Robbar

অ্যাংরি ইয়ংম্যান থেকে বিলেতফেরত মাচো নায়ক, বদলাচ্ছিল নব্বইয়ের হিরোরা

Published by: Robbar Digital
  • Posted:October 18, 2024 6:52 pm
  • Updated:December 7, 2024 4:11 pm  

লোকে ভয় পাচ্ছে, বিবেকানন্দ, নেতাজি বা রবীন্দ্রনাথের পাশেই না ঠাঁই করে নেয় দাউদজয়ন্তী! তার মাঝেই রোমান্সের তরি ভাসাচ্ছিল বলিউড। ‘আনজাম’-এ মাধুরী দীক্ষিতের পিছনে লাগা বড়লোকের বখাটে ছেলে সাইকোপ্যাথ শাহরুখকে যারা কিঞ্চিৎ তাচ্ছিল্য করছিল, তারা দেখতে দেখতে শাহরুখ-কাজলে বুঁদ হয়ে গেল কয়েক বছরেই। এই জুটি, এমনকী, বঙ্গীয় বাচনেও, উত্তম-সুচিত্রা, দিলীপকুমার-মধুবালার মতোই পরিচিত কয়েনেজ হয়ে উঠল। হারিয়ে গেল সাতের দশকের সেই অ্যাংরি ইয়ংম্যানরা।

প্রিয়ক মিত্র

হাজি-দের ক্লাসিক মস্তানির যুগ ফুরিয়েছিল, দাউদ ইব্রাহিম ততদিনে ইন্টারন্যাশনাল, ছোটা রাজন গ্যাং বড় হয়ে উঠল, মুম্বই বিস্ফোরণের পর, গোটা দেশ নাম চিনল টাইগার মেমনের। পাড়ায় পাড়ায় পুকুর বোজানো প্রোমোটার রাজ ও তার পোষ্য গুন্ডারা অন্য অনুপ্রেরণা পাচ্ছে। লোকে ভয় পাচ্ছে, বিবেকানন্দ, নেতাজি বা রবীন্দ্রনাথের পাশেই না ঠাঁই করে নেয় দাউদজয়ন্তী! ঢাকার এক নাগরিক কলকাতায় এসে সেখানকার প্রাচীন রেস্তরাঁ হাজি বিরিয়ানির খুব প্রশংসা করায় কলকাতার এক নাগরিক তো বলেইছিলেন, ‘ওই বিরিয়ানি এখন ব্যাকডেটেড, এখন এখানে দাউদ বিরিয়ানি চলে!’ মোদ্দায়, দিব্যা ভারতীর রহস্যজনক মৃত্যু বাদেও, আরও নানা অশনি সংকেত টের পাওয়াল, বম্বের জৌলুসের আড়ালে ছুরি, গোলাবারুদ ও অফুরন্ত অর্থ বা অনর্থর ভাণ্ডার!

দাউদ ইব্রাহিম

এসবের মাঝেই রোমান্সের তরি ভাসাচ্ছিল বলিউড। ‘আনজাম’-এ মাধুরী দীক্ষিতের পিছনে লাগা বড়লোকের বখাটে ছেলে সাইকোপ্যাথ শাহরুখকে যারা কিঞ্চিৎ তাচ্ছিল্য করছিল, তারা দেখতে দেখতে শাহরুখ-কাজলে বুঁদ হয়ে গেল কয়েক বছরেই। এই জুটি, এমনকী, বঙ্গীয় বাচনেও, উত্তম-সুচিত্রা, দিলীপকুমার-মধুবালার মতোই পরিচিত কয়েনেজ হয়ে উঠল। হারিয়ে গেল সাতের দশকের সেই অ্যাংরি ইয়ংম্যানরা। মিঠুন চক্রবর্তী ‘ডিস্কো ডান্সার’-এর পর একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তাঁর অনুপ্রেরণা কোনও বলিউড নায়ক নয়, বরং এলভিস প্রিসলি। সেই ষাট-সত্তরের পাশ্চাত্য এবং প্রাচ্যের নায়ককল্পের মিলনের যে রূপরেখাটা তৈরি হচ্ছিল, তার অভিঘাত কিন্তু ছিল দীর্ঘদিন। যেজন্য শতাব্দীর শেষে লেখা ‘চন্দ্রবিন্দু’-র লিরিকে পোড়া দেশে ছেলের মিঠুন চক্রবর্তী হওয়ার স্বপ্ন-আখ্যান উঠে আসে। কিন্তু তার মাঝেই এল খান জমানা। আমির, শাহরুখ এবং সলমন খানদের হাতে চলে যাচ্ছিল হিন্দি সিনেমার রশি। কিন্তু ’৯২-এর বাবরি মসজিদের ঘটনা যেমন আগামী তিন দশকের রাজনীতির ভিত্তিভূমি তৈরি করেছিল, তেমনই বলিউডের নতুন রোমান্সের জমি তৈরি হল শাহরুখ খানের সঙ্গে কখনও কাজল, কখনও রানি মুখার্জি, কখনও বা জুহি চাওলার জুটির তুমুল জনমোহিনী টানে। অন্যদিকে মীনাক্ষী শেষাদ্রি বা মাধুরী দীক্ষিতরা স্বতন্ত্রভাবেই নিজেদের প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে চলেছিলেন।

‘আনজাম’-এ শাহরুখ খান ও মাধুরী দীক্ষিত

কিন্তু এসবের মধ্য দিয়ে, মোদ্দায়, তৈরি হচ্ছিল এক অন্য ভাষ্য। যেখানে এনআরআই ক্যাবলা অথবা মাচো নায়ক, সমাজ-রাজনীতি বহির্ভূত, মূলত পারিবারিক কাঠামোর মধ্যে থেকে নির্মাণ-বিনির্মাণের খেলা খেলতে থাকা প্রেমিক নায়ক প্রাধান্য পেতে শুরু করল। ভারতীয় সংস্কারের সঙ্গে গোলকায়ন-প্রণীত ‘গ্লোবাল ভিলেজ’-এর নায়িকারা পড়ল ধর্মসংকটে। বিনোদন ও সমাজমন তখন তাদের কাছ থেকে যেমন চায় যৌন আবেদনের ঝিকিমিকি, যেমনভাবে তাদের মুক্ত বাজারের খাড়া করা ‘আধুনিকতা’-র প্রকল্পে খাপ খাওয়াতে চায়, তেমনই বিশ শতকের শেষ দশকে এসে ভারতীয় সংস্কৃতি নামক একটি আধা ঔপনিবেশিক, সিকিভাগ ভিক্টোরীয় আর সিকিভাগ সনাতনী নিরালম্ব বায়ুভূত ধারণা তৈরি করে সেই খোপেও তাদের আঁটতে চায়। সিনেমা ছাড়িয়ে তার ব্যপ্তি কিছুটা বাস্তবেও ছিল বটে। ১৯৯১ সালে সুপারমডেল প্রতিযোগিতা জিতে ‘ভগ’ পত্রিকার প্রচ্ছদে আগুন লাগিয়ে দিলেন তখনও কুড়ি-উত্তীর্ণ না হওয়া ঐশ্বর্য রাই। শিগগিরই তাঁকে দেখা গেল ‘পেপসি’-র বিজ্ঞাপনে। পণ্য হিসেবে পেপসি-কোক বা থামস আপের মতো কৃষ্ণবর্ণ ঠান্ডা পানীয়গুলি ততদিনে মোটামুটি প্রথম বিশ্বের ফুরফুরে বাতাস বহন করে আনছে এ-দেশে। সবে ঠান্ডা লড়াইয়ের লোহার পর্দা (Iron Curtain) উঠেছে, তার আগের দশকে ঘটে গেছে নিকারাগুয়ার সানদিনিস্তা বিপ্লব, কিন্তু নটি আমেরিকার স্বপ্ন একটু একটু করে অনুপ্রবেশ করছে তৃতীয় বিশ্বের যৌবনের চোখে, সিঁধ কাটছে বামপন্থা সম্পর্কে নির্মিত হতাশার বুদবুদের সুযোগ নিয়ে। সেসবের মাঝেই মিস ওয়ার্ল্ড-ও হয়ে উঠছেন ঐশ্বর্য। এর আরও কয়েক বছর পর, ১৯৯৭ সালে, করুণানিধি-এমজিআর দ্বন্দ্ব নিয়ে মণিরত্নমের ছবি ‘ইরুভার’-এ তাঁর সিনে-আত্মপ্রকাশ। সার কথা, ঐশ্বর্যই সেই সময়ে দাঁড়িয়ে সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত, ভারতীয়ত্ব এবং নয়া পশ্চিমি ভাবমূর্তির যোগাযোগ কী করে তৈরি করা যায়।

Watch this 1993 Aishwarya Rai ad that made her famous even before Miss India | Bollywood - Hindustan Times
‘পেপসি’র বিজ্ঞাপনে ঐশ্বর্য রাই

ঘনাদার মতো, বনমালী নস্কর লেনে বসে থাকা গুলবাজ আন্তর্জাতিকতা, বা উত্তর কলকাতার রোয়াক থেকে মার্ক্স, লেনিন, ফুকো, দেরিদা সংক্রান্ত সন্দর্ভ তৈরি করার আন্তর্জাতিকতায় যে মহত্ত্ব, যে ঔদার্য, তার পরিবর্তে, খানিক বাধ্যত ইংরেজি-শিক্ষিত হওয়া, মার্কিন মুলুক সম্পর্কে এতদিনের বিরোধাভাসকে জোর করে কাঁচকলা দেখানো যে বিশ্বায়িত নতুন প্রজন্ম তৈরি হচ্ছিল, পর্দা তাদেরকেই তুলে ধরছিল। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ তৈরি করল কলেজছাত্র নায়ক রাহুল, যে ‘আধুনিক’ ও কিঞ্চিৎ পুরুষালি অঞ্জলিকে প্রত্যাখ্যান করে টিনাকে বেছে নেয়, পরে অঞ্জলি পূর্ণাঙ্গ নারী হয়ে ওঠার যাবতীয় শর্ত মেনে ফিরে এল আবার, টিনার অনুপস্থিতিতে। রাহুল নামটার সঙ্গে শাহরুখের নির্বিকল্প উচ্চারণে ‘নাম তো সুনা হোগা’ নিয়তির মতো জুড়ে গিয়েছিল, ঠিক আগের বছরের ছবি ‘দিল তো পাগল হ্যায়’-এর সূত্রে। এই যে জনপ্রিয় কলেজছাত্র বা ডান্স ট্রুপের হোতা জাতীয় চরিত্র, তা বুকখোলা জামার, দাঁতের ফাঁকে কাঠি ধরার বচ্চনীয় মস্তানিকে একেবারেই প্রতিস্থাপিত করল এক তুলনায় নরমসরম, এফ ফুল দো মালি-র দ্বন্দ্বে ফেঁসে থাকা নায়ক দিয়ে। মুশকিল একটাই, শ্রমিক বা কুলি বা ভিজিল্যান্টে অমিতাভ হতে কসরত করতে হত না পাড়ার ছেলেদের, কিন্তু রাহুল হয়ে ওঠা সহজ হল না খুব একটা। তাই নব্বই জুড়ে পণ্যর বিজ্ঞাপন যেমন খুড়োর কল ঝোলাচ্ছিল উপভোক্তার সামনে, তেমন স্বপ্নের নায়কও দর্শকদের থেকে দূরে চলে যাচ্ছিল একটু একটু করে।

Kuch Kuch Hota Hai made no sense, Shah Rukh's character lacked a spine': When Karan Johar revisited his film | Bollywood - Hindustan Times
কুছ কুছ হোতা হ্যায়

কিন্তু হৃদয় অবাধ্য। সে এত জটিলতার তোয়াক্কা করেনি।  ডাইনোসর, মসজিদ ভাঙা, দাঙ্গা, বিস্ফোরণ, গণেশের দুধ খাওয়া, কানোরিয়া জুটমিলে লকআউট, কম্পিউটার, ইন্টারনেট, শচীন তেন্ডুলকর বা রাহুল দ্রাবিড়ের পাশাপাশি বাঙালি ছেলের ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন চাগিয়ে তোলা একটি নাম– সবকিছুর মধ্যে আবহের মতো বেজে গেছে ‘তুম পাস আয়ে, ইঁউ মুসকুরায়ে’। দর্শক কেঁদেছে, হেসেছে, ভালবেসেছে। ট্র্যাজেডি নয়, পতন নয়, দর্শক শুধু দেখতে চেয়েছে, নায়ক-নায়িকার ভালবাসা শেষত কীভাবে গোলাপে ফোটে। সমষ্টি থেকে ব্যক্তিতে যাওয়ার সময় শুরু হচ্ছিল ক্রমশ, পারমাণবিক আতঙ্কের সঙ্গে সঙ্গে নিউক্লিয়ার পরিবারও তৈরি হয়ে যাচ্ছিল অবলীলায়। কিন্তু সমষ্টি কোথাও না কোথাও ইন্ডিয়ার ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠত তখনও, বা ‘মেরে মেহবুব মেরে সনম’ শুনে ভাসান ডান্সে দুলে উঠত যৌথ দেহপট। কিন্তু সিনেমা আর সমষ্টির কথা বলছিল না বিশেষ। সেখানে ক্রমে কৌম নিচ্ছিল ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের এক নয়া রূপ।

…পড়ুন জনতা সিনেমাহল-এর অন্যান্য পর্ব…

পর্ব ৩৩। বিস্ফোরণ আর বিভেদের নো ম্যানস ল্যান্ডে দাঁড়িয়েছিলেন মহব্বত ম্যান

পর্ব ৩২। অমর চিত্রকথা, চাচা চৌধুরী ও ইরোটিকার পৃথিবীতে এসে পড়ল তরুণ বেপরোয়া নায়কদের দিন

পর্ব ৩১। নব্বইয়ের শুরু থেকে আন্ডারওয়ার্ল্ড ঢাকা পড়ল বলিউডের তাজমহলে

পর্ব ৩০। ফুলন দেবীর বন্দুক ও ‘মির্চ মসালা’-র প্রতিরোধ

পর্ব ৩০। স্কুল থেকে শ্মশান, সর্বত্র শোনা গেছে ‘মোগাম্বো খুশ হুয়া’

পর্ব ২৯। ‘ক‍্যায়ামত’ না আসুক, বিচ্ছেদের যন্ত্রণা ঠিক বুঝেছে এসটিডি বুথ, একা অ্যান্টেনা

 পর্ব ২৮। দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের দিন জনশূন্য কলকাতায় পকেটমারি

 পর্ব ২৭। মাস্টারমশাইরা কি আজও কিচ্ছু না দেখেই থাকবে?

 পর্ব ২৬। ‘হাওয়া হাওয়াই’য়ের আপত্তি জোটেনি কিন্তু ‘উরি উরি বাবা’ নাকি অপসংস্কৃতি

পর্ব ২৫।  চুল কাটলেই মাথার পিছনে জ‍্যোতির মতো বাজবে ‘শান’-এর গান!

পর্ব ২৪। মরণোত্তর উত্তমকুমার হয়ে উঠলেন সি‌রিয়াল কিলার

পর্ব ২৩। স্কুল পালানো ছেলেটা শহিদ হলে টিকিট কাউন্টার, ব্ল‍্যাকাররা তা টের পেত

 পর্ব ২২। ক‍্যাবলা অমল পালেকরের চোস্ত প্রেমিক হয়ে ওঠাও দর্শকেরই জয়

পর্ব ২১। বন্দুকধারী জিনাতকে ছাপিয়ে প্রতিরোধের মুখ হয়ে উঠলেন স্মিতা পাতিল

পর্ব ২০। হকার, হোটেল, হল! যে কলকাতার মন ছিল অনেকটা বড়

পর্ব ১৯। দেওয়ালে সাঁটা পোস্টারে আঁকা মধুবালাকে দেখে মুগ্ধ হত স্কুলপড়ুয়া মেয়েরাও

পর্ব ১৮। পানশালায় তখন ‘কহি দূর যব’ বেজে উঠলে কান্নায় ভেঙে পড়ত পেঁচো মাতাল

পর্ব ১৭। গানই ভেঙেছিল দেশজোড়া সিনেমাহলের সীমান্ত

পর্ব ১৬। পুলিশের কাছেও ‘আইকনিক’ ছিল গব্বরের ডায়লগ

পর্ব ১৫। ‘শোলে’-র চোরডাকাত‍রা এল কোথা থেকে?

পর্ব ১৪। ‘শোলে’-তে কি ভারত আরও আদিম হয়ে উঠল না?

পর্ব ১৩। ‘জঞ্জির’ দেখে ছেলেটা ঠিক করেছিল, প্রতিশোধ নেবে

পর্ব ১২। ‘মেরে পাস মা হ্যায়?’-এর রহস্যটা কী? 

পর্ব ১১। ইন্দ্রজাল কমিকস-এর গ্রামীণ নায়ক বাহাদুর পাল্পে এসে রংচঙে হল

পর্ব ১০। দু’টাকা পঁচিশের টিকিটে জমে হিরোইনের অজানা ফ‍্যানের স্মৃতি

পর্ব ৯। খান্না সিনেমায় নাকি পৌরাণিক সিনেমা চলছে

পর্ব ৮। পাড়াতুতো ট্র্যাজেডিতে মিলে গেলেন উত্তমকুমার আর রাজেশ খান্না

পর্ব ৭। পাড়ার রবিদা কেঁদেছিল ‘কাটি পতঙ্গ’ আর ‘দিওয়ার’ দেখে, সাক্ষী ছিল পাড়ার মেয়েরা

পর্ব ৬। যে কলকাতায় পুলিশ-পকেটমার মিলেমিশে গেছে, সেখানে দেব আনন্দ আর নতুন করে কী শিরশিরানি দেবেন?

পর্ব ৫। হিন্দি ছবির পাপ ও একটি অ্যাডাল্ট বাড়ির গল্প

পর্ব ৪। দেব আনন্দ, একটি বোমা ও অন্ধকারে হাত ধরতে চাওয়ারা

পর্ব ৩। অন্ধকারে ঢাকা পড়ল কান্না থেকে নিষিদ্ধ স্বপ্ন!

পর্ব ২। ‘জিনা ইঁয়াহা মরনা ইঁয়াহা’ উত্তর কলকাতার কবিতা হল না কেন?

পর্ব ‌১। সিনেমা হলে সন্ত্রাস ও জনগণমন-র দলিল