রাষ্ট্রপ্রধানের ভূমিকায় ইয়েল্ৎসিনের পাঁচ বছর কাটতে না কাটতেই দেখা গেল ১৯৯১ সালের আগস্ট মাসে তৎকালীন সোভিয়েত নেতা গর্বাচ্যোভের বিরুদ্ধে কট্টরপন্থীদের অভ্যুত্থান দমন করার উদ্দেশ্যে যে উৎসাহী জননেতাটি ট্যাঙ্কের মাথায় উঠে জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন এবং পরিণামে দেশের ক্ষমতা দখল করেছিলেন, তিনি আর সেই মানুষটি নেই। তখন তিনি অতীতের ছায়া মাত্র।
৫৯.
রাষ্ট্রনেতাদের অসুস্থতা, অসুস্থ রাজনীতি
সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ রাষ্ট্রপ্রধান মিখাইল গর্বাচ্যোভের আগে পর্যন্ত পরপর তিনজন রাষ্ট্রপ্রধান– ব্রেজ্নভ্, আন্দ্রোপভ্ ও চেরনেন্কো অসুস্থ অবস্থাতে রাষ্ট্র পরিচালনা করে গেছেন। এঁদের মধ্যে শেষ দু’জন আবার অসুস্থ থাকাকালেই রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
অবশ্য ব্রেজ্নভ্ ও আন্দ্রোপভের তৎকালীন ব্যক্তিগত চিকিৎসক অকাদেমিশিয়ান যেভ্গিয়েনি চাজভ্ (একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও ছিলেন) ১৯৯২ সালে প্রকাশিত স্মৃতিকথার লিখেছেন যে, পার্টির নেতা ও রাষ্ট্রপ্রধান পদে নির্বাচিত হওয়ার আগেই, ১৯৫৭ সালে ব্রেজনেভ্ প্রথম হৃদরোগে আক্রান্ত হন।
গর্বাচ্যোভের পর যিনি দেশের কর্ণধার হলেন, সেই বরিস ইয়েলৎসিনও তাই। তিনিও বলতে গেলে একরকম অসুস্থ অবস্থাতেই রাষ্ট্রনায়ক নির্বাচিত হন। সোভিয়েতের অন্তিম পর্বের ধারা তিনি অব্যাহত রাখেন।
তবে তফাতটা এই যে, অসুস্থ ইয়েল্ৎসিন কোনও পলিটব্যুরো বা কেন্দ্রীয় কমিটির ভোটে রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হননি– হয়েছিলেন জনসাধারণের ভোটে। দ্বিতীয়ত, মৃত্যুকাল পর্যন্ত রাষ্ট্রের দায়িত্বে তাঁকে থাকতে হয়নি; তার আগেই, বিশেষ কারণে তিনি ‘স্বেচ্ছা অবসর’ গ্রহণ করেন– অনিচ্ছা সত্ত্বেও, একরকম বাধ্য হয়ে।
……………………………..
ক্রেমলিনের চিকিৎসকদের হাতযশে অন্য নেতাদের সঙ্গে ব্রেজনেভও খাড়া রইলেন, হাত নাড়লেন, অন্যদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে জয়ধ্বনিও করলেন। কিন্তু তার পরিণাম? একদিন পরেই তাঁর মৃত্যু হল। যদিও মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা করা হল ১০ নভেম্বর। চেরনেন্কোর বেলাতেও অনেকটা তাই। হাসপাতালে, জন্মদিন উদ্যাপন করলেন, কোনওমতে ফুলের তোড়া হাতে দূরদর্শনের ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন, অভিনন্দনের উত্তরে হাঁপাতে হাঁপাতে দু’-একটা কথা বললেন।
……………………………..
কিন্তু ব্রেজ্নেভ্ ও চেরনেন্কো– দু’জনের ক্ষেত্রেই অন্তিম কালটা হয়েছিল মর্মান্তিক। নভেম্বর বিপ্লব বার্ষিকীর দিন। সোভিয়েত ঐতিহ্য অনুযায়ী রেড স্কোয়ারে লেনিন স্মৃতিসৌধের মাথার ওপর দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র পরিচালক সেদিন জনগণকে নভেম্বর বিপ্লব দিবসের অভিনন্দন জানান। স্মৃতিসৌধের ওপরে ওঠার সামর্থ্য অনেক প্রবীণ ও অসুস্থ নেতারাই থাকার কথা নয়। তাদের ওপরে তোলার জন্য অন্য ব্যবস্থাও থাকত। সেদিন অসুস্থ ব্রেজ্নেভ্কে যথারীতি ওই কনকনে ঠান্ডার মধ্যে ওপরে তোলা হয়েছিল। শরীর গরম রাখার জন্য পায়ের কাছে চুল্লিও রাখা হয়েছিল। ক্রেমলিনের চিকিৎসকদের হাতযশে অন্য নেতাদের সঙ্গে ব্রেজনেভও খাড়া রইলেন, হাত নাড়লেন, অন্যদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে জয়ধ্বনিও করলেন। কিন্তু তার পরিণাম? একদিন পরেই তাঁর মৃত্যু হল। যদিও মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা করা হল ১০ নভেম্বর।
চেরনেন্কোর বেলাতেও অনেকটা তাই। হাসপাতালে, জন্মদিন উদ্যাপন করলেন, কোনওমতে ফুলের তোড়া হাতে দূরদর্শনের ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন, অভিনন্দনের উত্তরে হাঁপাতে হাঁপাতে দু’-একটা কথা বললেন। কিন্তু সাত দিন যেতে-না-যেতেই ইহলীলা সংবরণ করলেন।
রাষ্ট্রপ্রধানের ভূমিকায় ইয়েল্ৎসিনের পাঁচ বছর কাটতে না কাটতেই দেখা গেল ১৯৯১ সালের আগস্ট মাসে তৎকালীন সোভিয়েত নেতা গর্বাচ্যোভের বিরুদ্ধে কট্টরপন্থীদের অভ্যুত্থান দমন করার উদ্দেশ্যে যে উৎসাহী জননেতাটি ট্যাঙ্কের মাথায় উঠে জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন এবং পরিণামে দেশের ক্ষমতা দখল করেছিলেন, তিনি আর সেই মানুষটি নেই। তখন তিনি অতীতের ছায়া মাত্র। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনী প্রচারের সময় তাঁর নাটকীয় কর্মচাঞ্চল্যের যে প্রবল উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল, তারপরেই বিজয়ের প্রাক্কালে তাঁর পতন ও মূর্ছা, রাজনীতির রঙ্গমঞ্চ থেকে কিছুদিনের জন্য অন্তর্ধান। আর তারপর থেকেই তিনি– এই আছেন, এই নেই।
নির্বাচনের বছর খানেক আগেও অবশ্য তাঁকে হৃদ্রোগের আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুকাল হাসপাতালে শয্যাশায়ী থাকতে হয়েছিল। ভোটের কিছু আগে পুরো এক সপ্তাহ তিনি লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন। তাঁর সহযোগীরা অবশ্য কণ্ঠনালির প্রদাহের অজুহাত দেখিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পর মাস চারেকের মাথায়, ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে বিদেশ থেকে শল্য চিকিৎসক আনিয়ে তাঁর হৃদ্যন্ত্রে জটিল অস্ত্রোপচার করতে হল। এছাড়া, অতিরিক্ত মদ্যপানের দরুন যকৃতের কাঠিন্য, মূত্রগ্রন্থি ও অস্ত্রের গোলযোগ, ফুসফুসের দৌর্বল্য, মেরুদণ্ড ও হাঁটুর গোলমাল– এসব রোগ তো তাঁর ছিলই।
তাঁর এককালের প্রতিদ্বন্দ্বী গর্বাচ্যোভ্কে তাই এই সময়ে (১০ জানুয়ারি, ১৯৯৭) বলতে শুনি, আমাদের প্রেসিডেন্ট শারীরিকভাবে কাজ করতে অক্ষম। রাজনৈতিকভাবেও তিনি নামেমাত্র আছেন। মোটকথা আমাদের কোনও প্রেসিডেন্টই নেই। Associated Press Television-এর এক সাক্ষাৎকারে গর্বাচ্যোভ্ বলেন যে, ইয়েলৎসিন তাঁকে ‘সাতের দশকের শেষের দিকের অসুস্থ সোভিয়েত নেতা লেওনিদ ব্রেজ্নেভের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। একই রকম তাঁদের দু’জনেরই হাঁটাচলা, কথা বলারও সেই একই রকম অসুবিধা। দিনে সেই দু’-তিন ঘণ্টা কাজ, যখন কাজের কাজ কিছুই হয় না।’
এদিকে ইয়েল্ৎসিন তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দ্র রুৎস্কোইয়ের পরিচালিত একটি সশস্ত্র বিদ্রোহই প্রতিহত করলেন, ১৯৯৩ সালে দেশের যে-নতুন সংবিধান রচিত হল, সেখানে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদটিই তুলে দেওয়া হল, তাছাড়া প্রেসিডেন্ট অক্ষম হয়ে পড়লে কী ব্যবস্থা হবে তার কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশও সেখানে রইল না। তাই প্রেসিডেন্ট ঠিক কতটা কর্মক্ষম আছেন সে-সম্পর্কে জনসাধারণকে ওয়াকিবহাল করার জন্য কখনও জানাতে হয় তিনি মৎস্য শিকার করছেন, কখনও বা জানাতে হয় তিনি টেনিস খেলছেন, কখনও-বা অন্য আরও কিছু।
……………………………..
