শিল্পের প্রতি অন্ধ ভালোবাসার মুগ্ধতা নয়, ছবি বুঝে নেওয়ার, যাচাই করে নেওয়ার মতো শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে দর্শকের চোখ, সংগ্রাহকের দৃষ্টি।
মৃত সন্তানকে কোলে নিয়ে অসহায় জননীর বোবা কান্না, এঁকেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
প্রশ্ন উঠছে, কী সেই দৃষ্টি? কেমন সে দেখা, যা তাঁকে নেশা ধরিয়ে দেয়?
রবীন্দ্রনাথ চিঠিতে নন্দলালকে লিখেছেন, ‘আমার ছবিগুলি শান্তিনিকেতন চিত্রকলার আদর্শকে বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেচে’। এ কি ভারি আশ্চর্যের কথা নয়? এখানে ‘শান্তিনিকেতন চিত্রকলার আদর্শ’ বলতে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছেন?
রবীন্দ্রনাথের চিত্রভাবনার আড়ালে আছে বিশের দশকে বিভিন্ন মিউজিয়াম ও গ্যালারিতে বিদেশি ছবি ও ভাস্কর্য দেখার অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে পেরুভিয়ান শিল্পকলা এবং জার্মান এক্সপ্রেশনিস্ট আর্টের সঙ্গে তাঁর সম্যক পরিচয়।
সোনালি হলুদের অসামান্য দীপ্তি তাঁর নিসর্গের ছবিতে যে ইন্দ্রজাল রচনা করেছে– বিশেষ করে সূর্যাস্তের চিত্রমালায়– সেখানে ভাষা স্তব্ধ, অক্ষরের দল পরাজিত।
মস্কোতে রবীন্দ্রনাথ সরাসরি ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন একদল শিল্পী ও সমালোচকের কাছে। তবে অবশ্যই দোভাষীর মাধ্যমে।
পাশাপাশি এ-ও বলতে হবে, রবীন্দ্রনাথের আঁকা নারীমুখে যেমন অনেকে নতুন বউঠানের মিল খুঁজে পান, তেমনই কারও চোখে সেখানে উদ্ভাসিত ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর আদল। এই দ্বিতীয় মতে, চিত্রী রবি ঠাকুরের চোখে ওকাম্পোর ছায়া নিঃসন্দেহে আরও প্রবলতর, কারণ নতুন বউঠান সেখানে দূর গ্রহান্তরের বাসিন্দা।
শেষ পর্যন্ত সব মিলিয়ে কাস্টমস অফিস থেকে রবীন্দ্রনাথের ছবি বাবদ এক হাজার টাকা আমদানি শুল্ক ধার্য করা হয়!
রোম্যাঁ রোলাঁর অভিযোগ: সব ছেড়েছুড়ে রবীন্দ্রনাথ নিজেকে ভুলিয়ে রাখছেন ছবি এঁকে।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved