গ্ল্যামার জগতের পিতৃতন্ত্রিক ও পুঁজিবাদী ধরন, নারী এবং প্রান্তিক লিঙ্গ যৌনতার মানুষদের টার্গেট করে, যারা নিয়ম ভেঙে পুরুষ শাসিত কর্মকাণ্ডে কিংবা মূলস্রোতের সমগোত্রীয় হতে চেয়ে, সমান অধিকার, সম্মান এবং মান্যতা দাবি করে। নিজের জীবনের ক্ষতবিক্ষত, ভাঙাচোরা দিক সামলে মেরিলিন মনরোর লড়াই তাই আমার দেখা ঋতুপর্ণ ঘোষের চেয়ে খুব আলাদা নয়। ঋতুপর্ণ আজ নেই, তাই তাঁকে জিজ্ঞেস করতে পারব না মিডিয়া এবং মানুষের স্পেকুলেশন তাঁর জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে। কিন্তু এই ইন্ডাস্ট্রিতে গসিপ এবং ট্রোলের শিকার প্রায় সব নায়িকাই। গত ৩০ বছরে বদলায়নি কিচ্ছুটি। বরং এখন এই গসিপ এবং গণহেনস্তার এক শক্তিশালী মাধ্যম এসে গেছে, সেটা হল সোশ্যাল মিডিয়া। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে মারা যান মেরিলিন এবং আজও তাঁকে নিয়ে গসিপ এবং গুঞ্জন আবহমান।
সবে পার করে এলাম ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যুর ১২ বছর। তাঁর পরিচিত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মানুষজন তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে গিয়ে নানা কথা বললেন, গত বারো বছর ধরেই বলে আসছেন। এই ন্যারেটিভগুলোর একটা প্যাটার্ন আছে। পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের চেয়েও, ব্যক্তি ঋতুপর্ণ ঘোষ সব সময়ে আগ্রহ, কৌতূহলের কেন্দ্রে। বিশেষ করে তাঁর সেক্সুয়ালিটি, যৌন পছন্দ। সেদিক থেকে যেহেতু তিনি মূলধারার নন, অর্থাৎ তাঁর যৌনতা প্রান্তিক, তাই যখন তিনি তথাকথিত পুরুষের (তার অ্যাসাইন্ড জেন্ডার বিহেভিয়ার) খোলস ছেড়ে নিজেকে খুঁজতে গিয়ে নিজের পথ বেছে নিচ্ছেন এবং ‘পুরুষ’ হয়েও ক্রমশ নারী হয়ে ওঠার পথে অগ্রসর হলেন, লোকের অসুবিধে হতে শুরু করল। সিস্ মেল এবং সিস্ ফিমেল-এর প্রেম, সম্পর্ক, বিয়ে পেরিয়ে তাঁর ছবিতেও আসতে শুরু করল প্রান্তিক যৌনতা এবং পরিচালকের লেন্সে ধরা পড়ল নানা জটিল স্তর।
এই নারী হয়ে ওঠাই যেন একটা ‘ভুল চয়েস’, বা একধরনের ‘পাগলামি’, বা এই নারী হয়ে ওঠার বৈজ্ঞানিক পথে নিজের শরীর ও মনের অসুস্থতা ডেকে আনলেন, কাজেরও অবনতি হল– মূলত এটাই এখন তাঁর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কলিগদের ন্যারেটিভ। স্নেহের স্বরে বারবার দুঃখ প্রকাশ করার ছলে ‘গয়না পরা’, ‘মেয়েদের পোশাক পরা’, ‘ওষুধ খাওয়া’, ‘মাথায় ভূত চেপেছে’– এই ধরনের টুকরো টুকরো শব্দ শুনতে পাই। তিনি কী হতে পারেননি, তাই নিয়ে লোকের আফশোস আর দীর্ঘশ্বাস যেন একটা দিকেই ইঙ্গিত করে– এক, তিনি মূলস্রোতের বিপরীতের প্রান্তিক মানুষ হয়েও সেটা নিয়ে সোচ্চার হওয়ার দুঃসাহস কী করে দেখালেন; আর দেখালেন যখন পুরোটা দেখতে পেলাম না কেন! তাই এই নানা স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে আজও এই আইকনের ব্যক্তিগত জীবনের শূন্যস্থান পূরণ করার চেষ্টা প্রাণপণ চলে। প্রত্যেকেই ঋতুপর্ণ ঘোষ স্পেশালিস্ট। কেউ কি তাঁকে সত্যি চিনতে পেরেছে না চেয়েছে! বারো বছর পরও তাঁকে ঘিরে নানা থিওরি, গসিপ, গুঞ্জন, মতামত ভেসে বেড়াচ্ছে।
না, এই লেখা ঋতুপর্ণ ঘোষকে নিয়ে নয়, মেরিলিন মনরোকে নিয়ে। কিংবা সেই সব আইকনদের নিয়ে, মিডিয়া ট্রায়াল, গসিপ-মুখর সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই নিয়ে। এবং লক্ষণীয় গ্ল্যামার জগতের পিতৃতন্ত্র এবং পুঁজিবাদ মেশিনারি, নারী এবং প্রান্তিক লিঙ্গ যৌনতার মানুষদের টার্গেট করে যারা নিয়ম ভেঙে পুরুষ শাসিত কর্মকাণ্ডে কিংবা মূলস্রোতের সমগোত্রীয় হতে চেয়ে, সমান অধিকার, সম্মান এবং মান্যতা দাবি করে। নিজের জীবনের ক্ষতবিক্ষত, ভাঙাচোরা দিক সামলে মেরিলিন মনরোর লড়াই তাই আমার দেখা ঋতুপর্ণ ঘোষের চেয়ে খুব আলাদা নয়।
ঋতুপর্ণ আজ নেই, তাই তাঁকে জিজ্ঞেস করতে পারব না মিডিয়া এবং মানুষের স্পেকুলেশন তাঁর জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে। কিন্তু এই ইন্ডাস্ট্রিতে গসিপ এবং ট্রোলের শিকার প্রায় সব নায়িকাই। গত ৩০ বছরে বদলায়নি কিচ্ছুটি। বরং এখন এই গসিপ এবং গণহেনস্তার এক শক্তিশালী মাধ্যম এসে গেছে, সেটা হল সোশ্যাল মিডিয়া। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে মারা যান মেরিলিন এবং আজও তাঁকে নিয়ে গসিপ এবং গুঞ্জন আবহমান। তিনি অভিনেত্রীদের প্রেমে পড়েছেন এমন সব গুজবও চোখে পড়ে ইন্টারনেট সার্চ করলে! ‘হাউ টু ম্যারি এ মিলিয়নেয়ার’-এর পরিচালক বলেছিলেন, ‘হার হোল এগসিস্টেন্স ওয়াজ এ সার্চ ফর আইডেন্টিটি, হার সেক্সুয়ালিটি ওয়াজ এ লাই’। ক্যানসেল কালচার যতই তাঁকে ‘ডাম্ব ব্লন্ড’, ‘পিন আপ মডেল’ বলে ক্যানসেল করার চেষ্টা করুক না কেন, অভিনয়ে পারফেকশন এবং খ্যাতির শীর্ষ ছোঁয়ার ইচ্ছের জোর, স্বল্প জীবনসীমার মধ্যেই তাঁকে সেই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিল। প্রায় ১০০ বছর পার, এখনও চলছে সেই ‘ক্যানসেল কালচার’।
এবারে একটু অন্য জায়গা থেকে দেখি। বিনোদন সাংবাদিকতার সূত্রে অভিনেত্রীদের সঙ্গে কথা, আলাপ হতেই থাকে। সব কথা লেখা হয় না। লেখা উচিতও না। কখনও বিশ্বাসের জায়গা থেকে তারা অনেক কথাই বলেন, যার সারমর্মে সেই এক লড়াইয়ের কথাই উঠে আসে বারবার। কীভাবে তাদের কাজকে একপাশে সরিয়ে রেখে ব্যক্তিগত জীবন খুঁচিয়ে, বারংবার গসিপের টার্গেট করা হয়। তিন জেনারেশনের তিন নায়িকা। এঁদের কেউই ফিল্ম ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসেননি। পুরুষশাসিত কর্মক্ষেত্রে, নায়ক-প্রধান ইন্ডাস্ট্রিতে এঁরা প্রত্যেকেই নিজের ফিল্মগ্রাফি নিজের চেষ্টায় তৈরি করেছেন। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (প্রথম ছবি মুক্তি ১৯৯২), তার ১৪ বছর পর পাওলি দাম (প্রথম ছবি মুক্তি ২০০৬)। তার ১১ বছর পর, ইশা সাহা (প্রথম ছবি মুক্তি ২০১৭)। প্রায় ৩৩ বছর এঁদের কাজের সময়কাল। এখনও বদলায়নি কিছুই। তাঁদের ফিল্ম কেরিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবন ব্যালেন্স করার সময়ে প্রতি পদে আঙুল তুলেছে মিডিয়া এবং সমাজ।
