ব্যাঙ্ক আমানতে বছরে ৩০০-৪০০ শতাংশ মাত্র সুদ দিয়ে থাকে। এমনকী যে-ডলার দীর্ঘকাল দেশের দ্রুত ক্ষয়িষ্ণু মুদ্রার হাত থেকে জনসাধারণের আত্মরক্ষার অবলম্বন ছিল, গত একবছরে রুবলের সাপেক্ষে তার মূল্য মাত্র তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৯০০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি হারের অর্থ– ডলার আসলে গত একবছরে তিনগুণ নেমে গেছে। কিন্তু ভোদ্কার মূল্য মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল রেখে তার কাছাকাছি চলছে। বিনিয়োগ নিরাপদ, যেহেতু লোকে যে কোনও সময় সার্টিফিকেট ভাঙিয়ে ভোদ্কা নিতে পারে, অথবা সোজাসুজি ভোদ্কা বাজারে বিক্রি করতে পারে। রুশিরা যদিও পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক পরিমাণ ভোদ্কা (বছরে প্রায় দু’-বিলিয়ন লিটার) গলাধঃকরণ করে, তবু নগদ অর্থের ঘাটতি ও বিনিয়োগের নিদারুণ অভাবের দরুন রাশিয়ার সুরা উৎপাদন শিল্প দুর্দশার সম্মুখীন হচ্ছে। ‘ভেস্তাল্কো’ সুরা উৎপাদন শিল্পে বিনিয়োগের অর্থ সংগ্রহ করছে নতুন পন্থায়।
৬৭.
মস্কো, ২২ জানুয়ারি, ১৯৯৪
এই সেদিন পর্যন্ত ভোদকা মানুষের একটিমাত্র কাজেই লাগত এবং রাশিয়ার জনসাধারণের একটা বিরাট অংশ অবসর সময়ে সেই কাজেই লাগিয়ে এসেছে এতকাল। এছাড়া কোনও কোনও টোটকার অনুপান এবং কোনও কোনও রোগের চিকিৎসায় ব্যবহারও লোকচিকিৎসা পদ্ধতিতে আছে। কিন্তু ১৯৯০-১৯৯১ সাল থেকে কিছু রুশিকে, এমনকী এই রসে যারা বঞ্চিত তাদেরও দেখেছি কয়েক ক্রেট করে ভোদ্কা কিনতে। কেননা ভোদ্কা হয়ে উঠেছে কেনা-বেচার মাধ্যম।
সম্প্রতি আরও একটি কৌলিন্যের অধিকারী হয়েছে ভোদ্কা। যারা পান করে না তারাও ইচ্ছে করলে ভোদ্কার পিছনে অর্থ বিনিয়োগ করতে পারে। চরম মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কায় লোকের সঞ্চয় যেভাবে তলানিতে এসে ঠেকেছে, রাশিয়ার রুবল যেরকম খাবি খাচ্ছে, সেই পরিস্থিতি থেকে সাধারণ মানুষকে উদ্ধার করার জন্য এক অভিনব পন্থার উদ্ভাবন করেছে রাশিয়ার ভোদ্কা উৎপাদন সংস্থা।
‘ভেস্তাল্কো’ নামে এক অর্থবিনিয়োগ সংস্থা ভোদ্কার ভবিষ্যৎ চুক্তিনামা বিক্রি করছে। এখন পর্যন্ত ১০ লিটার করে বাজারে ছাড়া হয়েছে। ক্রেতারা ভোদ্কার পেটির ৫০ শতাংশ মূল্য অগ্রিম দিলে তার বিনিময়ে একটি সার্টিফিকেট পেতে পারেন। এই সার্টিফিকেট তাঁরা যে কোনও সময় ‘ভেস্তাল্কো’-র কাছে বিক্রি করে সেই সময়ের মধ্যে ভোদ্কার যে মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে, তা সমেত গচ্ছিত অর্থ তুলে নিতে পারেন। অথবা যাঁরা ভোদ্কা পান করেন, তাঁরা তিন মাস অপেক্ষা করার পর আরও ৫০ শতাংশের মূল্য শোধ করে তাঁদের প্রাপ্য ভোদ্কা তুলে নিতে পারেন।
রাশিয়ায় বরাবরই সবই নির্ধারিত হয়ে আসছে ভোদ্কার বোতলের ভিত্তিতে। ভোদ্কাই আজকের বাজারে সহজ বিনিময়যোগ্য একমাত্র পণ্য, যা রাশিয়ার আকাশছোঁয়া মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল রেখে চলতে সক্ষম। ১৯৯৩ সালে মুদ্রাস্ফীতির হার ৯০০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
ব্যাঙ্ক আমানতে বছরে ৩০০-৪০০ শতাংশ মাত্র সুদ দিয়ে থাকে। এমনকী যে-ডলার দীর্ঘকাল দেশের দ্রুত ক্ষয়িষ্ণু মুদ্রার হাত থেকে জনসাধারণের আত্মরক্ষার অবলম্বন ছিল, গত একবছরে রুবলের সাপেক্ষে তার মূল্য মাত্র তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৯০০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি হারের অর্থ– ডলার আসলে গত একবছরে তিনগুণ নেমে গেছে। কিন্তু ভোদ্কার মূল্য মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল রেখে তার কাছাকাছি চলছে। বিনিয়োগ নিরাপদ, যেহেতু লোকে যে কোনও সময় সার্টিফিকেট ভাঙিয়ে ভোদ্কা নিতে পারে, অথবা সোজাসুজি ভোদ্কা বাজারে বিক্রি করতে পারে।
রুশিরা যদিও পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক পরিমাণ ভোদ্কা (বছরে প্রায় দু’-বিলিয়ন লিটার) গলাধঃকরণ করে, তবু নগদ অর্থের ঘাটতি ও বিনিয়োগের নিদারুণ অভাবের দরুন রাশিয়ার সুরা উৎপাদন শিল্প দুর্দশার সম্মুখীন হচ্ছে। ‘ভেস্তাল্কো’ সুরা উৎপাদন শিল্পে বিনিয়োগের অর্থ সংগ্রহ করছে নতুন পন্থায়।
মুদ্রাস্ফীতির রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করা ছাড়া রাশিয়ার সরকারের চাকায় তেল দিয়ে ভোদ্কা যে তাকে খানিকটা চালু রাখার চেষ্টা করছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। রাশিয়ার সরকারি বাজেটের প্রায় ৪০ শতাংশ আসে আবগারি থেকে।
রুশিদের চারপাশের জগৎ যখন চরম বিশৃঙ্খলভাবে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে, তখন রুশিরা ভোদ্কার শরণাপন্ন হচ্ছে দু’টি কারণে: মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে বিনিয়োগ হিসাবে, আর সে বিনিয়োগ যদি ব্যর্থও হয় তাহলে তারা অন্তত ভোদ্কায় ডুবে ভুলে থাকতে পারবে নিজেদের দুঃখ-দুর্দশা।
২০০৮, জুন
স্কচ নয়, ইংরেজদের মহলে ভোদ্কারই এখন বেশি রমরমা। এই প্রথম স্কচকে কুপোকাত করে দিয়ে ভোদ্কা ব্রিটেনের জনপ্রিয় পানীয় হতে চলেছে। Absolute বা Smirnoff ব্র্যান্ড-এর ভোদ্কা Bells, Teacher’s বা Famous Grouse-এর মতো blended whisky-কে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে।
গত এপ্রিল মাসে যে-আর্থিক বছর শেষ হল, তাতে দেখা যাচ্ছে সেই সময়ের মধ্যে গ্রেট ব্রিটেনে ভোদ্কার বিক্রি বেড়েছে ১১ শতাংশ, সেখানে স্কচ্-এর বিক্রি বেড়েছে মাত্র ১ শতাংশ।
এই বিক্রি বাড়ার আরও একটি কারণ অবশ্য পোল্যান্ড এবং পূর্ব ইউরোপের দেশগুলি থেকে সেদেশে অভিবাসনকারী লোকজনের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাধিক্য। তবে এটাও ঠিক যে, দেশের যুবসমাজের কাছেও এর চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই শহরগুলিতে অন্য যে কোনও পানীয়ের তুলনায় এর চাহিদা তো বেশিই, এমনকী সুপার মার্কেটগুলিতেও ভোদ্কা প্রথম স্থানে উঠে যাচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংজ্ঞা অনুযায়ী ভোদ্কা স্রেফ ‘Diluted ethyl alcohol’ নামের পানীয় হিসেবে স্বীকৃত। ভোদ্কা বাস্তবিকই তা-ই।
