্তির প্রিয় সাতকেন্দুরী গ্রামে যাওয়া। সেখান থেকে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে আলপথ পেরিয়ে ফকিরডাঙায় ফকিরদের বাড়িতে গান শোনা, আড্ডা ও লাঞ্চ। সঙ্গে ছিলিম। আউল-বাউল-ফকিরদের গান সংগ্রহ করে দেবাশিস পাঠাতেন ওঁর মাস্টারমশাই অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তকে। এক আকাশ বিষণ্ণ মেঘ মাথায় নিয়ে ওঁরা শান্তিনিকেতনের আশেপাশে সান্তাল গ্রামে চলে আসতেন কিঙ্করদার সঙ্গে দেখা করতে। মহান ভাস্কর রামকিঙ্কর বেজ। খড়ের ছাউনিতে বসে গভীর রাত অবধি চলত আড্ডা, সঙ্গে দেশি মদ, শালপাতায় মোড়া গরম শুয়োরের মাংস। আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে কাদামাটি হাতে শক্তির প্রিয় ‘কিঙ্করদা’ ক্যানভাসে আঁকছেন, কখনও বা পুতুল নির্মাণ করছেন। ওরা সকলে চলে আসতেন প্রান্তিকে একটি আন্ডার-কনস্ট্রাকশন বাড়ির একতলার ছাদে। মাদুর পেতে তারাদের নিচে চলত নিটোল আড্ডা।
লাল ধুলো-কাদা মেখে ঋত্বিকের অযান্ত্রিকের মতো গাড়িটি যখন কলকাতা পৌঁছল তখনও অন্ধকারে ডুবে আছে কলকাতা। লোডশেডিং। মেজর ফল্ট। তিন দিন হল। এর মধ্যে শক্তি জানতে পারলেন তিনি চাকরি খুইয়েছেন। সংবাদপত্রের কর্তৃপক্ষ শক্তির বসকে (স্বনামধন্য সাহিত্যিক সন্তোষকুমার ঘোষ) ব্ল্যাঙ্ক চেক পাঠিয়েছেন শক্তির জন্য। সন্তোষবাবু তাতে লিখলেন শক্তির চাকরি। চাকরি ফেরত পেয়েছিলেন শক্তি।
বিপ্লবী দলের কমান্ডার
বিপ্লবী দলের কমান্ডার শক্তি চট্টোপাধ্যায় গাড়ি ঘুরিয়ে শান্তিনিকেতন ফিরে যাওয়ার আদেশ দিলেন। অন্ধকারে ডুবে থাকা কলকাতা ছেড়ে তখন গাড়ি আবার শান্তিনিকেতনের পথ ধরল। চোখ বুজে দেখি মহিনের ঘোড়াগুলির অজানা উড়ন্ত বস্তু কোপাই থেকে উড়ে এসে বসল দক্ষিণ কলকাতার এক ন্যাড়া ছাদে। দিনের শেষে বাংলা সমাজের মূল স্রোতে শক্তি এক শক্তিশালী এলিয়েন কবি। সেই কবে থেকে আমি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডাকছি ‘অবনী, বাড়ি আছ?’ কেউ উত্তর দেয়নি। ইএমআই আর এআই-এর যুগে অঙ্কের চাদরে মানুষ কবেই ঘুমিয়ে পড়েছে। বুঝি, অবনী বাড়ি ফিরবে না। কোনও দিনও ফিরবে না এই অন্ধকারে মোড়া কলকাতা শহরে।
আবোল-তাবোল বলতে ঠাকুর অবান্তর আড্ডা, তাস খেলা বুঝিয়েছেন, এ-কালে জন্মালে নিশ্চয়ই স্মার্টফোন, ফেসবুকের উদাহরণ দিতেন
ঠাকুর বলছেন, মানুষকে প্রথমে বুঝতে হবে যে সংসার অত্যন্ত গোলমেলে জায়গা। সংসার হল বিদেশ। সেখানে বিদেশির বেশে ভ্রমে ঘুরে বেড়াচ্ছি। যেন অকারণেই। স্বদেশ হচ্ছে আমার চৈতন্য। আমার আত্মা। সেখানেই আমি স্থিত হতে পারলে আমার শান্তি। তবেই মুক্তি।
গ্রামীণ মহিলাদের ব্যক্তিজীবনের গোপনীয়তা বেআব্রু করার হাতিয়ার হয়ে উঠছে লুকোনো ক্যামেরা। এ ভারি লজ্জার। না, এ লজ্জা কোনও মহিলার নয়, এ লজ্জা বিকৃত পুরুষতান্ত্রিকতার!
ফটোগ্রাফির মস্ত শখ বিপুলদার। মাঝে মাঝেই ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন ছবি তুলতে পত্রপত্রিকার জন্য। নানা বিষয়ে আজগুবি সব ছবি দেখেছি সে ছবি খুব একটা কোথাও প্রকাশ করতেন না। অবাক হয়েছিলাম ওঁর পাবলিক টয়লেটের প্যান ভর্তি বিষ্ঠার ছবি দেখে। অনেক। গা ঘিনঘিন করেনি, বরং মনে হচ্ছিল যেন চমৎকার সব বিমূর্ত চিত্রকলা।