চন্দ্রমোহনের বাবা মারা যেতে, বেরিয়ে পড়লেন বাড়ি ছেড়ে। পুণেতে, প্রভাত ফিল্মসের অফিসে, সৈয়দ ফতে লাল হাঁ– তাঁর চোখ দেখে। অভিনয় প্রতিভা ছিলই; সুতরাং, পর্দায় এসে অডিয়েন্সকে তটস্থ করতে সময় লাগল না চন্দ্রমোহনের। চারের দশকের গোড়ায়, হয়ে উঠলেন ইতিহাস আর পুরাণ-ভিত্তিক সিনেমার ব্যস্ততম ভিলেন; পারিশ্রমিকও সবথেকে বেশি। ডিরেক্টররা শুধু তাঁর চোখের ক্লোজ আপ দিয়েই, তৈরি করলেন ত্রাস।
চন্দ্রমোহনকে মনে আছে? না থাকাই স্বাভাবিক। ছবি দেখলে, হয়তো, কেউ কেউ বলবেন, ‘ও, ইনি!’ মা-মরা চন্দ্রমোহনকে লাই দিয়ে মাথায় তুলেছিলেন দিদিমা। লেখাপড়ায় বেশি না এগোলেও, পড়াশোনায় দিব্যি এগিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি-ভর্তি বই– উর্দু, হিন্দি, ইংরেজি, মারাঠি। পাশাপাশি, দামি স্কচ আর ঘোড়ার রেসের রসিক। বাবা মারা যেতে, বেরিয়ে পড়লেন বাড়ি ছেড়ে। পুণেতে, প্রভাত ফিল্মসের অফিসে, সৈয়দ ফতে লাল হাঁ– তাঁর চোখ দেখে। অভিনয় প্রতিভা ছিলই; সুতরাং, পর্দায় এসে অডিয়েন্সকে তটস্থ করতে সময় লাগল না চন্দ্রমোহনের। চারের দশকের গোড়ায়, হয়ে উঠলেন ইতিহাস আর পুরাণ-ভিত্তিক সিনেমার ব্যস্ততম ভিলেন; পারিশ্রমিকও সবথেকে বেশি। ডিরেক্টররা শুধু তাঁর চোখের ক্লোজ আপ দিয়েই তৈরি করলেন ত্রাস।
ওই সময়ের আরেক ভিলেন, কৃষাণ নিরঞ্জন ওরফে কে. এন. সিং। বার্লিন অলিম্পিকে, ডাক পেলেন জ্যাভেলিন আর শটপুট ইভেন্টে। এদিকে, বোনের চোখ অপারেশন, কলকাতায়। বোনের দেখাশোনা করতে এসে, মোলাকাত পৃথ্বীরাজ কাপুরের সঙ্গে। পৃথ্বীরাজই নিয়ে গেলেন তাঁকে, দেবকী বোসের কাছে। বাস্তবে অতি-সজ্জন কৃষাণ, পরবর্তী পাঁচ-পাঁচটা দশক, কেতাদুরস্ত স্যুট পরে, ঠোঁটে সিগার চেপে, জাস্ট একটা ভ্রূ তুলে, যখনই উচ্চারণ করলেন: ‘বকওয়াস বন্ধ করো!’– ব্যস, দর্শকের হাড়-হিম, দুরভিসন্ধির আঁচে।
শোনা যায়, ‘৪২’-এ বিকাশ রায়কে দেখে, পর্দায় চটি ছুড়ে মেরেছিলেন এক দর্শক। সেটাকেই কেরিয়ারের সেরা পুরস্কার বলতেন তিনি। এহেন ঘটনা, কৃষাণের সঙ্গেও। শুটিং থেকে ফেরার পথে, এক বন্ধুর দেওয়া কিছু জিনিস দিতে, কড়া নাড়লেন এক বাড়িতে। দরজা খুলেই, আতঙ্কে পরিত্রাহি চিৎকার, সে বাড়ির মহিলার। কোনওমতে পালিয়ে বাঁচলেন কৃষাণ।
তুতোভাই, কে. এল. সায়গলের হাত ধরে, ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ মদন পুরির। স্বাধীনতার পর, পাঁচের দশকে, হলিউডের প্রভাবে শুরু নয়ার (noir)। ওই জমানার জনপ্রিয় ভিলেন, মদন পরবর্তী চার দশকে কাজ করলেন প্রায় ৪৩০টা সিনেমায়। সিমলায় ‘রামলীলা’-তে যখন রাম সাজতেন তিনি, কে হতেন সীতা? প্রাণ কিষাণ সিকন্দ। ফোটোগ্রাফার প্রাণ, বন্ধুদের সঙ্গে, লাহোরের লক্ষ্মী চকের রাস্তায় পান চিবোচ্ছিলেন। আচমকা, একজন এসে জোরাজুরি, স্টুডিওতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। নাছোড়বান্দা সেই ভদ্রলোক, কবি ও ফিল্মমেকার, মহম্মদ ওয়ালি। তাঁর হাতেই, পাঞ্জাবি সিনেমায় এত বড় স্টার হয়ে উঠলেন প্রাণ– ছয়ের দশকেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রিলিজ করতে হত তাঁর ফিল্ম, দর্শকের চাহিদায়।
দেশভাগের পর, বম্বে এসে, অকূল-পাথারে তিনি। কাউকেই সেভাবে চেনেন না এদেশে। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, হিরোর রোল করবেন না কখনও। হ্যাঁ, সুপারহিট ‘খানদান’-এ, নায়কের চরিত্র করে দেখেছেন, ওরকম নরম প্রেম আর গাছ ধরে সারাজীবন নাচা উদ্ভট ও একঘেয়ে। বরং, এমন অভিনয় করবেন, যাতে ঘোল খাওয়াবেন হিরো-হিরোইনকে। সাদাত হাসান মান্টো একদিন নিয়ে গেলেন তাঁকে, বম্বে টকিজে। সেই ‘জিদ্দি’-তে, নাম লেখালেন ইতিহাসে, আরও দুই তরুণ– নায়ক, দেব আনন্দ আর গায়ক, কিশোর কুমার।
ফিল্মি পার্টিতে, বাকিরা যখন হুঁশহীন; হুইস্কি হাতে, গড়গড় কবিতা বলেন প্রাণ। গালিব, ফৈজ, ইকবাল, মির তাকি মির, আসগর গোন্ডবি– সব ঠোঁটস্থ তাঁর। নতুনতম যে কোনও শিল্পী সেটে ঢুকলে, উঠে দাঁড়িয়ে স্বাগত জানান তিনি। অথচ, তাঁর খল ইমেজ বদ্ধমূল এতই, আউটডোর শুটিংয়ে অরুণা ইরানি যখন শুনলেন, একই হোটেলে থাকছেন প্রাণ– হৃৎকম্প থরহরি তাঁর। প্রাণই বললেন তাঁকে ডেকে, রুমের দরজা ভালোভাবে বন্ধ করতে আর যে কোনও দরকারে খবর দিতে। অরুণা বুঝলেন, পর্দায় আর বাস্তবে দু’জন আলাদা– প্রাণ।
সদ্যোজাত দেশে, কৃষি-ভিত্তিক সমাজবাদী অর্থব্যবস্থায় কোণঠাসা সামন্তপ্রথা। ভিলেনের নতুন রূপ মুনিম, মহাজন, জমিদার। মেহবুব খানের ‘অউরত’-এ, সুদখোর পুরোহিতের চরিত্রে কাঁপিয়ে দিলেন পণ্ডিত কানহাইয়ালাল চতুর্বেদী। ওই সিনেমার রিমেক, ১৭ বছর পর, মেহবুবের হাতেই। আর, এবারেও প্রযোজক-পরিচালক অন্য কাউকে ভাবতে পারলেন না ওই চরিত্রে। হ্যাঁ, ‘মাদার ইন্ডিয়া’। কানহাইয়ালালের মতো, সম্ভবত, আর কেউ অত নিখুঁত রক্তচোষা সুদখোরের অভিনয় করতে পারেননি।
সাতের দশকে, ভিলেনের আবির্ভাব স্মাগলার রূপে– আরও নিষ্ঠুর, আরও লোভী, আরও শহুরে। অ্যাক্টর হবেন বলে, বইপত্তর বেচে, বাড়ি থেকে পালিয়ে বম্বে এলেন হামিদ আলি খান। পয়সাকড়ি নেই, থাকার জায়গা নেই। বাসস্থান বেছে নিলেন সিমেন্টের পাইপের পেটে। ওই পাইপে থাকতেও হপ্তা নেয় গুণ্ডারা। একদিন, রেগেমেগে, গুণ্ডাদের আচ্ছা ধোলাই দিলেন তিনি। পড়শিরা স্যালুট করল পরিত্রাতা হামিদকে। পাইপ-পাড়ার সেই হিরোকে আমরা চিনলাম ভয়ংকর ভিলেন, অজিত নামে। তাঁর উচ্চারণে, ‘সারি দুনিয়া মুঝে লইন (lion) কে নাম সে জানতি হ্যায়…’ হিন্দি ফিল্ম-দুনিয়ায় প্রথমসারির সংলাপ।
কাশ্মীরে, ওঙ্কার নাথ ধর জন্মেই, হারালেন মাকে। মাত্র ৩ বছর বয়সে, বাবাকেও। প্রাপ্তবয়স্ক হতেই, বাড়ি ছেড়ে পালালেন বম্বে, পকেটে ২৬ টাকা। ডিরেক্টর মোহনলাল সিনহার স্টুডিওতে, রিফ্লেকটর বয়ের চাকরি। মোহনলাল বুঝলেন, অভিনয়েই তাঁর আগ্রহ। সুযোগ পেলেন ‘ফ্যাশনেবল ইন্ডিয়া’-য়। আসলে, হিরো হতে চেয়েছিলেন ওঙ্কার ওরফে জীবন। নিয়তি তাঁকে দিয়ে করিয়ে নিল নারদের চরিত্র, ৬০টা সিনেমায়। পর্দার ভিলেন, জীবন কখনও ভোলেননি নিজের কষ্টকর ছোটবেলা। বহু শিশুর লেখাপড়ার খরচ জোগাতেন তিনি, চুপচাপ।
খান্ডোয়ার জঙ্গলে, এক হরিণীকে গুলি চালালেন সঙ্গী বন্ধু। কোনও স্ত্রী প্রাণীকে কখনও আঘাত করতেন না শৌখিন শিকারি, জীবন। হরিণীটি মারা যেতে, দেখা গেল, সে গর্ভবতী। পেট চিরে, ভ্রূণ বের করার দৃশ্য এত বিব্রত করল তাঁকে, জীবনের মতো প্রাণীহত্যা ছেড়ে দিলেন তিনি।
ছয় ও সাতের দশকে, আলোচ্য বিষয়: ফুলন দেবী আর মান সিং। ভিলেনের নতুন অবতার, ডাকাত। হাড়-কাঁপানো ডাকাত হয়ে, চির-ছাপ রাখলেন আমজাদ খান। সিনেমা, ‘শোলে’। গব্বর সিংয়ের রোলে প্রথমে ভাবা হল ড্যানিকে। কিন্তু, তখন তুমুল ব্যস্ত তিনি; ডেট দিতে পারলেন না। আমজাদ যেদিন সাইন করলেন গব্বরের রোলে, সেদিনই জন্মাল তাঁর প্রথম সন্তান। হাসপাতালের বিল মেটানোর পয়সা ছিল না পকেটে। জানতে পেরে, চেতন আনন্দ দিলেন ৪০০ টাকা। তবেই, ছেলের মুখ দেখতে গেলেন আমজাদ। আর, চম্বল নিয়ে তরুণ ভাদুড়ির লেখাপত্র পড়ে, নিজেকে বানালেন ক্রূরতার প্রতিমূর্তি।
‘শোলে’-র পর, আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। স্টার হয়েও, সারাজীবন ছিলেন সাধারণ। এক নতুন পরিচালক, মাল্টি-স্টারার ফিল্ম হাতে নিয়ে, নাস্তানাবুদ। নানা বায়নাক্কা স্টারদের। এমনকী, সেটেও আসেন সব ৫-৬ ঘণ্টা লেটে। একদিন, ভেঙে পড়লেন ডিরেক্টর। স্টুডিওর কোণে তাঁকে ছলছল দেখে, আমজাদ জানতে পারলেন, কাজ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নবাগত মানুষটি। আমজাদ বললেন, ‘কাল আমি আসব ৭ ঘণ্টা লেটে, তুমি রেয়াৎ করবে না… সক্কলের সামনে চেঁচিয়ে ধমকাবে… আমি ক্ষমা চাইব।’ পরদিন তাই করলেন সন্ত্রস্ত ডিরেক্টর। আমজাদকে ধমকাতে দেখে, শুধরে গেলেন বাকিরা।
সাতের দশকেই, খলতার আরেক অবতার, ধর্ষণকারী। মজার ব্যাপার, বিপ্লবী সুখদেবের চরিত্রে অভিনয় করেও, প্রেম চোপড়া যেদিন লালসায় তাকালেন নায়িকার দিকে, দর্শকের উপচে ওঠা ঘৃণায় জনপ্রিয় হয়ে গেলেন তিনি।
এয়ার ফোর্সের ট্রেনিংয়ে, ইনস্ট্রাক্টরের মেয়ের সঙ্গে মশকরা করছিলেন গোপাল বেদি। কার্যত, ক্যাম্প থেকে তাড়ানো হল তাঁকে। এক প্রোডিউসার তাঁকে নিয়ে এলেন বম্বে। সেই ‘জিন্দেগি কি রাহেঁ’ শেষমেশ হল না। একদিন, রাখী সুপারিশ করলেন তাঁর নাম, ‘শর্মিলি’-তে। চরিত্র, নায়িকার শ্লীলতাহানি করবে। বাড়ির সকলকে নিয়ে, প্রিমিয়ারে এলেন গোপাল ওরফে রঞ্জিত। ধর্ষণের দৃশ্যে, আঁতকে, থুঃ থুঃ করে, হল থেকে বেরিয়ে গেলেন পরিবারের লোকজন। রাত্রে বাড়ি ফিরে, তিনি দেখলেন কান্নাকাটি করছেন সবাই। কারণ? পাড়াপড়শির কাছে মুখ দেখানোর উপায় রাখেননি রঞ্জিত।
আটের দশকে, আর্টহাউজ আর মশালা– দুই ঘরানাতেই পোক্ত, কিছু অভিনেতা। রাজনীতি ও অর্থনীতির ওঠাপড়ায় ভিলেন এল দু’রকম– আন্ডারওয়ার্ল্ড গ্যাংস্টার আর লার্জার-দ্যান-লাইফ ক্রিমিনাল। মদন পুরির ছোটভাই, অমরিশ ভাবলেন, দুই দাদার (আরেক দাদা, চমন পুরি) দৌলতে ঢুকে পড়বেন ইন্ডাস্ট্রিতে। হায়! অডিশনেই থুবড়ে পড়লেন তিনি। কিন্তু, হাল ছাড়লেন না। সত্যদেব দুবের কাছে হাতেখড়ি নিলেন থিয়েটারে। সুনীল দত্ত দেখলেন তাঁকে, মঞ্চে। ‘রেশমা অউর শেরা’-য় এলেন সে-সময়ের দুই স্ট্রাগলার, অদূর ভবিষ্যতের পিলার– অমিতাভ বচ্চন আর অমরিশ পুরি।
অমরিশও, আসলে, হিরো হতে চেয়েছিলেন। চাকরি, একটা ইন্সিওরেন্স কোম্পানিতে, ক্লার্কের। ওখানেই দেখা, তাঁর জীবনের নায়িকার সঙ্গে। পাঞ্জাবের অমরিশকে প্রথমে মেনে নেননি দক্ষিণী প্রেমিকার পরিবার। তবে, শেষে জিতল তাঁদের ভালোবাসাই। সফলতা পেতে পেতে, অমরিশের বয়েস ৪১ বছর– ততদিন, ওভারটাইম করে, সংসার চালাতেন তাঁর স্ত্রী, ঊর্মিলা। অমরিশ বলতেন, ‘আমি হিরো হতে পারিনি তো কী! এই বাড়ির হিরো তো আমার বিবি!’ ব্যক্তিজীবনে, মোগাম্বো সত্যিই খুশ।
নাটক দেখতে এসে, গোবিন্দ নিহলানি আবিষ্কার করলেন গণেশ নরবাডেকে। ‘অর্ধ সত্য’-তে ডেবিউ করলেন গণেশ ওরফে সদাশিব অম্রপুরকার। রামা শেট্টির রোলে এত নাম হল তাঁর, একসঙ্গে পেলেন ৬০টা সিনেমার অফার। অথচ, আটের দশকের শুরুতেও, তিনি জানেন না কে বি. আর. চোপড়া, কে যশ চোপড়া। কোনও ম্যানেজার নেই, সেক্রেটারি নেই। এক বন্ধুর কাছে পরামর্শ নিয়ে, সাইন করলেন পরের কাজগুলোতে। সুপারহিট ‘হুকুমত’-এর পর, তাঁকে লাকি ম্যাসকট বেছে নিলেন ধর্মেন্দ্র। পর্দার ভিলেন, সদাশিব বাস্তবে কাজ করেছেন বহু সমাজসেবায়, সারাজীবন।
সাত আর আটের দশক দেখল এক ঝাঁক ভিলেন– কুলভূষণ খারবান্দা, পরেশ রাওয়াল, গুলশন গ্রোভার, শক্তি কাপুর, কাদের খান, রাজা মুরাদ, অনুপম খের। আটের দশকের শেষে, চকলেট রোমান্সের আধিপত্যে, ভয়ানক ভিলেনরা একটু থমকেই গেলেন। নয়ের দশকের শুরুতে, টেলিভিশনের হার্টথ্রব আর দু-চারটে রোম্যান্টিক ফিল্মের নায়ক, শাহরুখ খান বীভৎস অবতারে এলেন পর্দায়। ‘অঞ্জাম’-এ তাঁকে দেখে, ছিঃ ছিঃ রবে, হল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন তরুণীর দল– এ ঘটনা চাক্ষুষ করেছি।
যদিও সর্বার্থে নতুন নয়, কেরিয়ারের শীর্ষে থেকেও, নেগেটিভ চরিত্রে কাজ করেছেন অশোক কুমার, দেব আনন্দ, দিলীপ কুমার, উত্তম কুমার, সৌমিত্র, কমল হাসান, রজনীকান্তের মতো নায়করা– কিন্তু, শাহরুখের ওই ক্যারিশমা বদলে দিল ইন্ডাস্ট্রির ঢেউ। ভিলেনের বদলে, জন্ম নিল নতুন শব্দ, ‘অ্যান্টি-হিরো’। ইমেজ ভেঙে, এগিয়ে এলেন সঞ্জয় দত্ত, অজয় দেবগণ, আমির খান, সইফ আলি খান, অক্ষয় খান্না, অক্ষয় কুমার। পিছিয়ে থাকলেন না নায়িকারাও। কুলদীপ কউর, বিন্দু, হেলেন, ললিতা পাওয়ার– যাঁদের বলা হত, ‘ভ্যাম্প’– তাঁদের নতুন ভার্সনে মুখ দেখালেন কাজল, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, ঊর্মিলা মাতন্ডকরের মতো জনপ্রিয় হিরোইনরা।
জাভেদ আখতার বলেছিলেন, হিন্দি সিনেমায় ভিলেনের বিবর্তন খুঁটিয়ে দেখলে, গত প্রায় ১০০ বছরের সামাজিক-রাজনৈতিক ওঠা-নামা সহজবোধ্য হয়। কথাটা খুব ভুল বলেননি তিনি। আক্ষেপও করেছেন, মিলেনিয়াম-পরবর্তী সিনেমায় ওই অমানুষিক খলনায়ক মুছেই গেছে প্রায়। আর, নায়কের শৌর্যও, হয়তো, খর্ব হয়েছে তাই। ভিলেন ও ‘বলিউডের নারদ’ জীবন, আরেক ভিলেন, ছেলে কিরণ কুমারকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, ‘হিরো লম্বায় ৫ ফুট ২ ইঞ্চি হোক, বা ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি– ভিলেনের কাজ, তাকেই সুপারম্যান দেখানো। একজন ভিলেনই অডিয়েন্সকে বিশ্বাস করায়, শেষে জিতবে হিরোই।’
…পড়ুন ফ্ল্যাশব্যাক-এর পুরনো পর্ব…
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ২২: কলকাতায় কাজ করাই ভুল হয়েছিল বারীন সাহার
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ২১: ফিল্মমেকার ভূপেন হাজারিকাকে বাঙালি এখনও কদর করেনি
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ২০: যোগ্য নায়ক আর ফান্ড পেলে কমল হাসান শেষ করবেন তাঁর স্বপ্নের কাজ
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৯: ঘুটঘুটে জঙ্গলের ভেতর ১৫-২০ হাজার আদিবাসী হাঁ করে দেখছে, হ্যাঁ, ডকুমেন্টারি
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৮: রাজ কাপুরের স্টুডিওতে ঢুকতে চান? রাধু কর্মকারের নাম বলুন
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৭: যে ছায়ার আলোতে বড় হয়েছেন শ্রীদেবী, রজনীকান্ত, কমল হাসান
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৬: যাদের ১৮ হয়নি, তারা এসব বুঝবে না; আর, যাদের ১৮ হয়েছে, তারা মজা পাবে
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৫: পারিশ্রমিকের কথা না ভেবেই নপুংসকের চরিত্রে কাজ করতে চেয়েছিলেন শাহরুখ খান
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৪: ‘আমি গানের দোকান খুলতে আসিনি’, যশ চোপড়াকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ‘দিল চিজ ক্যা হ্যায়’-এর গীতিকার
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১৩: পায়ে বেত মেরে নাচাতে হল অমিতাভ বচ্চনকে
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১২: মেনস্ট্রিম হিরোদের ঘায়েল করেছিল শাকিলার ঢেউ
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১১: লকআপে বসে স্টোরিটেলিংয়ের জোরে পুলিশকে বন্ধু বানিয়েছিলেন রাম গোপাল বর্মা
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১০: ‘টেররিস্ট’ সন্দেহে গ্রেফতার, পরে ‘ভক্ত কবির’-এ অভিনয়ের জন্য ভিড় জমেছিল প্রণামের
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৯: টিপ টিপ বরসা পানি ও বুক ঢিপ ঢিপ নাইন্টিজ
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৮: অমিতাভ বচ্চনকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি যে হোটেলে
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৭: শচীন দেব বর্মনের ‘ভাটিয়ালি’ শুনলেই, হো হো হাসতেন রাহুল আর কিশোর
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৬: বর্ষা এনেছিল দেব আনন্দের ‘গাইড’
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৫: ভারতের প্রথম অভিনেতা যিনি সেক্রেটারি রেখেছিলেন
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৪: ‘আমির খান কে? প্রশ্নটা করুন আপনার পাশের বাড়ির কিশোরীকে।’
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ৩: যে কারণে নাসিরউদ্দিনের বেজায় গুসসা হয়েছিল!
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ২: বাতের ব্যথাই ছিল হৃষীকেশের অস্ত্র
ফ্ল্যাশব্যাক পর্ব ১: অন্তর্বাস ছাড়াই প্রথম শুটিংয়ে ধর্মেন্দ্র, রেগে কাঁই ড্রেসার