পামুকের এই সদ্য প্রকাশিত সুদূর পর্বতমালার স্মৃতি আত্মখনন ও সন্ধানের এক আশ্চর্য নোটবুক। ‘পেঙ্গুইন’ প্রকাশিত এই বইয়ের প্রতিটি পাতায় টার্কিশ ভাষায় পামুকের হাতের লেখায় তাঁর মূল নোটবইটির ছবি। প্রতিটি পাতা ধারণ করছে তাঁর আঁকা একটি রঙিন স্মৃতিপট।
আবার যদি কোনও দিন যাই ক্যালিফোর্নিয়ায়, খুঁজে খুঁজে ঠিক যাব সাহিত্য সৃজনের এই বারাঙ্গনা গৃহে, চুমু খাবো আমার থেকে ঠিক এক বছরের ছোটো ইসাবেলের কপালে, তারপর তাঁর লেখার টেবিলে মাথা রেখে চোখ বুঝব নতুন চেতনার কোলে।
আমার ভাবতে ইচ্ছে করে পিটার হ্যান্ডকে-কে অস্ট্রিয়ান শীতের সন্ধ্যেবেলা। বিকেল চারটে বাজলেই তো কুয়াশা নামে ঘনিয়ে। জুঁইফুলের মতো তুষার নামে বিস্তৃত আবছামির বুক থেকে।
অ্যানের হেল্ড উপন্যাসের ছোট্ট একটা অংশ বাংলায় অনুবাদ করার চেষ্টা করছি। অপচেষ্টাও বলা যায়। এই চেষ্টা কিন্তু আমার অপদার্থকতাকে তিরস্কার! কেন লিখতে পারি না এই কানাডিয়ান কবি-ঔপন্যাসিকের মতো?
ঢাকনাহীন নারীদেহের সৌন্দর্য লুপ্ত হয়েছে মিলানের অজস্র শব্দের তলায়, ডুবে গেছে আটলান্টিস-এর মতো।
যৌবনের পাপের জন্য অনুশোচনায় ভরে যাচ্ছে মন। কিন্তু বুড়ো বয়েসের আর এক পাপ যে করে যাচ্ছি। এলিয়টের ভাষাতেই বরং শিকার করি সেই পাপ। বললাম বটে আমি বৃদ্ধ অনুতপ্ত ঈগল। কিন্তু সত্যি তাই?
খাস ইংরেজ জন ক্লিল্যান্ড নানা বদ খেয়ালের বশে সে ক্রমশ জড়িয়ে পড়ছে ঋণে। এরই মধ্যে সে কিনেছে একটা সস্তার টেবিল। এই টেবিলে সে খায়-দায়। জুয়া খেলে। লেখে।
এই বইয়ে এবং আমার আরও অনেক পরবর্তী লেখায় খোলাখুলি যৌনতা থাকলেও, আমি আমার ভাষা থেকে রুচি, শিক্ষা, সভ্যতা এবং ড্রইংরুম পালিশ কখনও বর্জন করেছি বলে মনে হয় না।
জন ডান শেষ করেন তাঁর প্রেমের কবিতা। পৃথিবীতে এমন প্রেমের কবিতা এই প্রথম লেখা হল। ডানের চোখের জল পড়ে টেবিলটার ওপর।
কেমন সেই টেবিল, কেমন সেই টেবিলের মন, প্রাণ, চেতনা, ভাবনা-স্রোত, যে টেবিলে বসে, তাঁর অক্সফোর্ডের বাড়িতে নীরদচন্দ্র লিখে ফেলেন ‘আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ’, ‘আত্মঘাতী বাঙালী’, ‘বাঙালী জীবনে রমণী’র মতো তিনটি দুর্বার দরবারি গ্রন্থ, যাদের পাতায় পাতায় চমকে ওঠে বিদ্যুৎবাহী মেধা, মৌলিক মনন, আর বাংলা গদ্যের সাবেকি কৌলিন্য, আভিজাত্য, ধ্রুপদী ধৈবত!
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved