‘অলীক মানুষ’কে অনেকেই সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস বলে মনে করেন। বাংলা ভাষায় ‘অলীক মানুষ’ ক্লাসিকের মর্যাদা পেয়েছে। কোনও একটি উপন্যাসকে আমি এতগুলো পুরস্কার পেতেও দেখিনি। এই উপন্যাস যখন তিনি লিখছেন তখনই আমার সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছিল– লেখা শেষ হলে দে’জ পাবলিশিং থেকেই বইটি প্রকাশিত হবে।
বহুলপ্রচারিত একটি পাক্ষিক পত্রিকায় অনেক বিজ্ঞ সমালোচক লিখেছিলেন, অভিজ্ঞতা থেকে উপাদান কুড়িয়ে আমি গল্প লিখি বলে আমি নাকি ‘তারাশঙ্কর সমগোত্রীয়’। তারাশঙ্কর হিমালয়। আমি নিতান্ত উইঢিপি। লিখেছিলেন সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ।
সিরাজদা তখনও ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকায় আসেননি। তাঁকে সেই সময় সবাই ‘অমৃত’ গোষ্ঠীর লেখক বলেই জানত। প্রফুল্লদা আমাকে বলেছিলেন, সিরাজদার রাঢ় বাংলার– বিশেষ করে মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গার পশ্চিমপারের গ্রামাঞ্চল সম্পর্কে বিপুল অভিজ্ঞতা। গ্রামের মানুষ, জীবনকে দেখেছেন দু’-হাত ভরে।
পুলিসের এক কর্তা বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে নেশায়, নেশার ঝোঁকেই পচাগলা একটা মৃতদেহকে পুড়িয়ে দিতে হুকুম করছে কনস্টেবলদের। গল্পের এই পর্যন্ত যা আছে, ঠিকই আছে। তার পরেই বিপদ। কী সেই বিপদ?
‘দোজখ্নামা’ পত্রিকায় প্রকাশের সময় থেকেই পাঠকরা সেটি মুগ্ধতার সঙ্গে পড়েছেন। সুনীলদা ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’য় এই বইটিকে ২০১০ সালে বাংলা ভাষায় লেখা সেরা বই বলেছিলেন। বই হওয়ার পর সেই ভালোলাগা আরও বেড়ে যায়। একটি উপন্যাসকে নিয়ে অনেকদিন পরে এতটা উচ্ছ্বসিত হয় বাংলার পাঠক। আমি দেখছিলাম ২০২৩ পর্যন্ত বইটি ছ’ বার ছাপা হয়েছে।
বাংলা উপন্যাসে দেবেশদার ‘বৃত্তান্ত’র মতোই আমার মনে হয় আফসারদার ‘কিস্সা’ একটি অভিনব সংযোজন। আরবিতে ‘কিস্বহ’ মানে গল্প-কাহিনি। উর্দু উচ্চারণে সেটি হয়েছে ‘কিস্সা’। বাংলা প্রয়োগে সেটাই দাঁড়িয়েছে ‘কেচ্ছা’য়। আফসারদা মূল অর্থেই শব্দটা প্রয়োগ করেছিলেন।
বাংলা বইয়ের ক্ষেত্রে প্রচ্ছদশিল্পীদের পারিশ্রমিক এবং সম্মানের বিষয়টি শুরু থেকেই খুব একটা ভালো অবস্থায় ছিল না। একটা সময় অবধি বইয়ে প্রচ্ছদশিল্পীর নাম ছাপার রেওয়াজটুকুও ছিল না। অথচ একটি বইয়ের সম্পূর্ণ মুদ্রণ সম্পন্ন হওয়ার পরেও, প্রচ্ছদশিল্পীর নাম বাদ পড়ায়, দেবেশ রায় চেয়েছিলেন, বাঁধাইয়ের আগে সেই ত্রুটিটুকু শুধরে নেওয়া হোক।
২০০৮ সালেই আমি মণিভূষণ ভট্টাচার্যের প্রবাদপ্রতিম কাব্যগ্রন্থ ‘গান্ধীনগরে রাত্রি’ পুনর্মুদ্রণ করি। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭৪ সালে। এই কবিতা-বইয়ে তিনি বাংলার বিপ্লবপন্থী রাজনৈতিক কর্মীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। সাতের দশকে নকশালবাড়ি আন্দোলন বাংলার রাজনীতিতে আলোড়ন তুলেছিল।
এক বছর ধরে ওয়ার্কশপ, মাস পাঁচেকের রিহার্সালের পর একদিন দেবেশদা যান চেতনা নাট্যদলের মহলাকক্ষে। নাটকের অভিনয় দেখে তিনি না কি হাততালি দিয়ে উঠেছিলেন এবং সেদিনই মন্তব্য করেছিলেন যে এটা বাংলা নাটকের ইতিহাসে একটা অভিনব ঘটনা হতে চলেছে।
উত্তরবাংলায় কৃষক আন্দোলন করেছেন। সেই জীবন-অভিজ্ঞতার নানা দিক কাজে লেগেছে ‘তিস্তাপারের বৃত্তান্ত’ উপন্যাসে। ‘তিস্তাপারের বৃত্তান্ত’ যখন টুকরো-টুকরো অংশ হিসাবে বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে, তখন থেকেই তা বিদগ্ধজনের নজরে আসে।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved