কলকাতার স্টুডিওতে, বহিরাগত অহমিয়াদের কী কী সইতে হয়, সে নিয়ে ভূপেন হাজারিকা বানালেন, ‘লটিঘটি’। অহমিয়াতে কাওয়ালি গাইলেন মহম্মদ রফি। ঘটনাচক্রে, কলকাতায় শুটিংয়ে, নানা ঝামেলায় লোকেশন ছেড়ে চলে যেতে হল অহমিয়া শিল্পীদের। বম্বের চাকচিক্য আর ঝুপড়ির বৈপরীত্যে, বাঁধলেন, ‘চিক মিক বিজুলি’। গান গাইলেন কিশোর কুমার আর আশা ভোঁসলে।
নাম: আইদেউ হন্দিকৈ। বয়স: ১৬-১৭। অপরাধ: ‘বোলছবি’-তে কাজ করা। শাস্তি: সমাজচ্যুত, যাবজ্জীবন।
পিতৃপুরুষ-সূত্রে মারোয়াড়ি হলেও, জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা, মনেপ্রাণে অহমিয়া। কবি, নাট্যকার, সংগীতকার, সাংবাদিক, স্বাধীনতা সংগ্রামী, আরও কতরূপ। জ্যোতির সঙ্গে ইউরোপে আলাপ হিমাংশু রাই আর দেবিকা রানির। তিনের দশক শুরু। জ্যোতির হৃদয়ে বুদবুদ, সিনেমা বানাবেন অহমিয়া ভাষায়। শুনে, প্রবল উৎসাহ দিলেন হিমাংশু আর দেবিকা। জার্মানির একটা স্টুডিওতে, কয়েক মাস টেকনিক্যাল ব্যাপার-স্যাপার দেখে, জ্যোতি বুঝলেন, এত সময় নষ্ট করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়; বরং, হাতেকলমেই বানাবেন ফিল্ম।
দেশে ফিরতেই, বিপ্লবের অপরাধে কারাদণ্ড, ১৫ মাস। জেল থেকে বেরিয়ে, হাত দিলেন সিনেমায়। লক্ষ্মীকান্ত বেজবড়ুয়ার নাটক, ‘জয়মতী’-কে খানিক বদলে, স্ক্রিপ্ট। পৌরাণিক কাহিনিতে বুঁদ যখন এ-দেশের লোকজন, তিনি বেছে নিলেন সত্য-নির্ভর ইতিহাস। স্থির করলেন, থিয়েটারের অতিরঞ্জন নয়; ফিল্ম হবে রিয়েলিস্টিক। গহপুরে, পারিবারিক চা-বাগানের কারখানায়, বাঁশ, কাঠ, খড়, তালপাতা, কলাপাতা– এইসব দিয়েই, দেশের প্রথম ওপেন-এয়ার স্টুডিও। নাম, ‘চিত্রবন’। আর, প্রোডাকশন কোম্পানি, ‘চিত্রলেখা মুভিটোন’।
হ্যাঁ, সে অর্থে, খুব উন্নত নয় ‘চিত্রবন’। নবাগত পরিচালক ভাবলেন, নির্বাক হোক ‘জয়মতী’। লাহোরের ফৈজ মহম্মদ বললেন, তাঁর বানানো সাউন্ড সিস্টেমে খুব বেশি বাড়বে না খরচ। অসমের সোঁদা-গন্ধ সিনেমায় আনতে চাইলেন জ্যোতি। পরম্পরায় প্রচলিত লোকশিল্পের জিনিসপত্র দিয়ে, সেট আর কস্টিউম ডিজাইন করলেন নিজেই। রাজপ্রাসাদের দেওয়ালে শোভিত, জাপি; পিতলের তৈরি জোরাই আর বানবোতা। বাসনপত্র, গয়নাগাঁটি, পোশাক-আশাক– সবকিছুতে অসমের নিজস্বতা।
মুশকিল, নাম-ভূমিকার কাস্টিংয়ে। স্থিরসংকল্প তিনি, মহিলা চরিত্রে থাকবেন মহিলাই। এবং, নিষিদ্ধপল্লির রমণী নয়; ভদ্রঘরের মহিলাই চাই, যার আদলে থাকবে অসমের ছোঁয়া।
তিনের দশক, মশাই! অসমের ত্রিসীমানায় সিনেমা বানায়নি কেউ, ভদ্রঘরের অভিনেত্রী দূর! নাটকেও তখন পুরুষরাই, মহিলা-ভূমিকায়। গ্রামে-গ্রামে ঘুরতে থাকলেন জ্যোতি, বিজ্ঞাপন দিলেন। একদিন, আইদেউ হন্দিকৈ-র ছবি দেখে, ডেকে পাঠালেন তাঁকে। জাহাজ দেখাবেন বলে, এক আত্মীয় নিয়ে এলেন তাঁকে। গোলাঘাটের অজগাঁ পানিডিহিঙ্গিয়ার মেয়ে, আইদেউ এসে জড়সড়, ফ্যালফ্যাল! জ্যোতি শান্ত করলেন; বোঝালেন; শেখালেন, কীভাবে তাকাতে হয় ক্যামেরায়, কীভাবে দিতে হয় এক্সপ্রেশন। দিগগজ জ্যোতিপ্রসাদের সঙ্গে কাজ করবে মেয়ে– এ সৌভাগ্যে, পূর্ণ অনুমতি দিলেন আইদেউয়ের বাবা।
দুর্দান্ত অভিনয় করলেন আনকোরা নায়িকা। ছোট একটা চরিত্রে অভিনয় করলেন জ্যোতিও। আঞ্চলিক ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলতে, ফিল্মে নানা লোকনৃত্যের সম্ভার। ল্যান্ডস্কেপে বিস্তীর্ণ ব্রহ্মপুত্র, তিরতিরে পাহাড়ি ঝোরা, নিঃসীম সবুজ গালচে। একটা সুপুরিগাছের মাথা থেকে আরেকটা সুপুরিগাছের মাথায় লাফিয়ে লাফিয়ে গুপ্তচর চরিত্রের অভিনেতা যখন অদৃশ্য হলেন, কল্পনা করুন, সে দৃশ্য একইসঙ্গে কী রোমাঞ্চকর, আর কী সাংঘাতিক স্থানীয় হতে পারে!
ফিল্ম দাঁড়াল ৬,০০০ ফুট! শুটিং শেষে, জ্যোতি দেখলেন, ফৈজের সাউন্ড সিস্টেম পুরো ডুবিয়েছে। সংলাপ ও গান প্রায় অস্পষ্ট। লাহোরে, একটা স্টুডিও ভাড়া নিয়ে, জ্যোতি বসলেন এডিটিংয়ে। প্রায় ৩০ জন অ্যাক্টরের, যাঁদের মধ্যে কিছু মহিলাও, ঠোঁটে কণ্ঠ দিলেন তিনি। ভাবুন, ডাবিং তখনও অজ্ঞাত! কলকাতায় এলেন, কালী ফিল্মসে। ফিনিশিং টাচ দিলেন ফিল্মে। প্রসব হল, প্রথম অহমিয়া সিনেমা। অসমে কখনও সিনেমার ‘সাইলেন্ট যুগ’ ছিল না। আর, এজন্যই অহমিয়া ভাষায়, চলচ্চিত্রের সমার্থক শব্দ, ‘বোলছবি’।
কলকাতায়, রৌনক মহলে, ১৯৩৫-এ প্রিমিয়ার হল ‘জয়মতী’-র। মূল কাহিনিকার লক্ষ্মীকান্ত বেজবড়ুয়ার পাশে, অতিথি কে. এল. সায়গল, পৃথ্বীরাজ কাপুর, পি. সি. বড়ুয়া, দেবকী বোস, ধীরেন গাঙ্গুলি, ফণী মজুমদার। গৌহাটিতে, কুমার ভাস্কর নাট্যমন্দিরে রিলিজ হল ফিল্ম। সে-সময়, সিনেমা হলের সংখ্যা কম থাকায়, তুতোভাই তরুণের সঙ্গে, অসমের অনেক গাঁয়ে-গঞ্জে ঘুরে-ঘুরে, সিনেমা দেখালেন জ্যোতি। তবুও, আখেরে লোকসান।
ওদিকে, গ্রামে ফিরে, কী দেখলেন আইদেউ? একঘরে, তাঁর পরিবারের সবাই। কারণ? অকথ্য অনাচার করেছে এ বাড়ির মেয়ে! সিনেমায় কাজ করেছে! কোথাকার কোন ফিলিম ক্যাম্পে, থেকেছে না-জানি কার কার সঙ্গে! পর্দায় শুনেছে সব্বাই, একটা জোয়ান-মদ্দকে বলেছে ‘বঙহরদেউ’! (মানে, ‘স্বামী’; স্বামী গদাপাণি চরিত্রের অভিনেতাকে সংলাপে সম্বোধন করেছেন জয়মতী-রূপী আইদেউ) বাড়ির লোকজন কান্নাকাটি করলেন, ক্ষমা চাইলেন; গ্রামবাসীরা মাফ করলেন তাঁদের। মার্জনা পেলেন না আইদেউ। ঘরে ঢুকতে পেলেন না তিনি, বাকি জীবন কাটালেন গোয়ালে। যে পুকুরের জল ব্যবহার করলেন, তার আশপাশ ডিঙোল না কেউ। কখনও কেউ এগোল না তাঁকে বিবাহ করতে। আর, এসব ঘটল জ্যোতিপ্রসাদের অজান্তে।
জ্যোতি তখন ব্যস্ত পরের সিনেমা, ‘ইন্দ্রমালতী’ নিয়ে। নিজেরই লেখা প্রেম-কাহিনি। আগের মতোই, এখানেও তিনিই লেখক, ডিরেক্টর, লিরিসিস্ট, কম্পোজার, এডিটর, আর্ট ও কস্টিউম ডিরেক্টর। হরিগাঁওয়ে, তালবাড়িতে আউটডোর, ৭ দিনের। বহু দৃশ্যে, ক্যামেরা ফিক্সড। জায়গা বদলে বদলে, কাজ করলেন অ্যাক্টররা। ইনডোর শুট, কলকাতায়, অরোরা স্টুডিওতে। দিনরাত খাটলেন সকলে। কেউই পারিশ্রমিক নিলেন না।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
