আসলে যে যত বেশি বিখ্যাত, তার সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা তত বেশি। অথচ ভাবুন, কী অসহায় পরিস্থিতি– যারা ডিপফেক বানাচ্ছে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমাদের কাছে নেই।
‘ডিপফেক’ নিয়ে যেটুকু জানতে পেরেছি, খুব বিশদে নয়, তাতেই বুঝতে পেরেছি ব্যাপারটা ভীষণ গোলমেলে ও ভয়ানক। মাত্র ক’দিন আগেই তো রশ্মিকা মন্দানা এবং ক্যাটরিনা কাইফের ডিপফেক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল। দু’জনেই জাতীয় স্তরের অভিনেত্রী। ভিডিও দু’টি ভাইরালও হয়েছিল। আসল ও নকলের এই দূরত্ব, মিলিয়ে দিচ্ছে ডিপফেক। আসলে যে যত বেশি বিখ্যাত, তার সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা তত বেশি। অথচ ভাবুন, কী অসহায় পরিস্থিতি– যারা ডিপফেক বানাচ্ছে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমাদের কাছে নেই।
আরও পড়ুন: ডিপফেক হলে কাউন্টার করবে আমার সোশাল মিডিয়া টিম
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এসে গিয়েছে। একেবারে প্রাথমিক দিক এখন। এই প্রযুক্তির অনেকগুলো খারাপ দিকের মধ্যে ‘ডিপফেক’ অবশ্যই প্রথম সারিতে। আমার মনে হয়, আমরা, যারা অভিনয় পেশাটির সঙ্গে জড়িয়ে, তাদের কাছে ব্যাপারটা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে যে কোনও দিন। জাতীয় স্তরে রশ্মিকা মন্দানা বা ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে এমনটা হয়েছে বলে, আমাদের সঙ্গে হতে পারে না, এ একেবারেই ভুল কথা। মুশকিল হল, এটাকে কী করে আটকানো যাবে, তার কোনও উপায় এখনও পর্যন্ত চোখে পড়েনি। অথচ নিশ্চিতভাবেই এ ঘটনা এদিক-সেদিকে ঘটে চলেছে। ডিপফেক-নির্মাতারা থেমে নেই। অনুরোধ করব, সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্ট যদি এই ধরনের ‘ডিপফেক’-এর ওপর বাড়তি গুরুত্ব দেন।
আরও পড়ুন: অভিনেত্রী ও নারী সুস্মিতা, দুই সত্তাকেই দুশ্চিন্তায় রেখেছে ডিপফেক
এখন ব্যক্তিগত জীবনটাকে উপুড় করে দেওয়া হচ্ছে সোশাল মিডিয়ায়। এটা করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি আমরা। একটু কম ভিডিও বা ছবি দিলে হয়তো এই ‘ডিপফেক’ খানিক হলেও কমতে পারে। আবারও বলছি, ‘হয়তো’। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মুশকিল হল, আমাদের পেশা এ জিনিসটা করতে দেবে না। ব্র্যান্ডিং ছাড়াও অন্য নানা কারণে, সোশাল মিডিয়ায় অ্যাক্টিভ থাকতে হয় আমাদের। তবু, আমি সবসময় চেষ্টা করি ব্যক্তিগত জীবনটা সোশাল মিডিয়ায় না আনতে। অহেতুক জিনিস না পোস্ট করতে। যদিও জানি না এটা ডিপফেকের হাত থেকে বাঁচার কোনও উপায় কি না। কোনও পথ খুঁজে পাইনি বলেই, নিজের তরফ থেকে এমনটা ঠিক করেছি। আমি দাবি করছি না যে, সবাইকেই এমন করতে হবে। এটা আমার নিজস্ব বাঁচার নীতি।
অনেকে বলতেই পারেন, ডিপফেক তৈরি হচ্ছে বলে আমরা সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করব না? একটা অন্যায় হচ্ছে, সেই ভয়ে চুপ করে থাকব? না, চুপ করে থাকার কথা বলছি না আমি, পোস্ট করতেই পারেন, কিন্তু আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় একটা ‘রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন’ তৈরি হওয়া উচিত। যারা ডিপফেক তৈরি করে চলেছে, আইনি পথে তাদের মনে ভয় ধরানোটাও জরুরি। নইলে এ জিনিস হয়ে চলবে। এখন হয়তো কমই হচ্ছে, ক’দিন পরে সবারই হবে।
প্রচ্ছদের ছবি: সোমোশ্রী দাস