অটোর দর্পণে স্ত্রীর এই যে লৌকিক স্বরূপ, তা যেমন বর্ণময় তেমনই সমাজমনের আকরস্বরূপ। তাকে নিয়ে আশা, আশঙ্কা, ভয়, সতর্কতা, সাবধানতা, আগাম জামিনের মতো আগ বাড়িয়ে সচেতন থাকা সংক্রান্ত যেসব অটোলিপি তার মধ্য দিয়ে স্ত্রী সম্পর্কে পুরুষমনের দোদুল্যমান অবস্থা, পৌরুষের বিপন্নতা নাকি দীর্ঘদিনের অবদমিত নারীশক্তির জেগে ওঠাকে সূচিত করছে? নিঃসন্দেহে উভয়েরই ভূমিকা রয়েছে। সেটা নিয়ে সমীক্ষা চালাতেই পারেন যৌথভাবে সমাজতান্ত্রিক ও মনস্তাত্ত্বিকরা।
৪.
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে নানা চালু রসিকতা বাজারে জনপ্রিয়। তা অনেক সময়ই গোলমেলে। স্ত্রীকে অপরাধী করে তোলা হয় কোথাও। কিংবা স্বামীরা স্ত্রী-ভয়ে কাবু– এমনটা দেখানোর একটা চল রয়েছে। আজ শুরু করব, সেই রকমই কিছু অটোলিপি দিয়ে। যাতে দোষারোপের পাল্লাটি স্ত্রীর দিকে ভারী হয়ে থাকে। এই সমস্ত অটোলিপিই আমাদের সামাজিক পুরুষতান্ত্রিক মনোভঙ্গীর প্রতীক। যা লেখক হিসেবে আমি লিপিবদ্ধ করেছি মাত্র।
‘Wife is God’– নির্দ্বিধায় মেনে নিয়েছে কলকাতা, চেন্নাই, দিল্লি ও কটকের অটো বিশেষ। একজন ‘অটোভাই’ (W804 C3279) সংসারে কতটা কোণঠাসা অবস্থায়, তা প্রমাণের তাগিদেই যেন জনতা-যাত্রীর আদালতে উপস্থিত হয়েছেন এমনতরো স্বীকারোক্তির বিজ্ঞপ্তি দিতে!
‘শাদীর পয়লা রাতে বেড়াল মারবার মতোন ধক্ সকলের থাকে না।’ সৌজন্যে: বেলেঘাটা-শিয়ালদহ রুটের অটো (২০০২)। তাই গৃহযুদ্ধ এড়াতে এবং গৃহশান্তি বজায় রাখতে শান্তিপ্রিয় বিশেষত নরম মনের মানুষ বাধ্য হয়ে এই লেখার শুরুতেই বলা অটোবাক্যকে শিরোধার্য করে নেন। তাতেও যে ফুল-প্রুফ শান্তি বিরাজ করবে, তার নিশ্চয়তা নেই। বলছে জয়পুরের (রাজস্থান) অটো: ‘শান্তি কো বিগড় দেতী হ্যায় কৌন? ঘরওয়ালী’।
কোনওরকম সওয়াল-জবাব ছাড়াই রাজধানী (দিল্লি)-র পথ-আদালতে অটোর দেওয়া রায় ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত ও চাঁচাছোলা: ‘If you want Peace, Satisfy your Wife.’ এটা সেই কবেকার, ২০০৫-এর কথা। সম্ভবত এই রায় সম্পর্কে সম্যকভাবে অবহিত ছিল শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটের কাছে দেখা জনৈক অটো। সেইসঙ্গে সাংসারিক জীবনের অভিজ্ঞতা যুক্ত হয়ে মিলিতভাবে জন্ম দিয়েছিল এই অটোবাক্যের: ‘স্ত্রীই স্বামীর চরম বন্ধু’ (২০০৯)! উত্ত ‘চরম’ শব্দটি যেন অক্ষর-বোমা, ব্যজস্তুতিমূলক! তীব্র শ্লেষ কণ্টকিত আর বিরাগজাত। এমন ভাবনার অভিমুখ নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল বাক্যটির নিচে লাল-কালো রেখাচিত্রে আঁকা ব্যঙ্গাত্মক হাসিমুখ।
এসব দেখলে, জানলে যে কোনও সংবেদনশীল মানুষেরই মেজাজ সপ্তমে চড়াটা নেহাতই সময়ের অপেক্ষা। তাই, যৌথ পরিবারের ওপর অকস্মাৎ কোনও ঝড়-ঝাপটা এলে তাকে যথাসময়ে সামাল দেওয়ার জন্য যেমন পরিবারে ভীষ্মসম অভিজ্ঞজনের পরামর্শে এগিয়ে এসে পরিস্থিতির হাল ধরতেন বড়কা; তেমনই শেষোক্ত অর্থোলিপির দরুন ভবিষ্যতে অনভিপ্রেত প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া এড়াতে এগিয়ে এসেছিলেন অধো-সমাজেরই এই ‘কাকা’। উত্তরবঙ্গে আলিপুরদুয়ারের অটোয় লেখা ছিল: ‘স্বামীর আসল বন্ধু স্ত্রীরা’। এক্ষেত্রে বানান ভুলের ব্যাপারটা নিয়ে আশা করা যায় কেউ প্রশ্ন তুলবেন না। কারণ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ওতে সমানাধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত। এরপরেও পাঁড় পারফোরামনিস্ট আছিল তুলতেই পারেন। এক স্বামীর, একাধিক স্ত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব কীরূপে সম্ভব? তাই শুনে পারিষদরাও রে রে করে তেড়ে আসতে পারেন। বলতেই পারেন, কাকা যে এক্কেরে মুঘল হারেম প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন সুকৌশলে। শেষে কি না পলিগ্যামির জয়গান? না, এসব কিছুই নয়। স্ত্রী গৌরবে বহুবচন (পড়ুন বহুজনিত) হয়েছে।
……………………………………………………………………….
জেন্ডার স্টাডি করার পাশাপাশি সংসারে নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলা হয়েছে। এই ক্ষমতা অর্থকরী নয়। সংসারে তার নিজস্ব মতামত পেশ করার পরিসর বৃদ্ধির সঙ্গে তার মান্যতা পাওয়া– এটা যে দাপটের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে নারী, রয়েছে সেই বার্তা। সেই সঙ্গে পুরুষের পৌরুষত্বের নতজানু হওয়া, একচেটিয়া ক্ষমতায়নের খর্ব হওয়ার স্বীকারোক্তি পুরুষেরই বয়ানে– এক অন্যরকমের প্রাপ্তি।
……………………………………………………………………….
রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘হরগৌরীর গান যেমন সমাজের গান, রাধাকৃষ্ণের গান তেমনি সৌন্দর্য্যের গান’ সেখানে, ‘তার গান থেকে খালি বুলেট ছিটকে আসে’! গানের উৎস অর্ধাঙ্গিনীর কণ্ঠ আর লক্ষ্যবস্তু নিজেরই স্বামী– এমন সম্ভাবনা ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। কারণ, আলোকবর্ষ দূরে নয়, আমাদের ধানসিঁড়ির গন্ধ মেখে ঘুরে বেড়ানো ত্রিচক্রযানের পৃষ্ঠে ঘোষিত: ‘Wife Machinegun, Husband Bubblegum’ (জ্যাংড়া)। এখানেও স্বামী-স্ত্রীর ক্ষমতা এবং অবস্থান সূক্ষ্ম বিচারে অটোর ভাষায়, ‘Wife is Superior than Husband’! এক্ষেত্রে ‘than’-এর জায়গায় ‘To’ বসলে নির্ভুল হত। এই ব্যাকরণগত বিচ্যুতিটুকু উপেক্ষা করলে অটোবাক্যটির সমাজ পর্যবেক্ষণ এককথায়, মাল্টি লেয়ারড।
জেন্ডার স্টাডি করার পাশাপাশি সংসারে নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলা হয়েছে। এই ক্ষমতা অর্থকরী নয়। সংসারে তার নিজস্ব মতামত পেশ করার পরিসর বৃদ্ধির সঙ্গে তার মান্যতা পাওয়া– এটা যে দাপটের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে নারী, রয়েছে সেই বার্তা। সেই সঙ্গে পুরুষের পৌরুষত্বের নতজানু হওয়া, একচেটিয়া ক্ষমতায়নের খর্ব হওয়ার স্বীকারোক্তি পুরুষেরই বয়ানে– এক অন্যরকমের প্রাপ্তি। একদিক থেকে দেখলে, নারীর ক্ষমতায়নের সামাজিক ও লৌকিক স্বীকৃতির সমকালীন ও প্রাথমিক প্রমাণস্বরূপ।
কারও কারও পরস্ত্রীর প্রতি দুর্বলতা থাকে। সেক্ষেত্রে, ‘পরের বউকে দূর থেকে দেখাই ভাল’, তাছাড়া, ‘অন্যের বউকে নিজের ভাবার আগে ঘরের বউয়ের কথাটি মনে করো একবার।’ বলেছিল যথাক্রমে উত্তরপাড়া ও কাটোয়ার অটো। পরস্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হবার চেষ্টা করলে তার ফল কী হতে পারে, সে বার্তা ছিল প্যাঁচারথল (ত্রিপুরা) অটোপৃষ্ঠে : “Never Touch Other’s Wife/you will be Much Touched by Your’s wife’। এর ভাবানুবাদ ছিল ফারাক্কার অটোতে: ‘অন্যের বউকে ছঁবি একবার/ তোর বউ তোকে ছোবল মারবে বারবার’! সুতরাং, ‘স্বামীজী’ সাবধান! ‘Wife is Waiting at Home’।
স্বামীর মুখে পরস্ত্রী-র গুণগান কোনও নারীই পছন্দ করে না। ‘পরনারী হলে হাতঘড়ি/ নিজের বোয়ের হাতে দেখবে তরবারি’– কথায় বাঙ্ময় যে মনে রাখলে স্বামীদেরই মঙ্গল। নয়তো, ‘আমার (অর্থাৎ, অটোর– লেখক) কি এলো গেলো/ তোমার * ল ছেঁড়া গেলো’। সংসারে যাত্রাপথের আনন্দগান যাতে ব্যাহত না হয় তাই বৃহত্তর জনাস্বার্থে এহেন ‘চেতাবনী’। শব্দ ব্যবহারে দর্শকের সহ্য ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন লিপিকার।
মিষ্টি দোকানের মাছির মতো যারা মিটে স্বভাবের সুন্দরীদের দেখলেই, তাদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার বা নজরকাড়ার চেষ্টা করে নানাভাবে; তাদের উদ্দেশে রচিত অটোবাক্য: ‘হামলে পড়োনা হামাগুড়ি দিতে হবে।’ কিংবা, ‘দেখো, বেশি ঝুঁকলে পরে পস্তাবে’; ‘নীরবে দেখো অন্যকে, কাছে টানার চেষ্টা নিষেধ’; ‘সংযত না হলে তার কপালে দুঃখু আছে’– এটা অবশ্যি জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য; ‘মিষ্টিদের দেখো– খেলেই সুগার বাড়বে’– সুন্দরী ললনাদের মিষ্টান্নায়ন হয়েছে; অথবা, “You can watch a good looking woman from a distance/ Don’t try to be intimate/ Because you are married…” (চেন্নাই)। এসব এক বহমান স্রোতের মতো ভেসে চলেছে। ছোট্ট পরিসরেও একটা ন্যারেটিভ তৈরি হচ্ছে, বাইনারি রাখার স্বতঃপ্রণোদিত প্রয়াস লক্ষ করার মতো। নিঃসন্দেহে সাবঅল্টার্ন স্টাডিজের অমোঘ অপরিহার্য উপাদান। আপাত মৌন হরফরা এখানে অন্তরের মুখরতার কথাই বলছে।
বিবাহিত পুরুষ যেমন সুন্দরী অবিবাহিত বা পরস্ত্রীর প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে, তেমনই উল্টোটাও সত্যি। এক্ষেত্রে রক্ষাকবচ রাখতে হয় ‘Marrad Husband’-কেই, যেমন: ‘Sorry Girls/ My Wife is/ Very Strict’, পাশে বৃত্তের লাল পরিধির মাঝে মহিলার মুখাবয়বের ছায়া। তার ওপর একটা আড়াআড়ি অসম্মতিসূচক লাল দাগ। সুন্দরীদের হাতছানি, হানি ট্রাম্প, লোভনীয় অথচ নিষিদ্ধ প্রস্তাব ফেরাতে এহেন অটোলিপি লেখানোটা যেন অটোচালক বা মালিকের তরফে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া। একে বলা যেতে পারে একরকমের টীকাকরণ।
এরকম রস্য ভ্যাকসিনেশনের আরও কিছু নমুনা: ‘Sorry Madam/ My Wife is Watching’; “Extrmly Sorry/ I’m Married”; “Hello Madam/ Don’t Waste Your Time/ For me” (KA 05 AH 0984); “Hello Girls/ Don’t Invest Your Time/For a Engaged One”; ‘ও লাভলি, আমার বউ সব দেখছে’; ‘এ লেড়কী/তেরা দুশমন হ্যায় তেরা ভাবীজী/ম্যায় কেয়া করু’; ‘গাড়িতে সিসিটিভি আছে, বউ দেখছে’ ‘তুমি ভালো/তোমায় কোথায় রাখবো বলো/ঘরে আছে বউ আলো’।
অটোলিপির বয়ানে আপন স্ত্রী সম্পর্কিত কিছু সতর্কতামূলক বিবৃতি: ‘ঘরের লক্ষ্মীর খুঁত ধরতে নেই’; ‘বউয়ের সব কথা ধরতে যেওনা’; ‘বউয়ের কথায় রাগতে নেই’; ‘Wifes are always 100% right’– এক্ষেত্রে উপরি পাওয়া wife-এর বহুবচন (আহা! বাস্তবেও যদি ওনারা এখন সরলমনা হতেন); “Neves try to change your wife’s opinion”! অঘোষিত এবং ইন বিটুইন ওয়ার্ডস্ যে সাবধানবাণী, রয়েছে এহেন অটোবচনে সেটা এরকম: কোনও অবস্থাতেই পঞ্চসূত্রের বেদবাক্য লঙ্ঘন করিবেন না। তাহলেই সমূহ বিপদের সম্ভাবনা, এমনকী এগুলোর অন্যথা করার কথা ভাববেনই না, কারণ ‘মেয়েরা মন পড়াতে পারে’ (সৌজন্যে: বারাসতের অটো), সুতরাং, ‘সাধু সাবধান!’