বাড়ির লোকজন কান্নাকাটি করলেন, ক্ষমা চাইলেন; গ্রামবাসীরা মাফ করলেন তাঁদের। মার্জনা পেলেন না আইদেউ। ঘরে ঢুকতে পেলেন না তিনি, বাকি জীবন কাটালেন গোয়ালে। যে পুকুরের জল ব্যবহার করলেন, তার আশপাশ ডিঙোল না কেউ। কখনও কেউ এগোল না তাঁকে বিবাহ করতে। আর, এসব ঘটল জ্যোতিপ্রসাদের অজান্তে।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
এবারে হিট– সিনেমা, গানও। মনভিরাম বড়ুয়া, রাসেশ্বরী বড়ুয়া, ফণী শর্মা, সুলতানার মতো প্রতিষ্ঠিতদের পাশে, রাখালের ছোট্ট ভূমিকায়, ১২-১৩ বছরের এক নবাগত বালক। আশ্চর্য! বিজ্ঞাপনে জ্বলজ্বল তাঁরই নাম: ভূপেন হাজারিকা।
অরোরা স্টুডিওতে, ভূপেনের সঙ্গে দেখা, পি. সি. বড়ুয়া ও নিরঞ্জন পালের। বিপ্লবী বিপিন পালের ছেলে, নিরঞ্জন; বম্বে টকিজে স্ক্রিপ্টরাইটার; তাঁরই স্ক্রিপ্টে অভিনয় করে, অশোক কুমার তখন হার্টথ্রব। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়ে, আলাপ পল রবসন ও রবার্ট ফ্ল্যাহার্টির সঙ্গে। ‘নানুক অফ দ্য নর্থ’-এর পরিচালক, রবার্ট তাঁকে বোঝালেন রিয়েলিজম, ট্রুথ, আর পার্সপেক্টিভের নানা আইডিয়া। আর, রবসনের ‘ওল্ড ম্যান রিভার’-কে তিনি বাঁধলেন ‘বিস্তীর্ণ পারোরে…’ (বাংলা, ‘‘বিস্তীর্ণ দু’পারে…’’)। দেশে ফিরে, কলকাতায় ‘বসুশ্রী’-তে দেখলেন ‘পথের পাঁচালী’; সঙ্গে বলরাজ সাহানি। হাঁ হয়ে গেলেন দু’জনে।
পরের বছর, ১৯৫৬-তে, ভূপেন বানালেন ‘এরা বাটর সুর’; যা সম্পূর্ণ নতুন দিক খুলে দিল অহমিয়া জগতে। অভিনয়ে, বলরাজ সাহানি, ফণী শর্মা, বিষ্ণুপ্রসাদ রাভার মতো দিকপালরা। অসমে রিলিজের দিনেই, প্রিমিয়ার হল কলকাতায়। তখনকার প্রথম সারির বাংলা ও ইংরেজি পত্র-পত্রিকায় ছয়লাপ, প্রশংসা। ডেবিউ ফিল্মেই, অডিয়েন্স আর ক্রিটিকদের মন জয় করলেন ভূপেন। এই সিনেমার গান, ‘সাগর সঙ্গমত…’; পরে এল বাংলায়, ‘সাগর সঙ্গমে…’।
গোয়ালপাড়ায়, গৌরীপুরে পি. সি. বড়ুয়ার বাড়িতে, ভূপেনের সঙ্গে দেখা, দেশি ভাষায় রচিত গোয়ালপাড়িয়া লোকগীতির অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী, প্রতিমা বড়ুয়ার। দেশি ভাষা বা গোয়ালপাড়িয়া, অনেকটা বাংলা আর অহমিয়ার মতোই। গানগুলোতে থাকে হাতি ও মাহুতের কাহিনি। শুনে-টুনে, মুগ্ধ ভূপেন বানালেন, ‘মাহুত বন্ধু রে’। গোয়ালপাড়ার গল্প আর প্রতিমার কণ্ঠে, ‘তোমরা গেলে কি আসিবেন মোর মাহুত বন্ধু রে…’ এত ছুঁল জওহরলাল নেহেরুকে, বললেন, ‘আমরা এদিকে গাড়ি আর এরোপ্লেনের ভিড়ে ছুটছি, ওদিকে মাহুতেরা মুছে যাচ্ছে…’
সুপার-ডুপার হিট ‘শকুন্তলা’-র পর, তিনি বানালেন, ‘প্রতিধ্বনি’। বিষয়: অহমিয়া আর বাঙালিদের বিরুদ্ধে খাসি জনজাতির ক্ষোভ। সমতলবাসীদের বিশ্বাস করে না খাসিরা; বলে, ‘ডখার’। এক অহমিয়া বাঁশি-বাদকের প্রেমকাহিনি বুনে, দূরত্ব মুছতে চাইলেন ভূপেন। তপন সিনহা ও প্রেমেন্দ্র মিত্র এলেন মহরতে, ইন্দ্রপুরী স্টুডিও-য়। উদয় শঙ্কর বললেন, “আমার কাছে ‘প্রতিধ্বনি’ এক নতুন দুনিয়া খুলে দিয়েছে।” জনপ্রিয় এ সিনেমা ডাবড হল, খাসি ভাষাতেও।
কলকাতার স্টুডিওতে, বহিরাগত অহমিয়াদের কী কী সইতে হয়, সে নিয়ে বানালেন, ‘লটিঘটি’। অহমিয়াতে কাওয়ালি গাইলেন, মহম্মদ রফি। ঘটনাচক্রে, কলকাতায় শুটিংয়ে, নানা ঝামেলায় লোকেশন ছেড়ে চলে যেতে হল অহমিয়া শিল্পীদের। বম্বের চাকচিক্য আর ঝুপড়ির বৈপরীত্যে, বাঁধলেন, ‘চিক মিক বিজুলি’। গান গাইলেন, কিশোর কুমার আর আশা ভোঁসলে।
অরুণাচল প্রদেশের প্রথম ফিল্ম, তাঁর হাতেই, ‘মেরা ধরম মেরি মা’। যদিও হিন্দি, তবে কাস্ট করলেন প্রধানত ওখানকার আদিবাসীদের। শুট হল নিসি-তে। ফণী শর্মার, ১৯৪৮-এর, ‘সিরাজ’ রিমেক করলেন; একই নামে। লগলাইন: সাবিত্রীর মেয়ে, সীতাকে পালন করছে সিরাজ আর ফতেমা। সিনেমা ছাড়ুন, আজকের দিনে, প্রণম্য শুধু এই লাইনটাই।
গান, ‘এই রাত তোমার আমার…’। সিনেমা, ‘দীপ জ্বেলে যাই’। প্রেমিকা, সুচিত্রা সেন অস্ফুট তাকিয়ে আছেন আবছা যে পুরুষের দিকে– উনিই ডিরেক্টর, অসিত সেন। বাংলার এক ‘মানিক’, সত্যজিৎ; আরেক ‘মানিক’, অসিত। মজার ব্যাপার, বম্বেতে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পাড়ায়, প্রথম যে বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন অসিত, তার নাম, ‘মানিক মোতি’।
নগাঁওতে, অসিতের বাবার এক ক্লায়েন্ট, কাশীপ্রসাদ বিহানি ভাবলেন, ’৪২-এর বিপ্লব নিয়ে একটা ফিল্ম প্রোডিউস করবেন, অহমিয়াতে। দেশ সবে স্বাধীন। দেশপ্রিয় পার্ক আর পরে ‘লাইটহাউস’ সিনেমা হলের কাছে, ফোটোগ্রাফি স্টুডিও চালানো অসিতের ছোটবেলা কেটেছে নগাঁওতেই। অহমিয়া তাঁর দারুণ রপ্ত। এর আগে, ডকুমেন্টারি বানিয়েছেন, গান্ধীজির নোয়াখালি আর পাটনায় আসার ফুটেজ নিয়ে। সোৎসাহে, ২৬ বছরের যুবক, বানালেন ‘বিপ্লবী’। হ্যাঁ, পরবর্তীকালে, বহু জনপ্রিয় বাংলা ও হিন্দি সিনেমার স্রষ্টা, অসিত সেনের ডেবিউ, অহমিয়াতেই।
‘বিপ্লবী’-তে আর ‘সিরাজ’-এ ছিলেন আরেক ‘জয়মতী’, অনুপমা ভট্টাচার্য। তিনি পর্দার ‘জয়মতী’ নন বটে; তবে, অসমের জনপ্রিয় মোবাইল থিয়েটারের প্রথম অভিনেত্রী, অনুপমা মঞ্চ কাঁদাতেন ওই চরিত্রে। উত্তর-পূর্ব ভারতের হিমেল শীত-রাতে, ঠান্ডা জল ঢেলে দেওয়া হত তাঁর গায়ে, অ্যাক্টরের আকুতি রিয়েলিস্টিক করতে। অভিনয় করার অনুমতি পেয়েছিলেন বাড়ি থেকে, একটাই শর্তে: আমিষের ছোঁয়া যেন না লাগে।
শেষে, অল্প ফোড়ন:
…পড়ুন ফ্ল্যাশব্যাক-এর পুরনো পর্ব…
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ২০: যোগ্য নায়ক আর ফান্ড পেলে কমল হাসান শেষ করবেন তাঁর স্বপ্নের কাজ
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৯: ঘুটঘুটে জঙ্গলের ভেতর ১৫-২০ হাজার আদিবাসী হাঁ করে দেখছে, হ্যাঁ, ডকুমেন্টারি
