একদিন বললও সে কথা। ‘চলে যাব, জানিস। ওখানেই কাজ করব।’ আমি হা হা করে উঠলাম, ‘ঋতুদা তোমার প্রতিষ্ঠা তো এখানে, বাংলা ভাষায়, সব ফেলে চলে যাবে কেন?’ ঋতুদা বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলেছিল, ‘টাকার অনেকটা তফাত রে। একই কাজ করে বম্বেতে যে পরিমাণ রোজগার, কলকাতায় তা কখনও হবে না। প্রতিটা চিত্রনাট্য লেখার পর দরাদরি… এই ইন্ডাস্ট্রির দৈন্যদশাটা আর নিতে পারছি না।’ হয়তো হক কথা। কিন্তু ঋতুপর্ণ ঘোষ কলকাতা ছেড়ে চলে যাবে ভাবলে মনখারাপ হয়ে যায়।
৪৭.
‘চোখের বালি’র পর থেকে ঋতুদা জাস্ট উধাও হয়ে গেল! এই কলকাতা, তো এই বম্বে। জাতীয় স্তরে একটা পরিচিতি তো আগে থেকেই ছিল, কিন্তু চোখের বালি খুব বড় একটা আই ওপেনার হল বোম্বাইয়ের বোম্বেটের কাছে। অল্প বাজেটে যে এর’ম মানের পিরিয়ড করা যায়– যেখানে নায়িকা আবার ঐশ্বর্য রাই– ঋতুদাকে এক অন্য নিক্তিতে মাপা শুরু করল বম্বে। একের পর এক প্রযোজনা সংস্থা এসে ভিড় জমাতে শুরু করল। প্রীতীশ নন্দী, অরিন্দম চৌধুরী, সুভাষ ঘাই– এক অন্য চ্যাপ্টার শুরু হয়ে গেল ঋতুদার।
একদিন ফোন করেছি আড্ডা মারতে আসব বলে। বলল, ‘কাল আয়… আজ সঞ্জয় আসবে।’ কোন মহাভারতের সঞ্জয়, জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করলাম না। পরদিন গিয়ে শুনি সঞ্জয় লীলা বনশালী এসেছিলেন! দেবদাসের জন্য ওই সময় কলকাতা ঘুরছিলেন তিনি। নাচের দৃশ্যগুলোর জন্য মমতাশঙ্করের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন যতদূর মনে পড়ে। আমার ধারণা ছিল দু’জনের খুবই জমবে। বড়লোকি মেজাজের শেষ কথা এরা। সাজগোজ সেটফেট সবকিছুই এক্সট্রা, যাকে বলে একস্ট্রাভ্যাগেন্ট। ফলে কৌতূহল হচ্ছিল খুব। ঋতুদা দেখলাম বনশালীকে নিয়ে কথা বলতে অত উৎসাহী নয়। পরবর্তী সময়েও যখনই বনশালীর প্রসঙ্গ এসেছে, ঋতুদা সচেতনভাবে এড়িয়ে গিয়েছে… কিছু তো একটা ঘটেছিলই। কারণটা ‘ঐশ্বর্যখচিত’ হলে আশ্চর্য হতাম না।
‘হাম দিল দে চুকে সনম’ সিনেমাটি যে আসলে দে টুকে সনম– এ কথাটা বারবার বলত। পুরো ‘ন হন্যতে’-র কাহিনি ছেপে বসানো। মায় লঙ্কা চিবোনোর দৃশ্যটা পর্যন্ত। কেন একবারও স্বীকৃতি দেবে না তাহলে? বাংলা ভাষা বলে? যাকে দেখতে পারত না, তাকে কোনও সময়ই দেখতে পারত না। ফলে বনশালী নিয়ে কোনও দিনই প্রশংসা শুনিনি আর। বম্বের পার্টিতে নানা সুপারস্টারের সঙ্গে কী’রম আড্ডা হত– সেসব গল্প বলত রসিয়ে। বিশেষ করে শাহরুখ খানের কথা। কোন এক জমায়েতে পুরো সময়টা ঋতুদার সঙ্গেই গল্প করে কাটিয়েছে। ঋতুদার উচ্ছ্বাস, পাগলামি, কথায় কথায় আরব সাগরের রেফারেন্স টানা দেখে বিলক্ষণ বুঝতে পারছিলাম, লোকটাকে বম্বে টানছিল। একদিন বললও সে কথা। ‘চলে যাব, জানিস। ওখানেই কাজ করব।’ আমি হা হা করে উঠলাম, ‘ঋতুদা তোমার প্রতিষ্ঠা তো এখানে, বাংলা ভাষায়, সব ফেলে চলে যাবে কেন?’ ঋতুদা বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলেছিল, ‘টাকার অনেকটা তফাত রে।’
–তোমার কি টাকার অভাব নাকি?
–কথাটা সেটা নয়, একই কাজ করে বম্বেতে যে পরিমাণ রোজগার, কলকাতায় তা কখনও হবে না। প্রতিটা চিত্রনাট্য লেখার পর দরাদরি… এই ইন্ডাস্ট্রির দৈন্যদশাটা আর নিতে পারছি না।
হয়তো হক কথা। কিন্তু ঋতুপর্ণ ঘোষ কলকাতা ছেড়ে চলে যাবে ভাবলে মনখারাপ হয়ে যায়।
ঋতুদা যখন এসব বলছে, ঠিক তখনই ‘ব্ল্যাক ম্যাজিক’-এ চলছে বিস্তর ডামাডোল! রঙ্গনদা, জয়দেবদা, অর্ঘ্যদা সব ছেড়ে দিয়েছে। পাকা চাকরির বন্দোবস্ত না রেখে প্রোজেক্ট বেসিসে সকলকে টাকা দেওয়া হবে– তেমনই ঠিক হয়েছে। শেষ কয়েকজন আমরা পড়ে রয়েছি। বুঝতে পারছি কোম্পানিটা বন্ধ হয়ে যাবে। এ কলকাতায় যা যা খুব আনন্দের সঙ্গে করতে শুরু করেছিলাম, তার বেশিরভাগই অর্থাভাবে ধুঁকছে, নড়বড় করছে। শুধু গানের অনুষ্ঠান চলছে বলে স্বস্তি। ওইটুকুই বাঁচোয়া। মাঝে মাঝে মনে হয়, ঋতুদাই ঠিক। এই অনর্থক গরিবিয়ানার মানে নেই কোনও।
ব্ল্যাক ম্যাজিক-এর হয়ে তখন আলফা ( জি নেটওয়ার্কের আগের নাম) পেন্টাথেলন নামে একটা প্রোগ্রাম করি। টাইটেল সং চন্দ্রবিন্দু করেছিল। ইন্টার কলেজ কম্পিটিশন টিভির পর্দায়। ডিরেক্টর ছিল অর্ঘ্যকমল মিত্র, আমি ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর। খুব নতুন রকমের একটা কাজ হয়েছিল। সেই প্রথম টিভির জন্য অ্যাঙ্কারিং করল মীর। বাংলায় টিভি গেম শো ফরম্যাটের ক্ষেত্রে ‘আলফা পেন্টাথেলন’ খুব জরুরি প্রোগ্রাম ছিল। এরপর ‘হাঁউ মাঁউ খাঁউ’ বলে মীরকে নিয়ে অন্য একটি অনুষ্ঠান করে ব্ল্যাক ম্যাজিক। পরিচালক ছিল বন্ধু দেবাশিস।
এরপর ‘আলফা’ হয় ‘জি’। রুমাল বেড়াল হয়। স্যাটেলাইট টেলিভিশনের জগতে বড় একটা বদল আসতে শুরু করে। এসবের পাশাপাশি আমি তখনও ই-টিভির ‘পরম্পরা’ নামের একটা অনুষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছি। এক সপ্তাহে এল ঋতুদা। তবে কে আসবে বা কার সঙ্গে কে বসবে– সেটা আমি ঠিক করতাম না। ওগুলো চ্যানেল বা পরিচালকই দেখত। ফলে শুটিংয়ের দিন জানলাম ঋতুদা বসবে সুব্রত সেনের সঙ্গে। ‘এক যে আছে কন্যা’-র পর সুব্রত সেনের তখন বেজায় নামডাক। ঋতুদা এই কম্বিনেশনটা নিয়ে অখুশি ছিল। যদিও একই ডিসিপ্লিনের সিনিয়র জুনিয়র দু’জন অংশ নেয় এই প্রোগ্রামে। ফলে ঋতুদা বা সুব্রত সেনের বাছাই ভুল ছিল না। ঋতুদা বেজায় অফ মুডে ছিল। সচরাচর যে মেজাজে কথা বলে থাকে, তার চেয়ে অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিল। পরে বলেছিল, ‘আমাদের ছবি করার ধরন ভিন্ন, ধারণাও। ফলে একটা মিসম্যাচ ছিল এপিসোডটায়।’ পরে দেখেছি খারাপ হয়নি মোটেই। সে সময় ঋতুপর্ণর সঙ্গে তুলনা করার আর একজন এসে গিয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় বেজায় লেখালেখি হচ্ছিল। মনে হয় ঋতুদার আপত্তি ছিল ওই কারণেই। তুলনা টানা বস্তুত অপছন্দ ছিল ওর। সে সুব্রত সেনই হোক কি লীলা সঞ্জয়।
‘চোখের বালি’র পর ঋতুদাকে নিয়ে চর্চা এতটাই বেড়ে যায় যে আস্তে আস্তে একটা পাল্টা স্রোত বইতে শুরু করে। ঘরবাড়ির সেট আর সম্পর্কের সুতোর বাইরে আর কিছু পারে না– এমন একটা মত বাজারে উড়তে শুরু করে। বিরোধিতার কতটা কারণ সিনেমা, কতটা কারণ জনপ্রিয়তা, কতটা ঋতুপর্ণর নিজস্ব জীবনচর্যা– বোঝা মুশকিল ছিল।
……………………………………..
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
……………………………………..
সমালোচনা সাধু হলে তা নিয়ে কথা বলা চলে, কিন্তু যেখানে উদ্দেশ্যটাই হেয় করার, চুপ থাকাই ভালো মনে হত। মনে পড়ছে, জনপ্রিয় এক নাট্যব্যক্তিত্বর কথা। আমাদের গান খুব ভালবাসতেন। ঈষৎ মত্ত অবস্থায় একবার বলেছিলেন, ‘তোমরা গানে যেটা করছ, সিনেমায় সেইটা হওয়ার প্রয়োজন। এসব ঋতুপর্ণ-সংস্কৃতি আর চলে না।’ আমি খুব স্পষ্টভাবে বলেছিলাম, ‘আমার ভালো লাগে ঋতুপর্ণর সিনেমা।’ বক্তব্যের জোরে খানিক ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে উনি বলেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ… তুমি তো ওর সিনেমা করেছ।’
কিছুটা খেয়ে ছিলাম আমিও। কাটা কাটা ভাষায় বলেছিলাম, ‘আমি অ্যাক্টিং করি বা না-করি , ঋতুপর্ণর ছবি আমার ভালো লাগে, বুঝেছেন?’ বুঝুক বা না-বুঝুক আমার তেঁটিয়া মেজাজ দেখে তিনি আর কথা বাড়াননি সে যাত্রায়।
…ঋইউনিয়ন-এর অন্যান্য পর্ব…
পর্ব ৪৬: কোনও টক শো’য় অতিথি অনুষ্ঠান শেষ করছে– এমন ঘটনা শুধু ‘এবং ঋতুপর্ণ’তেই ঘটেছিল
পর্ব ৪৫: চিত্রনাট্যের বাইরের এক সংলাপ আমাদের নগ্ন করে দিয়ে গেল
পর্ব ৪৪: একবারও মনে হয়নি, ‘চোখের বালি’তে অ্যাসিস্ট না করে কিছু মিস করছি
পর্ব ৪৩: শুভ মহরৎ-এ আমার ভদ্রতা আর প্রেমে দাগা, বন্ধুরা মেনে নিতে পারেনি
পর্ব ৪২: ‘অসুখ’-এ গৌরী ঘোষের চরিত্রে গলা দিয়েছিল ঋতুদা নিজে
পর্ব ৪১: ঋতুদার ভেলকিতে খুনের থেকেও প্রেমের জখম বড় হয়ে দাঁড়াল
পর্ব ৪০: আমার ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করেছিল সইফ আলি খান
পর্ব ৩৯: নন্দিতার জন্য নার্ভাস ছিলাম না, রবীন্দ্রনাথের জন্য ছিলাম
পর্ব ৩৮: টোটার দেওয়া ডায়েট চার্ট পেয়ে নিজেকে হঠাৎ খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছিল
পর্ব ৩৭: ফিরে এল কলেজবেলার কমপ্লেক্স– নন্দিতা দাস আমার চেয়ে লম্বা নয়তো?
পর্ব ৩৬: আমার ডিটেকটিভ একজন মহিলা, বলেছিল ঋতুদা
পর্ব ৩৫: চন্দ্রবিন্দুর কোনও কাজ কি নির্বিঘ্নে হবে না!
পর্ব ৩৪: বিলক্ষণ বুঝতে পারছি, চ অ্যালবামটা মাথা খাচ্ছে ঋতুদার
পর্ব ৩৩: হাতে মাইক আর হাতে বন্দুক– দুটোই সমান বিপজ্জনক!
পর্ব ৩২: ‘চ’ রিলিজের সময় শঙ্খবাবু আমাকে দু’টি কড়া শর্ত দিয়েছিলেন
পর্ব ৩১: ত্বকের যত্ন নিন সেক্সিস্ট গান, বলেছিল ঋতুদা
ঋইউনিয়ন পর্ব ৩০: বাতিল হওয়া গান শোনাতে কার ভালো লাগে?
ঋইউনিয়ন পর্ব ২৯: সামান্য দরকার থাকলেই মাথাখারাপ করে দিত ঋতুদা
ঋইউনিয়ন পর্ব ২৮: পত্রিকার ক্যাচলাইনের মতোই এডিটরের মুডও ক্ষণে ক্ষণে পাল্টায়
ঋইউনিয়ন পর্ব ২৭: জয়দেব বসু ছাড়া আর কেই বা ছিল কলকাতার সঙ্গে মানানসই?
ঋইউনিয়ন পর্ব ২৬: পাহাড় থেকে নেমে আসার আগে মিঠুনদা একদিন রান্না করে খাওয়াবেন– খবরটা চাউর হয়ে গেল
ঋইউনিয়ন পর্ব ২৫: মেঘে ডুবে গেল শুটিং ইউনিট, শুরু হল গোধূলি সন্ধির গীতিনাট্য
ঋইউনিয়ন পর্ব ২৪: মিঠুনদার উত্তাল সত্তরের গল্পে আমাদের অলিগলি মুখস্ত হয়ে যেত
ঋইউনিয়ন পর্ব ২৩: প্রথম টেকে মিঠুনদা ফলস খেলেন!
ঋইউনিয়ন পর্ব ২২: মানুষ কালীভক্ত হয়, ঋতুদা শুধু লি ভক্ত
ঋইউনিয়ন পর্ব ২১: শুনলাম কঙ্কনা না কি খুবই নার্ভাস, ‘ঋতুমামা’র ছবি করবে বলে
ঋইউনিয়ন পর্ব ২০: ইউনিটে একটা চাপা উত্তেজনা, কারণ মিঠুন চক্রবর্তীর আসার সময় হয়ে গিয়েছে
ঋইউনিয়ন পর্ব ১৯: যে সময় ‘তিতলি’র শুটিংকাল, তখন পাহাড়ে ঘোর বর্ষা
ঋইউনিয়ন পর্ব ১৮: চিত্রনাট্য পড়ে শোনাল ঋতুদা, কিন্তু ‘চোখের বালি’র নয়
ঋইউনিয়ন পর্ব ১৭: তুই কি অ্যাসিস্ট করতে পারবি আমায় ‘চোখের বালি‘তে?
ঋইউনিয়ন পর্ব ১৬: লিরিক নিয়ে ভয়ংকর বাতিক ছিল ঋতুদার
ঋইউনিয়ন পর্ব ১৫: জীবনের প্রথম চাকরি খোয়ানোর দিনটি দগদগে হয়ে রয়েছে
ঋইউনিয়ন পর্ব ১৪: উত্তমের অন্ধকার দিকগুলো প্রকট হচ্ছিল আমাদের কাটাছেঁড়ায়
ঋইউনিয়ন পর্ব ১৩: সুপ্রিয়া-উত্তমের কন্যাসন্তান হলে নাম ভাবা হয়েছিল: ভ্রমর
ঋইউনিয়ন পর্ব ১২: ধর্মতলায় ঢিল ছুড়লে যে মানুষটার গায়ে লাগবে, সে-ই উত্তম ফ্যান
ঋইউনিয়ন পর্ব ১১: পার্ক স্ট্রিট ছিল আমার বিকেলের সান্ত্বনা, একলা হাঁটার রাজপথ
ঋইউনিয়ন পর্ব ১০: পরিচালক হলে খিস্তি দিতে হয় নাকি!
ঋইউনিয়ন পর্ব ৯: সেই প্রথম কেউ আমায় ‘ডিরেক্টর’ বলল
ঋইউনিয়ন পর্ব ৮: শুটিং চলাকালীনই বিগড়ে বসলেন ঋতুদা!
ঋইউনিয়ন পর্ব ৭: ঋতুদা আর মুনদির উত্তেজিত কথোপকথনে আমরা নিশ্চুপ গ্যালারি
ঋইউনিয়ন পর্ব ৬: মুনমুন সেনের নামটা শুনলেই ছ্যাঁকা খেতাম
ঋইউনিয়ন পর্ব ৫: আমার পেশার জায়গায় লেখা হল: পেশা পরিবর্তন
ঋইউনিয়ন পর্ব ৪: লাইট, ক্যামেরা, ফিকশন, সব জ্যান্ত হয়ে ওঠার মুহূর্তে ঋতুদার চিৎকার!
ঋইউনিয়ন পর্ব ৩: রবীন্দ্রনাথকে পার করলে দেখা মিলত ঋতুদার
ঋইউনিয়ন পর্ব ২: ‘চন্দ্রবিন্দু’র অ্যালবামের এরকম সব নাম কেন, জানতে চেয়েছিলেন ঋতুদা
ঋইউনিয়ন পর্ব ১: নজরুল মঞ্চের ভিড়ে কোথায় লুকিয়ে ছিলেন ঋতুপর্ণ?
সোমেন চন্দ খুন হয়েছিলেন সংগঠক হিসেবে। সক্রিয়তার মাপকাঠিতে তাঁর কাছে ক্রমাগত পিছিয়ে যাচ্ছিলেন তথাকথিত জাতীয়তাবাদী শক্তি। এবং এটাই যে তাঁকে হত্যা করার কারণ, এতেও আমাদের সন্দেহ নেই। পাশাপাশি এটাও সত্য যে, তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যেসব মেসেজ জনমানসে; বিশেষ করে শিক্ষিত শ্রেণির মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছিল, তার সঙ্গেও মতাদর্শগত বিরোধ কম ছিল না। রাজনৈতিক সংগঠক সোমেন এবং লেখক সোমেন ছিলেন গা জড়াজড়ি করে।
বৈশাখী বুদ্ধপূর্ণিমার রাতে অযোধিয়া বুরু আন্দোলিত হয় শিকার উৎসবে। শুধু শিকার নয়, এ হল উৎসব, ‘সেঁদ্রা পরব’। সাঁওতালি ভাষায় যাকে বলে ‘সেন্দ্রা’, তার বাংলা অর্থ ‘অনুসন্ধান’। বিগত বছরে জঙ্গলের মধ্যে যেসব প্রজাতির গাছপালা, লতাপাতা, কীটপতঙ্গ, পশুপাখি ইত্যাদি পাওয়া গিয়েছে তা এই বছর পাওয়া যায় কি না সেই বিষয়ে খোঁজতল্লাশ।
দু’জন মানুষ– একজন রাষ্ট্রের প্রধান, আর একজন বিজনেস টাইকুন– যিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি পর্যন্ত নন, তাঁদের সিদ্ধান্তে গত দু’-তিন সপ্তাহে এত মানুষের চাকরি চলে যাচ্ছে, এত সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এত গুরুত্বপূর্ণ কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে যে, হিসাব রাখা যাচ্ছে না।