অবশ্যি সব কালে, সব জায়গায় চলতি ধরার বিপরীতে হাঁটতে ভালোবাসেন এমন মানুষ ছিলেন, আছেন আর থাকবেনও। এখানেও পাওয়া গেছে সংখ্যায় অত্যল্প হলেও কিছু বিদ্রোহী অটোলিপি। এনাদের দৃষ্টিভঙ্গিটা হল লড়াকু মনোভাবাপন্ন। এদের কাছে সংসার একটা যুদ্ধক্ষেত্র। তবে এক্ষেত্রে বিপক্ষের বিরোধিতা চলতে পারে কিন্তু ওয়র ফ্রন্টের মতো পুরোপুরি নিকেশ করা চলবে না। অর্থাৎ, বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই চালান। সেটাও স্রেফ নিজের অস্তিত্বের সংকট এড়াতে। মনে রাখবেন, ‘একবার নত হলে তাকে বারবার নত হতে হয়’।
তা এই ধারার দু’চারটে নমুনা পরিবেশন করা যাক। ‘চুপচাপ মেনে নেবেন না’, ‘ফোঁস করতে শিখুন’ (বর্তমান প্রসঙ্গ ছাড়া অন্তত প্রযোজ্য); ‘উনি বলছেন বলেই চুপ করে থাকবেন না’; ‘Not Always, but sometimes oppose wife’ (কানপুর); ‘some time বিনা বাৎ বিবি তো ছোড়ো মৎ’ (আগ্রা)।
কিঞ্চিৎ জঙ্গিপনার লক্ষণ বক্তব্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে: ‘বিবি দুশমন নেহি লেকিন/ হর কদম বিবিকা বাত্ মানা কাফি দুশমনি হ্যায়’ (ভূপাল); ‘DO SURGICAL STRIKE SOMETIMES AGAINST WIFE’ (দমদম)। প্রসঙ্গত, শেষোক্ত অটোলিপিতে ‘সার্জিসাল স্ট্রাইক’ শব্দযন্ত্রের ব্যবহার সময়ের দাগ বহন করছে। এটা কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তানে সার্জিকাল স্ট্রাইক করার যে দাবি জানায়, তারপরে দেখেছি অটোপৃষ্ঠে, বিজয়গড় এলাকায়।
…………………………………………..
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
…………………………………………..
অটোর দর্পণে স্ত্রীর এই যে লৌকিক স্বরূপ, তা যেমন বর্ণময় তেমনই সমাজমনের আকরস্বরূপ। তাকে নিয়ে আশা, আশঙ্কা, ভয়, সতর্কতা, সাবধানতা, আগাম জামিনের মতো আগ বাড়িয়ে সচেতন থাকা সংক্রান্ত যেসব অটোলিপি, তার মধ্য দিয়ে স্ত্রী সম্পর্কে পুরুষমনের দোদুল্যমান অবস্থা, পৌরুষের বিপন্নতা নাকি দীর্ঘদিনের অবদমিত নারীশক্তির জেগে ওঠাকে সূচিত করছে? নিঃসন্দেহে উভয়েরই ভূমিকা রয়েছে। সেটা নিয়ে সমীক্ষা চালাতেই পারেন যৌথভাবে সমাজতান্ত্রিক ও মনস্তাত্ত্বিকরা।
স্ত্রী বিষয়ক অটোলিপির অধিকাংশ ক্ষেত্রে যে রঙ্গ-রসিকতা, সেটা যে সর্বদা নারীদের প্রতি তথ্যের অশ্রদ্ধা, অসম্মান থেকে, তা নয়। এগুলো এক রকমের কমিক রিলিফ। স্ত্রী বানান যখন ‘ইস্তিরি’ লেখা হয়, সেটা তো আমাদের রসরাজ শিবরামকেই মনে পড়ায়। আবার, সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে স্ত্রীকে নিয়ে রচিত নিখাদ সম্মান-স্বীকৃতিবাচক অটোলিপিরা সংখ্যালঘু, সব মিলিয়ে বিবাহিত নারী সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সমাজের একটা বিশেষ পেশায় নিযুক্ত মানুষজনের ধারণা দিতে সক্ষম অটোলিপি। সেটাই কম কীসে– ‘এক পলকের একটু দেখা’য়!
……………………………………………..
…পডুন অটোবায়োগ্রাফির অন্যান্য পর্ব…
পর্ব ৩: অটোলিপি যখন মাতৃভাষার পক্ষে
পর্ব ২: দিনের শেষে ভূতের দেশে/ সব রঙেরাই যাচ্ছে মিশে
পর্ব ১: * ক্ষয় হলেই সব্বোনাশ!