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৮: রাজ কাপুরের স্টুডিওতে ঢুকতে চান? রাধু কর্মকারের নাম বলুন
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৭: যে ছায়ার আলোতে বড় হয়েছেন শ্রীদেবী, রজনীকান্ত, কমল হাসান
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৬: যাদের ১৮ হয়নি, তারা এসব বুঝবে না; আর, যাদের ১৮ হয়েছে, তারা মজা পাবে
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৫: পারিশ্রমিকের কথা না ভেবেই নপুংসকের চরিত্রে কাজ করতে চেয়েছিলেন শাহরুখ খান
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৪: ‘আমি গানের দোকান খুলতে আসিনি’, যশ চোপড়াকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ‘দিল চিজ ক্যা হ্যায়’-এর গীতিকার
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৩: পায়ে বেত মেরে নাচাতে হল অমিতাভ বচ্চনকে
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১২: মেনস্ট্রিম হিরোদের ঘায়েল করেছিল শাকিলার ঢেউ
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১১: লকআপে বসে স্টোরিটেলিংয়ের জোরে পুলিশকে বন্ধু বানিয়েছিলেন রাম গোপাল বর্মা
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১০: ‘টেররিস্ট’ সন্দেহে গ্রেফতার, পরে ‘ভক্ত কবির’-এ অভিনয়ের জন্য ভিড় জমেছিল প্রণামের
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৯: টিপ টিপ বরসা পানি ও বুক ঢিপ ঢিপ নাইন্টিজ
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৮: অমিতাভ বচ্চনকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি যে হোটেলে
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৭: শচীন দেব বর্মনের ‘ভাটিয়ালি’ শুনলেই, হো হো হাসতেন রাহুল আর কিশোর
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৬: বর্ষা এনেছিল দেব আনন্দের ‘গাইড’
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৫: ভারতের প্রথম অভিনেতা যিনি সেক্রেটারি রেখেছিলেন
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৪: ‘আমির খান কে? প্রশ্নটা করুন আপনার পাশের বাড়ির কিশোরীকে।’
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৩: যে কারণে নাসিরউদ্দিনের বেজায় গুসসা হয়েছিল!
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ২: বাতের ব্যথাই ছিল হৃষীকেশের অস্ত্র
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১: অন্তর্বাস ছাড়াই প্রথম শুটিংয়ে ধর্মেন্দ্র, রেগে কাঁই ড্রেসার
কিন্তু কেন আমরা এত হিংস্র হয়ে উঠলাম? কেন তাকে পিটিয়ে মারার আগে খেতে দিলাম? কী জানি, একেক সময় মনে হয়, পথের ধারে যে মাংসর দোকানের সামনে দিয়ে আমরা যাতায়াত করি আর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি, সেখানেও কাটার আগে পাঁঠাকে কাঁঠাল পাতা খেতে দেওয়া হয়।