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
……………………………..
যতদিন যাচ্ছে, তাঁর চেহারার জৌলুস যত কমছে, সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে পোশাকের চাকচিক্য। সম্প্রতি প্রচারিত হয়েছে টেনিস খেলায় তাঁর কৃতিত্বের কাহিনি। কোনও কোনও পত্রিকায় প্রমাণস্বরূপ প্রকাশিত হয়েছে ক্রীড়ারত প্রেসিডেন্টের ছবি। তিনি নাকি সপ্তাহে দু’-দিন ঘণ্টা দেড়েক করে টেনিস অনুশীলন করেন। মনে করিয়ে দিচ্ছে পাঁচের দশকে সুপরিণত বয়সে মাও জে দং-এর ইয়াংসি নদী সাঁতরে পার হওয়ার সেই কাহিনি। গত ১৭ আগস্টের এক সংবাদে প্রকাশ, তিনি এক ঘণ্টা চল্লিশ মিনিটের টেনিস খেলায় কোনও-এক জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতাকে দু’-সেটে হারিয়েও দিয়েছেন। জনপ্রিয়তা অর্জনের আর-এক কৌতুককর প্রয়াস বটে।
…পড়ুন রুশকথা-র অন্যান্য পর্ব…
পর্ব ৫৭। গুরুগম্ভীর থেকে হাস্যকরের তফাত মাত্র একটি পদক্ষেপের
পর্ব ৫৬। রুশ দেশের অনেক খবরই আজকাল গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ঠাঁই পাওয়া শুরু করেছে
পর্ব ৫৫। মার্কিন দেশে ব্যাঙ্ক ডাকাতি করতে এসেছিল একজন গর্বাচ্যোভের মুখোশ পরে, অন্যজন মাইকেল জ্যাকসনের
পর্ব ৫৪। হাজার হাজার কৌতূহলী জনতার সঙ্গে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম সেই মহাদৃশ্য
পর্ব ৫৩। নাম বদলের গোলকধাঁধায় অসঙ্গতি বেড়েছে, ঐতিহ্যকে রক্ষা করা যায়নি
পর্ব ৫২। মস্কোর আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের মিছিলে ভারতের পতাকা থাকবে না-ই বা কেন?
পর্ব ৫১। পত্র-পত্রিকায় ঘোষণা করা হল কাস্ত্রো আসছেন, তবে ইনি মেক্সিকোর সোপ অপেরা স্টার
পর্ব ৫০। খোলা হাওয়ায় মানুষের আর কোনও কিছু নিয়েই চিন্তা নেই, অন্ন চিন্তা ছাড়া
পর্ব ৪৯। সোভিয়েত-মুক্ত রাশিয়াকে কে রক্ষা করবে?
পর্ব ৪৮। বর্ষশেষে মানুষ পেল দারিদ্র, এখন লোকে ধার-দেনা করে চা-কফি খাওয়া শুরু করেছে
পর্ব ৪৭। মুক্ত দিনে ব্যালের দেশ রাশিয়ায় ‘আধুনিক ব্যালে’ শেখাতে আসছে ক্যালিফোর্নিয়ার ট্রুপ
পর্ব ৪৬। অক্টোবর বিপ্লবের উচ্ছ্বাস কোনও দেশে কমলে, অন্য দেশে বাড়তে থাকে
পর্ব ৪৫। ‘অক্টোবর বিপ্লব দিবস’ আর পালিত হবে না, পালিত হবে বড়দিন– চোখের সামনে বদলে যাচ্ছিল সোভিয়েত
পর্ব ৪৪। রাজনীতিতে অদূরদর্শিতার ফল যে কত সুদূরপ্রসারী, তার প্রমাণ আফগানিস্তান
পর্ব ৪৩। জানলা দিয়ে পূর্ব জার্মানি দেখতে দেখতে গর্বাচ্যোভ বলেছিলেন, তাহলে এখানেই শেষ!
পর্ব ৪২। পেরেস্ত্রৈকা শুরু হলে বুঝেছিলাম ‘প্রগতি’ ‘রাদুগা’– এসব কিছুই থাকবে না
পর্ব ৪১। কল্পনা যোশীর তুলনায় ইলা মিত্রকে অনেক বেশি মাটির কাছাকাছি বলে মনে হয়েছে
পর্ব ৪০। বেসরকারিকরণের শুরু দিকে রাস্তাঘাটে ছিনতাই বেড়ে গেছিল, কারণ সব লেনদেন নগদে হত
পর্ব ৩৯। হাওয়া বদলের আঁচ অনেকেই আগে টের পেয়েছিল, বদলে ফেলেছিল জীবনযাত্রা
পর্ব ৩৮। শুধু বিদেশে থাকার জন্য উচ্চশিক্ষা লাভ করেও ছোটখাটো কাজ করে কাটিয়ে দিয়েছেন বহু ভারতীয়
পর্ব ৩৭। একটা বিদেশি সাবানের বিনিময়েও নাকি মস্কোয় নারীসঙ্গ উপভোগ করা যায়– এমনটা প্রচার করেছে ভারতীয়রা
পর্ব ৩৬। মস্কোর ঠান্ডায় লঙ্কা গাছ দেখে পি.সি. সরকার বলেছিলেন, ‘এর চেয়ে বড় ম্যাজিক হয় নাকি?’
পর্ব ৩৫। রুশদের কাছে ভারত ছিল রবীন্দ্রনাথের দেশ, হিমালয়ের দেশ
পর্ব ৩৪। সোভিয়েত শিক্ষায় নতুন মানুষ গড়ে তোলার ব্যাপারে একটা খামতি থেকে গিয়েছিল
পর্ব ৩৩। দিব্যি ছিলাম হাসপাতালে
পর্ব ৩২। মস্কোর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে সাধারণ ডাক্তাররা অধিকাংশই মহিলা ছিলেন
পর্ব ৩১। আমার স্ত্রী ও দুই কন্যা নিজভূমে পরবাসী হয়ে গিয়েছিল শুধু আমার জন্য
পর্ব ৩০। শান্তিদা কান্ত রায়ের প্রিয় কাজ ছিল মস্কোয় ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের কমিউনিজম পড়ানো
পর্ব ২৯। পেরেস্ত্রৈকার শুরু থেকেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিলেন গোপেনদা
পর্ব ২৮। দেশে ফেরার সময় সুরার ছবি সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাননি গোপেনদা
পর্ব ২৭। বিপ্লবের ভাঙা হাট ও একজন ভগ্নহৃদয় বিপ্লবী
পর্ব ২৬। ননী ভৌমিকের মস্কোর জীবনযাত্রা যেন দস্তইয়েভস্কির কোনও উপন্যাস
পর্ব ২৫। ননীদা বলেছিলেন, ডাল চচ্চড়ি না খেলে ‘ধুলোমাটি’র মতো উপন্যাস লেখা যায় না
পর্ব ২৪। মস্কোয় শেষের বছর দশেক ননীদা ছিলেন একেবারে নিঃসঙ্গ
পর্ব ২৩। শেষমেশ মস্কো রওনা দিলাম একটি মাত্র সুটকেস সম্বল করে
পর্ব ২২। ‘প্রগতি’-তে বইপুথি নির্বাচনের ব্যাপারে আমার সঙ্গে প্রায়ই খিটিমিটি বেধে যেত
পর্ব ২১। সোভিয়েতে অনুবাদকরা যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করত, সে দেশের কম মানুষই তা পারত
পর্ব ২০। প্রগতি-র বাংলা বিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে ননীদাই শেষ কথা ছিলেন
পর্ব ১৯। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় নাকি খুব ভালো রুশভাষা জানতেন, প্রমথনাথ বিশী সাক্ষী
পর্ব ১৮। লেডি রাণু মুখার্জিকে বাড়ি গিয়ে রুশ ভাষা শেখানোর দায়িত্ব পড়েছিল আমার ওপর
পর্ব ১৭। একদিন হঠাৎ সুভাষদা আমাদের বাড়ি এসে উপস্থিত ফয়েজ আহমেদ ফয়েজকে নিয়ে
পর্ব ১৬। মুখের সেই পরিচিত হাসিটা না থাকলে কীসের সুভাষ মুখোপাধ্যায়!
পর্ব ১৫। রুশ ভাষা থেকেই সকলে অনুবাদ করতেন, এটা মিথ
পর্ব ১৪। মস্কোয় ননীদাকে দেখে মনে হয়েছিল কোনও বিদেশি, ভারতীয় নয়
পর্ব ১৩। যিনি কিংবদন্তি লেখক হতে পারতেন, তিনি হয়ে গেলেন কিংবদন্তি অনুবাদক
পর্ব ১২। ‘প্রগতি’ ও ‘রাদুগা’র অধঃপতনের বীজ কি গঠনপ্রকৃতির মধ্যেই নিহিত ছিল?
পর্ব ১১। সমর সেনকে দিয়ে কি রুশ কাব্যসংকলন অনুবাদ করানো যেত না?
পর্ব ১০। সমর সেনের মহুয়ার দেশ থেকে সোভিয়েত দেশে যাত্রা
পর্ব ৯। মস্কোয় অনুবাদচর্চার যখন রমরমা, ঠিক তখনই ঘটে গেল আকস্মিক অঘটন
পর্ব ৮: একজন কথা রেখেছিলেন, কিন্তু অনেকেই রাখেননি
পর্ব ৭: লেনিনকে তাঁর নিজের দেশের অনেকে ‘জার্মান চর’ বলেও অভিহিত করত
পর্ব ৬: যে-পতাকা বিজয়গর্বে রাইখস্টাগের মাথায় উড়েছিল, তা আজ ক্রেমলিনের মাথা থেকে নামানো হবে
পর্ব ৫: কোনটা বিপ্লব, কোনটা অভ্যুত্থান– দেশের মানুষ আজও তা স্থির করতে পারছে না
পর্ব ৪: আমার সাদা-কালোর স্বপ্নের মধ্যে ছিল সোভিয়েত দেশ
পর্ব ৩: ক্রেমলিনে যে বছর লেনিনের মূর্তি স্থাপিত হয়, সে বছরই ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার সূচনাকাল
পর্ব ২: যে দেশে সূর্য অস্ত যায় না– আজও যায় না
পর্ব ১: এক প্রত্যক্ষদর্শীর চোখে রাশিয়ার খণ্ডচিত্র ও অতীতে উঁকিঝুঁকি
এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কোথাও কাজ করছিল 'পথ' শব্দটা। বিভূতিভূষণেরপথের পাঁচালী উপন্যাস ছিল জীবনের কঠিন লড়াইয়ের মধ্যেও হরিহরের স্বপ্ন দেখা, স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার গল্প। নায়ক-এ অরিন্দম তার জীবনের যে গল্প অদিতিকে বলতে বলতে যাবে, তা-ও তো জীবনের সঙ্গে যুঝতে যুঝতে আর এক স্বপ্ন দেখার গল্প, যেন বা আর এক পথের পাঁচালীই।
জাতি হিসেবে বাঙালি নির্বাক ছিল না কখনও, তার শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির দিকচিহ্নগুলিকে আবারও নতুন করে ফিরে দেখা সম্ভব হবে, বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে। পৃথিবীর তাবৎ সংস্কৃতি গবেষণার চিন্তন-ভূগোলে বাংলা ভাষা এবং বাঙালি সাংস্কৃতিক নতুনতর মাত্রা যোগ করবে– এ দাবি অহেতুক নয়।