ঋতুপর্ণা বলছিলেন, ‘সবদিক সামলে কাজ করে যাওয়া খুব শক্ত। একজন নায়িকার জার্নি আসলে খুব ডিফিকাল্ট। আমাদের জীবনটা অনেকটা ইংরেজি হরফের ডাব্লিউ-এর মতো। ক্রমাগত ওঠানামা। যখন প্রথম ছবি মুক্তি পায়, আমার মনে আছে আমাকে নিয়ে লেখা হয়েছিল– কটা চোখ, বাঙালি মেয়েদের মতো দেখতে না, বেশি ফরসা, গলার স্বর তীক্ষ্ণ, বেশি লম্বা, সোনালি চুল– একে দিয়ে নায়িকার রোল কী করে হবে! এই যে সেট বিউটি স্ট্যান্ডার্ড, তার বাইরে গেলে মুশকিল। আমিও নাছোড়বান্দা ছিলাম, কাজ করার জেদ ছিল। একটা-দুটো ছবি হিট হওয়ার পর সিরিয়াসলি নিজেকে সেই মতো গড়েপিটে নিলাম। প্রথম প্রথম কোনও গসিপ বেরলে সেটা এফেক্ট করত। আসলে কষ্টটাই বেশি হত। কেন আমাকে নিয়ে লিখল! মনখারাপ করতাম। কারও সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে খবর বেরলে বাড়িতে একটা প্রভাব পড়ত। বাবা বলতেন, এমন লেখা তো উচিত না, কাজের লক্ষ্যে ঠিক থেকো, এইসব আমাদের পরিবারে অ্যাকসেপ্টেড না! এইসব হলে আবার পড়াশোনাতেই ফিরে যাও! ছেলে-মেয়ে প্রথম থেকে দূরে ছিল বলে তেমন প্রভাবিত হয়নি। এখন বড় হয়েছে, এখন নিজের মাকে নিয়ে খবর পড়লেও মনে হয় না প্রভাবিত হবে।’
বিবাহিত নায়িকাদের ওপর একটা বাড়তি চাপ থাকে সংসার সামলানোর, সে বিষয়েও ঋতুপর্ণা তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করলেন। ‘যে কোনও বিবাহিত সম্পর্কে ওঠানামা থাকেই। তাছাড়া স্পাউস যদি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির না হয়, তার অনেক কিছু বুঝতে বা মেনে নিতে অসুবিধে হবে। আমি যদি সেই জায়গায় নিজেকে বসাই তাহলে আমারও অসুবিধে হবে। আসলে বুঝতে হবে উই ওয়ান্ট টু মেক ইট ওর ব্রেক ইট। বিবাহিত জীবন ঠিক রাখতে গেলে একজনকে যেমন স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে, তেমন অপরদিকের মানুষটাকেও আন্ডারস্ট্যান্ডিং হতে হয়েছে। কিন্তু এইসব সামলে দেয় ভালো কাজ, স্বীকৃতি। ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ বা অন্যান্য মেনস্ট্রিম ছবির পাশাপাশি পুরাতন, অযোগ্য, ‘পারমিতার একদিন’, ‘দহন’, ‘ম্যায় মেরি পত্নী অউর উয়ো’ বা আরও নতুন ভালো কাজের জন্য দর্শক আমাকে মনে রাখবে। আর সেই জোরের ওপর ভর করে কঠিন পরিশ্রম, কলকাতায় কাজ করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে সংসার সামলানো, বম্বেতে কাজ করা, আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত থাকা, এত বেশি ট্রাভেল– সব কিছু করতে পারি। নিজের ক্রাফট সবার আগে, বাকি সব নেগেটিভ আলোচনা ব্যাকসিটে না রাখলে স্যানিটি বজায় রাখা মুশকিল’, বলছিলেন ঋতুপর্ণা।
পাবলিক স্ক্রুটিনি এবং কৌতূহলের ধারা কীভাবে বদলে গিয়েছে– চিহ্নিত করলেন পাওলি দাম। তিনি বলছিলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আসার আগে মানুষের মধ্যে অনেক বেশি কৌতূহল ছিল, এখন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে সবাই সেলেবদের নানা কাজের ও ব্যক্তিগত আপডেট সহজেই পেয়ে যাওয়ার ফলে এই কৌতূহল, জাজমেন্টে পরিণত হয়েছে, তাই গসিপ ম্যাগাজিনের খবরের আগেই ট্রোল করছে। গসিপের পাশাপাশি ট্রোলিং এখন হ্যারাসমেন্টের প্রধান হাতিয়ার। আমরা রেখা সম্পর্কে কৌতূহলি ছিলাম। তাঁর রঙিন জীবন পেরিয়ে কিন্তু তাঁর কাজগুলো যেন তাঁকে অনেক বেশি করে লার্জার দ্যান লাইফ করে তোলে। ডায়না, মেরিলিন মনরো, জুলিয়েট বিনোশে– আমাকে এদের সব কিছু অতিক্রম করে কাজ করে যাওয়ার ইছেশক্তিটা খুব ইন্সপায়ার করে। কেরিয়ারে খুব প্রথমেই বুঝে গিয়েছিলাম যে– যাই হয়ে যাক, কাজই সব কিছুর জবাব। আর নায়িকা হিসেবে কোনও কিছু প্রথম করলে তখন তাঁকে চিহ্নিত করা হয়। ইনহিবিশন নিয়ে অনেক কথা হয়, কিন্তু আমার মনে হয় বাংলায় আমি প্রথম যে সেটা চরিত্রের খাতিরে ভেঙে দেখিয়েছে। উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট নিয়ে, নারীর সমান অধিকার নিয়ে অনেক কথা হয়! সেটা সম্ভব করতে হলে সিস্টেমে অনেক অনেক পরিবর্তন দরকার।’
ইন্ডাস্ট্রিতে নবাগত নায়িকারা সবসময় সফট টার্গেট। তাঁদের নিয়ে কিছু কুরুচিকর লেখা বা তাঁদের স্বীকৃতি না দেওয়া বা তাঁদের দমন করা অনেক সহজ। এই বিষয়ে কথা বলছিলেন অভিনেত্রী ইশা সাহা। তিনি জানান, ‘প্রথমেই ধরে নেওয়া হয় আমরা পাবলিক প্রপার্টি। আর যেহেতু একেবারে নতুন, তাই ম্যালাইন করা যেন বেশি সহজ। তখন আমি একেবারেই নতুন। একটা সিনেমার সেটে। শুট চলছে। একজন সাংবাদিকের ফোন এল, আমাকে এবং এক পরিচালককে নিয়ে একটা খবর শুনলাম। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কথা হারিয়ে ফেলেছিলাম। দূর থেকে আমার কো-স্টার জানতে চাইছে কী হয়েছে, আর আমার চোখ দিয়ে জল পড়ছে! খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন। পরদিন দেখি আমাকে নিয়ে সেই খবর এবং সেটা কেবল আমার ছবি দিয়ে বেরিয়েছে। আর কারও ছবি নেই। কোনওটাই কাম্য নয়, কিন্তু বুঝলাম একে নবাগত, তার ওপর মহিলা, তাই আমিই সফট টার্গেট!
এর কয়েক বছর পর এক ম্যাগাজিনে একাধিক শিল্পীর সঙ্গে নাম জড়িয়ে দুই পাতার বড় কভারেজ, এবং সেখানেও আমার ছবিই বড় করে, বাকিদের ইনসেটে। এটা নিয়ে রিয়্যাক্ট করলে, বলা হয়েছিল– আমি ওভার-রিয়্যাক্ট করছি বা বাড়াবাড়ি করছি। ওরা যা খুশি লিখবে, তুমি কিছু বলতে পারবে না! এখন তো সবটাই সয়ে গিয়েছে। এইসব আর খুব একটা মাথায় নিই না। কাজটা থাকবে, তাই ওটাতেই সব ফোকাস আমার। আর এখন মানুষের স্মৃতি এত ঠুনকো, আজকে এই গসিপ পড়ছে, কালকে অন্যটা পড়বে, পরশু আবার অন্য কারও খবরে মন দেবে। আর আমার কাছে থাকবে আমার কাজ, আর সেটাই উত্তর!’
আমি নিজে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি কীভাবে চোখের সামনে বসে সুপারস্টার নায়ক তাঁর নায়িকাকে নিয়ে মজার ছলে আলতো অপমান করে দিলেন। কিংবা সাংবাদিকদের দেখেছি কী অবলীলায় প্রশ্ন করছেন, আপনার প্রাক্তন বিয়ে করছে, আপনার খারাপ লাগছে না! কিংবা কোনও নায়িকা সম্পর্কে বিশেষ গসিপ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কথায় আছে– যা রটে তার কিছুটা বটে। ওই যে ‘কিছুটা’– এক শিল্পীর বাকি সব কিছু ক্যানসেল করে যখন সংবাদমাধ্যম, ট্যাবলয়েড, সোশ্যাল মিডিয়া কেবলমাত্র ওই ‘কিছুটা’র ওপর ভিত্তি করে আধখ্যাচরা ন্যারেটিভ তৈরি করে, তখন মাঝে মাঝে ভাবি এই ‘কিছুটা’ কী করে এক শিল্পীর একমাত্র আইডেন্টিটি হয়ে উঠল? তার কাজ কী করে নিমেষে ব্যাকসিট নিয়ে তার স্বল্প পোশাক, সে কতটা মেয়েলি বা ‘মিসফিট’, অমুকের সঙ্গে তার সম্পর্ক বা শরীরের আবেদন প্রধান হয়ে উঠল। এবং এতটাই যে মেরিলিন মনরো বা ঋতুপর্ণ ঘোষেরা মারা গেলেও তাদের বাঁচিয়ে রাখে এই সমাজ নিজেদের ভয়ারিস্টিক, ক্যাপিটালিস্ট, মেটেরিয়ালিস্ট ক্ষুধা নিবারণ করবে বলে।