পোল্রা দাবি করে ভোদকা নাকি তাদের উদ্ভাবন। ফিনদের দাবি: যথার্থ রুশ ভোদ্কা ফিনল্যান্ডে উদ্ভূত। কিন্তু রুশিরা যে-পরিমাণে ভোদ্কা পান করে এবং ভোদ্কার দরুন যে-পরিমাণ দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে তাদের পড়তে হয়, সেই বিবেচনায় রুশিরাই তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতম সম্পর্কের দাবি করতে পারে।
তাছাড়া ‘ভোদ্কা’ শব্দটাই রুশি– রুশি Voda– অর্থাৎ জলের ক্ষুদ্রার্থ বাচক, শুনে কেউ মুখ টিপে হাসলেও হাসতে পারেন, কিন্তু মনে রাখবেন whisky শব্দটিও অনুরূপ অর্থবহ। Gaelic ভাষার এই শব্দটির অর্থ ‘জিয়ন বারি’।
পোল্রা তাদের নিজেদের বোতলে ভোদ্কা ভরতে পারে কিন্তু তারা নিজেদের মধ্যে ভোদ্কাকে Gorzilka নামে উল্লেখ করে, যে-শব্দটি এসেছে উক্রাইনীয় ভাষায় horilka থেকে, যার ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ‘দহন’, আর এরই মধ্যে নিহিত আছে তার আসল তাৎপর্য।
ভালো ভোদ্কার কোনও স্বাদ নেই, ভোদ্কার কোনও স্বাদ মুখে লেগে থাকে না, যেটা লেগে থাকে সেটা একটা অনুভূতি। ১৮৯৪ সালে সম্রাট তৃতীয় আলেকসান্দ্র অ্যালকোহলের যে-মাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন, সেটাই, অর্থাৎ, ৪০ শতাংশ অ্যালকোহলই ভোদ্কার সাধারণমাত্রা। ক্ষেত্রবিশেষে অবশ্য ৫০ শতাংশও হয়, তবে সেটা একটু জ্বালাধরা।
রুশিরা ভোদ্কা নির্জলা পান করতেই অভ্যস্ত। whisky-র মতো রয়ে-সয়ে তারিফ করে পান করার জিনিস ভোদ্কা নয়। একঢোকে নিঃশেষ পান করতে হয়। তা সে গেলাস ছোট হোক আর বড়ই হোক। ভোদ্কার রং সচরাচর জলের মতোই এবং সাদা টলটলে স্বচ্ছ। ভোদ্কা সুগন্ধি করে তোলার অনেকরকম প্রণালী আছে। পোল্যান্ডে buffalo grass দিয়ে সুগন্ধযুক্ত ভোদ্কা ‘জুব্রোভ্স্কার’ জনপ্রিয়তা আছে।
ভোদ্কা যত ঠান্ডা হয় তত ভালো। ভোদ্কার সঙ্গে একটুকরো রুটির ওপর মাখন এবং তার ওপর বড় চামচের এক-চামচ ক্যাভিয়ার ছড়িয়ে খাওয়ার মধ্যে একটা আভিজাত্য আছে। তবে ইতরজনের ক্ষেত্রে মধুর অভাবে গুড়ও চলতে পারে। ক্যাভিয়ার না থাকলে, নুনে জড়ানো হেরিং মাছ, হ্যাম বেকন সসেজ, নিদেনপক্ষে নুন ও লঙ্কার গুঁড়োয় জড়ানো চর্বিও চলতে পারে। হাতের কাছে চটজলদি কোনও খাবার বা উপযুক্ত চাট পাওয়া না গেলেও ভোদ্কা পান করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ভোদ্কা গলায় ঢালার সঙ্গে সঙ্গে নিজের বাহুতে নাক ঘষটে গন্ধ শুঁকে ভোদ্কার ধক সামলানোর রীতিও প্রচলিত আছে। তবে সেটা শিষ্টাচারসম্মত নয়।
যে কোনও কড়া পানীয়ের মতো ভোদ্কা পানেরও কোনও উপলক্ষের দরকার হয় না– মেজাজ খারাপ হলে পান করা যেতে পারে, আবার ভালো হলেও পান করা যেতে পারে। ভোদ্কার একটা আসরে কত কারণে কত বিচিত্র রকমের যে টোস্ট হতে পারে তা ধারণা করা যায় না। এর জন্য যথেষ্ট উদ্ভাবনী শক্তির দরকার। গৃহস্বামী যতক্ষণে ‘পথের যষ্টি’ (শীতকালে পথের অবলম্বন, অর্থাৎ রাস্তায় গা গরম রাখার সম্বল) বলে শেষ টোস্টটি উচ্চারণ করে অতিথিদের বিদায় জানাচ্ছেন, ততক্ষণে তাদের অনেকেরই অবস্থা উত্থানশক্তিরহিত। কোনও রকমে যদিও বা বিদায় নিল, শেষকালে হয়তো দেখা গেল তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেরাই শেষ পর্যন্ত রাস্তায় ধরাশায়ী হয়ে যষ্টিবৎ বরফের স্তূপের মধ্যে স্থির হয়ে পড়ে আছে। এরকম নয়নাভিরাম দৃশ্য সোভিয়েত আমলে আকছার রাস্তাঘাটে দেখা যেত, কিন্তু সে অবস্থায় কেউ মারা গেছে বলে সেসময় শুনিনি। স্থানীয় লোকেরা বলত পেটে যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্য থাকলে ও উপযুক্ত পোশাক-পরিচ্ছদ পরনে থাকলে সেই অবস্থায় মারা যাওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই, কিন্তু পেরেস্ত্রৈকার আমলে দৃশ্যগুলি বড় মর্মান্তিক হয়ে দাঁড়ায়।
যেমন রুশ দেশের আমজনতার, তেমনি সে দেশের সরকারের ভাবনাচিন্তাগুলি বরাবরই মৌলিক। ইদানীং ভোদ্কার বোতলের গায়ে সতর্কতামূলক বার্তা হিসেবে তাই ‘অতিরিক্ত মদ্যপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর’– এই লেখাটা সাঁটা থাকে। ‘অতিরিক্ত’ কথাটাই তো আপেক্ষিক! কার পক্ষে কতটা পরিমাণ ক্ষতিকর কে-ই বা তা স্থির করবে? ভোদ্কা আবার সরকারের রাজস্বের একটা বড় উৎসও বটে। অতএব বার্তাটা একটু সতর্কভাবে দিতে হয়। যে যার মতো করে বুঝে নিলেই ভালো।
২৩ নভেম্বর, ২০২০
ভোদ্কার সঙ্গে রাশিয়ার অর্থনীতির যোগটা কোথায় তা বুঝতে গেলে একটা দৃষ্টান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। গত শতাব্দীর সাতের দশকে 750 ml. ভোদ্কার দাম সে দেশে ছিল ডলারের হিসেবে ৪ ডলার। সোভিয়েত আমলে দেশে এক ডলারের আনুপাতিক মূল্য ছিল ৬৩ কোপেক (যদিও অবশ্য কালোবাজারে মূল্য ছিল ৪-৫ গুণ বেশি)। বর্তমানে, এই মুহূর্তে, রাশিয়ায় যদিও এক ডলারের মূল্য ৭৪ রুব্ল, কিন্তু ভোদ্কার দাম ডলারের অনুপাতে সেই ৪ ডলারই আছে।
ভোদ্কার উৎপাদন মূল্য যেখানে ১৫ রুব্ল সেখানে বাজারে তা বিক্রি হয় ৯০ রুব্ল– ৫০০ গ্রাম করে ওজনের মোট ৬টি রুটির দামের সমান।
…পড়ুন রুশকথা-র অন্যান্য পর্ব…
৬৬। বেসরকারিকরণের সুযোগে যে বেকারি তৈরি হয়, তা সরাসরি দেখলাম সোভিয়েতে
পর্ব ৬৫। যে মহাকাশচারী মহাকাশেই এক যুগ থেকে আর একযুগে এসে যাত্রা শেষ করেছিলেন
পর্ব ৬৪। লেনিনের স্থান কোথায় হবে– তা নিয়ে আজও রাশিয়ায় তর্ক চলছে
পর্ব ৬৩। উত্তরের আশায় লেনিনকে সমাধির ঠিকানায় চিঠি পাঠাত সাধারণ মানুষ
পর্ব ৬২। মিখাইল নিল ভোদকা কেড়ে, বরিস দিল ভাত মেরে
পর্ব ৬১। প্রকাশের স্বাধীনতার আমলে সোভিয়েত থেকে হারিয়ে গেল চুটকি বা হাস্যরস
পর্ব ৬০। রুশ দেশের হাস্যরস যেন লোকসাহিত্যের এক অফুরান ভাণ্ডার
পর্ব ৫৭। গুরুগম্ভীর থেকে হাস্যকরের তফাত মাত্র একটি পদক্ষেপের
পর্ব ৫৬। রুশ দেশের অনেক খবরই আজকাল গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ঠাঁই পাওয়া শুরু করেছে
পর্ব ৫৫। মার্কিন দেশে ব্যাঙ্ক ডাকাতি করতে এসেছিল একজন গর্বাচ্যোভের মুখোশ পরে, অন্যজন মাইকেল জ্যাকসনের
পর্ব ৫৪। হাজার হাজার কৌতূহলী জনতার সঙ্গে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম সেই মহাদৃশ্য
পর্ব ৫৩। নাম বদলের গোলকধাঁধায় অসঙ্গতি বেড়েছে, ঐতিহ্যকে রক্ষা করা যায়নি
পর্ব ৫২। মস্কোর আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের মিছিলে ভারতের পতাকা থাকবে না-ই বা কেন?
পর্ব ৫১। পত্র-পত্রিকায় ঘোষণা করা হল কাস্ত্রো আসছেন, তবে ইনি মেক্সিকোর সোপ অপেরা স্টার
পর্ব ৫০। খোলা হাওয়ায় মানুষের আর কোনও কিছু নিয়েই চিন্তা নেই, অন্ন চিন্তা ছাড়া
পর্ব ৪৯। সোভিয়েত-মুক্ত রাশিয়াকে কে রক্ষা করবে?
পর্ব ৪৮। বর্ষশেষে মানুষ পেল দারিদ্র, এখন লোকে ধার-দেনা করে চা-কফি খাওয়া শুরু করেছে
পর্ব ৪৭। মুক্ত দিনে ব্যালের দেশ রাশিয়ায় ‘আধুনিক ব্যালে’ শেখাতে আসছে ক্যালিফোর্নিয়ার ট্রুপ
পর্ব ৪৬। অক্টোবর বিপ্লবের উচ্ছ্বাস কোনও দেশে কমলে, অন্য দেশে বাড়তে থাকে
পর্ব ৪৫। ‘অক্টোবর বিপ্লব দিবস’ আর পালিত হবে না, পালিত হবে বড়দিন– চোখের সামনে বদলে যাচ্ছিল সোভিয়েত
পর্ব ৪৪। রাজনীতিতে অদূরদর্শিতার ফল যে কত সুদূরপ্রসারী, তার প্রমাণ আফগানিস্তান
পর্ব ৪৩। জানলা দিয়ে পূর্ব জার্মানি দেখতে দেখতে গর্বাচ্যোভ বলেছিলেন, তাহলে এখানেই শেষ!
পর্ব ৪২। পেরেস্ত্রৈকা শুরু হলে বুঝেছিলাম ‘প্রগতি’ ‘রাদুগা’– এসব কিছুই থাকবে না
পর্ব ৪১। কল্পনা যোশীর তুলনায় ইলা মিত্রকে অনেক বেশি মাটির কাছাকাছি বলে মনে হয়েছে
পর্ব ৪০। বেসরকারিকরণের শুরু দিকে রাস্তাঘাটে ছিনতাই বেড়ে গেছিল, কারণ সব লেনদেন নগদে হত
পর্ব ৩৯। হাওয়া বদলের আঁচ অনেকেই আগে টের পেয়েছিল, বদলে ফেলেছিল জীবনযাত্রা
পর্ব ৩৮। শুধু বিদেশে থাকার জন্য উচ্চশিক্ষা লাভ করেও ছোটখাটো কাজ করে কাটিয়ে দিয়েছেন বহু ভারতীয়
পর্ব ৩৭। একটা বিদেশি সাবানের বিনিময়েও নাকি মস্কোয় নারীসঙ্গ উপভোগ করা যায়– এমনটা প্রচার করেছে ভারতীয়রা
পর্ব ৩৬। মস্কোর ঠান্ডায় লঙ্কা গাছ দেখে পি.সি. সরকার বলেছিলেন, ‘এর চেয়ে বড় ম্যাজিক হয় নাকি?’
পর্ব ৩৫। রুশদের কাছে ভারত ছিল রবীন্দ্রনাথের দেশ, হিমালয়ের দেশ
পর্ব ৩৪। সোভিয়েত শিক্ষায় নতুন মানুষ গড়ে তোলার ব্যাপারে একটা খামতি থেকে গিয়েছিল
পর্ব ৩৩। দিব্যি ছিলাম হাসপাতালে
পর্ব ৩২। মস্কোর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে সাধারণ ডাক্তাররা অধিকাংশই মহিলা ছিলেন
পর্ব ৩১। আমার স্ত্রী ও দুই কন্যা নিজভূমে পরবাসী হয়ে গিয়েছিল শুধু আমার জন্য
পর্ব ৩০। শান্তিদা কান্ত রায়ের প্রিয় কাজ ছিল মস্কোয় ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের কমিউনিজম পড়ানো
পর্ব ২৯। পেরেস্ত্রৈকার শুরু থেকেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিলেন গোপেনদা
পর্ব ২৮। দেশে ফেরার সময় সুরার ছবি সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাননি গোপেনদা
পর্ব ২৭। বিপ্লবের ভাঙা হাট ও একজন ভগ্নহৃদয় বিপ্লবী
পর্ব ২৬। ননী ভৌমিকের মস্কোর জীবনযাত্রা যেন দস্তইয়েভস্কির কোনও উপন্যাস
পর্ব ২৫। ননীদা বলেছিলেন, ডাল চচ্চড়ি না খেলে ‘ধুলোমাটি’র মতো উপন্যাস লেখা যায় না
পর্ব ২৪। মস্কোয় শেষের বছর দশেক ননীদা ছিলেন একেবারে নিঃসঙ্গ
পর্ব ২৩। শেষমেশ মস্কো রওনা দিলাম একটি মাত্র সুটকেস সম্বল করে
পর্ব ২২। ‘প্রগতি’-তে বইপুথি নির্বাচনের ব্যাপারে আমার সঙ্গে প্রায়ই খিটিমিটি বেধে যেত
পর্ব ২১। সোভিয়েতে অনুবাদকরা যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করত, সে দেশের কম মানুষই তা পারত
পর্ব ২০। প্রগতি-র বাংলা বিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে ননীদাই শেষ কথা ছিলেন
পর্ব ১৯। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় নাকি খুব ভালো রুশভাষা জানতেন, প্রমথনাথ বিশী সাক্ষী
পর্ব ১৮। লেডি রাণু মুখার্জিকে বাড়ি গিয়ে রুশ ভাষা শেখানোর দায়িত্ব পড়েছিল আমার ওপর
পর্ব ১৭। একদিন হঠাৎ সুভাষদা আমাদের বাড়ি এসে উপস্থিত ফয়েজ আহমেদ ফয়েজকে নিয়ে
পর্ব ১৬। মুখের সেই পরিচিত হাসিটা না থাকলে কীসের সুভাষ মুখোপাধ্যায়!
পর্ব ১৫। রুশ ভাষা থেকেই সকলে অনুবাদ করতেন, এটা মিথ
পর্ব ১৪। মস্কোয় ননীদাকে দেখে মনে হয়েছিল কোনও বিদেশি, ভারতীয় নয়
পর্ব ১৩। যিনি কিংবদন্তি লেখক হতে পারতেন, তিনি হয়ে গেলেন কিংবদন্তি অনুবাদক
পর্ব ১২। ‘প্রগতি’ ও ‘রাদুগা’র অধঃপতনের বীজ কি গঠনপ্রকৃতির মধ্যেই নিহিত ছিল?
পর্ব ১১। সমর সেনকে দিয়ে কি রুশ কাব্যসংকলন অনুবাদ করানো যেত না?
পর্ব ১০। সমর সেনের মহুয়ার দেশ থেকে সোভিয়েত দেশে যাত্রা
পর্ব ৯। মস্কোয় অনুবাদচর্চার যখন রমরমা, ঠিক তখনই ঘটে গেল আকস্মিক অঘটন
পর্ব ৮: একজন কথা রেখেছিলেন, কিন্তু অনেকেই রাখেননি
পর্ব ৭: লেনিনকে তাঁর নিজের দেশের অনেকে ‘জার্মান চর’ বলেও অভিহিত করত
পর্ব ৬: যে-পতাকা বিজয়গর্বে রাইখস্টাগের মাথায় উড়েছিল, তা আজ ক্রেমলিনের মাথা থেকে নামানো হবে
পর্ব ৫: কোনটা বিপ্লব, কোনটা অভ্যুত্থান– দেশের মানুষ আজও তা স্থির করতে পারছে না
পর্ব ৪: আমার সাদা-কালোর স্বপ্নের মধ্যে ছিল সোভিয়েত দেশ
পর্ব ৩: ক্রেমলিনে যে বছর লেনিনের মূর্তি স্থাপিত হয়, সে বছরই ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার সূচনাকাল
পর্ব ২: যে দেশে সূর্য অস্ত যায় না– আজও যায় না
পর্ব ১: এক প্রত্যক্ষদর্শীর চোখে রাশিয়ার খণ্ডচিত্র ও অতীতে উঁকিঝুঁকি