আকাশবাণীতে ঋত্বিক ঘটক স্টেশন ডিরেক্টরকে বলেছিলেন, ‘আমি স্বদেশি লোক। সিগারেট নয়, বিড়ি খাই। আপনারা আপনাদের নিয়ম পাল্টান। আর্টিস্টরা বিড়ি খাবে না– এটা হতে পারে না।’
১৪ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে ১৬ জানুয়ারি ২০২৩– ফেসবুক ওয়ালে এই সময় পর্বে বাছাই ৩০টি লেখা নিয়ে এই সংকলন। তবে বিষয় আলোচনা দিয়ে দাঁড়ি টানলে এই গ্রন্থ পর্যালোচনা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এ বইয়ের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ, ফেসবুকের ‘দেয়াল লিখন’-এ যে পাঠক প্রতিক্রিয়া, তার সংযোজন। সাহিত্যকর্মের আঙিনা হিসেবে যতই ফেসবুকের ভূমিকাকে গুরুত্বহীন হিসেবে দেখা হোক, পাঠক-লেখকের সরাসরি সংযোগের উপায় হিসেবে এই মাধ্যমের উপযোগিতাকে অস্বীকারের উপায় নেই।
কৈশোরে ব্রহ্মপুত্র পাড়ের জামালপুরের বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় সঙ্গে ছিল রং-তুলি কাগজ, কাঠের বোর্ড আর তামার পাতের মাথাওয়ালা খানকতক বোর্ড পিন। যখন মায়ের হাতে ট্রাঙ্ক, বিছানা, বাসনকোসনের বোঝা, তখনও তাঁর আশ্রয় ওই রং-তুলি। বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সময় বাড়িতে যেখানে পড়তে বসতেন, তার মুখোমুখি জানলাটি চিরকালের জন্য বন্ধ করে নিজের আঁকা দুটো ছবি সেঁটে দিয়ে যান।
সোমেন চন্দ খুন হয়েছিলেন সংগঠক হিসেবে। সক্রিয়তার মাপকাঠিতে তাঁর কাছে ক্রমাগত পিছিয়ে যাচ্ছিলেন তথাকথিত জাতীয়তাবাদী শক্তি। এবং এটাই যে তাঁকে হত্যা করার কারণ, এতেও আমাদের সন্দেহ নেই। পাশাপাশি এটাও সত্য যে, তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যেসব মেসেজ জনমানসে; বিশেষ করে শিক্ষিত শ্রেণির মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছিল, তার সঙ্গেও মতাদর্শগত বিরোধ কম ছিল না। রাজনৈতিক সংগঠক সোমেন এবং লেখক সোমেন ছিলেন গা জড়াজড়ি করে।
আমরা যারা নিজের কথা, নিজের গৌরবের কথা, অ্যাচিভমেন্টের কথা নিজের মুখে বলতে শিখিনি কোনও দিন, ‘ব্লো ইয়োর ওন ট্রাম্পেট’ শুনে পশ্চিমি দেখনদারি বলে নাক সিঁটকিয়ে হরিশচন্দ্র মিত্র আওড়ে বলেছি– ‘আপনারে বড় বলে বড় সে তো নয়/ লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়’; এই কল্পনাহীন, ফেক স্মার্টওয়ার্ল্ডে তাদের জায়গা নেই।
বাঙালি, একালের বাঙালি, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আশ্চর্যরকম ভাবে কচ্ছপ হয়ে ওঠে। তাকে বলি কচ্ছপের রাজনীতি। খোলার ভেতরে ঢুকে পড়ে, নিজেকে বাঁচানো। খাবো-দাবো রোজগার করব। মাঝে মাঝে টিভিতে কিংবা সমাজমাধ্যমে উত্তেজনার প্রশমন করব। কিছুতেই কিন্তু পথে নেমে নিঃস্বার্থভাবে নৈতিকতার রাজনীতিতে যোগ দেব না।
মেয়েদের রোজই পরে থাকতে হয় বর্ম। নইলে রাস্তাঘাটে অচেনা মানুষের ভিড়ে শুধু নয়– আন্তরিক, চেনা পরিসরেও ঘটে যায় অনভিপ্রেত এমন বহু ঘটনা, যা স্মৃতি থেকে মুছে ফেলা যায় না কিছুতেই।
প্রবীণ কবির রাজনৈতিক ক্ষমতাটিকে সে কিছুতেই সন্দেহ করে না। তাই তার আবর্জনাময় কবিতার পাশেই সকৃতজ্ঞ মন্তব্য ‘কী করে পারেন এমন!’ বা ‘আপনি আমাদের একমাত্র আশ্রয়’– এইসব। যাতে সরকারি সুযোগ-সুবিধা মঞ্চ সভার আলো থেকে সে বঞ্চিত না হয়।
২০২৫ এর আন্তর্জাতিক বুকার প্রাইজ পেলেন বানু মুশতাক। সাড়া পৃথিবী জুড়ে বিক্রি হবে তাঁর ১২টি গল্প নিয়ে এই বই– ‘হার্ট ল্যাম্প’। এই বই প্রকাশিত হয়েই বাজিমাত করেছে। এই প্রথম কোনও ছোটগল্পের বই বুকার পেল।
বাংলা সাহিত্যকে আন্তর্জাতিক পুরস্কারের উপযুক্ত করে তুলতে হলে প্রয়োজন সাহিত্যের কৌশলগত অনুবাদ, আন্তর্জাতিক বইমেলায় অংশগ্রহণ ও বহুভাষিক যোগাযোগের সেতু নির্মাণ। বাংলা এখনও সেখান থেকে অনেক দূরে।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved